আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা - ৬৬৷ নিজের পছন্দের কিছু শীতের ছবি।
শীতের ছবির প্রতিযোগিতায় বেশ কিছু পছন্দের ছবি
💐সকলকে স্বাগত জানাই💐
শীতের সময় এমনিতেই বাঙালি ঘুরতে বেশি ভালোবাসে। আর ঘোরা মানেই বিভিন্ন ধরনের ছবি ক্যামেরাবন্দি করা। বর্তমান যুগে সঙ্গে মোবাইল থাকার কারণে ছবি ক্যামেরাবন্দি করার অনেক সুবিধে। এখন আর আলাদা করে ক্যামেরা বহন করতে হয় না। সঙ্গের মোবাইলেই একসাথে সব সলিউশন যেন এক পকেটে। আর আমি যেখানেই যাই ছবি তুলতে ভালবাসি। যদিও খুব ভালো ফটোগ্রাফার আমি কোনদিনই নই। তবু চেষ্টা করি বিভিন্ন মুহূর্তকে ক্যামেরাবন্দী করে রাখতে।
আর এই শীতের মধ্যেই দেখলাম আমার বাংলা ব্লগে ঘোষিত হলো শীতের ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা। ব্লগের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নিজের তরফ থেকে অংশগ্রহণ করবার চেষ্টা করি। অংশগ্রহণ করাকেই প্রধান মনে করে নিজের মতো করে চেষ্টা করি কিছুটা ছাপ রাখতে। জয় পরাজয়ের চিন্তা না করে অংশগ্রহণ করাই হলো এ ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান একটি বিষয়। তাই শীতের প্রতিযোগিতা দেখবার সঙ্গে সঙ্গে শুরু করলাম কয়েকটি ফটো তোলা। সেই সব ফটো কখনোই পেশাদারী ফটোগ্রাফারদের মত হবে না তা জানি। তবু চেষ্টা করেছি শীতের আবহে প্রকৃতি এবং তার আশপাশের বিভিন্ন ছবি আপনাদের সামনে তুলে আনার। শীতকাল হলো বেড়ানোর সময়। আর এই সময় এলেই বাঙালির মন নেচে ওঠে। আমিও বিভিন্ন সময়ে সময় সুযোগ পেলেই পৌঁছে যাই বিভিন্ন গন্তব্যে। কখনও একা আবার কখনো কন্যাকে সঙ্গী করে এই শীতেও গেছি কয়েকটি জায়গায়। আসুন একে একে সেই সব ছবি আপনাদের সামনে পেশ করি।
💐ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল💐
শীতের দিন মানে কলকাতা শহরে প্রথম যা মাথায় আসে তা হল ভিক্টোরিয়ার বাদামভাজা। আর এই জায়গাটি আমাদের সকলের প্রিয় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল। তাই শীতের দিনে সকালবেলা পৌঁছে গিয়েছিলাম ভিক্টোরিয়ায় ঘুরবার জন্য। সেখানেই কিছু মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করেছি নিজের মোবাইল। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল তৈরি করেছিলেন ভাইসরয় লর্ড কার্জন। এটি ইংল্যান্ডের মহারানী ভিক্টোরিয়ার স্মৃতির উদ্দেশ্যে তৈরি করা একটি বিশাল সৌধ। শুধু কলকাতা নয়, এই স্মৃতিসৌধের সুনাম আছে সারা পৃথিবী জুড়ে। দেখুন আমার ক্যামেরায় বেশ কয়েকটি বন্দি করা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের স্থিরচিত্র। সঙ্গে এর আশপাশের পরিবেশ, লাগোয়া লেক এবং জমিতে পাথরের ছবিও আপনাদের দেখাবার চেষ্টা করলাম।
💐কলকাতা ময়দান💐
কলকাতায় একটি বিখ্যাত জায়গা হল কলকাতা ময়দান। যাকে চলতি ভাষায় মানুষ গড়ের মাঠ বলে ডাকে। গড় অর্থাৎ কেল্লা। আর সেই কেল্লার চারপাশে থাকা মাঠই হল গড়ের মাঠ। আসলে তখন এই অঞ্চলে ছিল ইংরেজদের প্রতিষ্ঠিত ফোর্ট উইলিয়াম কেল্লা। আর কেল্লা থেকে চারপাশের গতিবিধি নজর রাখার জন্য যে দীর্ঘ মাঠ, তাকে গড়ের মাঠ বলে ডাকা হতো। আর সেই মাঠ রয়ে গেছে আজও। এখন তার পাশে তৈরি হয়েছে কলকাতা তথা পূর্ব ভারতের সব থেকে উচু বিল্ডিং দ্যা ৪২। ছবিতে আপনারা সেই বিল্ডিংটি দেখতে পাচ্ছেন। এই বাড়িটি মোট ৬৫ তলা উঁচু। গড়ের মাঠের পাশে এই বাড়িটির শোভা যেন এক অন্য মাত্রায় নিয়ে যায় কলকাতা শহরকে।
