আশীর্বাদের স্পেশ্যাল চিকেন বিরিয়ানি
নমস্কার বন্ধুরা,
রাস্তাঘাটে অনেকদিন হলো খাওয়া-দাওয়া খুব কমিয়ে দিয়েছি। মাঝে মধ্যে এদিক ওদিকে যাওয়ার প্রয়োজন হলে একটা এগ রোল কিংবা একটা চিকেন রোলেই শান্ত থাকি। তবে যখন বিশেষ বিশেষ কিছু জায়গায় যাই তখন সেখানকার সবচেয়ে সেরা খাবারটা না খেলেই নয়। যেমন কাজের জন্য কখন যদি ব্যারাকপুরে যেতে হয় আর হাতে সময় থাকে তাহলে অবশ্যই দাদা বৌদি কিংবা ডি বাপিতে একবার হলেও ঢুঁ মেরে আসি। কলকাতার শহরতলী জুড়ে এরকম অনেক ছোট ছোট দাদা বৌদি বা ডি বাপি-রা রয়েছে যাদের নাম সচরাচর মানুষের সামনে আসে না। যদি না সেই জায়গায় আপনার কেউ পরিচিতি থাকে তাহলে। এরকমই এক জায়গা হলো রামরাজাতলা।
হাওড়ার ছোট্ট এই শহরতলীতে দুতিন মাস পর পরই আমাকে কাজের জন্য যেতে হয়। যেহেতু যাতায়াতটা লেগেই থাকে তাই সেখানকার পরিচিতিরাই আমাকে দোকানের নামটি জানায়, আশীর্বাদ বিরিয়ানি। সেখানে খাবারের ভ্যারাইটি অনেক ধরনের যেগুলো একবারে খেতে পারবো না তাই যখনই ইচ্ছে তাদের দোকান থেকে খাওয়ার তখন তাদের যেকোনো একটি পদ বেছে নিই।
সন্ধ্যে নামতেই আশীর্বাদে বিরিয়ানি কেনার লাইনটা শুরু হতে থাকে। রাত বাড়ার সাথে সাথে যেটা অনেকটা বড়ো হয়ে যায়। আসলে শহরতলীতে বিরিয়ানির দাম খুব বেশি না হওয়ায় মানুষজন মাঝেমধ্যেই বিরিয়ানি কিনে খায়। অনেকের কাছে দামটা কম বা সস্তার জিনিস মনে হতে পারে, আমিও তার মধ্যেই একজন ছিলাম তবে প্রথম যখন আশীর্বাদের বিরিয়ানি খেয়েছিলাম তখন সত্যিই অবাক হয়েছিলাম। দাম অনুযায়ী তাদের খাবারের স্বাদ খুব ভালো। অনেক দিন পর তাই আবার যখন সুযোগ পেলাম তখন আশীর্বাদের বিরিয়ানি খেলাম। আজ নিয়েছিলাম আশীর্বাদের স্পেশ্যাল চিকেন বিরিয়ানি।
আশীর্বাদের বিরিয়ানি বানানোর স্টাইলটা কলকাতার অর্থাৎ আতর ও কেওড়া জল বিরিয়ানিতে অনেক বেশি দেওয়া হয়। আগেরবার যেহেতু আতর ও কেওড়া জলের অভিজ্ঞতা হয়েছিলো তাই এইবার অর্ডার দেওয়ার সময় একদম তলার রাইস নিলাম আর পছন্দ করা মাংসের টুকরো। তারপর এক লিটারের ভারী কন্টেনার হাতে ঝুলিয়ে তড়িঘড়ি ঘরে ফিরে এলাম। আসলে আমি বাইরের খাবার খেলেও সেটা বাড়িতে নিয়ে এসে স্বাচ্ছন্দে খেতেই আমি বেশি পছন্দ করি। বাড়ি ঢুকে ঝটপট প্যাকেট খুলে ফেললাম।
প্যকেট খুলতেই প্রতিবার ঘরটা সুগন্ধিতে ঘরটা ভরে গেল। কন্টেনারটাকে তারপর প্লেটে উল্টে দিতে একগাদা বিরিয়ানির রাইস প্লেটে বেরিয়ে এলো সাথে একখানা আলু এবং একটা চিকেন লেগ পিস। কন্টেনারের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে আরো একটা চিকেনের টুকরো বের করে নিয়ে আসলাম। অপেক্ষার পালা শেষ করে অল্প চিকেন ছিঁড়ে, অল্প আলু আর রাইস মুখে ভরে দিলাম। মুখে দিতেই বুঝতে পারলাম তলার দিকের জুসি রাইসটা নিয়েই বেশি লাভ। তাতে আতরের গন্ধটা যেমন কম তেমনি জুস বেশি হওয়ায় সহজেই পেটস্থ হয়ে গেলো।
প্রচন্ড খিদে পেলেও ধীরে ধীরেই বিরিয়ানিটা পেটের ভেতরে চালান করে দিলাম। খাবার শেষে পরিমানের কথা ভেবেই আশ্চর্য হলাম। এক লিটারের কন্টেইনারে দুদুখানা চিকেন, একটা অর্ধেক আলু আর দেড় জনের সমান রাইস দিয়ে দাম মাত্র ১৪০ টাকা। তাছাড়া আগেরবারের তুলনায় চিকেন বেশি সুসিদ্ধ হয়েছিল এবং তাতে মসলাও দারুন ভাবে ঢুকে পড়েছিল।

আর্শীবাদ বিরিয়ানি নামটা বেশ দারুন।আর্শীবাদ বিরিয়ানিতে নিশ্চয়ই আর্শীবাদ রয়েছে না হলে এতো জনপ্রিয়তা পেত না।অল্প দামে বেশ অনেকটা বিরিয়ানি সাথে চিকেন।দামে কম মানে ভালো এই যা।দারুণ মজা করে খেয়েছেন বিরিয়ানি। অনেক ধন্যবাদ দাদা এতো সুন্দর মূহুর্ত তুলে ধরার জন্য।
