||লাইফ স্টাইল||বড়ি দেওয়ার কিছু মুহূর্ত||১০%@shy-fox এর জন্য
অঅজ
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ পরিবার
আমি @mdemaislam00 বাংলাদেশ থেকে
আজ , বৃহস্পতিবার, নভেম্বর / ১৪ /২০২৪
হ্যালো বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আশাকরি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবৃন্দু আল্লাহর রহমতে ভালো আছে। আমার নাম ইমা অন্য দিনের মতো আজও আমি আপনাদের সাথে নতুন কিছু শেয়ার করতে এসেছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে নিজের হাতে বড়ি দেওয়ার কিছু মুহূর্ত শেয়ার করব। শীতকাল আসলেই গ্রাম অঞ্চলে যেন বড়ি দেওয়ার ধুম পড়ে যায়। শহরে বড়ি দেওয়া হয় নাকি আমি ঠিক তেমন একটা বলতে পারছি না ।কিন্তু গ্রাম অঞ্চলে কুমড়োর বড়ি শীতকাল আসলে সকলেই দিয়ে থাকে । কুমড়োর বড়ি খেতে আমার অনেক ভালো লাগে। এটায় যেন অন্যরকম একটা স্বাদ পাওয়া যায় ।বিশেষ করে যখন প্রচুর শীত পড়ে তখন এই বুড়ি দেওয়া হয়। অনেকে হয়তো জানে না কুমড়োর বড়ি কিভাবে দিতে হয় ।আমিও আগে জানতাম না ইউটিউবে কুমড়ার বড়ি বলে সার্চ দিলে এর ফুল প্রসেস চলে আসে ।সেখান থেকেই দেখে আমি কুমড়োর বড়ি দেওয়া শিখেছি । আবার আমার আম্মুর কাছ থেকেও টুকটাক শিখেছি । এটা দিতে তেমন একটা সময় লাগে না। শুধুমাত্র এগুলো প্রস্তুত করতে অনেক সময় লাগে এবং অনেক কষ্ট হয় ।এগুলো নিখুঁতভাবে করতে হয় তা না হলে তেমন একটা বড়ি ভালো হয় না।
আমাদের বাড়িতে অনেকগুলো কুমড়ো ধরেছিল। সে কুমড়ো গুলো অনেক আগে থেকেই পেকে গিয়েছে ।কিন্তু সেগুলো বেশিদিন সংরক্ষণ করে রাখতে পারেনি ।আমাদের গাছে প্রায় সাতটা কুমড়ো ধরেছিল সেগুলো পছতে পছতে আর দুটোতে দাঁড়িয়ে আছে ।তাই আমি ভাবলাম হালকা একটু শীতে পুরনো কালাই দিয়ে কিছু বড়ি দিব ।বড়িগুলো দিতে আমার পক্ষে একা সম্ভব নয়। তাই আমার আম্মু আমাকে সাহায্য করেছে। আমার আম্মু আর আমি প্রথমে কুমড়ো গুলো অনেক সুন্দর ভাবে কুরে নিয়েছি। কুরে নেওয়ার পর ডালগুলো অনেকক্ষণ ভিজিয়ে রেখে দিয়েছিলাম। সেগুলো পরিষ্কার করে ধুয়ে নিয়েছি। ধুয়ে নেওয়ার পর কুমড়ো এবং ডাল মেশিন দিয়ে কুটে নিয়েছি। এগুলো করতে অনেক কষ্ট হয় এবং সময়ও লাগে। তাই অনেকে এগুলো তেমন একটা করতে চাই না ।অনেকেই আবার বাজার থেকে বড়ি কিনে এনে খাই ।কিন্তু বাজারের বড়িগুলো তেমন একটা মজাদার হয় না। নিজের হাতে তৈরি করে জিনিস খাওয়ার মজাই আলাদা ।তাই আমি সবকিছু নিজের হাতে তৈরি করে খেতে বেশি পছন্দ করে থাকি।
মেশিন থেকে কুটে আনার পর কুমড়ো এবং ডায়ুল গুলো অনেক সুন্দর ভাবে অনেকক্ষণ ধরে ছানতে হয়। দেখবেন ছানতে ছানতে কুমড়ো ও ডালগুলো অনেক সাদা হয়ে যাবে এবং অনেক পাতলা হয়ে যাবে ।কিছুটা ফেনার মতো হয়ে যাবে ।বড়িতে ডাল ব্যবহার করার কারণে এখান থেকে আমরা আমিষের চাহিদা পূরণ করতে পারব ।বিশেষ করে মাছ ও বড়ি দিয়ে রান্না করলে খেতে অনেক ভালো লাগে ।আমার আম্মু অনেক সময় মাংস দিয়েও কুমড়ার বড়ি রান্না করতো। তখন খেতে অনেক মজাদার লাগতো ।সেই কথাগুলো আমার আজও মনে পড়ে। অনেকে আবার কুমড়ো ও ডালের সাথে পেঁয়াজও ব্যবহার করে থাকে ।পেঁয়াজ দিলে বড়িগুলো খেতে একটু টকটক লাগে। অনেকে আবার পেঁয়াজের বড়ি খেতে তেমন একটা পছন্দ করে না ।আমারও তেমন একটা পেঁয়াজের বড়ি খেতে ভালো লাগে না ।আমার সব থেকে কুমড়োর বড়ি খেতে বেশি ভালো লাগে।
প্রথমে যখন আমি বুড়ি বসাতে শুরু করেছিলাম তখন তেমন একটা ভালো হচ্ছিল না। কোনটা ছোট কোনটা আবার অনেক বড় হয়ে গিয়েছিল ।আবার কোনটা বসেও গিয়েছিল। অনেকবার চেষ্টা করার পর অবশেষে কিছুটা বড়ি বসাতে পারলাম। সব থেকে যখন বুড়ি বসাতে হয় তখন এই সময়টা অনেক ভালো লাগে। কেননা কোনোটা অনেক ছোট আবার কোনোটা অনেক বড় ।আবার অনেকেই অনেক সুন্দরভাবে এক নেবেলের বড়ি বসাতে পারে। অনেকে আবার আমার আম্মুকে ডেকে নিয়ে যায় বড়ি বসানোর জন্য ।আমার আম্মুর কাছ থেকে আমি আস্তে আস্তে বড়ি বসানো শিখেছি। এখন অনেক রোদ পরছে তাই আমি বড়িরসাইজ গুলো একটু বড় করেছি। খুব তাড়াতাড়ি বড়িগুলো শুকিয়ে যাবে। যখন পচন্ড শীত পড়ে তখন বড়ির সাইজ গুলো একটু ছোট করতে হয় ।তাহলে শুকাতে অনেক সুবিধা হয়ে থাকে।
আমাদের গ্রাম অঞ্চলের সব মেয়েরাই হয়তো এই বড়ি বসানোর প্রসেসটা অনেক সুন্দর ভাবে জানি। কিভাবে এটা প্রস্তুত করতে হয় সেই পসেসটাও জানে । অনেকেই হয়তো জানেন না কিন্তু আমাদের ধাপগুলো অনুসরণ করলে খুব সহজেই বড়ি বসানোর প্রসেসটা জানতে পারবেন। এখন আধুনিক জিনিস এর কারণে মানুষ খুব সহজেই বড়ি বানিয়ে খেতে পারছে। আগে বুড়ি বানাতে হলে সেগুলো পাটার সাহায্যে বেটে তৈরি করতে হতো। কিন্তু এখন বিভিন্ন মেশিনের কারণে মেশিন থেকে কুটে এনে বড়ি তৈরি করে। আমার আজও মনে আছে আমার আম্মুরা সন্ধ্যা বেলা হলে বসে পড়তো ডাল ও কুমড়ো বাটার জন্য। প্রায় অর্ধেক রাত পর্যন্ত সেগুলো বাটতো এবং সকালে উঠে আবারো সেগুলো ভালোভাবে ছানতে হতো। হাতও ব্যথা হয়ে যেত ।কিন্তু এখন আধুনিক মেশিনের কারণে খুব সহজেই মানুষ একদিনই বুড়ি বানিয়ে সেগুলো রোদে শুকিয়ে খেতে পারছে। ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে রাখলে অনেকদিন সংরক্ষণ করে রাখা যায় ।অনেকে আবার ফ্রিজের নরমালে রেখে দেয় ।ফ্রিজের নরমালে রেখে দিলে সেগুলো অনেক ভালো থাকে এবং সেগুলো সিজেন থেকে আরেক সিজেনেও খাওয়া যায় ।আশা করি নিজের হাতে বুড়ি বসানোর কিছু মুহূর্ত আপনাদের ভালো লাগবে ?কতটা ভালো লেগেছে আশা করি কমেন্টে জানাবেন?
🌹 ধন্যবাদ সবাইকে🌹
ব্লগার | @mdemaislam00 |
---|---|
ব্লগিং ডিভাইস | infinix note 11pro |
অনুবাদে | মোছাঃ ইমা খাতুন |
শ্রেণী | লাইফ স্টাইল |
বাহ আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর ভাবে বড়ি দেওয়ার কিছু মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। শীতকালে গ্রাম অঞ্চলে প্রত্যেকটা বাড়িতেই বড়ি দেওয়ার ধুম পড়ে যায়। তবে আমাদের এলাকায় এখনো বড়ি দেওয়া শুরু হয়নি। ধন্যবাদ এত সুন্দর ভাবে বড়ি দেওয়ার মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া শীতকাল আসলেই পিঠার মতো কুমড়োর বড়ি সব বাড়িতে দেওয়ার ধুম পড়ে যায়।
এইভাবে বড়ি বসানো আমাদের এদিকে বহু যুগ আগে হত। কিন্তু এখন লোহার বা টিনের বিভিন্ন সাইজের নজাল যাকে বাংলায় চোঙ বলা হয়, সেইগুলো পাওয়া যায়। যার ফলে যে কোন বড়ি বসাতে খুবই কম সময় লাগে। আপনার বড়ির পোস্ট দেখে মনে হচ্ছে শীতকাল ভালই এসে গেছে।
জি আপু আমাদের এদিকে এভাবে বুড়ি অনেক আগে থেকে দেওয়া হয়।
আগে চাল কুমড়ার বড়ি বানাতে বেশ কষ্ট হতো। এখন আধুনিক মেশিন হওয়ার কারণে অনেকটা সুবিধা হয়ে গেছে। আমার খুবই ভালো লাগে এই বড়ি তৈরি করতে এবং এই বড়ি দিয়ে রেসিপি তৈরি করছে।
আমারও অনেক ভালো লাগে আপু এই বড়ি তৈরি করতে এবং খেতে।
বাজারের কেনা বড়ির থেকে নিজের হাতে বানানো বড়ির স্বাদ এবং আনন্দ অবশ্যই বহুগুণ! আমার মা কেও ছোটবেলায় এমন সময়ে বড়ি বানাতে দেখতাম।তাই আমি জানি এই ডাল ফেটানোটা কত সময়সাপেক্ষ এবং কষ্টের বিষয়!! এখন আর এতক্ষণ সময় নিয়ে বাসায় করতে পারে না। আজ বহুদিন পর আপনার পোষ্ট এর মাধ্যমে পুরো প্রসেস আর নানা ছবি দেখে বেশ নস্টালজিক হয়ে গেলাম।
আসলেই বড়ি দেওয়া অনেক কষ্ট এবং সময়ের ব্যাপার। অনেকেই ঝামেলা ভেবে কুমড়ার বড়ি দেয় না।
এই বড়ি জিনিসটা বেশ কয়েকবার কয়েকটা পোস্টে দেখেছিলাম তবে আমার কখনো এগুলা খাওয়া হয়নি। আজকে এই বড়ি দেওয়ার মুহূর্তগুলো দেখে ভালো লাগলো। এগুলো নিশ্চয়ই অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। হাতের সাহায্য গুলো করা সত্যিই কষ্টের। দারুন একটা পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
অনেকেই জানেনা কিভাবে কুমড়োর বড়ি দিতে হয়। আবার অনেকেই এই বডি খায়নি কিন্তু যারা খেয়েছে তারা এই বড়ির স্বাদ কখনোই ভুলবে না।
কুমড়ার বড়ি দেয়ার মুহূর্ত গ্রামে গেলেই চোখে পড়ে। শীত আসলেই গ্রাম বাংলার প্রত্যেকটি ঘরে এই বড়ি দেওয়ার ধুম পড়ে যায়। আমার মা ও প্রত্যেক বছর বড়ি দিয়ে থাকে। এই বড়িগুলো দিয়ে যেকোনো রেসিপি রান্না করলে ভীষণ সুস্বাদু হয়। আপনার পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলো।
আসলে আপু শীতকাল আসলে গ্রামে যেন বড়ি দেওয়ার ধুম পড়ে যায়। এই সময়টা আমার কাছে অনেক ভালো লাগে।