এ বছর প্রথম লিচু কিনে খাওয়ার অনুভূতি।।
যারা বাংলাতে ব্লগিং করেন,তাদের জন্য এই ব্লগ
অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরে বৃষ্টিপাত অনেক কম হয়েছে। আর এ বছর এত পরিমাণে গরম পড়েছে যা সহ্য করার মত নই। আমি যখন এ ব্লগটি লিখতেছি তখন সন্ধ্যার পরে বাসার ছাদের মধ্যে বসে বসে লিখতেছি। কারণ সন্ধ্যার পরেও এত পরিমানে গরম লাগতেছে, যার ফলে রুমের মধ্যে বসে থাকা যাচ্ছে না। এজন্য ছাদে এসে একটি চেয়ারে বসে এই ব্লগটি লিখতেছি। ছাদের মধ্যেও তেমন বাতাস নেই। এখানে বসেও ঘামতেছি। তারপরেও মাঝে মাঝে একটু আকটু বাতাস আসে। সেটা পেয়েই আপাতত শান্তি লাগছে। শুনেছি ২৫ তারিখ মোটামুটি বৃষ্টিপাত হবে। এখন সেই আশায় রয়েছি, যদি সেই বৃষ্টিপাতে গরম কিছুটা কমে। এই গরমে আমাদের পাশাপাশি পশু পাখিরাও কষ্ট করতেছে। কখন যে এ গরম থেকে মুক্তি পাবো সৃষ্টিকর্তাই জানে।
এবছর দেশের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আম ও লিচুর ফলন হয়েছে। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারনে সেই ফলগুলো তেমন বড় হতে পারেনি। যারা এই ফলগুলোর বাগান করেছে,তারা হয়তো নিজেদের উদ্যোগে সাবমারসিবল পাম্প বসিয়ে কিছু পরিমাণে পানি ছিটিয়েছে। তবে এই পানি ফলগুলো বড় হওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল না। তারপরেও দিনরাত অতিক্রম হয়ে ফলগুলো গাছ থেকে পাড়ার সময় ঘনিয়ে এসেছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাগানের মালিকরা তাদের গাছ থেকে আম পেরে বাজারজাত করতে পারবে।
কিন্তু কিছু লোভী ব্যবসায়ী সময় হওয়ার আগেই আম এবং লিচু পেরে বিভিন্ন বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশিয়ে সেগুলো পাকিয়ে বাজারে নিয়ে এসেছে। বিশেষ করে আমগুলো খুবই ছোট থাকা অবস্থায় পেরে কেমিক্যাল মিশিয়ে আমের কালার পরিবর্তন করে ফেলেছে। বর্তমানে অনেকেই আম কিনে বাড়িতে এনে দেখে আমের ভিতরের বড়া এখনো পরিপূর্ণ হয়নি। কিন্তু আমের বাকি অংশ পাকা। এর দ্বারা বুঝা যায় আমের মধ্যে বিষাক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়েছে। আর এই কেমিক্যাল যুক্ত ফল খেলে মানুষের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। মানুষ এই কেমিক্যাল খাওয়ার ফলে ক্যান্সার,চুল পাকা,বয়স কমে যাওয়া, স্কিন নষ্ট হয়ে,স্টক করার মত সমস্যায় ভুগতেছে। তাই আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সময় হওয়ার আগে বাজারজাত করা ফলগুলো পরিহার করি। সরকারের পক্ষ থেকে প্রায় সময় ভোক্তা অধিদপ্তরের লোক এসে অনেক সময় বিষাক্ত আম পেলে সেগুলো রুলার দিয়ে নষ্ট করে দিচ্ছে। কিন্তু সব জায়গায় ভোক্তা অধিদপ্তরের লোক যেতে পারে না। তাই আমরা যদি সচেতন হই তাহলে অসাধু ব্যবসায়ীরা সফল হতে পারবে না। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হই, তাহলে সবকিছু করা সম্ভব।
টাইটেল দেখে অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন আমার আজকের মূল টপিক হলো লিচু। বর্তমানে বাজারে প্রচুর পরিমাণে লিচু পাওয়া যাচ্ছে। তবে এই লিচুগুলো মোটামুটি খাওয়ার উপযুক্ত। আজকে আমি মেডিকেল কোচিং করার জন্য সকালবেলা যাত্রাবাড়ী গিয়েছিলাম। কোচিং শেষ করে আসার সময় দেখি যাত্রাবাড়ী আড়তে প্রচুর পরিমাণে লিচু এসেছে। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার লিচু সেখানে বিক্রয় হয়। সেখানে আমি দেখলাম লিচুর সাইজ বেধে ১০০ লিচু ৪০০/৫০০ এবং ৬০০ টাকায় বিক্রয় করতেছে। আমি কিছুক্ষণ পরিদর্শন করে ৫০০ টাকা লিচুগুলোর মধ্যে একশো লিচু ৪০০ টাকা দিয়ে নিলাম। তারা দাম ছাড়তে চায় না, আর কাস্টমাররা এই গরমের মধ্যে কতক্ষণ আর ঘোরাঘুরি করবে। তাই পছন্দ হলেই সবাই লিচু নিয়ে চলে যাচ্ছে।
