সম্পূর্ণ হল কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা ২০২৫৷ কিছু অভিজ্ঞতা।
শেষ হল কলকাতা বইমেলা। কিছু অভিজ্ঞতা
দীর্ঘ লড়াই এবং যাত্রাপথের পর শেষ হলো কলকাতা বইমেলা ২০২৫। দেখতে দেখতে কেটে গেল বিগত ১০ টি দিন। ২৮শে জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে এই মেলা কাল ৯ই ফেব্রুয়ারি শেষ হলো। আর এই কদিন যেভাবে ভীষণ ব্যস্ততার মধ্যে কেটে গেল তা আপনারাও বেশ ভাল বুঝতে পেরেছেন। আসলে এই কয়েকদিন বইমেলায় খুব ব্যস্ত ছিলাম বলে ব্লগের পাতায় নিয়মিত আসাই হয়নি। এমনকি আগের সপ্তাহে পোস্ট করা হয়নি সব দিন। কোনভাবেই যেন সবকিছু সেরে ম্যানেজ করতে পারছিলাম না ব্লগের পাতায় নিজের এক্টিভিটিগুলি। আর ব্লগে এক্টিভিটি করতে না পারলে কখনোই ভালো লাগেনা। সব সময় মনে হয় কিছু যেন একটা অসম্পূর্ণ রয়ে গেল।
কলকাতা বইমেলা বিশ্বের একটি অন্যতম সেরা বইমেলা হিসেবে পরিচিত। এটি সারা ভারতের মধ্যে অন্যতম একটি আন্তর্জাতিক বইমেলা হিসেবে খ্যাতিসম্পন্ন। আর এই বইমেলাতে আমার লিটিল ম্যাগাজিনের টেবিল থাকে বলে এবং নিজের বই প্রকাশের বিষয় থাকে বলে প্রত্যেকদিন এখানে আসতে হয়। ফলে একটি বিশাল পরিশ্রম রোজ হতে থাকে একথা ঠিক। কিন্তু সারাদিন পরে যখন কোন একজন ব্যক্তি এসে বলেন যে আপনার সঙ্গে দেখা করতে এলাম, অথবা বলেন যে আপনার একটি বই আপনার হাত থেকে সই সমেত বই সংগ্রহ করতে এলাম, তখন সব ক্লান্তি এবং পরিশ্রম যেন এক ঝটকায় চলে যায়। এক নতুন উদ্যমে আবার শুরু করি নিজের কাজগুলি। লেখালেখি করতে আমি বরাবর পছন্দ করি। আর সেই থেকেই আমার কাজ শুরু হয় ধীরে ধীরে। বর্তমানে যেটুকু জায়গায় আসতে পেরেছি তার জন্য আমার সেই ইচ্ছাটুকুকেই আমি কারণ হিসেবে জানি। লেখালেখি এমন একটি বিষয় নয় সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণে আয় করা যায়। এমনকি বই প্রচুর পরিমাণে বিক্রি হলেও সমস্ত বইয়ের রয়াল্টি পাওয়া খুব সমস্যার। তাই সেই দিক থেকে প্রকাশকের কথার উপরই আমাদের ভিত্তি করতে হয় তবু নিজের নতুন বই বিক্রি হলে একটা আলাদা ভালোলাগার অনুভূতি কাজ তো করেই।
এবারের কলকাতা বইমেলায় কলকাতা এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বহু প্রকাশকেরা স্টল এবং টেবিল দিয়েছিল। থিম কান্ট্রি ছিল জার্মানি। অর্থাৎ জার্মানির একটি বিশাল স্টল বইমেলার মাঝে শোভাবর্ধন করছিল। এছাড়াও পেরু, চিলি ভেনেজুয়েলা থেকে শুরু করে ইউরোপের স্পেন, ফ্রান্সের মতো বিভিন্ন দেশগুলিও সাদরে অংশগ্রহণ করেছিল এই মেলায়। তাদের স্টলগুলিতে প্রচুর পরিমাণে ভিড় আছড়ে পড়ছিল। বইমেলায় বইয়ের স্টলের সাথে সাথে ছিল প্রচুর পরিমাণে খাবারের দল। আর বই কেনার ভিড়ের থেকেও খাবারের দোকানের ভিড়ে সবথেকে বেশি পরিমাণ মানুষ দাঁড়িয়ে গেছে। ফলে এক একটি খাবারের দোকান যেন এক একটি জনবসতির মত লাগছিল। কিন্তু বইয়ের বিক্রি তেমন নেই বললেই চলে। আসলে বই বিক্রি বিষয়ক সমস্যা নিয়ে আগের দিন একটি পোস্ট করেছিলাম। সেসব সমস্যা সামলেও আমাদের বইমেলা যাপন যেন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আবার একটি বছরের অপেক্ষা সামনে নিয়ে দিনগুলো গুনে যাব। কবিতার আলো নামক আমাদের যে লিটল ম্যাগাজিনটি আছে, সেটির কাজ সারা বছর জারি থাকবে। শুধুমাত্র বইমেলার জন্য আরও একটি বছর অপেক্ষা করতে হবে।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে ও ৫% এবিবি চ্যারিটিকে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
https://x.com/KausikChak1234/status/1888808471216218556?t=UvJtyzk2MW9VIQaKuo0oVA&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Daily tasks-
জানতে পেরে অনেক ভালো লাগলো যে বিশ্বের অন্যান্য দেশের উপস্থিতি ছিল কলকাতা বইমেলাতে। বইমেলা মানুষকে বিভিন্ন বইয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। অনেক কিছু জানার সুযোগ এনে দেয়। অনেক ভালো লাগলো চমৎকার এই বইমেলার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন দেখে।