আমার পত্রিকার নতুন সংখ্যার জন্য সম্পাদকীয় লিখলাম।
সম্পাদকীয় কলম
প্রকাশিত হতে চলেছে আমার পত্রিকা কবিতার আলোর এই মাসের (নভেম্বর) ওয়েব সংখ্যাটি। তাই এই সংখ্যায় কলম ধরলাম সম্পাদকীয় লেখবার জন্য। প্রধান সম্পাদক হিসেবে আমাকে প্রত্যেকটি সংখ্যার সম্পাদকীয় কলমটি লিখতে হয়। আগামীকাল এই ওয়েব সংখ্যাটি প্রকাশ হবে। তাই যে সম্পাদকীয়টি লিখলাম সেটিই ইচ্ছে হলো আপনাদের পড়াই। আমার পত্রিকার পাঠকরা পড়বার আগেই আমি এই সম্পাদকীয়টি তুলে দিলাম ব্লগের পাতায়।
☘️সম্পাদকীয়☘️
পৃথিবীর সমস্ত বিপন্নতাকে একত্রিত করে আমরা চেষ্টা করি উদ্দেশ্যকে খুঁজে বার করতে। এই উদ্দেশ্যের পথে ছুটে চলা যেন অনাবিল এক সমুদ্রপথে চেনা গণ্ডির বাইরে নিজেকে ইচ্ছাকৃত হারিয়ে ফেলার তাগিদ। হারিয়ে ফেলতে গিয়ে আমরা নিজেদের দিকে তাকাতেই ভুলে যাই। আর সেখান থেকেই জন্ম হয় আত্মপ্রত্যয়ের অভাব। আমরা বলতে পারি পৃথিবী আজ বিপন্ন। তাই তো তিলোত্তমার মত ফুলের কুঁড়িকে অকালে হারিয়ে যেতে হয় শহরের রাজপথ থেকে। আমরা নিজেদের ক্ষমা করতে পারি কী? আসলে এই পৃথিবীর বুকে সমস্ত দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা সরে যেতে পছন্দ করি। 'মানবতার জয় হোক' স্লোগানে যখন মুখরিত হয় রাজপথ, তখন প্রদীপের তলায় খুন হয়ে যায় তরতাজা প্রাণগুলো। এ যেন আলোর সঙ্গে অন্ধকারের লড়াই। আর সেই চিরাচরিত লড়াইতে আমরা নিতান্ত দাবার ঘুঁটি ছাড়া আর কিছুই নয়। বরং আসুন, আমরা উদ্দেশ্যের পথে হাঁটি। বিধেয়কে পর্যালোচনা করে অন্ধকারকে কাটিয়ে আলোর পথকে সুগম করি। তখনই নির্মীয়মান পৃথিবীর চারপাশ সবুজে ভরিয়ে তুলতে পারব। আমরা বদ্ধপরিকর।
আবার আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি মতো নিয়ে এলাম কবিতার আলোর আরও একটি ওয়েব সংখ্যা। আমরা সকলে কবিতার আলো। আলোকে উদ্দেশ্য করে আমরা অন্ধকারের বিপরীতে হেঁটে যাই অনবরত। এবারের ওয়েব ম্যাগ ইস্যুটি সেই পথেই পরিচালিত হয়েছে আগাগোড়া। কারন আমাদের সমাজে আলোর বড় প্রয়োজন। যখন অন্ধকার ধীরে ধীরে গলা টিপতে আসে মানবতার, তখন আমাদের জোটবদ্ধ হতে হয়। আসুন কবিতা এবং সাহিত্যকে উদ্দেশ্য করে আমরা মঞ্চ গড়ে তুলি। আর সেই মঞ্চে যেন সকলে গড়তে পারি সুদৃঢ মানববন্ধন। স্তব্ধ গতিপথকে সচল গতিধারায় রূপান্তরিত করতে আমাদের মত সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। একত্রে গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে বিচার চাইতে হবে তিলোত্তমার, সামাজিক উপায়ে। নির্জন প্রতিটি কোণ যখন একা হয়ে পড়ে, তখন সেখানে ছড়িয়ে দিতে হবে রোদের কিরণ। আমরা পারব না? আপনারা সঙ্গে থাকলে আমরা ঠিক এগিয়ে যাব।
প্রতিমাসে এই অঙ্গীকারকে বুকে নিয়ে আমরা একটি একটি করে সিঁড়িতে পা ফেলবো সন্তর্পনে। আর ধীরে ধীরে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে হাতে হাত মেলাবো ভবিষ্যতের চূড়ায় দাঁড়িয়ে। সচল হোক রাজপথ। কেটে যাক সমস্ত অচল ক্লেদ। আপনারাও যতটা পারবেন শেয়ার করুন আমাদের চিন্তা ভাবনাগুলিকে। প্রত্যেকটি কবিতা হোক মানবতার এক একটি প্রকৃষ্ট নদীপথ। আর সেই নদীতে উজান আসুক নিয়ম করে। আসুন হাত ধরি। এগিয়ে যাই সামনের দিকে। পড়ে থাক সমস্ত অজানা ধুলোপথ। সামনে খোলা আছে অনন্ত ধানমাঠ।
মানবতার জয় হোক। সমাজ হোক শিল্পীদের।
কৌশিক চক্রবর্ত্তী
সম্পাদক
তারিখ - ২১শে নভেম্বর, ২০২৪
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
https://x.com/KausikChak1234/status/1859299655328076031?t=nK_gU7Isec0Ebxqm89PoTg&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আজকের টাস্ক -