গল্প পোস্ট-ভালোবাসা থাকলে সব কিছু জয় করা সম্ভব || written by@maksudakar ||

in আমার বাংলা ব্লগlast year (edited)

আসসালামু আলাইকুম

ভালোবাসা থাকলে সব কিছু জয় করা সম্ভব

শুভ সকাল ভালোবাসার আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবার। দিনশেষে ভালো থাকাটা সবার কাছেই শ্রেষ্ঠ। আর নিজের জীবন কে সুন্দর আর সুস্থভাবে পরিচালিত করতে আমরা সবাই বেশ ভালোবাসি। ভালো থাকাই হলো সবার চাওয়া। কেউই চায় না জীবনে খারাপ সময় আসুক। তাই ভালো থাকার জন্যই সবাই প্রতিনিয়ত নিজের সাথে যুদ্ধ করে যায়। যুদ্ধ করে যায় সময়ের সাথে। আর যুদ্ধ করে যায় নৈতিকতার সাথে। এরই মাঝে সে কখনও হারে বা কখনও জিতে।

সেই পৃথিবীর জন্ম লগ্ন হতেই ভালোবাসা বা প্রেম মানুষের মন বা হৃদয়ের সাথে মিশে আছে।ভালোবাসা ছাড়া পৃথিবীতে বেচেঁ থাকাটাই যে কঠিন। নারী সুন্দর ভালোবাসায়। আর নারী সুন্দর মাতৃত্বে। মাতৃত্বের স্বাদ যদি নারী না পায় তাহলে তার নারীত্ব অপূর্ণ রয়ে যায়। একমাত্র নারী বুঝে যে মাতৃত্বের স্বাদ কতটা প্রিয় তার কাছে। আর নারী যদি মাতৃত্বের স্বাদ না পায় তাহলে তার জীবনই বৃথা। কিন্তু তবুও তো নারী বাচেঁ। তাকে বেচেঁ থাকতে হয় পৃথিবীতে হাজারও কষ্ট সহ্য করে। কারন পৃথিবীর যত সমস্যার মূলেই যে নারী। সন্তান জন্ম না দিলেও তা নারীরই দোষ। একটি সন্তান পৃথিবীতে না আসার জন্য কিন্তু পুরুষ কখনও দায়ী হয় না। আর পুরুষ কে কেউ কখনও দায়ী করেও না। আজ আবার চলে আসলাম নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে। হুম আজও আমি আপনাদের মাঝে নতুন আরও একটি গল্প শেয়ার করবো। আশা করি আমার আজকের গল্পটিও আপনাদের বেশ ভালো লাগবে। ছুয়েঁ দিবে আপনাদের মন কে কিছু সময়ের জন্য।

love-3497782_1280.png

source

নিশি বেশ দায়িত্বশীল একজন রমনী। জীবনের কাছে কখনও সে পরাজয় মানতে শিখেনি। শিখেনি অন্যায়ের সাথে আপোষ করতে। ভাগ্যের পরিহাসে নিশির উপর তার পরিবারের দেখাশুনা করার দায়িত্ব পড়ে। নিশি একজন স্কুল শিক্ষিকা। স্কুলে শিক্ষকতা করার পাশাপাশি বাড়িতে কিছু প্রাইভেট ছাত্রছাত্রীও পড়ায় সে। আর এভাবেই যাচ্ছিল নিশির জীবন। জীবনে চলার পথে যে কতবার প্রেমের হাতছানি পেয়েছে নিশি তার হিসাব হয়তো রাখেনি সে। কিন্তু জীবনের তাগিদে কখনও এসব হাতছানিতে সে নিজেকে সুপে দেননি। কিন্তু মানুষ তো আর এভাবে চলতে পারে না। এক সময়ে পরিবার বা পাড়া প্রতিবেশীর চাপে নিশি কে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

