SALAAR পার্ট ওয়ান মুভি রিভিউ ।।
বাংলা ভাষার নাম্বার ওয়ান কমিউনিটি-
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন। আমা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি সুপার হিট মুভি রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। মুভিটির নাম শুনলেই সবাই চিনে ফেলবেন। গত পরশুদিন রাতে মুভিটা দেখেছি। আমার কাছে মুভিটি দেখে মোটামুটি ভালোই লেগেছে। সেই জন্যই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আশা করি রিভিউটি পড়লেও মজা পাবেন।
মুভির প্রয়োজনী কিছু তথ্য
নামঃ- সালার
রচনা ও পরিচালনাঃ- প্রশান্ত নীল
প্রযোজকঃ- বিজয় কিরগণ্ডুর
অভিনয়েঃ- প্রভাস, পৃথ্বীরাজ সুকুমারন, শ্রুতি হাসান, জগপতি বাবু,তিননু আনন্দ, ঈশ্বরী রাও, শ্রীয়া রেড্ডি সহ আরো অনেকে।
মুক্তির তারিখঃ- ২২ ডিসেম্বর ২০২৩
সময়ঃ- ২ ঘন্টা ৫৭ মিনিট
দেশঃ- ভারত
ভাষাঃ- তেলুগু
নির্মাণব্যয়ঃ- আনুমানিক ২৭০ কোটি রুপি ।
আয়ঃ- ৭০৫ কোটি রুপি।
সংক্ষিপ্ত রিভিউ-
সালার মুভি ২২ ডিসেম্বর ২০২৩- এ মুক্তি পেয়ে বিশ্বব্যাপী আলোরন সৃষ্টি কারী একটি মুভি। মুভিটি দেখে সাধারন দর্শক সহ সবার কাছ থেকে ইতিবাচক নেতিবাচক দুই প্রকারের কমেন্টই এসেছে। তবে বেশি অংশ ইতিবাচকই ছিল। সালার ২০২৩ সালের সর্বোচ্চ আয়কারী তেলেগু মুভি। যেটা তেলেগু মুভিতে সর্বকালের তৃতীয় সর্বোচ্চ আয়কারী মুভি হিসাবে নির্বাচিত হয়। আবার ভারতীয় চলচ্চিত্রের মধ্যে ২০২৩ সালের চতুর্থ সর্বোচ্চ আয়কারী মুভি এবং ভারতের ইতিহাসে সর্বকালের ১১তম সর্বোচ্চ আয়কারী মুভি হিসাবে স্বীকৃতি পায়।
মুভিটি নির্মাণ হয় মূলত একটি রাজ্যকে নিয়ে। যেই রাজ্যের নাম হলো খানসার। এই রাজ্যে বাস করতো বেশ কিছু উপজাতি। ভারত স্বাধীন হওয়ার আগে থেকেই এই রাজ্যটি স্বাধীন ভাবে তাদের কার্যক্রম করে আসতেছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে খানসারের রাজা ভারত সরকারের সাথে স্বায়িস্তশাষিত রাজ্য হিসাবে চুক্তি করে তাদের স্বস্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখে। ১৯৮৫ সালে খানসারের রাজা ছিল শৌর্যঙ্গ উপজাতির প্রধান ধারা রাইসার। কিন্তুু একদিন ঐ রাজ্যের সব উপজাতি নেতা রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এমনকি কিছু উত্তেজিত জনতা রাজা রাইসারকে হত্যা করে। এমনকি রাজা রাইসারের ছেলে দেব ও পত্নীকে মারার জন্য এগিয়ে যায়। এমন সময় বিদ্রোহী নেতা মান্নারের ছেলে বর্ধার তার বাবার রাজ্যের একটি অংশ বিদ্রোহী সাধরন জনগনের প্রধানকে ছেড়ে দেয়। সেই রাজ্যের অংশ পেয়ে বিদ্রোহী জনগন চলে যায়। আর দেব ও তার মা বেচে যায়। এখানে দেব ও বর্ধার আগে থেকেই বন্ধু ছিল। অবশেষে দেব ও তার মা খানসার ছেড়ে চলে যায়। তবে বর্ধার ডাকলে দেব যে কোন সময় খানসারে আসবে। এমন ওয়াদা করে যায়।
রাজা রাইসারের পরে যে খানসারের রাজা হওয়ার কথা ছিল তাকে হত্যা করে মান্নার সিংহাসন দখল করে নেয়। এখন বর্ধার তার বাবার রাজ্যের অংশ ছেড়ে দেওয়ার কারনে সে নির্বাসিত হয়। এভাবে রাজা মান্নার অনেক উপজাতিকে হত্যাকরে তার সিংহাসন সুসংহত করে নেয়। ২০১৭ সালে ভারতের বড় একজন ব্যবসায়ীর মেয়ে আরাধ্যা তার মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে নিউ ইয়র্ক থেকে বারাণসীতে আসে। এই খবর আবার চলে যায় সেই ব্যবসায়ীর প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের কাছে। তারা আরাধ্যাকে কিডন্যাপ করতে চায়লে বিলাল নামের একজনের