আগ্রা ফোর্ট দুর্গের বিভিন্ন ঐতিহাসিক মহলের ফটোগ্রাফি।
আগ্রা ফোর্ট দুর্গের বিভিন্ন ফটোগ্রাফি
💐সকলকে স্বাগত জানাই💐
আজ আপনাদের সামনে ভীষণ আকর্ষণীয় কিছু ছবি নিয়ে এলাম৷ যে জায়গার ছবিগুলি নিয়ে আসবো সেই জায়গাটি আমার অলটাইম ফেভারিট। জায়গাটির নাম আগ্রা। ভারতবর্ষের রাজধানী দিল্লির অদূরে অবস্থিত আগ্রা বর্তমানে ভারতের একটি অন্যতম শহর। আর এই শহরেই অবস্থিত ভারতবর্ষের অন্যতম প্রাচীন একটি দুর্গ আগ্রা কেল্লা বা আগ্রা ফোর্ট। এই দুর্গের ইতিহাস বহু চর্চিত। একসময় এই কেল্লার অধিকার মুঘলরা হস্থগত করে। ১১০০ শতাব্দীতে নির্মিত একটি প্রাচীন দুর্গকে সম্রাট আকবর নতুনভাবে রূপদান করেন। সেই দুর্গের নাম দেন আগ্রা দুর্গ। এই আগ্রা দুর্গ ভারতের ইতিহাসের অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনার সাক্ষী। মুঘল সাম্রাজ্যের প্রায় প্রত্যেক সম্রাটরাই এখান থেকে রাজত্ব করে গেছেন।
💐মিনা বাজার💐
প্রথমেই যে ছবিটি দেখতে পাচ্ছেন সেটি হল আগ্রা ফোর্টের ভিতরে অবস্থিত মিনা বাজারের। এই বাজার মুঘল আমলে গমগম করত। বিভিন্ন মানুষ পেশার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দ্রব্যাদি নিয়ে এই বাজারে আসতেন। শোনা যায় এই স্থানেই নাকি সম্রাট শাহজাহান প্রথম মুমতাজকে দেখেছিলেন এবং মুগ্ধ হয়েছিল। এখানে পরপর যে ঘরগুলি দেখতে পাচ্ছেন, সেখানে বিভিন্ন দ্রব্য কেনাবেচা চলতো। এবং সম্রাট ছদ্মবেশে এখানে ঘুরে জিনিসপত্রের কেনাবেচা দেখতেন।
💐জাহানারা মহল💐
এখন যে ছবিটি দেখছেন সেটি হল জাহানারা মহলের ছবি৷ জাহানারা ছিলেন সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ কন্যা। তিনি এই গোল্ডেন প্যাভেলিয়ানে বাস করতেন। শোনা যায় একসময় এই পালকি আকৃতির ঘরের মাথায় নাকি সোনার ছাদ ছিল। বর্তমানে সেই সোনার ছাদ আর নেই। বলা হয় ইংরেজরা দেশ থেকে যাওয়ার সময় এই সমস্ত সোনার জিনিসপত্র নিয়ে চলে গেছিল। বর্তমানে তাই গোল্ডেন প্লেটেড করা আছে। উপরে সোনার ছাদ ছিল বলে এটিকে গোল্ডেন প্যাভেলিয়ান বা সোনালী প্রাসাদ বলা হয়।
💐শাহজাহান মহল💐
এবার যে ছবিটি দেখছেন সেটি হল সম্রাট শাহজাহানের আমলে বানানো একটি মার্বেল প্যালেসের অংশ। এটি ছিল তার ব্যক্তিগত বাসভবন। ঠিক তার সামনে মার্বেল পাথর দিয়ে বানানো এই বিশাল বারান্দা এক কথায় অসাধারণ। এখানে সম্রাট শাহজাহান পায়চারি করে বেড়াতেন ভাবলেই কেমন শিহরণ দেয়। আগ্রা ফোর্ট গিয়ে দেখেছি, সম্রাট আকবর বা জাহাঙ্গীরের সময় সমস্ত নির্মাণ লাল বেলেপাথরের, আর শাহজাহানের সময়ে বানানো সমস্ত প্রাসাদ একমাত্র সাদা মার্বেল পাথরের নির্মিত। কারণ সম্রাট শাহজাহান মার্বেল পাথর ভালোবাসতেন। তাই জন্য সম্পূর্ণ তাজমহলটি মার্বেল পাথরে তৈরি। সম্রাট শাহজাহানের আমলে বানানো মহল গুলিতে মার্বেল পাথরের উপরে অসাধারণ সব কারুকার্য করা আছে।