বেশ খোঁজাখুঁজির পর পরিচিত এক পারিবারের মাধ্যমে নিশির কপালে একজন ভালো বর জুটে। বিয়ের পর নিশি প্রাইভেট টিউশনি সব ছেড়ে দেয়। কারন সংসার আর চাকরি সব মিলিয়ে নিশি হিমশিম খেয়ে যায়। আর নিশির কিন্তু একটু লেট করেই বিয়ে হয়। বিয়ের পর বেশ কয়েক মাস কেটে যায়, কিন্তু নিশির ঘরে কোন সন্তান আসার নাম নেই। আর এ নিয়ে সমাজ পাড়া প্রতিবেশী আর শ্বশুড় বাড়ীর মানুষের কথা শুনতে শুনতে নিশির জীবন তেজপাতা হয়ে যায়। এভাবে বিয়ের ছয় মাস পাড় হওয়ার পর নিশি একজন ভালো ডাক্তার দেখান। ডাক্তার কোন পরীক্ষা না করেই নিশিকে কনসিভ করার ঔষধ দেন। নিশি বেশ নিয়ম মেনে ডাক্তারের পরামর্শ গুলো মেনে চলে। কারন নিশির জীবনেও একটি সন্তানের দরকার। আর এভাবেই কেটে যায় নিশির জীবনের কয়েকটি দিন।

দেখতে দেখতে বিয়ের এক বছর পার হয়ে যায়। অবশেষে নিশি সিদ্ধান্ত নেয় যে সে ডাক্তার পরিবর্তন করবে। এবার নিশি একজন ইন্ডিয়ার ডাক্তার দেখান। ডাক্তার সাহেব তাদের সকল কথা শুনে নিশি এবং তার স্বামীর কিছু টেষ্ট করতে দেয়। কিন্তু না এখানেও ডাক্তার সাহেব কোন সমস্যা পেলেন না। তাই ডাক্তার সাহেব তাদের কে কিছু ঔষধ দিয়ে দেন এবং সবসময় ডাক্তারী চিকিৎসায় থাকতে বলেন। এবারও নিশি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খায় এবং নিয়ম মেনে চলে। কিন্তু বহুদিন হয়ে যাওয়ার পরও সন্তান আসার কোন নাম নেই।

এদিকে নিশির শ্বশুর বাড়ি থেকে চাপ আসতে থাকে সন্তানের জন্য। তারা বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করে নিশির স্বামীকে বুঝানোর আরও একটি বিয়ে করার জন্য। কিন্তু নিশির স্বামী কিছুতেই তাদের কথায় কান দেয় না। সে এতদিনে নিশিকে অনেক ভালোবেসে ফেলে। নিশির স্বামীর কথা সন্তান না হলে সমস্যা নেই। আল্লাহ যেমন চায় তেমন হবে। সে নিশি কে ছাড়া থাকতে পারবে না। পরিবারের কথা কিন্তু নিশির স্বামী কিছুতেই শুনবে না। আর এভাবেই চলে নিশিদের সংসার। একদিকে সন্তানের জন্য হাহাকার। আর অন্যদিকে স্বামীর ভালোবাসা কে অবলম্বন করে নিশি কাটিয়ে দেয় তার জীবন।

এক সময় নিশি বেশ অসুস্থ হয়ে পড়ে। অনেক ডাক্তার দেখানো হয়। নিশি যেন কিছুতেই সুস্থ হচিছল না। এই ডাক্তার তো সেই ডাক্তার। ঔষধ খেতে খেতে অবশেষে এক সময়ে নিশি অতিষ্ট হয়ে পড়ে। কিন্তু নিশি সুস্থ হয় না। চাকরি বাকরি সব যাওয়ার উপায় হয়। প্রতিদিন নিশি শুধু কাদেঁ আর কাঁদে। ঘরের কাজের প্রতি তার কোন মন বসে না। কি করবে নিশি। আজকাল স্বামীর সাথেও বেশ খারাপ আচরণ করে নিশি। আবার যখন বুঝতে পারে তখন ক্ষমাও চায়। মাঝে মাঝে হঠাৎ রেগেও যায় সে। আর এভাবেই যাচিছল তাদের জীবন।

