বেগুন দিয়ে ঝাল ঝাল লইট্টা শুটকির মাখোমাখো ঝোল রেসিপি
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারও ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি রেসিপি পোষ্ট নিয়ে। আর আজকের রেসিপি হচ্ছে, বেগুন দিয়ে ঝাল ঝাল লইট্টা শুটকির মাখোমাখো ঝোল রেসিপি। আপনারা হয়তো ভাববেন, শুটকি মাছের আবার ঝোল, আমরা হয়তো অনেকেই শুটকি মাছের ঝোল কখনোই খাইনা। আমিও কিন্তু শুটকি মাছের ঝোল তেমন একটা পছন্দ করি না। তবে হ্যাঁ, মাখো মাখো ঘন ঝোল গুলো খেতে কিন্তু বেশ লাগে। আর তাই তো আমি সেদিন বেগুন দিয়ে লইট্টা মাছের মাখোমাখো ঝোল রেসিপি তৈরি করেছিলাম। ঝাল ঝাল শুটকি বেগুনের রেসিপি খেতে খুবই স্বাদ লাগে। আমার আবার শুটকি মাছের প্রতি ভিশন দুর্বলতা রয়েছে। বাজারে গেলে শুটকি মাছের কথা মনে পড়লেই, আমি শুটকি মাছ কিনে নিয়ে এসে রেসিপি তৈরি করে খাই।
তবে আমার ছেলে মেয়ে দুটো খুব একটা শুটকি মাছ পছন্দ করে না। তাই সব সময় শুটকি মাছের রেসিপি খেতে মন চাইলেও, ছেলে-মেয়েদের জন্য আর খাওয়া হয়ে ওঠে না। কেননা ছেলেমেয়েদের পছন্দের খাবারগুলো প্রতিদিন তৈরি করার চেষ্টা করি। তবে মাঝে মাঝে নিজের পছন্দকেও প্রাধান্য দিতে হয়, আর তাইতো সেদিন লইট্টা শুটকি মাছগুলো কিনে এনেছিলাম মজার রেসিপি খাওয়ার আশায়। ঝাল ঝাল লইট্টা শুটকি ও বেগুনের রেসিপি খেয়ে ভীষণ তৃপ্তি পেয়েছিলাম। বেগুনের সাথে শুটকি মাছের কেমন জানি একটা সম্পর্ক রয়েছে। যার কারনে শুটকি মাছ অন্যান্য সবজির চাইতে, বেগুনের সাথে খেতে বেশি ভালো লাগে।
আমি জানিনা আপনাদের কাছে আমার মত মনে হয় কিনা, তবে আমি শুটকি মাছ বেগুন দিয়ে খেতেই বেশি ভালোবাসি। যাইহোক বন্ধুরা আমি কিভাবে বেগুন দিয়ে ঝাল ঝাল লইট্টা শুটকির মাখোমাখো ঝোল রেসিপি তৈরি করেছি, তার প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস আপনারাও খুব সহজে এই রেসিপি তৈরি করতে পারবেন। তাহলে বন্ধুরা, আর বেশি কথা না বাড়িয়ে চলুন, আমার তৈরি বেগুন দিয়ে ঝাল ঝাল লইট্টা শুটকির মাখো মাখো ঝোল রেসিপির রন্ধন প্রণালীর ধাপ গুলো দেখে নেয়া যাক।
ক্রমিক নং | উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | লইট্টাশুটকি | ১৫০ গ্রাম |
২ | পেঁয়াজ | ৪-৫ টি |
৩ | রসুন | ২-৩ টি |
৪ | জিরা বাটা | ২ চা চামচ |
৫ | শুকনা মরিচ গুঁড়া | ২ চা চামচ |
৬ | হলুদ গুঁড়া | ১ চা চামচ |
৭ | সয়াবিন তেল | পরিমাণ মতো |
৮ | লবণ | স্বাদ মতো |
" ধাপ : ১ "
" ধাপ : ১ "
১। প্রথমে লইট্টা শুটকি গুলো কেটে বেছে টুকরো করে নিতে হবে। তারপর পেঁয়াজ গুলোর খোসা ছাড়িয়ে কুচি করে কেটে নিতে হবে। সেই সাথে বেগুনগুলো টুকরো টুকরো করে কেটে নিতে হবে। উপরে দেয়া চিত্রের মত করে।
" ধাপ : ২ "
" ধাপ : ২ "
