ভালোবাসার গল্প: ব্যর্থ ভালোবাসা|| শেষ পর্ব

আমার সকল প্রিয় ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন সবাই। আশা করছি সৃষ্টিকর্তা অসীম রহমতে সবাই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভাল আছি। আপনারা সবসময় ভালো থাকুন এবং সুস্থ থাকুন এটাই আমার কামনা।

সোর্স

পঞ্চম পর্বের পর....

নদী যে হোস্টেলে পড়া লেখা করে। সেখানে সিকিরিউটি খুব কড়া। ব্যাক্তি গত কাজের জন্য একবার বেড় হতে পারবে। মহিলা হোস্টেল বলে কথা। সজীব নদীকে একটি মোবাইল কিনে দেয়। সমস্যা ছিল হোস্টেলে মোবাইল চালানো নিষেধ। একদিন নদী সজীবের সাথে কথা বলতে ছিল হঠাৎ হোস্টেল সুপার দেখে ফেলে। নদীকে বলে তুমি মোবাইল কোথায় পেলে। তুমি কি জানতে না এখানে মোবাইল চালানো নিষেধ। হোস্টেল সুপার নদীর থেকে মোবাইল ফোন টা নিয়ে নেন। নদী অনেক অনুরোদ করে হোস্টেল সুপারকে যেন এই বিষয়ে তার বাবাকে কিছু না বলে। কিন্তু হোস্টেল সুপার নদীর অনুরোধ রাখেননি। বিষয় টা নদীর বাবাকে জানানো হয়।

সজীব নদী কে অনেকবার ফোন করে কিন্তু ফোন বন্ধ। সজীব পরের দিন বাড়ীতে চলে আসে। সজীব সব কিছু খুলে বলে আমাকে, নদীকে ফোনে পাচ্ছি না। ওদের এক ক্লাস মেট আমার কাছে ফোন দিয়ে বলে। নদীর মোবাইল হোস্টেল সুপারের কাছে। নদীর বাবাকে বলে দিয়েছে সম্পর্কের কথা। জানি না এখন কি হবে নদীর সাথে যোগাযোগ করতে পাচ্ছি না। আমি বললাম, যেটার ভয় পেয়েছি সেটায় হয়েছে। আমরা সীমাকে নিয়ে নদীর কলেজে গেলাম বিষয় টা দেখার জন্য। কিন্তু নদীর সাথে দেখা হয়নি। নদীর এক বান্ধবীর সাথে কথা হলে। সে আমাদের জানায় নদীর জন্য সবাইকে নজরে রেখেছে। নদী বের হতে পারবে না। কাল নদীর মা নদীকে নিয়ে যাবে।

নদী দুই দিন থেকে অনেক কান্না করছে। সজীব এর খুব মন খারাপ। রাগ করে আমাকে বলছে হোস্টেল সুপারকে আমি দেখে নিবো। আমি বললাম, এই বিষয় নিয়ে এখন কিছু করা যাবে না। নদী বাসায় গেলে দেখা হলে নদী কি বলে সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। আমার চলে আসলাম বাসায়। সীমাকে বললাম, কাল বিকালে নদীদের বাসায় যেতে। কিন্তু সীমা নদীকে বাসায় পায়নি। নদীদের বাসায় কেউ ছিলো না। এক মহিলাকে ওদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে। তিনি বলেন, নদীদের নানার বাড়ী বেড়াতে গেছেন। আমরা বিষয় টা ভালো ভাবে নিতে পাচ্ছিলাম না। সজীব আমাকে বলল, নদীর নানার ঠিকানা নিতে। আমি বললাম, কেন? তুই যাবি নাকি? সজীব বলল, আমি যাবো নদীর সাথে আমার দেখা করতেই হবে। আমার খুব খারাপ লাগছে।

আমি বললাম, চিন্তা করিস না। ওরা চলে আসবে। সজীব আসতে আসতে ভেঙ্গে পড়ছে। প্রতিদিন নদীদের বাড়ীতে যাচ্ছি। কয়েক দিন হলো নদী নানার বাড়ি থেকে আসতেছে না। সজীব খুব চিন্তা করছে। বিষয় আমারও খুব খারাপ লাগছে। প্রায় পনেরো দিন পর সীমার মাকে দেখা যায় রিক্সা দিয়ে তিনি আসতেছেন। কিন্তু নদীকে দেখতে পাচ্ছি না। আমরা সীমার সাথে যোগাযোগ করলাম সীমাকে নদীর বাড়ীতে যেতে বলি। সীমা নদীর বাড়ীতে গেলে। আমরা রাস্তায় অপেক্ষা করি। কিছুক্ষন সীমা বাসা থেকে বেরিয়ে আসে। সীমার মুখ দেখে আমি বুঝতে পারলাম। একটা কিছু হয়েছে নদীর। সীমা এসে বললো ভাইয়া সজীব ভাইকে বলেন নদীকে ভুলে যেতে, নদীর বিবাহ হয়ে গেছে। আমাদের আকাশ যেন ভেঙ্গে পড়ল। সজীব বিষয় টা বিশ্বাস করছে না। পাগলের মতো আচরণ করছে। সজিবকে অনেক বুঝালাম। আমার মনে একটাই প্রশ্ন ছিল। মানুষ কেন? এত নিষ্ঠুর আচরণ করতে পারে। নদীর বাবা মা এই নিষ্ঠুরতার কাছে হার মানলো এক পবিত্র ভালোবাসা।

সজীব আমাকে বলল, বন্ধু আমার কপালে এটাই লেখা ছিল। আমি বললাম, অনেক চেষ্টা করেছিস।তোর আর নদীর কোন দোষ নেই। আসতে নদীকে ভুলে যাওয়া চেষ্টা কর। সজীব বলল, আমি নদীকে কোন দিন ভুলতে পারবো না। নদীর সাথে সজীবের একদিন দেখা হয়েছিল। সেদিন সজীব ও নদী অনেক কেঁদে ছিলো। আমিও সেদিন ওদের ভালোবাসা দেখে কেঁদেছিলাম এবং সীমাও কেঁদে ছিলো। সেই দিন সমাপ্তি নদী ও সজীবের ভালোবাসা। তবে সুখবর হলো সজীব বর্তমানে একজন বাংলাদেশের সৈনিক।
এই গল্পের শেষে আরেকটি সুখবর দিতে চাই। বর্তমানে সজীবের স্ত্রী হচ্ছে সীমা।

(শেষ)

বি: দ্র: কিছু কথা বলে রাখি নদীর কোন দোষ ছিলনা। নদীর ধারণা ছিলো না ওর বাবা মা মিথ্যা কথা বলে নিয়ে যেয়ে বিবাহ দিবে। নদী আমাদের আগেই বলেছিল ওর বাবা মা সীমার কোন কথা মূল্য দিতো না। যাইহোক, আমার এই গল্পটি আশা করছি আপনাদের ভাল লেগেছে।

ধন্যবাদ সবাইকে,

🌹আমার পরিচয়🌹

ধন্যবাদ

@mosarofhosen