লিচুগুলো কেনার আগে সেখান থেকে আমি দুইটি লিচু খেয়ে টেস্ট করেছিলাম। লিচুগুলো মোটামুটি মিষ্টি আছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে আম ও লিচু আসে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর থানার অধীন আউলিয়া বাজারে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার লিচু বিক্রয় করা হয়। সেই বাজারটি লিচুর জন্য বাংলাদেশের বিখ্যাত একটি বাজার। তবে কখনো আমার সেখানে যাওয়া হয়নি। সামনের মাসে ঈদের আগে বাড়িতে গেলে ঈদের পরে সেই আউলিয়ার বাজারে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। ইউটিউব অথবা ফেসবুকে সার্চ করলে আপনারা আউলিয়ার বাজার সম্পর্কে জানতে পারবেন। সেখানে অল্প দামে লিচু পাওয়া যায়। সেদিকে প্রচুর লিচুবাগান রয়েছে। আমার এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়র বাড়ি সেখানে। তিনি প্রতি বছর লিচুর সময় তাদের বাড়িতে যেতে বলে। কিন্তু সময়ের অভাবে যাওয়া হয় না। আর আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে যাওয়া আসা না থাকলে আত্মীয়তার টিকে বন্ধন থাকে না। তাই এবছর যাওয়ার চিন্তা করেছি, ইনশাআল্লাহ।
যাত্রাবাড়ী আড়তে ৮০/১০০/১৫০ টাকা কেজি দরে আমও বিক্রি করা হচ্ছিল। তবে যেহেতু সরকারি হিসাব অনুযায়ী এখনো পরিপূর্ণভাবে আম পারার সময় হয়নি,তাই আমি আম নেয় নি। লিচু নিয়ে বাসায় এসে মোটামুটি এক বসাতেই ২০/২৫টি লিচু সাবাড় করে দিলাম। আলহামদুলিল্লাহ লিচুগুলো ভালোই পরছে।
২০-২৫ টি লিচু পাশের বাসার ছোট ছেলেটিকে দেওয়া হয়েছে। কারণ তাদের বাসাতে গত পরশুদিন লিচু এনেছিল। সেখান থেকে আমাদেরকে ও কিছু লিচু দিয়েছিল। আর এটাই সুপ্রতিবেশীর একটি লক্ষণ। একজন অপরজনের বিপদে-আপদে পাশে থাকবে। ভালো-মন্দ রান্নাবান্না হলে এক ওপরের সাথে শেয়ার করবে।
তো বন্ধুরা আজকে এখান থেকে বিদায় নিলাম আবার আগামীকাল আপনাদের সাথে নতুন কোন ব্লগ নিয়ে হাজির হবো। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | এ বছর প্রথম লিচু কিনে খাওয়ার অনুভূতি।।। |
স্থান | যাত্রাবাড়ী , ঢাকা, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ২৪ /০৫ /২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
তবে লিচুর কালার বেশ সুন্দর হয়েছে ভাইয়া। দেখে বোঝা যাচ্ছে বেস ফ্রেশ লিচু পেয়েছেন আপনি। আমিও কয়েকবার খেয়েছি এই বছরের লিচু খেতে খুবই সুস্বাদু ছিলো। যেহেতু রোদ বেশি লিচু খেতে অনেক মিষ্টি। কিন্তু এবছর ফলন হয়েছে বেশি তবে বৃষ্টির কারণে কম ঠিকেছে গাছে সেটা স্বাভাবিক। যাক দাম হলেও করার কিছু নেই আমাদেরকে খেতে হবে। সুন্দর অনুভূতি পড়ে ভালো লাগলো।
জী আপু বৃষ্টির অভাবে লিচু খুবই কম টিকেছে। তবে লিচুর স্বাদ আছে। ধন্যবাদ।
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আসলে ভাইয়া আমরা এই কেমিক্যাল যুক্ত খাবার খেয়ে বেশি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। তবে আমরা ভেজাল ছাড়া কিছুই খেতে পারি না সব কিছুতেই ভেজাল। যাইহোক আমি ও গতকাল বেশ কিছু লিচু কিনেছি। আসলে এবার খরার জন্য বেশি বড় হতে পারেনি। তবে তুলনামূলক দাম ভালোই। প্রতিবেশীর প্রতি-প্রতিবেশীর হক আছে তাই আমাদের প্রতিবেশীদের দেওয়া উচিত। ধন্যবাদ ভাই।
জী আপু এবারের লিচু গুলি মোটামুটি ভালোই দেখা যায়। ধন্যবাদ আপু।
