গল্প পোস্ট- অবশেষে মানসিক হাসপাতালই হলো ছেলেটির ঠিকানা-১ম পর্ব|| written by@maksudakar ||

in আমার বাংলা ব্লগlast year (edited)

আসসালামু আলাইকুম

অবশেষে মানসিক হাসপাতালই হলো ছেলেটির ঠিকানা

দিন দিন আমরা যেন কেমন হয়ে যাচ্ছি। কেন যেন ভালো থাকতে চাইলেও ভালো আর থাকতে পারছি না। চারদিকে কান পাতলে শোনা যায় কেউ হয়তো অসুস্থ্য, কেউ বা দুঃশ্চিন্তা গ্রস্থ। আর এমন হাজারও সমস্যায় কেটে যাচ্ছে চারপাশের মানুষের জীবন। তবুও মানুষ গুলো বেচেঁ আছে জীবনের তাগিদে। নতুন নতুন স্বপ্নে প্রতিনিয়ত নতুন করে বাচঁতে চায় সবাই। তাই তো প্রতিনিয়ত স্বপ্ন গুলো কে বাচিঁয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা থাকে প্রতিটি মানুষের মনে।

বন্ধুরা প্রতি সপ্তাহেই আমি চেষ্টা করি আমার পোস্ট গুলোর মধ্যে ভিন্নতা আনার জন্য। কখনও গল্প শেয়ার করি, তো কখনও কবিতা। আর আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্য গুলো আমাকে নতুন করে নতুন কিছু লেখার আগ্রহ জাগায়। গল্প বা কবিতা দুটোই লিখতে আমার বেশ ভালো লাগে। তাই চেষ্টা করি চারপাশে ঘটে যাওয়া হাজারও ঘটনা কে নিজের মনের মাধুরী দিয়ে গল্প বা কবিতা আকারে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে। তাই তো আজও আসলাম নতুন একটি গল্প নিয়ে আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

man-4321831_1280.jpg

source

মিনা সংসারের সবার বড় মেয়ে। মোট চার বোন এবং এক ভাইয়ের মধ্যে মিনাই বড়। বাবা সরকারি চাকরি করেন। মিনা দেখতে কোন দিক দিয়ে কিন্তু কম নয়। হাজারে একজন রূপবতী মেয়ে। খুব অল্প বয়সেই বাবা মা তাকে পাত্রস্থ করে দেন। মানে বিয়ে দিয়ে দেন। বিদেশ ফেরত ছেলের অর্থ বিত্তের কাছে মিনার বাবা পরাজিত হয়ে মেয়ে কে সেই ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দেন। বেশ বড় অনুষ্ঠান করে মেয়ে কে বিয়ে দেন মিনার বাবা। সমস্ত এলাকার মানুষেকে দাওয়াত করেন। এলাকার মানুষও মিনার এমন ভালো ঘরে বিয়ে দেখে বেশ প্রশংসা করেন।

বিয়ের পর মিনার স্বামী তার রূপে এতটাই মুগ্ধ হয় যে সে স্ত্রী কে মাটিতে রাখে না পিঁপড়া খাবে। আর মাথায় রাখে না উকুনে খাবে। আর স্বামীর এমন ভালোবাসা পেয়ে মিনাও বেশ আনন্দিত। স্বামীর দেওয়া বিদেশি গহনা গায়ে জড়িয়ে যখন বাবা মায়ের বাড়িতে বেড়াতে আসে, তখন আশে পাশের অনেক পরিবার মিনা কে দেখতে আসে। না শুধু দেখতে আসে না। সবাই বেশ প্রশংসাও করেন। এদিকে মিনার স্বামী বিয়ের ছয় মাসের মাথায় আবারও বিদেশ চলে যান। কারন বিদেশে বেশ ভালো একটি কোম্পনীতে সে চাকরি করেন। ।

মিনার স্বামী বিদেশ গিয়ে মিনার নামে ঢাকায় দু একটি জায়গা কিনে দিবে বলে মিনা কে কথা দিয়ে যায় বিদেশে যাওয়ার সময়। অবশ্য ইতিমধ্যে মিনার নামে একটি বাড়ি এবং ১৫ ভরি স্বর্ণ রেখে যায়। আর স্বামীর কাছ হতে এত এত উপহার পেয়ে তো মিনা বেশ খুশি। এলাকার সবাই ভাবতে থাকে যে মিনা স্বামীর বাড়িতে বেশ সুখেই আছে। এক সময়ে মিনার গর্ভে সন্তান আসে। আর এমন সুখবর শুনে মিনার স্বামী মিনার নামে ঢাকায় দুটো জমিও রেখে দেয়। যাতে করে তার সন্তান এবং স্ত্রী ভালো থাকতে পারে। এছাড়াও যেহেতু মিনার বাবার আয় কমছিল, তাই মিনার স্বামী অর্থ দিয়ে মিনার বাবা কে সহায়তা করতো প্রতি মাসেই।

