মুর্শিদাবাদের পতন, কলকাতার উত্থান। পর্ব - ১
মুর্শিদাবাদের পতন, কলকাতার উত্থান
🙏 সকলকে স্বাগত জানাই🙏
একটা শহর ইকুয়াল টু এক রূপকথার নবাব। আশ্চর্য এক উত্থান আর ততোধিক আশ্চর্যের পতন। শুধু রাজত্বের নয়৷ আপাদমস্তক রাজধানীটার। কেন জানিনা মুর্শিদাবাদে বসেই হঠাৎ মনে পড়ে গেল উত্তর কলকাতার গলিগুলোর কথা। একজন ঢুকলে ওপারের জনকে অপেক্ষা করতে হয় তার না বেরোনো পর্যন্ত। সাধে কি আর সাহেবদের কাছে ব্ল্যাক টাউন? ফ্রম মুর্শিদাবাদ টু বাগবাজারের গঙ্গার ঘাট, কোন প্রান্তে যে সাহেবদের আলোটুকু পড়েছিল সেটাই ভাবছিলাম। সারারাত একরকম জেগেই কাটানোর পর আর একটা নতুন দিনের লড়াই। মাত্র কয়েকটা দিনে চষে ফেলতে হবে গোটা শহরটাকে। তাই সময় নষ্ট করার কোনো অর্থই হয় না।
কেল্লা নিজামত। নবাব, বেগমদের থাকবার জায়গা। ঢাকা থেকে মুর্শিদকুলী খাঁ ছুটে এসেছিলেন এই শহরে। তারপর থেকেই মুর্শিদাবাদ। আগের নাম? মুখসুদাবাদ। গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে সাজানো একটা জনবসতি৷ ঢাকায় তখন মুঘলদের প্রতিনিধি সুবেদার স্বয়ং ঔরঙ্গজেবের নাতি আজিম-উ-শান৷ মুর্শিদকুলীও বাদশার প্রিয় পাত্র। বাদশা নিজেই দেওয়ানের দায়িত্ব দিয়ে তাঁকে পাঠিয়েছেন বাংলায়৷ তারপর থেকেই ঢাকায় তাঁর বাস। কিন্তু মতে মেলে না সুবেদার আজিম উ শানের সাথে। স্বাধীন ভাবে কাজও করতে পারেন না মুর্শিদকুলী। শেষে বিবাদ চরমে উঠলে উপায় না দেখে নিজের বাসস্থান ও কর্মক্ষেত্র পরিবর্তন করা ছাড়া গত্যন্তর পেলেন না তিনি। তাই ঢাকা থেকে একেবারে মুখসুদাবাদ। ছোট কিন্তু গোছানো শহর৷ সেখান থেকেই শুরু স্বাধীন ভাবে কাজ। তারপর থেকে বাদশার কাছে বাংলা থেকে কর বাবদ পৌঁছে যায় অঢেল ধনরাশি আর নজরানা। গরুর গাড়ি ভর্তি নগদ সঞ্চয় করে পৌঁছে যায় দিল্লী৷ সেই অংকটা কখনো কখনো এক কোটিও ছুঁয়ে যায়৷ তাই স্বভাবতই খুশি কেন হবেন না বাদশা। সমস্ত কাজেই মুর্শিদকুলীর স্বাধীন দায়িত্ব। আর বিভিন্ন রাজা ও জমিদারদের থেকে কর আদায় করতে তিনিও সিদ্ধহস্ত। তাই ঠিক সময়ে করের অংক পৌঁছে যায় মুর্শিদাবাদে। অধ্যায়টার শুরু এভাবেই৷ আলো জ্বলবার মুহূর্তটাও শুরু সেই থেকেই৷
দিনটা মেঘলা হলেও ঝকঝকে। রোদের হালকা কিরণে ভিজে যাচ্ছে আজকের মুর্শিদাবাদ। আজ চলার পথে আর মুর্শিদাবাদের রাজধানী তকমা নেই। একটা শহরের কাঠামো নিয়ে তৈরি হয়েছে আর একটা শহর। আর ধীরে ধীরে জীবাশ্মে পরিণত হয়েছে পুরনো শহরটা।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
https://x.com/KausikChak1234/status/1877814335394771216?t=zHv4lj3-6-eaa0_9YBtaQA&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Daily tasks-
মাঝে মাঝে আপনার ব্লগের মাধ্যমে প্রাচীন ইতিহাস জানতে পারি। আজকে মুর্শিদকুলীও মুশির্দাবাদের আংশিক ইতিহাস জানতে পারলাম। আশা করি সম্পূর্ণ ইতিহাস টা জানতে পারবো। ধন্যবাদ।
আপনাদের পোস্টগুলো পড়লে না অনেক ইতিহাস জানা যায়। আজকে আপনি ঠিক তেমনি মুর্শিদাবাদ এর পূর্ব নাম ইতিহাস বিস্তারিত বিষয়গুলো বর্ণনার সাথে শেয়ার করেছেন। আর এই থেকেই অনেক কিছু জানার সুযোগ পেলাম। অসাধারণ ছিল দাদা, আপনার পোস্টটা। আশা করব এমন ইতিহাস কে কেন্দ্র করে অনেক সুন্দর পোস্ট নিয়ে আসবেন যেগুলো আমাদের অজানা কিছু জানার সুযোগ করে দিবে।