ক্রিয়েটিভ রাইটিং:- ভৌতিক ভুতুড়ে পর্ব-১।

in আমার বাংলা ব্লগ17 days ago
আমি @mahmuda002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি গল্প শেয়ার করতে যাচ্ছি।আজ আমি আপনাদের মাঝে যে গল্পটি শেয়ার করব সেটি একটি ভুতুড়ে কাহিনী নিয়ে। ভূতের কথা বললে কেমন গা ছমছম করে ওঠে তাই না! ভূতের গল্প শুনতেও কিন্তু বেশ মজা লাগে। আর যদি গল্পটি হয় গা ছমছমে ভয়ানক তাহলে তো জমে ক্ষীর। লেপ কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘর অন্ধকার করে গল্পের ভূতের সঙ্গে পরিচিত হতে কিন্তু বেশ লাগে। তাহলে চলুন লেপ কাঁথা মুড়ি দিয়ে গা ছমছমে ভুতের গল্পটি শুরু করা যাক...


source


নিশিপুর গ্রামটি বহুদিন থেকেই এভাবে অবহেলিত গ্রাম। বন জঙ্গলের গ্রামও বলা চলে। এদিকে খুব একটা মানুষজন আসে না। তাই গাড়ি ঘোড়ারও খুব একটা প্রচলন নেই এই গ্রামে। ঘোড়ার গাড়িই একমাত্র বাহন এই গ্রামে মানুষজনের যাতায়াতের জন্য। গ্রামের অনেক সন্তান ভালো পড়াশোনা করে তারা শহরেই বাসা বেঁধেছে। গ্রামের দিকে তারা ফিরেও তাকাইনি যার কারণেই আজ গ্রামের এই অবনতি। তবে শোনা যায় এই গ্রামের অনেক নাম ডাক ছিল একসময়। যখন নাকি রাজা হরেন্দর সময় ছিল। হরেন্দ্র ছিল বিশাল প্রভাবশালী একজন রাজা। তিনি প্রজাতের ভীষণ ভালোবাসতেন। প্রজাদের বিপদ-আপদে সবসময় তিনি উজাড় করে দিয়েছেন। কিন্তু বিপত্তি ওই এক জায়গায়। রাজার বিয়ের পর রাজা যাকে বিয়ে করে রানীর আসনে বসালো সেই রানী সব সর্বনাশের মূল। বলা যায় রানীর কারণেই আজ এই গ্রামের এই দশা। রানী মোটেই গ্রামের প্রজাদের ভালোবাসতো না। সে সব সময় প্রজাদের উপর অত্যাচার চালাত। রাজা যে প্রজাদের বিপদ-আপদে পাশে দাঁড়াতো এটি রানী মোটেও সহ্য করতে পারত না। লোক কথায় শোনা যায় একটা সময় রানী তার মায়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাজাকে সেই রাজবাড়ীতেই হত্যা করে। এখনো নাকি সেই রাজার আত্মার হদিস পাওয়া যায় এই গ্রামে। মাঝেমধ্যেই নাকি দেখা যায় এই গ্রামের ওই রাজবাড়ির আশেপাশে। বিপত্তিটা এখানেই ঘটলো যখন রাজবাড়ীতে এসে উঠলো শহরের সবথেকে বড়লোক আনোয়ার পাশা ও তার পরিবার। তাদের খুব শখ তাদের একমাত্র ছেলে অপূর্বের সঙ্গে এই গ্রামের সব থেকে সুন্দরী মেয়ের বিয়ে দিবে।


