"বিকেলের সোনালি আভায় যমুনার পাড়ে বন্ধুত্বের মুহূর্ত"
যমুনার পাড়ে বিকেল বেলা কাটানোর অভিজ্ঞতা সবসময়ই মনোমুগ্ধকর। এমনই একটি বিকেল ছিল যখন আমি, শিমুল আর শিহাব, আমার দুই প্রিয় বন্ধু, মিলে যমুনার পাড়ে ঘুরতে গিয়েছিলাম। সিরাজগঞ্জ শহর থেকে সামান্য দূরেই বয়ে চলা যমুনা নদী, যেন শহরবাসীর জন্য প্রকৃতির এক অমূল্য উপহার। প্রতিদিন বিকেল হতেই নদীর পাড়ে মানুষের ঢল নামে। শহর থেকে যেমন মানুষ আসে, তেমনি শহরের বাইরের মানুষও ছুটে আসে এখানকার প্রশান্তিময় পরিবেশ উপভোগ করতে।আমরা তিন বন্ধু মিলে যমুনা নদীর পাড়ে খুব সুন্দর একটি সময় অতিবাহিত করেছি।সুন্দর এই মুহূর্তটি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে আসলাম।চলুন তাহলে যমুনা নদীর পাড়ে ঘুরতে যাওয়ার ব্লগটি শুরু করে দেই।আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে...
কোন রকম পূর্বপরিকল্পনা ছাড়াই বিকেলের দিকে আমরা তিন বন্ধু মিলে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলাম যমুনার পাড়ে। দূর থেকে দেখা যাচ্ছিল নদীর মৃদু স্রোত। আমরা নদীর পাড়ে গিয়ে একটি বড় ট্রলারে উঠে বসলাম। ট্রলারটি নদীর পাড়ে বাঁধা ছিল, কিন্তু তাতে বসে থেকেও নদীর সৌন্দর্য খুব ভালোভাবে অনুভব করা যাচ্ছিল। বাতাসের শীতলতা, ঢেউয়ের মৃদু শব্দ, আর সেই সঙ্গে ছোট ছোট নৌকা মাঝ দিয়ে চলে যাওয়ার দৃশ্য, সব মিলিয়ে যেন এক অন্যরকম অনুভূতি।
ট্রলারে বসে আমরা অনেকক্ষণ নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করলাম। নদীর ওপারে সূর্য ধীরে ধীরে অস্ত যাচ্ছে, আর সেই আলো নদীর পানিতে প্রতিফলিত হয়ে চারপাশকে আরও মোহনীয় করে তুলেছিল। আমরা তিনজন মিলে অনেক মজা করলাম, হাসলাম, গল্প করলাম। আমার ফোন ছিল সাথে, তাই আমি কিছু মূহুর্ত বন্দী করতে শুরু করলাম। বিশেষ করে যখন দেখলাম ছোট ছোট নৌকা মাঝ নদী দিয়ে চলে যাচ্ছে, তখন মুহূর্তের মধ্যে ক্যামেরায় ধরে ফেললাম সেই দৃশ্যগুলো।
ওরা আমার কিছু ছবি তুলতে চেয়েছিল, কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, আমি খুব একটা সন্তুষ্ট হইনি। তবে বন্ধুরা যেমনই ছবি তুলুক, সেই মুহূর্তগুলোই মূল্যবান। শিমুল আর শিহাবও আমার ছবি তুলতে ব্যর্থ হলেও, আমি ওদের কিছু চমৎকার ছবি তুলতে পেরেছি, যা নিয়ে ওরা খুব খুশি।ওরা দুজন শুধু বারবার বলতে ছিল আমাকে ছবি তুলে দে।তাই আমি আশেপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য ছবি তোলা বন্ধ রেখে ওদের কিছু সুন্দর সুন্দর ছবি তুলে দেই।আসলে আমি যদি আমার বন্ধুবান্ধব নিয়ে কোথাও ঘুরতে বের হয় তাহলে ওদের সব ছবি আমার একাই তোলা লাগে।দিনশেষে দেখা যায় আমার নিজের একটি ভালো ছবিও খুঁজে পাওয়া যায় না।যাই হোক আমার বন্ধুদের ছবি তুলে দিতে আমার অনেক ভালো লাগে।
নদীর পাড়ে বসে প্রকৃতির সাথে এই সংযোগ আমাদের ব্যস্ত জীবন থেকে কিছু সময়ের জন্য মুক্তি দেয়। এখানে এসে সবকিছু ভুলে যেতে পারি, শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্যেই ডুবে যাই। যমুনার পাড়ে বসে নৌকা চলতে দেখা, ঢেউয়ের শব্দ শোনা, আর সেই সঙ্গে হালকা বাতাসের ছোঁয়া—সবকিছু মিলে আমাদের মনকে এক অন্যরকম প্রশান্তি দিয়েছিল।
অনেকক্ষণ পর, যখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো, তখন আমরা বাড়ির দিকে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। সন্ধ্যার সময় যমুনার পাড়ের আলোকিত পরিবেশও খুব সুন্দর হয়ে ওঠে। নদীর ওপারে সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে, চারপাশের আলো-আঁধারি পরিবেশ আমাদের ঘরে ফেরার জন্য প্রায় বাধ্য করল। কিন্তু সেই মুহূর্তগুলো আমাদের স্মৃতিতে চিরস্থায়ী হয়ে রইল। ট্রলার থেকে নেমে আমরা রাস্তার দিকে পা বাড়ালাম। কিছুদূর গিয়ে একটি চা দোকানে বসে একটু বিশ্রাম নিলাম। চায়ের কাপ হাতে নিয়ে সেই সন্ধ্যার পরিবেশ আর বন্ধুত্বের গল্পগুলো আমাদের ভেতর আরও মজবুত করে তুলেছিল।