এই বছরে অন্যান্য বছরে তুলনায় লিচুর দাম একটু বেশি রয়েছে। আমাদের এই এলাকাতে ৩৫০ টাকা করে বিক্রয় হচ্ছে। খুবই ভালো কাজ করেছেন ভাইয়া এটাই তো প্রতিবেশীদের কর্তব্য। আপনাদেরকে গতকাল দিয়ে গিয়েছিল আজকে আপনি দিলেন খুবই ভালো একটা সম্পর্ক বজায় থাকলো।
জী ভাইয় লিচুর দাম একটু বেশিই দেখা যাচ্ছে। ধন্যবাদ।
ভাইরে ভাই প্রথম লিচু কিনা খাওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করলেন। আর আমি জানালা দিয়ে গাছ হতে ছুড়িয়ে খেয়েছি। বেশ ভালো লাগলো আপনার নিচু খাওয়ার অনুভূতি পড়ে। তবে কিন্তু বাজারে পাকা আম পাওয়া যায়। পাশের বাড়ির বাচ্চাকে কিছু লিচু দিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো।
আপনাদের লিচু গাছ আছে কিন্তুু আমাদের তো গাছ নেই যে জানালা দিয়ে ছুড়িয়ে খাবো। তবে লিচু গাছ লাগানোর ইচ্ছা রয়েছে। ধন্যবাদ।
বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশিয়ে যারা ফল বিক্রি করে তাদের চেয়ে খারাপ মানুষ আর কেউ নেই। কয়টা টাকা বেশি বিক্রির জন্য আর লাভের জন্য মানুষের ক্ষতি করে তারা। তবে কি আর করার আছে ভাইয়া। এভাবেই হয়তো আমাদেরকে ফল কিনে খেতে হবে।
জী ভাই আমরা যদি সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, সেই ফলগুলো ভয়কট করি। তাহলে হয়তো লোভী ব্যবসায়ীরা এগুলো আর করতে পারবে না। কিন্তু আমরা তো বাঙালি মানুষ। আমরা কখনো ঐক্যবদ্ধ হতে পারি না। ধন্যবাদ।
কথা হলো আমি তো সরকারি লোক হয়েও এখনও লিচু কিনে খেতে পারলাম না। আর আপনি বেসরকারি মানুষ হয়ে লিচু কিনে খেয়ে নিলেন। যাই হোক আপনার লিচু কিনে খাওয়ার গল্প শুনে কিন্তু বেশ মজা পেলাম। ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
রাস্তা দিয়ে হাটলেই লিচু দেখি,কত আর নিজেকে সামাল দেওয়া যায়। ধন্যবাদ।
লিচু ফল আমার খুবই প্রিয়, এই সিজনে এখন গাছে গাছে লিচু ধরেছে, তবে আমাদের লিচু গাছ নেই,তাই আমি গত ২ দিন আগে একশত লিচু কিনে নিয়ে এসেছিলাম। আর এই লিচু গুলো অনেক ভালো মানের হয়েছিল, যদিও দাম একটু বেশিই নিয়েছিল,৩৫০ টাকা করে, এই লিচু গুলো খেতে খুবই মজাদার লাগে।আপনার লিছু কিনে খাওয়াও আর অনুভূতি জানতে পেরে অনেক ভালো লাগলো।
জী ভাইয়া এই বছর লিচুর স্বাদ অনেক। ধন্যবাদ।
আজই তো ২৫ তারিখ ভাই কিন্তু সকাল থেকেই তো প্রচণ্ড রোদ। বৃষ্টির কোন সম্ভাবনা এখন পযর্ন্ত তো দেখছি না। গত ২০ বছরের মধ্যে নাকী এবারে লিচুর সবচাইতে ভালো ফলন হয়েছে। এই বছর লিচু খেয়েছি কয়েক বার। তবে ফলের মধ্যে কেমিক্যাল দিয়ে পাকানোর বিষয়টি একেবারেই অনাকাঙ্খিত। এটা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। প্রতিবেশীদের মধ্যে এমন সম্পর্কই থাকা উচিত।
ভাইয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের কথা ভুল। আজকে এত রোদ উঠেছে যে,শরীর পুড়ে যাচ্ছে। ধন্যবাদ।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া পর্যন্ত বৃষ্টি না হওয়ার কারণে আমও লিচু বড়ো হয়নি তেমন একটা।আম তো না পাকতেই বিষাক্ত ক্যামিকেলের দাঁড়া পাকিয়েছে এবং বাজারজাত করেছে। আসলে যদি আমরা সবাই মিলে এই আম কেনা পরিহার করি তাহলে অসাধু ব্যাবসায়িরা আর এরকম করবে না।লিচু গুলো দেখতেও বেশ সুন্দর দেখেই বোঝা যাচ্ছে পরিপক্ব। বাসে বসেই খেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো।পাশের বাসার বাবুকে দিয়েছেন লিচু জেনে খুব ভালো লাগলো।আসলে ভালো প্রতিবেশীর এটাই লক্ষ্যন পাশের বাসার সাথে মাঝে মাঝে খাবার শেয়ার করা। ধন্যবাদ সুন্দর পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
জী আপু এবার আম লিচুতে বৃষ্টির পানির অভাব ছিল। ধন্যবাদ।