শ্রেয়ার সাথে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনা
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারও ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজ আমি আপনাদের মাঝে আমার মেয়ের বান্ধবী শ্রেয়ার একটি ঘটনা নিয়ে হাজির হয়েছি। আর এই ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বিকেল বেলায়। গতকাল রাতে আমার মেয়েকে তার বান্ধবী ফোন দিয়ে শুধু বলেছিল, লামিয়া আমার সাথে খুবই ভয়ানক একটি ঘটনা ঘটেছে। তবে আমি সেই ঘটনাটি এখন বর্ণনা করতে পারব না। আমার কাছে খুবই খারাপ লাগছিল তাই তোকে ফোন দিয়ে জানালাম। আগামী কাল দেখা হলে তোকে সব ঘটনা খুলে বলবো। শুধু এইটুকু বলে ফোনটি রেখে দিয়েছিল।
আর তখন থেকে আমার মেয়ে তার বান্ধবীর জন্য, খুবই উদ্বিগ্ন ছিল। কেননা এই শ্রেয়া আমার মেয়ের খুব খুব ঘনিষ্ঠ একজন বান্ধবী। যাকে বলে বেস্ট ফ্রেন্ড। যাইহোক আজ সকালে শ্রেয়া যখন স্কুলে এসেছে, তখন তার পুরো ঘটনাটি আমার মেয়ের সামনে বর্ণনা করেছে। আর সেই কথাগুলো শুনে এসে যখন আমার মেয়ে আমাকে বলছিল, তখন আমি শুনে একদম হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। শ্রেয়ার ভাগ্যটা খুবই ভালো, যার কারনে সে এখনো সুস্থ সবল আছে। গতকাল বিকেল বেলায় শ্রেয়া তার বাড়ির সামনে একটি আম গাছ থেকে আম কুড়াচ্ছিল। সাথে তার ছোট চাচ্চুও ছিল। তার ছোট চাচ্চু লাঠি দিয়ে আম পাড়ছিল, আর শ্রেয়া সেগুলো কুড়াচ্ছিল।
ঠিক এমন সময় শ্রেয়ার চাচ্চুর মোবাইল ফোনটি বেজে ওঠার কারণে, সে বাড়ির ভিতরে চলে যায়। আর শ্রেয়া তখন পর্যন্ত আম গাছের নিচে আম কুড়াচ্ছিল। ঠিক সেই সময় হঠাৎ করে আম গাছের নিচে থাকা একটি কুয়ার ভেতরে পড়ে যায়। কুয়ার ওপরে সিমেন্টের ঢাকনা ছিল, আর সেই ঢাকনাটি একদম ভেঙে নিচে পড়ে যায়। শ্রেয়া জানতো আম গাছের নিচে একটি কুয়া রয়েছে, আর সেই কুয়াতে সিমেন্টের ঢাকনা রয়েছে। তবে ছোট মানুষ বুঝে উঠতে পারেনি, পুরাতন সিমেন্টের ঢাকনা ভেঙ্গে যেতে পারে। যার কারণে ভুলবশত সে যখন, ঢাকনার উপরে উঠেছে, ঠিক সেই মুহূর্তে ভেঙে একদম কুয়ার ভেতরে পড়ে গিয়েছে। সবচেয়ে বড় বিপদের কারণ হচ্ছে, কুয়ার ভেতরে পানি ছিল, আর সেই পানিতে পড়ে শ্রেয়া হাবুডুবু খাচ্ছিল।
কারন সে সাঁতার জানতো না। তার চাচ্চু ফোনের কথা বলা শেষ করে, বাড়ি থেকে বের হয়ে এসে যখন শ্রেয়া কে দেখতে পাচ্ছিল না, তখন জোরে জোরে তাকে ডাকছিল। কিন্তু শ্রেয়া পানিতে পড়ে যাওয়ার কারণে এবং ভয়ের কারণে কিছুতেই তার চাচ্চুকে ডাকতে পারছিল না। তার চাচ্চু যখন দেখেছে কুয়ার ঢাকনা কিছুটা খোলা মনে হচ্ছে, তখন সে দৌড়ে কুয়ার কাছে গিয়ে দেখে, শ্রেয়া পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। আর এই দৃশ্য দেখে তার চাচ্চু হাউমাউ করে কান্না করতে করতে শ্রেয়াকে টেনে উপরে তুলে নিয়ে আসে। আর সেই মুহূর্তে শ্রেয়া নাকি একদম জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিল।
ঠিক তখন শ্রেয়ার চাচ্চু সবাইকে ডাকাডাকি করে তাকে বাড়িতে নিয়ে যায়। সাথে সাথে ডাক্তারকে ডেকে নিয়ে এসে, শ্রেয়ার চিকিৎসা করায়। শ্রেয়ার বাবা ও মা কেউ বাসায় ছিল না। যখন তারা এসে তার একমাত্র মেয়ের এমন বিপদের কথা শুনেছিল, তখন তারাও নাকি ভীষণ কান্নাকাটি করেছিল। কারণ শ্রেয়া ছাড়া শেয়ার বাবা-মার আর কেউ নেই। একমাত্র সন্তানের এমন আকস্মিক বিপদের কথা শুনে, তারা খুব ঘাবড়ে গিয়েছিল। শুধু শ্রেয়ার বাবা মা নয় বরং আমরাও শ্রেয়ার এমন বিপদের কথা শুনে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। আর তাই তো মেয়ের মুখ থেকে যখন এই কথাগুলো শুনেছিলাম, তখন সাথে সাথেই শ্রেয়ার বাবা ও মাকে ফোন দিয়ে সমস্ত ঘটনা শুনে তাদেরকে সান্ত্বনা দিয়েছিলাম।
