"শারীরিক অসুস্থতা, একাকিত্ব এবং জীবনের শিক্ষা"
হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।
জীবনের কিছু মুহূর্তে আমরা এমন অবস্থার মুখোমুখি হই যেখানে শারীরিক অসুস্থতা এবং মানসিক একাকীত্ব একসাথে আমাদের পরীক্ষা করে। গত কয়েকদিন ধরে আমি একটি কঠিন সময় পার করছি। ঠান্ডাজনিত কারণে শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। তিন-চার দিন হয়ে গেছে সর্দি এত বেড়েছে যে নাক দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে। কাশি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে গলা একদম ব্যথা হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে কাশির সাথে রক্ত বের হচ্ছে, যা আমাকে আরও আতঙ্কিত করে তুলছে।
গলার ব্যথার কারণে এখন কথা বলতে খুব কষ্ট হচ্ছে। এমনকি একটি শব্দও উচ্চারণ করতে গেলে মনে হয় গলাটা যেন ভেঙে পড়বে। শারীরিক দুর্বলতাও এমন পর্যায়ে যে দিনের বেশিরভাগ সময় বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়। এই অসুস্থতার সময়ে আরও বেশি অনুভব করছি যে আমি একা। ঢাকার মোহাম্মদপুরে বাসায় একা আছি।
আমার মা সিরাজগঞ্জে, পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও সেখানেই। ঢাকায় একা থাকার ফলে কোনো সেবাযত্ন পাচ্ছি না। যদি সিরাজগঞ্জে থাকতাম, হয়তো মা যত্ন করতেন অথবা প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি হতাম। কিন্তু এখন এখানে একা একাই নিজের যত্ন নিতে হচ্ছে। অসুস্থ অবস্থায় নিজের জন্য সবকিছু করা অনেক কঠিন।
ঢাকায় থাকার মূল কারণ আমার প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা। পরীক্ষা ছেড়ে বাড়ি যাওয়া সম্ভব নয়। তাই এই অবস্থার মধ্যেই আমাকে টিকে থাকতে হচ্ছে। মনটা খুবই খারাপ হয়ে যায় যখন বুঝতে পারি যে কেউ পাশে নেই। এমন সময়ে পরিবারের সান্নিধ্য কতটা জরুরি, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।
একা থাকার কারণে ঠিকমতো চিকিৎসা নেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। নিজের যতটা সম্ভব চেষ্টা করছি। কিছু ওষুধ খাচ্ছি এবং গরম পানি দিয়ে গার্গল করছি। কিন্তু অসুস্থতা এতটাই প্রকট যে এসবও তেমন কাজে আসছে না। ডাক্তার দেখানোর জন্য একা বাইরে যাওয়া এবং লম্বা লাইনে দাঁড়ানো আমার জন্য এখন অসম্ভব।
প্রতিদিনের কাজগুলোও আর করতে পারছি না। রান্না করা থেকে শুরু করে ঘর পরিষ্কার, সবকিছুই এখন আমার কাছে বিশাল চ্যালেঞ্জ মনে হচ্ছে। একা থাকার সময় আমাদের কতটা অসহায় বোধ হয়, তা এই সময়ে স্পষ্টভাবে উপলব্ধি করছি।
শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি মানসিক চাপও বেড়ে গেছে। পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করা প্রয়োজন, কিন্তু শরীরের দুর্বলতার কারণে তেমন কিছুই করতে পারছি না। ভয় হচ্ছে, যদি পরীক্ষায় ভালো না করতে পারি, তাহলে ফলাফল খারাপ হবে। এই দুশ্চিন্তা আমার অসুস্থতাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
আজকের এই পোস্টটি লিখতে সারাদিন লেগে গেছে। গলার ব্যথার কারণে ভয়েস টাইপিং করতে খুবই কষ্ট হচ্ছিল,তবুও অনেক সময় নিয়ে আস্তে আস্তে পোস্টটি লেখা শেষ করেছি। পোস্টটি লেখার মাধ্যমে কিছুটা সাহস এবং মানসিক শক্তি খুঁজে পেয়েছি। যদিও লিখতে খুব কষ্ট হয়েছে, তবুও নিজের অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করতে পেরে মনে হচ্ছে যে আমি একা নই।
আপনাদের কাছে আমার একটাই অনুরোধ, আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন আমাকে দ্রুত সুস্থতা দান করেন এবং এই কঠিন সময় কাটিয়ে উঠার শক্তি দেন। প্রতিটি মানুষের জীবনে কঠিন সময় আসে, তবে এই সময়গুলো আমাদের শক্তিশালী এবং ধৈর্যশীল করে তোলে।
এই অভিজ্ঞতা আমাকে আরও একবার উপলব্ধি করিয়েছে যে পরিবার এবং আপনজনদের উপস্থিতি জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তারা শুধু আমাদের শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবে শক্তি যোগায়। বর্তমানে, তাদের অভাবই আমাকে সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিচ্ছে।
আমি জানি, এই কঠিন সময়ও পেরিয়ে যাবে। শরীর সুস্থ হলে আবার আগের মতো জীবনে ফিরতে পারবো। এই পোস্টটি যারা পড়ছেন, তাদের কাছেও আমার একটাই অনুরোধ, আপনার পরিবারের পাশে থাকুন, বিশেষ করে যখন তারা অসুস্থ থাকে। আপনার একটুখানি সময় এবং যত্ন তাদের জন্য বিশাল সান্ত্বনা হতে পারে।
সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, 🤲যেন খুব শিগগিরই সুস্থ হয়ে উঠতে পারি এবং আবার নতুন উদ্যমে জীবনের পথে এগিয়ে যেতে পারি।
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
X-Promotion
ভাইয়া আপনার সুস্থতা কামনা করি। আসলে সুস্থতা হচ্ছে আল্লাহর বড় নেয়ামত। তবে ভাইয়া কাশির সাথে রক্ত বাইর হলে তো তাহলে খারাপের দিকে গেল আপনার অসুখ। তবে আপনি ভাল ডাক্তারি পরামর্শ নেন। আর অসুস্থ হলে তখন বোঝা যায় পরিবারের ভালবাসা এবং হেল্প কতটা জরুরী। আসলে আমরা সবাই সবার জন্য দোয়া করা দরকার।