।।আসুন আজ একটি স্বরচিত ছড়া পড়াই।।
আসুন। আজ একটি মজার ছড়া পড়াই
শুভ দিন বন্ধুরা। ঈদের পরে সকলে কেমন আছেন? অনেক ঘোরা বেড়ানো তো হল৷ এবার নাহয় একটু মজায় আসা যাক৷ সারা পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম ভাষাভাষী মানুষের নাম হল বাঙালি। পণ্ডিত গোপালকৃষ্ণ গোখলে একসময় বলেছিলেন - "বাংলা আজ যা ভাবে, ভারত ভাবে আগামীকাল"। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাঙালির ভিন্নতর ভাবনা ও উন্নত মানসিকতা সারা পৃথিবীর মধ্যে বাঙালিকে আলাদা করে দেয় সকলের থেকে৷ কিন্তু বাঙালির বিভিন্ন মজাদার দিকগুলোকে তুলে এনে কিছুটা ব্যঙ্গাত্মক রস মিশিয়ে একটি ছড়া লিখেছি৷ সেটিই আজ আপনাদের পড়াতে ইচ্ছে হল।
আজ আমরা বাংলা ব্লগের পাতায় তুলে আনলাম সেই ছড়া।
বাঙালী
কৌশিক চক্রবর্ত্তী
এই বাঙালী কেমন প্রাণী বিদেশে বা ঘরে
জামাইষষ্ঠী খেয়ে আবার পকেটে মাছ ভরে।
যতই থাকুক ঘীয়ের সুবাস, দুহাত ভরা ক্রিম
ভুঁড়ির ওপর প্যাঁচপয়জা, বিকেলবেলা জিম।
নাকের আগায় বেবাক বাঁশি, শব্দে কমতি কিসে
কথায় কথায় হুমকি যোগান, "মরব টাটকা বিষে"।
এই বাঙালীর মুখেও 'ফরেন', নড়নচড়ন নেই
কেবল ভোরের পেড সংবাদ বাংলাতে পড়বেই।
চোখরাঙানী ফ্রিতে লুঠে পিঠের পিছে ঘাম
পরীক্ষাতেও শেষ প্রহরে পিছোয় পেন্ডুলাম।
লোকাল ট্রেনে তত্ত্বকথা, হাজার স্ট্যাটিস্টিক্স
কে কতটা ব্যাকফুটেতেও মারতে পারে সিক্স।
এই বাঙালী ঘরকুনো? কই? শপিং মলে ভিড়
চায়ের ভাঁড়ে বার্গেনিঙে ফ্যামিলি অস্থির।
শীত পড়েছে, ভিক্টোরিয়া, বাদামভাজা-চিড়ে
ফিরতি পথেও পকেট চেকিং, চোরপালানোর ভিড়ে।
যাদবপুর বা ধর্মতলায় হঠাৎ স্নোফল চাই
তবে কী আর সিকিম, ভুটান ছুটতো হে সব্বাই?।
দেয়াল জুড়ে তুর্কীনাচন, ডেমোক্রেটিক গান
অজান্তে নয় 'পাঁইয়া-উড়ে'র পিণ্ডিও চটকান।
পায়জামাতে জার্সি দড়ি, বুকপকেটে বল
শিয়ালদাতে লুকোচুরি, টিকিটহীনের দল।
আন্দোলনে কুশপুতুলের সেলফি ছবি তুলে
বাংলা বাঁচাও ব্যানার লাগায় বিলেতি মাস্তুলে।
ছড়াটি নেহাতই ব্যঙ্গাত্মক ও রসাত্মক। তাই সমস্ত বিষয়টিকেই মজা হিসাবে নেবেন। বাঙালির সমস্ত গুণাবলী তাদের পৃথিবীর মধ্যে অনেক উঁচু স্থানে নিয়ে গেছে৷ আজও এমন বহু ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে বাঙালি নেতৃত্ব দেয়। মনেপ্রাণে চাই সারা পৃথিবীতে বাঙালির জয়জয়কার হোক।
ছড়াটি পড়ে মজা পেলে জানাবেন। আর নিজেদের মতামতও ব্যক্ত করবেন। তাহলেই জমে উঠবে বাঙালিদের বাঙালি তর্জা।
জয় বাংলা...
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার সহ সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।