আমাদের যমুনা নদীর পাড়ে কাটানো সময়গুলো সবসময়ই স্মরণীয়। বন্ধুত্বের এই সম্পর্কের বাঁধন আরও মজবুত হয়ে উঠল সেদিন। যখনই আমি সিরাজগঞ্জে থাকি, আমি আর আমার বন্ধুরা মাঝে মাঝেই যমুনার পাড়ে সময় কাটাতে যাই। এই সুন্দর বিকেলগুলো আমাদের জীবনের অন্যতম সেরা স্মৃতি হিসেবে রয়ে যাবে।বন্ধুদের নিয়ে যমুনা নদীর পাড়ে কাটানো সুন্দর এই মুহূর্তটি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। আশা করি আজকের ব্লগ আপনাদেরও অনেক ভালো লেগেছে।
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
ফোনের বিবরণ
মোবাইল | Samsung A33 (5G) |
---|---|
ধরণ | বিকেলের সোনালি আভায় যমুনার পাড়ে বন্ধুত্বের মুহূর্ত |
ক্যমেরা মডেল | A33 (48+8+5+2) |
ক্যাপচার | @mohamad786 |
অবস্থান | সিরাজগঞ্জ- বাংলাদেশ |
https://x.com/mohamad786FA/status/1838497325838410075?t=VDv-db8mWK0r9yJ3ptjKMg&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ফ্রেন্ড দের সাথে কোথাও ঘুরতে গেলে আমারও এমন হয়। সব সময় আমি ওদের সুন্দর ছবি তুলে দেই দিনশেষে আমার নিজের একটা সুন্দর ছবি খুঁজে পাওয়া যায় না। আপনাদের যমুনা নদীর পাড়ে কাটানো মুহূর্ত গুলো দেখে ভালো লাগলো। চারপাশের প্রকৃতিটা বেশ সুন্দর এবং মনোরম পরিবেশ। এ ধরনের জায়গা গুলোতে সময় কাটাতে পারলে একটা প্রশান্তি লাগে। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভালো লাগলো। মুহূর্তগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
এই প্রচন্ড গরমে বন্ধুদের নিয়ে যমুনা নদীর তীরে নির্মল বাতাসের মাঝে কাটানো অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত্য আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে আমার খুবই ভালো লাগলো। নদীতে চলাচলরতো বোটগুলো দেখে আমার খুবই ইচ্ছা করছে বোটে উঠতে। তাছাড়া আকাশ এবং নদীর মিলিত অবস্থায় ফটোগ্রাফিগুলো কিন্তু বেশ দারুন হয়েছে । সবকিছু মিলিয়ে অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত পার করেছেন। আর এই সুন্দর মুহূর্তটা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আমাদের এই সুন্দর এই মুহূর্ত আপনার ভালো লেগেছে শুনে খুবই খুশি হলাম ভাইয়া।
যমুনার পড়ে বন্ধুদের সাথে বিকেলের মুহূর্তগুলো উপভোগ করতে খুবই ভালো লাগে। আপনি অসাধারণ কিছু মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। সেই মুহূর্তের ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করলেন। দেখে ভালো লাগলো।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
আজকে বিকেল বেলা আমিও নদীর পাড়ে গিয়েছিলাম। আসলে বিকেল বেলা নদীর পাড়ে মুহূর্তগুলো অনেক বেশি ভালো লাগে। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখেই বোঝা যাচ্ছে আপনারা অনেক আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করেছেন।
সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
নদীর পাড়ে টলারের মধ্যে বসে খুবই সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছেন আপনারা। আপনার মত আমারও একই অবস্থা হয়েছে কেউ যদি আমাকে ছবি তুলে দিতে বলে আমি অনেক সুন্দর করে ছবি তুলে দি কিন্তু আমি যদি কাউকে ছবি তুলে দিতে বলি তখন সে ছবিগুলো দেখার মত হয় না। যাই হোক আপনার পোস্টটি পড়ে আমার কাছে খুবই ভালো লাগলো।