নিশির স্বামী নিশি কে অনেক ভালোবাসে। তাই সে নিশির এমন অবস্থা দেখে অনেক কষ্ট পায়। তাই একদিন নিশির স্বামী মসজিদে নামাযে গিয়ে ইমাম হুজুরের সাথে আলোচনা করেন নিশির বিষয়টি নিয়ে। সেই লোকটি আবার বেশ ভালো এবং মানুষের উপকারের জন্য পানি পোড়া দেয়। দোয়া কালাম দেয়। নিশির স্বামীর মুখে এসব কথা শুনে তিনি নিশির বিষয়টি একটু পরীক্ষা করেন। এরপর দিন তিনি নিশির স্বামী কে জানিয়ে দেয় যে নিশিকে কুফুরী বান মারা হয়েছে। যাতে করে নিশি অসুস্থ হতে হতে মারা যায়। তারপর তিনি একজন ভালো আলেমের ঠিকানা দিলে নিশির স্বামী নিশির চিকিৎসা ওনাকে দিয়ে করায়। আজ নিশি অনেক ভালো আছেন।

নিশি এবং নিশির স্বামী কিন্তু বেশ বুঝতে পারে যে এমন ক্ষতি কে করতে পারে। তাই তারা সম্পর্ক থাকলেও এখন থেকে দূরে দূরে থাকে। বেশ কয়েক বছর পর নিশির ঘর আলো করে একটি পুত্র সন্তান আসে। আর সেই সন্তান নিয়ে নিশি ও তার স্বামী বেশ সুন্দর জীবন কাটায়।

আজ এখানেই শেষ করছি। কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার আজকের গল্পটি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগা আর মন্দ লাগা মন্তব্যের মাধ্যমে জানতে পারবো। সকলেই ভালো থাকবেন।

❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️

image.png

Add a heading (1).png

image.png

image.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!

 last year 

সুন্দর একটি গল্প আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। নিশির স্বামী তার সুস্থতার জন্য ভালোর জন্য মসজিদে ইমামের কাছ থেকে দোয়া পাঠ করা পানি নিয়েছে। পাশাপাশি আর বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। আসলে সমাজের সচরাচর অনেক ঘটনা আমাদের চোখে আসে তবে যেখানে ভালোবাসা রয়েছে সেখানে সত্যিই সুন্দর একটা পরিবেশ রয়েছে যেখানে ভালোবাসা নেই সেখানে সুন্দর পরিবেশ তৈরি হয় না। যাইহোক ঘটনা পড়ে বেশ ভালো লাগলো।

 last year 

ঠিকই বলেছেন যেখানে ভালোবাসা নেই সেখানে সুন্দর পরিবেশ তৈরি হয় না। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

ভালোবাসা দিয়ে সবকিছু জয় করা যায় সত্যি আপু খুব দারুন কথা বলেছেন। আপনার গল্পটি বেশ দুর্দান্ত ছিলো। নিশির তার স্বামীকে নিয়ে বেশ সুন্দর গল্প আমাদের মাঝে লিখেছেন। অবশেষে তাদের পরিবারে পুত্র সন্তান হয়েছে শুনে খুব ভালো লাগলো। আসলে একে অন্যের প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা থাকে পরিবারের শান্তি আসে। এত সুন্দর গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই আপু।

 last year 

আমি তাই মনে করি ভাইয়া একে অপরের প্রতি বিশ্বাস আর প্রকৃত ভালোবাসি সংসারে সুখ আসে। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

Coin Marketplace

STEEM 0.14
TRX 0.24
JST 0.032
BTC 89431.87
ETH 2226.61
SBD 0.84