মাধ্যমে আরাধ্যাকে আসামের তিনসুকিয়ায় দেবের মায়ে কাছে পৌছে দেয়। সেখানে দেবের মা একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। আরাধ্যাকে কৌশল করে সেই স্কুলের টিচার বানিয়ে দেয়। তবে ব্যবসায়ীর প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপ ঠিকই আরাধ্যার খোঁজ পেয়ে যায়। তিনসুকিয়া থেকে আরাধ্যা ও বিলাল কে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় দেবা তার মায়ের আদেশে গুন্ডাদের মেরে তাদেরকে মুক্তি করে। তবে দেবের হাতে একটি ট্যাটু ছিল যেটা দেখে গুন্ডারা খুবই ভয় পায়।
তারপর বিলাল আরাধ্যাকে সেই ট্যাটু ও দেবের আসল পরিচয় বর্ণনা করতে থাকে। বর্ধারের বোনের জামাতা একদিন রাজা মান্নারকে বর্ধারের ছেড়ে দেওয়া অংশকে ফেরত এনে দিতে বলে। তখন রাজা মান্নার রোদ্রকে সেই চেয়ার ছেড়ে দিতে বলে, যেটা বর্ধার ঘুষ হিসাবে দিয়েছিল। তখন রোদ্র ও কয়েকজন নেতার সাথে মিলে ষড়যন্ত্র করে। খানসার রাজ্যের রাজা মান্নার তার রাজ্যের অবস্থা জানার জন্য তার মেয়ের কাছে খানসারের দায়িত্ব দিয়ে রাজ্য ত্যাগ করে। মান্নার চলে যাওয়ার পরে রাজ্যের বিভিন্ন উপজাতির নেতাদের আচরন পাল্টে যায়। তারা নির্বাসনে থাকা বর্ধারকে অপমান করে। এমনকি বিভিন্ন দেশের থেকে ভাড়াতে যোদ্ধা খানসারে নিয়ে আসে। আর বর্ধার দেবকে খানসারে নিয়ে আসে। দেব খানসারে এসে অনেক অত্যাচার অপমান সহ্য করেছে। কিন্তুু এক দিন দেখে যে এক উপজাতির নেতার ছেলে একটি উপজাতির ছোট্র একটি মেয়েকে ধর্ষন করার চেষ্টা করছে। এমন সময় দেবা প্রায় ত্রিশজন সহযোগী সহ নেতার ছেলেকে হত্যা করে ফেলে। গৌড়া সেই উপজাতি নেতাকে বলে এখানে বর্ধার দুষ আছে। কারন সেই দেবাকে খানসারে নিয়ে এসেছে। তখন উপজাতির নেতার বিচাই চাইলে দেবা ও বর্ধা দুইজনকেই রাজ দরবারে হাজির করা হয়। তখন উপজাতীর নেতা বর্ধার দিকে তলোয়ার নিয়ে এগিয়ে গেলে দেবা তাকেও মেরে ফেলে।
রাজা মান্নারের মেয়ে অবস্থা খারাপ দেখে সংবিধানের ক্ষমতা দিয়ে রাজ্যে মারামারি করা নিষিদ্ধ করে দেয়। নিষিদ্ধ আদেশ উঠানোর জন্য সব নেতারা মিলে ভোটের আয়োজন করে। ভোটের দিন হঠাৎ করে রাজা মান্নার রাজ্যে এসে হাজির। নিষিদ্ধ আদেশ উঠানোর জন্য দুই পক্ষে সমান ভোট পড়ে। তখন একটি ভোট বাকি থাকে বর্ধার কাছে। সে এসে নিষিদ্ধ আদেশ উঠানোর পক্ষেই ভোট দেয়। তখন রাজ্যে শুরু হয় মারামারি। আর তখনই দেবা ও বর্ধা মিলে রুদ্র সহ তার মাতাল অনেক গুন্ডাকে হত্যা করে। তখন রাজা মান্নার তার আস্তাভাজন সবাইকে বলে দেব হলো শৌর্যঙ্গ উপজাতির প্রধান ধারা রাইসারের ছেলে দেবরথ রাইসার। সে খানসার রাজ্যের উত্তরাধিকারী। তাকে সবাই সালার নামে চিনে। মুভির শেষের দিকে সবার মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে মুভিটি অসমাপ্ত রেখে শেষ করে দেওয়া হয়। শুনতেছি খুব শীগ্রই দ্বিতীয় পার্ট আসতেছে।
মতামত-
মুভিটা আমার কাছে মোটামুটি ভালোই লেগেছে। কয়েকটি একশ্যান খুবই ভালো লেগেছে। এটাতে ফানি বা প্রেম ভালোবাসার কিছু ছিল না। সম্পুর্ণ মুভিটা রাজনৈতিক ভিত্তিক। এখানে মনযোগ সহকারে দেখলে কয়েকটি শিক্ষা পাওয়া যাবে। দ্বিতীয় পার্ট না দেখা পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। দেবা ও বর্ধার কিভাবে বন্ধু থেকে শত্রু হলো সেটাই দেখার মুল বিষয়। আপনারা ইচ্ছা করলে দেখতে পারেন। মোটামুটি ভালোই মজা পাবেন।
মুভির লিংক
ধন্যবাদ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP