একজন ভুট্টা বিক্রেতার গল্প।

in আমার বাংলা ব্লগ5 days ago

হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@md-razu বাংলাদেশের নাগরিক।

আজ -১৭ই,আষাঢ়| ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |সোমবার|বর্ষাকাল |



আমি রাজু আহমেদ।আমার ইউজার নাম @md-razu।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।

indigenous-7979876_1280.webp

Source



ভুট্টা পোড়ানো ।।
device:redmi note 10
What's 3 Word Location:
https://w3w.co/hugs.escorting.mops


তাহলে চলুন শুরু করি


আমাদের দেশে পথে চলতে গেলে কত রকম পেশার সাথে পরিচয় হওয়া সম্ভব। ঢাকা শহরের রাস্তার দুই ধার দিয়ে ফুটপাতে বিভিন্ন ধরনের দোকান দেখা যায়। এই দোকানগুলোতে বিভিন্ন ধরনের জিনিস বিক্রি হয়ে থাকে। ঝাল মুড়ি, চটপটি, ফুচকা, ভুট্টা পুড়ানো ,বাদাম, আখের রস বিক্রি ।আরো নানা ধরনের হরেক রকম দোকান দেখা যায়। আজ এক বিচিত্র পেশার গল্প আপনাদের শোনাতে যাচ্ছি।আজকের বিচিত্র পেশার মানুষটার নাম নবী হোসেন, বাড়ি ভৈরবে। বছর কয়েক আগে ঢাকা এসেছিলেন একটা ভিন্ন পরিস্থিতিতে। বিদেশ যাবার জন্য তিনি টাকা দিয়েছিলেন এক রিক্রুটিং অফিসে এবং তখন তিনি পেশায় ছিলেন একজন দর্জি। ভৈরবে তিনি কাপড় সেলাইয়ের কাজ করতেন। ঢাকা এসে তিনি বুঝতে পারলেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন, সেই টাকা গুলোর কিছুটা হাত ছাড়া হলো, কিছু টাকা পেয়েছেন, ভিসা না পাওয়াতে তার আর বিদেশ যাওয়া হলো না। সেই থেকেই ঢাকায় পড়ে রইলেন।হ্যাঁ, ইনি হচ্ছেন নবী হোসেন। বছরে এখন প্রায় ৬ পদের ব্যবসা করেন। দুই মাস পরে পরে একটা ব্যবসা পাল্টান এবং এটা করেন সিজন ও যা বিক্রি করেন তার উপর বা পাওয়ার ভিত্তি করেই। বর্তমান বা এই দুই মাস তিনি ভুট্টা পুড়িয়ে বিক্রি করেন। তবে আমি নবী ভাইকে বেশি ভুট্টা বিক্রি করতেই দেখেছি বলে জানালে তিনি আমাকে রাস্তার অপর পাড় দেখিয়ে জানান ওই পাড়ে বসি যখন তখন হয়ত আমাকে দেখেন না। হ্যাঁ, আমি রাস্তার ওই পাড়ে কম যাই।
ভুট্টা বিক্রিটা একটু শীত পড়লে বেশি হয় বলে জানালেন, তা ছাড়া কিছু বাঁধা ধরা কাষ্টমার আছেন যারা ভুট্টা পোড়া খেতে পছন্দ করেন, তারা তার নিয়মিত কাষ্টমার। এছাড়া কিছু কাষ্টমার আছেন যারা কাঁচা ভুট্টা কিনে নিয়ে বাসায় সিদ্ধ করে বা নানান রান্নায় ব্যবহার করেন, এই কাষ্টমারাও বেশ ভাল। এরকম পার্মানেন্ট কাস্টমার থাকলে দোকানদারদের বিক্রি সবসময় ভালো হয়ে থাকে। আমরা বাইরে বের হলে নানা ধরনের জিনিস খেয়ে থাকি। আসলে এই খাবারগুলো দোকানদাররা আমাদের কাছে বিক্রি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে।আশুলিয়া বাজার থেকে কাঁচা ভুট্টা ও কয়লা যোগাড় করে থাকেন।


corn-3705687_1280.jpg


source


সাধারণত সকাল বেলা তেমন কাজ থাকে না, এই সময়েই কয়েক ঘন্টার জন্য বাজারে যান। বিকেল ৪ থেকে ৫টা দোকান সাজাতে শুরু করেন। বিক্রিটা সাধারণত ৬ ,৭টার দিকে ভাল হয়। কিছু পুড়িয়ে রাখেন এবং কিছু কাষ্টমার দেখিয়ে দিলেই পোড়ান। পুড়িয়ে রাখা গুলো দৌড়ের উপর কাষ্টমারদের জন্য, এরা অপেক্ষা করতে চান না বা পারেন না। তবে বেশির ভাগ কাষ্টমার পছন্দ করে ভুট্টা পুড়াতে দেন। দাম মোটামুটি ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা প্রতিটা। আমার মনে হয় ঊর্ধ্বমুখী বাজারের সময় ভুট্টার দাম কমই হয়ে গেছে। প্রতি পেজ ভুট্টার দাম ৫০ টাকা করে রাখা উচিত।এছাড়া আর এক ধরনের ভুট্টা আছে খুব কচি, নরম। এটাও ভাল চলে। এটা সাইজ ভেদে ২০ থেকে ২৫ টাকাতে বিক্রি করেন। ভূট্টা পোড়াতে সামান্য লবন পানি ব্যবহার করতে হয় এবং আগুনের তাপে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পোড়াতে হয়। খাবার সময় কেহ চাইলে সামান্য বিট লবন ভূট্টার উপর ছিটিয়ে দেয়া হয়। নবী ভাইয়ের এই ভোটটা পুরানো খেতা আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো। অবশ্য আমি যখন আশুলিয়া তে আসি এই ভুট্টা পোড়ানো খেয়ে থাকি।এই আশুলিয়াতে কেও আর নেই বলে তিনিই একমাত্র এবং এইজন্য বিক্রি ভালো। দিনে খরচা বাদ দিয়ে চারশত টাকা লাভ থাকে। সুযোগ পেলে বাড়িতে টাকা পাঠান এবং চলে যান। স্ত্রী ও ছেলে মেয়ে আছে তাদের খরচ যোগাড় করতে হয়। তবে বিক্রি ভাল না হলে বা আবহাওয়া খারাপ হলে সেদিন মাটি হয়ে যায়। আগের দিনের লাভ দিয়েই চলতে হয়।


pop-corn-785074_1280.jpg


source


বাজার করা, ব্যবসা সাজানো এবং সারাক্ষন কাজের মধ্যে লেগে থাকার একটা আনন্দ আছে বলে জানালেন তিনি। বেকাররা সময় কি করে কাটায় তা তিনি ভাবতে পারেন না!
হাসতে হাসতে বললাম, দর্জির ব্যবসায় ফিরে যাবেন না। নবী ভাই জানালেন এখন আর ফিরে যাবার উপায় নেই, চোখে এখন আর সুই সুতা দেখি না। মৌসুমী বিভিন্ন ধরনের জিনিস বিক্রি করে যদি বেশি টাকা আয় করা যায় তাহলে দর্জির কাজ না করাই ভালো আমার মতে। দোয়া করি ভাই যেন সুখে শান্তিতে জীবন কাটাতে পারে।ছবি তোলা এবং ব্যবসার ঘটনা অনলাইনে প্রকাশ করার কথা জানালে, হেসে ফেললেন।এই দুনিয়াতে আমি নাকি তার প্রথম ছবি তুলতে চেয়েছি আমিও না হেসে পারি নাই।নবী ভাই এগিয়ে চলুন। আপনাদের সততা এই জাতি একদিন মুল্যায়ন করবেই আজ এই পর্যন্তই সামনের দিনে নতুন কোন একটা পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব ।সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।


corn-3663086_1280.jpg


source




আমার পরিচয়

1719589486989-01.jpeg

আমি মো: রাজু আহমেদ, আমি একজন ছাত্র। আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যালে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এ লেখাপড়া করছি। আমি একজন ভ্রমণ প্রিয় মানুষ। প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়াতে ভীষণ পছন্দ করি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, রান্না করতে, বই পড়তে, কবিতা পড়তে, খেলাধুলা করতে খুবই পছন্দ করি।স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ করতে অনেক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।


ধন্যবাদ সবাইকে


standard_Discord_Zip.gif

Sort:  
 5 days ago 

আপনার ভুট্টা বিক্রেতার গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে ভাইয়া মানুষের জীবনে কখন কি ঘটে বুঝা মুশকিল তবে আমাদের দেশে বিদেশে নেবার নামে অনেক হয়রানি হতে হয় সকলকে।যাইহোক অবশেষে ভুট্টা বিক্রেতা সব কিছু ভুলে নিজের মতো করে চলছে এটাই অনেক। আপনি তার প্রথম ছবি তুলেছেন জেনে অনেক ভালো লাগলো।

 5 days ago 

ভাইয়া আপনি নবী ভাইয়ের ভুট্টা বিক্রির খুব সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করেছেন। বাস্তবধর্মী এই গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ঢাকা শহরে নবী ভাইয়ের মতো এমন হাজারো মানুষ রয়েছে যাদের জীবনের গল্প গুলো মাটির নিচে চাপা পড়ে রয়েছে। তাদের গল্প প্রকাশ করার মতো কোনো মানুষ নেই। তারা প্রতিনিয়ত এভাবেই তাদের জীবিকা নির্বাহ করে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে যখন তাদের মতো কোনো মানুষের জীবনের গল্প শুনা হয় তখন সত্যিই খুব কষ্ট লাগে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 56662.37
ETH 2982.22
USDT 1.00
SBD 2.15