💐মিনা বাজার💐
এই ছবিতে মিনা বাজারের আরেকটি দিকের অংশ আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। সামনের ময়দান টি ছিল কেনাবেচা হওয়ার জায়গা। এখানে বিভিন্ন জিনিসপত্র এনে ব্যবসায়ীরা কেনাবেচা করতেন হাটে। তাই এই বাজারকে মিনা বাজার বলা হত। সম্পূর্ণ জায়গাটি আজ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের হাতে রয়েছে। আজ আগ্রা ফোর্টের যে অংশটি আমরা দেখতে পাই তাপমাত্রা ২৫ শতাংশ এলাকা। বাকি ৭৫ শতাংশ এলাকা ভারতীয় আর্মির হাতে রয়েছে।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
https://x.com/KausikChak1234/status/1871577642392297960?t=JB16jKDkfyP0FictUPxvBA&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Daily tasks-
এ জাতীয় পোস্টগুলো আমি অনেক অনেক পছন্দ করি দাদা। কারণ এই সমস্ত জায়গায় কখনো যেতে পারব কিনা স্বচক্ষে দেখতে পারবো কিনা তার কোন গ্যারান্টি নেই। কিন্তু তার আগে একসাথে কাজ করা ব্লগারদের মাধ্যমে দেখার সুযোগ পেলে অন্যরকম ভালোলাগা খুঁজে পায়। অনেক সুন্দর ভাবে সমস্ত কিছু উপস্থাপন করেছেন। বেশ ভালো লাগলো সুন্দরভাবে দালানের ফটোগ্রাফি করেছেন দেখে।
চেষ্টা করেছি আমার যাওয়া এইসব জায়গার ছবি আপনাদের সামনে তুলে আনতে ভাই। আপনাদের আনন্দ লাগলে সেটাই আমার কাছে পরমপ্রাপ্তি।
আজকে আপনি ঐতিহাসিক মহল দেখার সৌভাগ্য এনে দিয়েছেন আমাদের জন্য। আমরা ইতিহাস পড়ে অনেক সুন্দর সুন্দর ঘটনা জেনেছি ভারত মহাদেশের। তবে সময় সাপেক্ষে অনেক জায়গার প্রাচীন মহল গুলো ধ্বংস হয়েছে। তবে তার মধ্যেও অনেক জায়গায় এমন সুন্দর সুন্দর নিদর্শন রয়ে গেছে। এগুলো সম্পর্কে ধারণা পাওয়া এবং ধারণা রাখা একান্ত প্রয়োজন।
চেষ্টা করেছি ছবিগুলি আপনাদেরকে দেখাতে। এইসব মহলের ছবি দেখে আপনাদের ভালো লেগেছে জেনে আমার খুব ভালো লাগছে।
আজ আপনি আমাদের মাঝে আগ্রার এই দুর্গের বিভিন্ন ধরনের ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। যেহেতু এই দুর্গ আমি এই সর্বপ্রথম আপনার পোস্টে দেখতে পেলাম। সুন্দর একটা জায়গায় আপনি যেহেতু করেছেন এবং বিভিন্ন ধরনের জ্ঞান সেখান থেকে পেয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আগ্রা দুর্গতে আমি বেশ কয়েকবার গেছি। আমার অন্যতম প্রিয় জায়গা গুলোর মধ্যে একটি। তাই চেষ্টা করেছি এসব ছবিগুলি আপনাদের সামনে তুলে আনতে।
এরকম দর্শনীয় জায়গা গুলোতে ভ্রমণ করতে সত্যি অনেক ভালো লাগে। আর জায়গাগুলো দেখেই তো ঘুরতে যেতে ইচ্ছা করছে। অনেক সুন্দর করে আপনি ফটোগ্রাফি গুলো উপস্থাপন করেছেন ভাইয়া। দেখে খুবই ভালো লাগলো।
ঠিক বলেছেন। এইসব ঐতিহাসিক জায়গায় ভ্রমণ করার একটা আলাদা অনুভূতি আছে। মাঝে মাঝে এগুলো দেখে বেশ শিহরন জাগে। আমি চেষ্টা করেছি আমার চোখে দেখা এইসব জায়গা আপনাদের সামনে তুলে আনার।