অপূর্ব দেখতে সুন্দর হ্যান্ডসাম শহুরে ছেলে। তার এই বিয়েতে অনেক অমত রয়েছে। কারণ সে বড় চাকরি করে তার অনেক গুণ রয়েছে সে একজন শহুরে ছেলে। সে কেনই বা এই গ্রামের একটি মেয়েকে বিয়ে করতে চাইবে। কিন্তু সে কখনো তার বাবা মার কথার অবাধ্য হয়নি। তারা যা বলেছে তাই সে প্রতি অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে। তাই এই বিয়ের ক্ষেত্রেও তার কোন দ্বিমত পোষণ করার সুযোগ ছিল না। যেহেতু তার বাবা-মায়ের ইচ্ছা এই গ্রামের সুন্দরী মেয়ের সঙ্গেই তার বিয়ে দিবে তাই সে তার অনিচ্ছা শর্তেও এটি মেনে নিয়েছিল। তারা এ বাড়িতে আসার পরেই রাজবাড়ি টা যেন কেমন ঝকমকে হয়ে উঠছিল। বহুদিন পর গ্রামের মানুষ এই রাজবাড়ীর অন্ধকার থেকে আলোর দিশা পাচ্ছিল। গ্রামের মানুষের এই রাজবাড়ীর সম্পর্কে যে ভয় ভীতি ছিল আস্তে আস্তে সেটা কেটে যাচ্ছিল তাদের মন থেকে। অনেক লোক যাতায়াত করত এই রাজবাড়িতে। অপূর্ব বাবা মাও ছিল ভীষণ মিশুকে। ঠিক রাজা হরেন্দের মতো অপূর্বর বাবাও এই গ্রামে মানুষের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়াতে শুরু করলো। তবে হরেন্দ্র সঙ্গে আনোয়ার পাশার পরিবারের আরেকটি অমিল সেটি হচ্ছে তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই ছিলেন খুব ভালো মানুষ। তারা দুজনেই গ্রামের মানুষকে অনেক বেশি ভালোবাসতো। তারা এই কদিন এসেই গ্রামের বেশ খানিকটা পরিবর্তন করে ফেলেছে। গ্রামের মানুষের কাছে তারা হয়ে উঠেছে বিশ্বাসযোগ্য ভরসার মানুষ। গ্রামের কোন মানুষ বিপদে পড়লে আগে ছুটে যায় আনোয়ার পাশাুর কাছে। তবে হ্যাঁ অপূর্ব কিন্তু এর ব্যতিক্রম নয়। প্রথমের দিকে অপূর্বর এই গ্রাম ভালো না লাগলেও ধীরে ধীরে এই গ্রামের প্রতি অপূর্ব একটি মায়া কাজ করতে শুরু করে। ভালোবেসে ফেলে এই গ্রামের মানুষকে এই গ্রামের পথঘাট কে এ গ্রামের খোলা মুক্ত আকাশকে।


একদিন অপূর্ব গ্রামটি ঘুরে দেখার জন্য একা একাই হেঁটে বেড়াচ্ছিল গ্রামের আনাচে-কানাচে। এমন সময় গ্রামের একটি পুষ্কনির পাশে একটি মেয়ের সঙ্গে তার দেখা হয়। মেয়েটি দেখতে ভিশন রূপবতী। তার রূপের আলো যেন প্রতিফলিত হচ্ছিল পুষ্পণের পানিতে। অপূর্ব তা দেখিয়ে মুগ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে আর যেন পায় নাড়াতে পারে না। এ যেন দেখে মনেই হয় না গ্রামের মেয়ে। মেয়েটি এসেছিল জল তুলতে পুকুর থেকে। মেয়েটির নাম লীলাবতী। গরিব বাবার একমাত্র মেয়ে এই লীলাবতী। অভাবের সংসারে বাবা আর মা ছাড়া কেউ নেই তার। মায়ের পায়ের ব্যামোর জন্য এত দূর থেকে জল নিতে আসতে কষ্ট হওয়ায় লীলাবতীকে আসতে হয় জল নিতে। জল নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে খেয়াল করে অপূর্বকে। লীলাবতির বুঝতে দেরি হয় না যে অপূর্ব তাকে দেখে এভাবে তাকিয়ে আছে। লীলাবতী তার কাছে এসে বলে কিছু বলবেন নাকি আপনি। না না, কিছু বলার ছিল না আমি এমনি গ্রামটা ঘুরে দেখছিলাম এসে এখানে দাঁড়িয়ে গেলাম। ও আচ্ছা আপনি সেই শহরে পাবনা যারা ঐ রাজবাড়ীতে ছুটেছেন। হ্যাঁ আমি সে। ও আচ্ছা আমার মা বলছিল কাল আপনাদের রাজবাড়ীতে একবার যেতে আসলে একটা কাজের দরকার ছিল তো যদি কোন কাজ পেতাম তা আপনার সঙ্গে এখানে দেখা হয়ে ভালোই হলো কাজের কথাটা আপনাকেই বলে দিলাম। একটু দেখবেন বাবু যদি কোন কাজ থেকে আমাকে বলবেন সব কাজ করে দিতে পারব। আচ্ছা ঠিক আছে আমাকে বাবু বলতে হবে না আমাকে অপূর্ব বলেই ডেকো তাহলে খুশি হব। আর তুমি কাল একবার আমাদের বাড়িতে এসো আমার মায়ের সঙ্গে কথা বল।