এদিকে মিনার স্বামী বিদেশ থাকায় মামুন প্রায় মিনার বাসায় যেয়ে মিনার সাথে গল্প করে এবং আড্ডা দেয়। এসব কথা মিনার পরিবার বেশ ভালো করেই জানতো। ও মামুন কে তো আপনারা চিনেন না, তাই না? মামুন হলো মিনার ছোট বোনদের গৃহশিক্ষক। মামুন মিনার সব কাজেই মিনার সাথে থাকে। বাজার করা, ব্যাংক থেকে টাকা উঠানো সব কাজেই মিনা মামুন কে সাথে রাখে। অবশ্য মিনার স্বামী এসব কথা সবই জানে। মিনার স্বামী এসব বিষয়ে কিছু মনে করেন না। কারন তিনি জানেন যে মামুন মিনার খালাতো ভাই। আর এভাবেই সময় কেটে যেতে থাকে।

এক সময়ে মিনার কোল জুড়ে এক অপরূপ ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। মিনার সন্তান এত সুন্দর হয় যে এলাকার মানুষও মুগ্ধ হয়ে যায়। এদিকে মিনার স্বামী এত সুন্দর সন্তানের কথা শুনে মহাখুশি। তিনি নিজেকে পৃথিবীর মহারাজা ভাবতে থাকে। আর স্ত্রীর প্রেমে আরও বেশী ফিদা হয়ে পড়ে। তাই বিদেশ থেকেই স্ত্রী আর স্ত্রীর বাবার সমস্ত চাহিদা পূরণ করতে থাকে। এমন কি নিজের টাকায় শ্বশুরের নামে জায়গাও কিনে দেয়। যাতে করে মিনা খুশি থাকে। আর এভাবেই কেটে যায় মাস বছর আর দিন।

মিনার সন্তান আজ দুই বছরে পা রাখলো। আর মিনার স্বামীও দেশে ফিরে আসলো। মিনার স্বামী এবার সিদ্ধান্ত নিয়েই এসেছে আর বিদেশ যাবে না। এমন সুন্দরী বউ আর সন্তান রেখে তিনি আর বিদেশে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই এবার আসার সময় স্ত্রীর জন্য আরও অতিরিক্ত ১৫ ভরি স্বর্ণ এবং নগদ টাকা নিয়ে আসছে। দেশে ফিরে মিনার স্বামী তার স্ত্রীর জন্য যে জমি কিনেছিল সেগুলো স্ত্রীর নামে পুরোপুরি রেজস্ট্রি করে দেয়। আর স্ত্রী কে তার সব গহনা বুঝিয়ে দেয়। স্বামীর কাছ থেকে এত সব উপহার পেয়ে মিনা মহা খুশি। এদিকে দেশে ফিরে মিনার স্বামী ব্যবসা শুরু করেন। যার জন্য তাকে প্রতিদিন বাড়ির বাহিরে কাটাতে হয় বেশীর ভাগ সময়। কিন্তু তখনই ঘটে যায় এক আশ্চর্য এবং ভয়ংকর ঘটনা (চলবে)...।

অবশ্যই আপনারা জানতে চান কি এমন ঘটনা ঘটেছে, তাই না? হুম সেই আকর্ষণীয় ঘটনা সম্পর্কে জানতে হলে আপনাদের কে অবশ্যই আগামী পর্ব পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে। কারন শত চেষ্টা করেও গল্পটি এক পর্বে শেষ করা সম্ভব হলো না। আশা করি সেই পর্যন্তই পাশে থাকবেন।

image.png

আজ এখানেই রাখছি। আগামীতে আবারও ফিরে আসবো নতুন করে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে। কেমন লাগলো আমার আজকের ব্লগটি? জানার আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় রইলাম। আশা করি আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য দিয়ে উৎসাহিত করবেন।

