বাসস্ট্যান্ডের আগন্তুক : পর্ব ২
বাসস্ট্যান্ডের আগন্তুক : পর্ব ১ এর পর...
বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে অমিতের যেন অল্প একটু খটকাই লাগলো। সেখানেও লোকজন নেই বললেই চলে। তার উপরে বাসস্ট্যান্ড -এর কাছে পিঠে কোথাও কোনো আলো নেই। বেশ খানিকটা দূরে থেকে সরকারি বাতি স্তম্ভের আলো অল্প ঠিকরে আসছে তাতেই অমিত আবছা দেখতে পেলো বাসস্ট্যান্ডে জনা দুয়েক লোক বসে বসে ঝিমোচ্ছে, যদিও সেই আলোয় লোক গুলির চেহারা ভালো করে বুঝতে পারলো না সে। অমিত মনে মনে ভাবলো তারাও হয়তো তার মতো বাসের জন্যই অপেক্ষা করছে। সব চিন্তা সরিয়ে একটা ফাঁকা সিট দেখে অমিত বসে পড়লো।
বাসস্ট্যান্ডের সিটে বসেই অমিত প্যান্টের পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে পৌলোমীকে ফোন করলো। পৌলমী ফোন তুলেই অমিতের দেরী হওয়ায় কারণ জানতে চাইলো। অমিত পৌলমীকে সব কথা খুলে বললো, তার দেরী হওয়ার আসল কারণ অটো ধর্মঘট। আর সেজন্য অমিত বাধ্য হয়ে বাস ধরার জন্য তার অফিসের কাছের বাস স্ট্যান্ডে বসে আছে। পৌলমী খানিক দুশ্চিন্তার স্বরে বললো, বাড়িতে যে নিমন্ত্রিতরা সব চলে এসেছে। আর সবাই তাকে খোঁজাখুঁজি করছে, সে কথা জানিয়ে অমিতকে তাড়াতাড়ি বাড়ি পৌঁছাবার জন্য বলে পৌলমী ফোনটা রেখে দিলো।
পৌলমীর সাথে কথা শেষ করে অমিত ফোন রাখতেই পাশ থেকে কেউ বিড়বিড় করে কিছু কথা বলে উঠলো। অমিত শুনতে না পেয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে পাশের লোকটির দিকে তাকালো কিন্তু অন্ধকারে লোকটির চেহারা বিশেষ বুঝতে পারলো না সে, তবুও লোকটিকে জিজ্ঞেস করলো,
"আপনি কি কিছু বললেন, আমি ফোনে কথা বলছিলাম সেজন্য কিছু শুনতে পেলাম না।"
অমিতের কথার প্রতিত্তরে লোকটি চুপটি মেরে গেলেন। আর কোনো কথা নেই তার মুখে। বিড়বিড় করাটাও বন্ধ হয়ে গেলো। অমিত অল্প ইতস্তত বোধ করে আবার নিজের মোবাইলটা খুলে বসলো। সকাল বেলায় অফিসে ঢোকার আগে ফেসবুকে পুটুর জন্মদিনের স্ট্যাটাসটা দিয়েছিল, সেটাই দেখতে থাকলো। সেই স্ট্যাটাস টায় অমিতের স্কুল-কলেজের সমস্ত বন্ধু-বান্ধবরা অভিনন্দন সূচক বার্তা দিয়েছে, সেটা দেখে অমিত মনে মনে বেশ খুশি হল। অমিত একে একে সবাইকে রিপ্লাই দেওয়া শুরু করলো।
মিনিট দশেক পর বিড়বিড় আওয়াজে অমিতের হুঁশ ফিরলো। অমিতের মনে হলো পাশের লোকটি আবার যেন কিছু বিড়বিড় করে কথা বলছে। অমিত ফের পাশ ফিরে লোকটির দিকে তাকালো। লোকটির বিড়বিড় করা আবার থেমে গেলো। ঠিক তখনই একটা গাড়ি রাস্তা দিয়ে চলে গেলো। গাড়ির আলোর ছটা লোকটির গায়ে পড়তেই অমিত চমকে উঠলো। মার্চের তীব্র গরমে লোকটি হাতে হ্যান্ড গ্লাভস পড়ে, ফুলহাতা জামা গায়ে আটিয়ে, রোদ চশমা চোখে দিয়ে, মুখে ইয়া বড়ো মাস্ক লাগিয়ে বসে আছে।
অমিতের মাথায় নানান আজে বাজে কথা ঘিরে আসতে শুরু করলো। নাহ্, আজে বাজে বিষয় নিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই। একবিংশ শতাব্দীর শিক্ষিত ছেলে সে। হয়তো লোকটির ঠান্ডা লেগেছে তাই জামাকাপড় জড়িয়ে আছেন। সে কথা ভেবে অমিত গা ঝাড়া দিয়ে রাস্তার দিকে পা বাড়ালো। রাস্তায় উঠতেই খুব ক্ষীণ গাড়ির আওয়াজ শুনে অমিত খানিকটা শান্তি পেলো। হয়তো তার বাড়ি যাওয়ার গাড়িই আসছে...