সত্যি কথা বলতে কি, বিপদ কখনো বলে আসে না। তাই সবসময় সাবধানতার সাথে চলাফেরা করা উচিত। যাতে করে অসাবধানতায় কোন বিপদ না ঘটে যায়। ভাগ্যিস শ্রেয়ার চাচ্চু সঠিক সময়ে এসে কুয়া থেকে তুলেছিল, তা না হলে কপালে কি ছিল তা শুধু উপরওয়ালাই জানে। যাইহোক, মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছি, আমার মেয়ের বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা যেন আর কারো সাথেই না ঘটে। আমার মেয়ে ও তার বেস্ট ফ্রেন্ড সব সময় যেন হাসি খুশি ও সুখময় জীবন কাটাতে পারে এই প্রত্যাশা করছি।
আশা করি আমার গানের পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
খুবই দুঃখজনক একটি ঘটনা আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইয়া। কারো সন্তানের যদি এমন বিপদ হয় তাহলে সেই পিতা-মাতার কি অবস্থা হয় তাহলে বুঝতে পারছেন। আল্লাহ যেন এমন বিপদ থেকে আমাদের সকলকে মাফ করে। যাইহোক উদ্ধার হয়েছে জেনে খুশি হয়েছি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই, আপনার মতামত প্রকাশ করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
বাড়িতে এরকম অনিরাপদ জিনিস না রাখাই বেশি উত্তম রাখলেও সেটা নিরাপদ ভাবে রাখা উচিত। মেয়েটা কুয়ার মধ্যে পড়ে যে কতটা কষ্ট হয়েছে সেটা ভেবেই খারাপ লাগছে। তবে শ্রেয়া, চাচ্চু খুব দ্রুত তাকে পানির মধ্যে থেকে তুলে ফেলেছে এবং পরবর্তীতে সে সুস্থ হয়ে গেছে জেনে খুবই ভালো লাগলো। আপনার মেয়ে ও তার বান্ধবীর জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল।
শ্রেয়ার চাচ্চু ছিল বলেই হয়তো শ্রেয়া অনেক বড় বিপদের হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিল। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ঠিক বলেছেন ভাইয়া বিপদ কখনো বলে আসে না। তবে সবসময় সাবধানে থাকা উচিত। হয়তো শ্রেয়া ছোট ছিল বলে বুঝতে পারেনি। তবে আরেকটু সময় অতিবাহিত হলে হয়তো বড় ধরনের বিপদ হতে পারতো। এদিকে যেহেতু শ্রেয়া তার বাবা মায়ের এক মাত্র সন্তান ছিল আর এই খবর পেয়ে তারা ভীষণ কষ্ট পেয়েছে বুঝতে পারছি। যাই হোক এটাই শুকরিয়া সঠিক সময়ে শ্রেয়া কে কুয়া থেকে তুলতে পেরেছে। আপনার মেয়ে ও শ্রেয়ার জন্য দোয়া রইল যেনো সবসময় ভালো থাকে।
ঠিক বলেছেন আপু, শ্রেয়ার এমন বিপদের কথা শুনে তার বাবা মা ভীষণ কষ্ট পেয়েছিল। আপনার মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
বিষয়টা খুবই মর্মান্তিক শ্রেয়ার চাচ্চু যদি বিষয়টা ভালো ভাবে বুঝতে না পারতো তাহলে হয়তো আজকে তার শেষ দিন হতো। যাই হোক বাঁচানোর মালিক আল্লাহ তিনি তার বান্দাকে রক্ষা করবেন। যেহেতু শ্রেয়া তার বাবা-মার একটি মাত্র সন্তান সেহেতু শ্রেয়ার প্রতি ভালোবাসাটা সবারই অনেক বেশি। দোয়া করছি খুব দ্রুত যেন সে সুস্থ হয়ে ওঠে।
ঠিক বলেছেন ভাই, শ্রেয়া তার বাবা-মার একমাত্র সন্তান হওয়ার কারণে, শ্রেয়ার প্রতি তাদের ভালোবাসা অনেক অনেক বেশি। আপনার মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
সু স্বাগতম আপনাকে।
কি ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে ভাইয়া আপনার মেয়ের বান্ধবী শ্রেয়ার সাথে।সত্যি পোস্ট টি পড়তে গিয়ে সমস্ত শরীরের লোম দাড়িয়ে গেছে।কি ভয়ংকর কথা।ভাগ্যিস শ্রেয়ার কাকা বিষয়টি এসে খেয়াল করেছিলো। যদি ভাবতো শ্রেয়া হয়তো খেলতে গেছে তাহলেই তো ভয়ংকর বিপদ হয়ে যেতো।সঠিক বলেছেন আপনি কখন কার বিপদ কিভাবে আসে কেউ বলতে পারে না।
ঠিক বলেছেন দিদি, শ্রেয়ার চাচ্চু যদি না থাকতো, তাহলে হয়তো শ্রেয়ার ভাগ্যে অনেক বড় বিপদ ঘটে যেতে পারত। আপনার মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।