দাদা সবচেয়ে মজার বিষয় ৷আমি তো ভেবেছি কারো বিয়ের আশীর্বাদের জন্য আপনাকে ট্রিট দিয়েছে ৷ কিন্তু ওমা আমার অনেক ভালো লাগলো স্পেশ্যাল রেস্টুরেন্ট নাম শুনে ৷ দামে কম মানে ভালো এরকমই চাই ৷ হাহাহা
আশীর্বাদের স্পেশ্যাল চিকেন বিরিয়ানি দেখে জিভে জল এসে গেছে দাদা ৷ আসলে ছবিতে যেমন দেখা যাচ্ছে ৷ আসলেই অনেক সুস্বাদু হয়েছে যতটা মনে হয় ৷ অনেক ভালো লাগলো দাদা এমন সুন্দর একটি ব্লগ উপস্থাপনা করার জন্য ৷
যেহেতু দাদা সে পথে আপনার কাজে সব সময় যাতায়াত থাকে, আর ওই হিসেবে ওখানকার লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারলেন এই বিরিয়ানির সংবাদ। তবে সত্যি দাদা দেখেই লোভ লাগছে এত বড় বড় বাসমতি চাল দিয়ে বিরিয়ানি খেতেও অনেক সুস্বাদু হয়েছিলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
আমি যখন বাইরে কাজের জন্য বের হই, তখন আমিও খুব সামান্য পরিমাণ নাস্তা খাই। আমারও তেমন বাইরের খাবার শরীরে সহ্য হয় না। আপনি আশীর্বাদের বিরিয়ানি নিয়ে চমৎকার একটি পোস্ট করলেন। আসলে আমাদের তো রোজা চলছে কি বলবো। এতটাই লোভনীয় দেখাচ্ছে খাবারটি লোভ সামলানো সত্যিই মুশকিল। আর খাবারের যে বর্ণনা দিলেন তার সাথে এতে করে দাম অনেক বেশি হবার কথা ছিল। তবে মাত্র ১৪০ টাকা প্যাকেট হলে সত্যিই এটা সাধ্যের মধ্যে অসাধারণ খাবার। অনেক ধন্যবাদ দাদা লোভনীয় খাবারটি নিয়ে চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের উপহার দেয়ার জন্য।
বাঙালির সঙ্গে বিরিয়ানির যেন আলাদা একটা সম্পর্ক রয়েছে। সেটা হোক কলকাতা বা বাংলাদেশ। কোন অঞ্চলের বিশেষ বা সেরা খাবারের সন্ধান তো ঐ এলাকার মানুষই দিতে পারে। যেমন আপনি এই আর্শীবাদ বিরিয়ানির খোঁজ পেয়েছেন। বিরিয়ানি টা দেখেই আমার কাছে বেশ ভালো মনে হয়েছে। আর বাকি টা তো আপনার পোস্টেই প্রকাশ পেয়েছে।
আপনার খাবারের রিভিউ পড়ে মনে হচ্ছে যেন স্বাদের এক অনন্য সফরে পা রেখেছি। আপনার বর্ণনা এতটাই জীবন্ত যে, চোখ বন্ধ করলেই সেই সুস্বাদু বিরিয়ানির গন্ধ নাকে আসে। আপনার লেখনীতে খাবারের প্রতি আপনার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রতিফলিত হয়েছে, যা পাঠককে নিজেও সেই খাবার চেখে দেখার জন্য উৎসাহিত করে। আর স্বাদের তুলনায় বিরিয়ানির দামও অপেক্ষাকৃতভাবে বেশ কম। ধন্যবাদ এমন অসাধারণ রিভিউ উপহার দেয়ার জন্য।
দাদা এতো মজার বিরিয়ানি এবং পরিমাণেও কতোটা বেশি, কিন্তু দাম মাত্র ১৪০ টাকা। দেখে সত্যিই অবাক হয়ে গেলাম। আমাদের দেশে মিনিমাম ৩০০ টাকা হতো। যাইহোক খাবারের কোয়ালিটি ভালো হলে মানুষের লাইন থাকেই। বাসায় পার্সেল নিয়ে গিয়ে বেশ মজা করে চিকেন বিরিয়ানি খেয়েছেন দাদা। বিরিয়ানির কালার দেখেই বুঝা যাচ্ছে খেতে খুব ইয়াম্মি লেগেছিল। যাইহোক পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো দাদা। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Congratulations @kingporos. You received an upvote from @supportive
১৪০ টাকা হিসেবে কিন্তু যথেষ্ট ভাল কোয়ান্টিটির বিরিয়ানি দিয়েছে দাদা। তবে আমার মতে আতর ও কেওড়া জল বিরিয়ানিতে দিলে বিরিয়ানির স্বাদ খুব বেশি একটা ভালো লাগেনা। প্রথমে আশীর্বাদ বিরিয়ানির নাম শুনে ভেবেছিলাম, মনে হয় আমাদের মধ্যমগ্রামের বিরিয়ানি। যাই হোক, তুমি বিরিয়ানি বাড়ি এনে খেয়েই ভালো করেছো, আমি নিজেও দোকানে বসে খেতে খুব বেশি একটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না ।