চলবে....
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
পাশের লোকটি সন্দেহ জনক, কি জানি পরের পর্বে কি হতে চলেছে? খুব ভালো সাসপেন্স। অপেক্ষায় রইলাম।
ধন্যবাদ অসিত বাবু 🤗।
দাদা ২ দিন অপেক্ষায় ছিলাম তোমার বাসস্ট্যান্ডের আগন্তুক গল্পের পরবর্তী পর্বের জন্য । কিন্তু তুমি তো সেই সাসপেন্ড রেখেই আজকের লেখা সমাপ্ত করে দিলে। আবার অপেক্ষায় থাকতে হবে কবে পোস্ট করবে পরবর্তী পর্ব। অমিতের সাথে কি ঘটতে চলেছে সেটা জানার খুব আগ্রহ জেগে গেছে। বিড়বিড় করা লোকটির পরিধানকৃত পোশাকের বর্ণনা খুবই অদ্ভুত ছিল। নেক্সট কি হতে চলেছে তার জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
সাসপেন্স তাড়াতাড়ি শেষ করলে কি হয়। ধীরে ধীরে খোলসা হবে। খিক খিক।
সবুরে মেওয়া ফলে দাদা.. অপেক্ষায় রইলাম দেখি কি সাসপেন্স পাওয়া যায় শেষমেষ।
টানটান উত্তেজনা তৈরী হচ্ছে কিন্তু। কবে পাব পরের অংশ? খুব ভালো লিখেছেন,অনেকটাই ম্যাচিওর লেখকের মত আগের অংশেই বলেছিলাম।।☺
ধন্যবাদ ম্যাডাম। আশা করছি পরের অংশ তাড়াতাড়ি পোস্ট করতে পারবো।
অমিতের সাথে বিড় বিড় করা লোকটি আসলে কে? আর এই লোকটির বর্ণনা শুনে তো খুবই ভয় লাগতেছে। পুরো পোস্ট পড়ে আরো বেশি ভয় পাচ্ছি। মনে হচ্ছে অমিতের সাথে কিছু না কিছু ঘটতে চলেছে। কিন্তু কি ঘটতে চলেছে এটাই তো জানতে পারলাম না। এর জন্য পরবর্তী পার্ব কখন আসে তার অপেক্ষায় রইলাম?
আরো চমক ধীরে ধীরে আসবে। খিক খিক।
দাদা আপনার প্রথম পর্বের পর দ্বিতীয় পর্বে এসে গা কেমন ঝমঝম করছে। জানিনা এই গাড়ির সঙ্গে অমিতের কি ঘটবে। আবারো অপেক্ষায় রইলাম দাদা তৃতীয় পর্ব দেখার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল। সেই সাথে অমিতের জন্যও।
ধন্যবাদ অমিতাব বাবু।
আগের পর্বটি পড়িনি কিন্তু এই পর্বটি পড়ে বাকি অংশটুকু পড়ার আগ্রহ জন্মে গেলো। কি ঘটতে চলেছে অমিতের সংগে তার কি শেষ মেস বাড়ি যাওয়া হবে!! পরের পর্বে দেরি করবেন না দাদা ,অপেক্ষায় রইলাম।
শেষমেষ কি হয় সেটারই অপেক্ষা, তাইনা? শীঘ্রই পরের পর্ব নিয়ে হাজির হবো।
অমিতের সাথে কি হয় সেটাই দেখার অপেক্ষা 😀
দাদা আপনার গল্পের প্রথম অংশটিও পড়েছিলাম। আজকে দ্বিতীয় অংশটি পড়ে খুবই ভালো লেগেছে। খুবই উত্তেজনাকর মুহূর্ত সৃষ্টি হয়ে গেছে আপনার গল্পে। এখন পরবর্তী পর্বে দেখা যাক অমিতের কপালে কি রয়েছে। অমিতের সঙ্গে তার বাড়িতে যাওয়া হয় কিনা।
অমিতের সাথে কি হবে? পরের পর্বে খোলসা হবে আরো।
জি দাদা।