কলকাতা ময়দানের গা ঘেঁষে এই রাস্তাটি একেবারে সোজা চলে গেছে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল পর্যন্ত। পাশে যে রেলিংটি দেখতে পাচ্ছেন তা হল মোহরকুঞ্জ। কেন জানি না, শীতের সকালে এই রাস্তাটি আমার খুব ভালো লাগলো সেদিন। আগেও সেখান দিয়ে প্রচুর হেঁটেছি। তবে সেদিন জনমানবহীন এই রাস্তাটি আমাকে যেন আলাদা করে আকর্ষণ করলো। তাই সঙ্গে সঙ্গে ক্যামেরাবন্দী করলাম গাছ গাছালি ঘেরা রাস্তাটির ছবি।
💐দার্জিলিং পাহাড়💐
এবার আসি শীতের দিনে কিছু পাহাড়ি ছবিতে। এই ছবিগুলি প্রত্যেকটি দার্জিলিং থেকে লামাহাট্টা গ্রামে যাওয়ার পথে তোলা। ছবিগুলির মধ্যে যেন এক অন্য রকমের মাদকতা আছে।। যদি অনেকক্ষণ এই ছবিগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকেন তবে মনে হবে আপনিও হয়তো সেই অঞ্চলে চলে গেছেন। এই ছবিগুলি আমি আলাদা করে রেখে দিয়েছিলাম নিজের কাছে। শীতের ইভেন্ট দেওয়ার সাথে সাথে মাথায় আনি এই ছবিগুলোর কথা। শীতের দিনে পাহাড়ি রাস্তার জন্য এক অন্যরকম টান আছে। আর সেই অমোঘ টান উপেক্ষা করবার ক্ষমতা কারই বা আছে?
💐শীতের ভোরে গঙ্গা💐
এরপরে যে ছবি দুটি দেখবেন তা হল শীতের ভোরে গঙ্গার ছবি। তখন ভারী কুয়াশায় চারপাশ একেবারে ঢেকে গেছে। সামনের মানুষটিকেও দেখবার আর যো নেই। আর সেই কুয়াশার মধ্যে কাঁপতে কাঁপতে আমি নৌকায় চড়ে চলেছি নিজের গন্তব্যে। ছবিটি কয়েকদিন আগেই ক্যামেরাবন্দি করেছিলাম। আজ ইচ্ছে হলো শীতের ফটোগ্রাফিতে এই ছবিটিও তুলে দিয়ে আপনাদের কাছে।
💐শীতের সকালে বারোমন্দির ঘাট💐
এবার যে ছবিটি আপনাদের দেখাবো তা হল এই শীতের দিনে একদিন সকালে হঠাৎ গঙ্গার ধারে গিয়ে তোলা। বাড়ি থেকে হঠাৎ বাহনে চেপে পৌঁছে গিয়েছিলাম গঙ্গার ধারে। সেখানে বারোমন্দির ঘাটে দেখলাম কিছু পায়রা খাবার সংগ্রহে ব্যস্ত। আমি তখন নিজের মত করে তাদের ফটোগ্রাফি করলাম। এছাড়াও ভোরবেলা গঙ্গা খুব ভালো লাগে। তাই গঙ্গার ঘাটে গিয়ে গঙ্গার ছবি তুলবো না, তা কি হয়? ক্যামেরায় তুলে আনলাম ভোরের গঙ্গার কিছু মুহূর্ত। সঙ্গে দেখতে পাচ্ছেন বারোমন্দির ঘাট এবং তার সন্নিকটস্থ কিছু জায়গা।
💐শীতের গোধূলি ও গঙ্গা💐
এবার দেখাবো শীতের গোধূলি বেলায় গঙ্গায় তোলা কিছু ফটোগ্রাফি। তখন সূর্য ঢলে পড়েছে পশ্চিম দিকে। আমি ফিরছি কর্মস্থল থেকে। ঠিক সেই সময় তুলে রেখেছি বেশ কয়েকটি মনমুগ্ধকর প্রাকৃতিক মুহূর্ত। আশা করি এই ছবিগুলি আপনাদের আনন্দ দিতে পারবে।
চেষ্টা করলাম আমার তোলা কিছু ফটো দিয়ে শীতের দিনের ছবি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে। কিন্তু তার থেকেও বড় উদ্দেশ্য হলো আপনাদেরকে আনন্দ দান করা। যদি ছবিগুলো দেখে আপনাদের ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই মন্তব্য করে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রথমেই অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।