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।

আমার ব্লগটির সাথে থাকার জন্য এবং ধৈর্য সহকারে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য সবাই কে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। সেই সাথে সবার প্রতি আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

image.png

image.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last year 
 last year 

এত সব কিছু পেয়ে মিনা অনেক খুশি হয়েছে বিয়ের পর। তার স্বামী তো দেখছি তাকে একেবারে রানির মত করে রেখেছে। মিনার এসব কিছুতে মুগ্ধ হয়ে মিনার হাজবেন্ড এখন একেবারে জন্য দেশে চলে এসেছে দেখছি। তবে আমার মনে হয় মিনা কিছু না কিছু একটা করেছে। পরবর্তীতে কি আশ্চর্য এবং ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে, এটা জানার জন্যই আমি অধীর অপেক্ষায় থাকলাম। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি ঘটে।

 last year 

আপু একটু ধৈর্য ধরেন না কষ্ট করে প্লিজ। লেখক কি কখনও তার গল্পের মোড় প্রকাশ করে? দেখেন না সিরিয়াল গুলোতে কেমন হয়? হি হি হি। ধন্যবাদ ‍সুন্দর একটি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 last year 

মিনার সৌন্দর্যে মুগ্ধ মিনার বিদেশি বর।মিনার সুখের অভাব নেই।মিনার সুখে সবাই খুশি।মিনার কোল জুড়ে সুন্দর ফুটফুটে সুন্দর সন্তান আসে।সে খবরে মিনার বরও মহাখুশি। ভালো করেছে মিনার বর বউ সন্তানের কাছে চলে এসে। কিন্তুু কোন একটা রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি তবে তা পরবর্তী পর্বে জানার অপেক্ষায় রইলাম।ধন্যবাদ সুন্দর গল্পটি শেয়ার করার জন্য।

 last year 

হুম গন্ধ তো পাবেনই। রহস্য তো জ্বাল দেওয়া হচেছ। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

মিনার স্বামী বিদেশ থেকে অনেক স্বর্ণ এবং টাকা পয়সা এনে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সে আর বাইরে যাবে না। এরপর সুখেই চলছিল তাদের সংসার। এরপর কি আশ্চর্য ঘটনা ঘটবে সেটা জানার আগ্রহ প্রকাশ করছি আপু।১ম পর্বটি খুবই ভালো লেগেছে আপু।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

পিকচার আভি বাকী হায়, দেখতে রাহো। অপেক্ষায় থাকুন আপু। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

আপনার আজকের গল্পটি আমার কাছে খুব বাস্তবধর্মী মনে হয়েছে। কারণ সমসাময়িক বিভিন্ন ঘটনা দেখেছি যেগুলো সত্যিই আপনার গল্পের সাথে মিলে যায়। স্বামীরা অনেক পরিশ্রম করে স্ত্রীদের জন্য টাকা পাঠায় কিন্তু স্ত্রীরা কখনোই ভেবে দেখে না তার স্বামী তার জন্য কত কষ্ট করে মাথা ঘাম ঝরিয়ে বিদেশ থেকে অর্থ গুলো তাদের জন্য পাঠায়।অথচ তাদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে স্ত্রী বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হয়ে যায়। আমার মনে হয় আপনার এই গল্পটা অনেকটাই সেদিকেই যাচ্ছে। যাইহোক পরবর্তী পর্বে হয়তো সবকিছু পরিষ্কার হবে। ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার গল্পটি লেখার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

দারুন বুদ্ধিমান তো আপনি ভাইয়া। তবে এখনও বলা যাচেছ না গল্পটার কি হবে। কিন্তু এ কথা সত্য যে গল্পটি একটি বাস্তব ঘটনা নিয়েই লেখা। ধন্যবাদ ‍সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

মিনার ভাগ্য এতটাই ভালো, যার কারণে সে এরকম একটা পরিবারে আসতে পেরেছে বউ হয়ে। আর এরকম একটা হাজবেন্ড পেয়েছে ভাগ্য করে। এরকম হাজব্যান্ড পাওয়া কিন্তু সত্যি ভাগ্যের ব্যাপার। আমার তো মনে হচ্ছে শেষ পর্যন্ত মিনাই কিছু না কিছু ঘটিয়েছে অথবা ঘটাবে। আর তার হাজবেন্ডের উচিত হয়নি সবকিছু তাকে দিয়ে দেওয়া এবং কি তার নামে এত জায়গা সম্পত্তি নিয়ে নেওয়া। এত সব কিছু পাওয়ার পরে মিনার চিন্তাভাবনা কিন্তু খারাপ হয়ে যেতে পারে। এই গল্পের শেষে কি হয় এটা আশা করছি দেখতে পাব খুব শীঘ্রই।

 last year 

হুম ভাইয়া একটু অপেক্ষা করেন। খুব তাড়াতাড়ি গল্পের শেষ পর্ব শেয়ার করবো। তখনই সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.14
TRX 0.24
JST 0.032
BTC 88442.96
ETH 2187.19
SBD 0.87