অপূর্ব বাড়িতে এসে তার মাকে বলে মা তোমার না খুব ইচ্ছে এই গ্রামে সব থেকে সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে আমার বিয়ে দিবে। হ্যাঁ কেন? আরে না আমি তোমার সেই সুন্দরী বৌমাকে খুঁজে পেয়ে গেছি কাল সকালে তাকে আসতে বলেছি আসলে ভালোভাবে আপ্যায়ন করো কিন্তু। সত্যি বলছিস। হ্যাঁ মা সত্যিই বলছি। আচ্ছা মা ভীষণ ক্ষুধা পেয়েছে এবার খাবারটা দাও ঘুম পাচ্ছে ঘুমাবো। আচ্ছা ঠিক আছে তুই ফ্রেশ হয়ে আয় আমি খাবার আসছি। পরের দিন সকালেই লীলাবতী অপূর্বের কথা মত ঠিক সকালেই তাদের রাজবাড়ীতে এসে উপস্থিত হয়। চলবে,,,

ভূল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।


সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

ডিভাইস redmi12
লোকেশন মেহেরপুর


👩‍🦰আমার নিজের পরিচয়👩‍🦰


আমি মাহমুদা রত্না। আমি কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার চৌদুয়ার গ্রামের মেয়ে। আর মেহেরপুর জেলার গাংনী থানার জুগীরগোফা গ্রামের বউ। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন করছি কুষ্টিয়া গর্ভমেন্ট কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে,ক্রাফট এর কাজ করতে অনেক পছন্দ করি। বর্তমানে আমি ফ্রীল্যান্সিং সেক্টরে ডিজাইন এবং এসইও পদে কাজ করছি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (১৯ - ১১ - ২০২৩) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।


Logo.png

(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )


4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzLdXDsNijBKWNGJn5ogmozSiA7cyReMsKwomyC79dv8nHgZj3RKbXhPtULzHviAUBY9Vc8ousmvcnNywqK...hMHPzmtXdqcE25kuBukgtAciNVXSHonSRqmAmfHf9YgyuYwwZo1Nd9dUCogeVvSsKh3MRCxw1Khi2NyeZh4Rt4J9n7wTsZvJ1tiUMafwrMjZ5AQz2ERchsjjJv.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPxFqYAEtmnwbJrshP4Tdaov4BmxkXJqLhx2USjht6Vy2soth7e34k1TKBQ2RZ2vXNJBF8X9uKH9aLNKFV...xU6W1ggWaLoBhkXz82k34bfNqfnFypapZe2oHzEHELJzLj6msr2RorLQSivfSXJaPiBZmUdQYzewFKsaGxDCyC6yRhEDYu8mNwzeEnkjmmjmpLrQEyQZKZnCTp.png

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 56577.01
ETH 2981.05
USDT 1.00
SBD 2.14