চমৎকার সব ছবি। আহা। মুগ্ধ হয়ে দেখলাম। শীতের ভিক্টোরিয়ার কথা তোমার স্মৃতির পাতা থেকে আগেও শুনেছি। আজ দেখলাম। খুব সুন্দর হয়েছে ছবিগুলো। আর দার্জিলিং তো সেরার সেরা৷ এছাড়াও তোমার দৈনন্দিন যাত্রাপথ গঙ্গা- উফফফ অপূর্ব সব ছবি।
ভালো ফল হবে নিশ্চই৷ এই আশা করি৷
আমার দেওয়া ছবিগুলি তোর ভালো লেগেছে শুনে অনেক আনন্দ হল।
https://x.com/KausikChak1234/status/1869082824688758976?t=r-fLIaavHfx1VXXlZUF9pw&s=19
Daily Task-
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
প্রথমেই এমন সুন্দর একটি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ জানাই। ঠিক বলেছেন শীতের সময়ে ঘোরাঘুরি করতে খুব ভালো লাগে। আমিও এবার বেশ কিছু জায়গায় ঘুরতে গিয়েছিলাম। শীতের সময়টা আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আপনার প্রতিটা ফটোগ্রাফি খুব সুন্দর হয়েছে। বিশেষ করে দার্জিলিং এর পাহাড়ের ফটোগ্রাফি গুলো সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া এত চমৎকার সব ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর করে মন্তব্য করে আমার পাশে থাকলেন বলে।
প্রথমে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপনাকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। আপনার আজকের শীতের ফটোগ্রাফি পর্বে দারুণ কিছু দেখতে পেয়েছি। সত্যি কথা বলতে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ফটোগ্রাফি আমার কাছে মুগ্ধ করার মত ছিল। এতই ভালো লাগলো সবকিছু মিলিয়ে অসাধারণ ফটোগ্রাফি শেয়ার করলেন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার বক্তব্য আমার অনুপ্রেরণা দিল। অনেক ধন্যবাদ এমন সুন্দর মন্তব্য করবার জন্য।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা দেখতে পেয়ে অনেক ভালো লাগলো। আপনি খুব সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন।দেখে ভালো লেগেছে। আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও ভালোবাসা রইলো।
অনেক ধন্যবাদ এমন সুন্দর কমেন্ট করলেন বলে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
প্রথমে অভিনন্দন জানাচ্ছি বাংলা ব্লগের পক্ষ থেকে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। এবারে প্রতিযোগিতা মূল বিষয় ছিল শীতকালের ফটোগ্রাফি। আপনি অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গার ফটোগ্রাফি করে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার প্রতিটি ফটোগ্রাফি অসাধারণ হয়েছে ভাই। ধন্যবাদ
অনেক ধন্যবাদ আমার দেওয়া ছবিগুলি এত প্রশংসা করে মন্তব্য করলেন বলে।
এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রথমেই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। অনেক সুন্দর সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করলেন। আপনার প্রতিটা ফটোগ্রাফি অনেক বেশি সুন্দর হয়েছে। আর আমার কাছে ফটোগ্রাফি গুলো দেখতে অসম্ভব ভালো লেগেছে।
আমার দেওয়া ছবিগুলি আপনার ভালো লেগেছে শুনে আমার খুব ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ এমন মন্তব্য করে পাশে থাকবার জন্য।