২। এবার টুকরো করে কেটে নেয়া লইট্টা শুটকি গুলো হালকা কুসুম কুসুম গরম পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর চুলায় কড়াই বসিয়ে দিয়ে তাতে সয়াবিন তেল ঢেলে দিতে হবে, সয়াবিন তেল গরম হয়ে আসলে তাতে পেঁয়াজ কুচিগুলো ছেড়ে দিয়ে বাদামি রং করে ভেজে নিতে হবে। পেঁয়াজকুচি গুলো যখন বাদামি রং হয়ে আসবে, তখন থেঁতো করা রসুন গুলো কড়াইতে ছেড়ে দিতে হবে।
" ধাপ : ৩ "
" ধাপ : ৩ "
৩। এবার রসুন থেঁতো কড়াইতে ছেড়ে দেয়ার পর, হাল্কা বাদামী রঙ করে ভেজে নিতে হবে। তারপর এক কাপ পরিমাণ পানি কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে। ঢেলে দেয়া পানি গরম হয়ে আসলে, উপকরণে নেয়া সকল মসলা কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে। তারপর চামচের সাহায্যে ভালোভাবে নেড়ে চেড়ে, মসলা পানি কিছুক্ষণ কষিয়ে নিতে হবে। মাশলা পানি কিছুক্ষণ কষিয়ে নেয়ার পর, টুকরো করে নেয়া লইট্টা শুটকি গুলো কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে।
" ধাপ : ৪ "
" ধাপ : ৪ "
৪। এবার লইট্টা শুটকি গুলো কড়াইতে ঢেলে দেয়ার পর হাল্কা আঁচে কিছুক্ষণ কষিয়ে নিতে হবে। তারপর কেটে নেওয়া বেগুনের টুকরোগুলো কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে।
" ধাপ : ৫ "
" ধাপ : ৫ "
৫। এবার বেগুনের টুকরোগুলো কড়াইতে ঢেলে দেয়ার পর, হাল্কা আঁচে কষিয়ে নিতে হবে। তারপর পরিমাণ মতো পানি কড়াইতে ঢেলে দিয়ে আবারো হাল্কা আঁচে কষিয়ে নিতে হবে। এভাবে কিছুক্ষণ কষিয়ে নেয়ার পর, ঢেলে দেয়া পানি গুলো যখন মাখো মাখো হয়ে ঝোলে পরিণত হয়ে আসবে, তখন বুঝতে হবে আমাদের কাঙ্খিত রেসিপি সম্পন্ন ভাবে তৈরি হয়ে গেছে।
" শেষ-ধাপ "
" শেষ-ধাপ "
শেষ-ধাপ : এবার আমাদের কাঙ্খিত রেসিপি সম্পূর্ণভাবে তৈরি হয়ে যাওয়ার পর, পরিবেশনের জন্য আলাদা একটি পাত্রে ঢেলে নিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
আশা করি আমার রেসিপি পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
বেগুন দিয়ে আমি নিজে কখনো শুটকি মাছ রান্না করিনি । বাসায় থাকতে আম্মা বেগুন দিয়ে শুটকি মাছের চচ্চড়ি করেছে তবে এরকম মাখা ঝোল কখনো করিনি । মাখা মাখা করে রান্না করলে মনে হয় খেতে ভালোই লাগে । আর ছোট বাচ্চারা নরমালি শুটকি মাছ খেতে পছন্দ করেনা । আর বাসার কেউ যদি খেতে না চায় তখন খাওয়া তেমন একটা হয়ে ওঠেনা । আপনার রেসিপিটি ভালো লাগলো ।
আপু শুটকি মাছের মাখো মাখো ঝোল রেসিপি খেতে বেশ মজার হয়েছিল। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আজকে বেশ দারুন ভাবে বেগুন দিয়ে ঝাল ঝাল লইট্টা শুটকির মাখোমাখো ঝোল রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার এই রেসিপিটি বেশ দারুণ ছিল। প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দর করে উপস্থাপনা করেছেন। প্রয়োজনীয় উপকরণ গুলি সঠিক মাত্রায় তুলে ধরেছেন। আপনার এই রেসিপিটি দেখে আমি শিখতে পারলাম। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই, আমার তৈরি রেসিপিটি দেখে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
https://x.com/mahbubullemon/status/1796101548533035142?t=wOfOsOOSqrpH72thrzvcZw&s=19
মনে করি শুটকি মাছের প্রধান সবজি বেগুন ও আলু। বেগুন দিয়ে ঝাল ঝাল লইট্টা শুটকির মাখোমাখো ঝোল রেসিপি ভীষণ লোভনীয় হয়েছে। আমার মেয়েও শুটকি মাছের গন্ধ সহ্য করতে পারে না কিন্তু আমার খুব ভালো লাগে শুটকি মাছ খেতে। ঝোল কখনো যদিও বা খাওয়া হয়নি সব সময় ভুনায় খেয়েছি। তবে আপনার বেগুন দিয়ে ঝাল ঝাল ঝোল শুটকি রেসিপিটি বেশ মজাদার লাগছে। ধাপে ধাপে রন্ধন প্রণালী সুন্দরভাবে আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি শুটকি মাছের রেসিপি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
দিদি, বেগুন দিয়ে ঝাল ঝাল লইট্টা শুটকির মাখামাখা ঝোল রেসিপিটি খেতে সত্যিই দারুন হয়েছিল দিদি। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আরে বাহ। ভাই আপনি দেখছি আজকে একদম খুবই লোভনীয় একটি রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছেন। আর রেসিপিটি ঝোল ঝোল তাই দেখেই খেতে ইচ্ছে করছে। এত সুন্দর একটা রেসিপি পরিবেশনা করে শেয়ার করলেন দেখে তো সেই ভালো লাগছে সেই সাথে লোভ সামলানো বড় দায়। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই, আমার তৈরি রেসিপিটি দেখে সুন্দর মন্তব্য করে উৎসাহ দেয়ার জন্য।
বেগুন দিয়ে লইট্টা শুটকির রেসিপিটি দেখে অনেক লোভ লেগে গেল। আপনার রেসিপিটি যেমন লোভনীয় লাগছে খেতেও মনে হয় খুব সুস্বাদু হয়েছিল। শুটকির রেসিপিতে ঝাল বেশি হলে খেতে অনেক মজা লাগে।শুটকি আমার অনেক প্রিয় কিন্তু আমার বাচ্চারা খেতে চায় না। বেশ দারুণভাবে রেসিপিটি ধাপে ধাপে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
ঠিক বলেছেন আপু, রেসিপিটি খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছিল, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
বেগুন দিয়ে শুটকির কম্বিনেশনটা খুবই ভালো লাগে খেতে। আবার ইলিশ মাছ দিয়ে খেতেও দারুন লাগে। তবে আমাদের বাসায় বেশিরভাগ সময় শুটকি দিয়ে রান্না করা হয়। আপনার রেসিপিটা দেখে বেশ লোভনীয় লাগছে। লইট্টা শুটকি দিয়ে মাখামাখা করে রান্না করেছেন আপনি। ধন্যবাদ ভাইয়া লোভনীয় একটা রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
আপু, আমার তৈরি রেসিপিটি শুধু দেখতে লোভনীয় নয় বরং খেতেও খুবই মজার হয়েছিল। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.