টাকা আসার ফাঁদ ছিল না কি আমার মরার ফাঁদ ছিল। প্রথম পর্ব ।। 10% beneficary for @shyfox ❤️
আজ- ৬ই, আশ্বিন | ১৪২৯ , বঙ্গাব্দ | শরৎকাল ||
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই। আশা করি বলগিং নিয়ে ব্যাস্ত সময় পার করতেছেন। আমিও আজকে চলে আসালাম আপনাদের সাথে নতুন একটি বিষয় নিয়ে পোষ্ট সেয়ার করতে। আউট সাইটে কথা না বাড়িয়ে চলোন মূল কথায় চলে যায়।
আমি অনেকের কাছে শুনেছি প্রত্যেক মানুষের কাছে নাকি তিনবার টাকা ধরা দেয়। এই তিনবারের মধ্যে যদি কেউ টাকা ধরে রাখতে না পারে , তাহলে তার কাছে না কি আর কোনদিন টাকা ধরা দেয়না। আমি সেটা বিশ্বাস করি না। তবে আমি যে ঘটনাটা আপনাদের সাথে সেয়ার করবো ,আপনারা পড়ে আমাকে কমেন্টে করে জানাবেন, এটা কি আমার নিকট টাকা আসার ফাঁদ ছিল না কি আমার মরার ফাঁদ ছিল।
প্রায় সাত বছর আগের কথা । সালটা ছিল ২০১৫, মে মাসের ২০ থেকে ২১ তারিখ হবে। আমি সবে মাত্র নারায়নগঞ্জে চাকরিতে জয়েন করেছি। চাকরিতে জয়েন করার পনের থেকে বিশ দিন পরে। দুপুর বারোটার দিকে অপরিচিত একটি নাম্বার থেকে আমার মোবাইলে কল আসলো। আমি তখন অফিসে কাজ করতেছি। আমি কলটা রিসিপ করে সালাম দিলাম। জিঙ্গেস করলাম কে বলতেছেন ভাইয়া। অপর পাশ থেকে প্রশ্ন আসলো আপনি কোথায় থেকে বলতেছেন। আমি বললাম আমি নারায়নগঞ্জ থেকে বলতেছি। তিনি আবার প্রশ্ন করলেন নারায়নগঞ্জ কোথায়..? আমি বললাম ঢাকা নারায়নগঞ্জ। তিনি বললেন আপনি কি করেন..? আমি বললাম আপনি কে..? তিনি বললেন আমাকে আপনি চিনবেন না,আপনি কি করেন..? আমি বললাম আমি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি। আপনি কোথায় থেকে বলতেছেন। তিনি বললেন আমি দিনাজপুর থেকে বলতেছি। আমি বললাম ভুল নাম্বারে কল দিয়েছেন। আপনি ভাল ভাবে নাম্বারটা চেক করে আবার কল দিন। এ কথা বলে আমি কানেকশন কেটে দিয়ে কাজ করতে লাগলাম। আবার কল আসলো,আমি বললাম ভাইয়া নাম্বারটা ভালভাবে দেখে কলদেন,আবার ভুল লাম্বারে ডায়েল করেছেন। তখন আর কল আসে নাই।
ঐদিন রাত আটটার সময় দিনের বেলার অপরিচিত নাম্বারটি থেকে আবার কল আসলো। আমি কলটা রিসিপ করলাম। তিনি বলেন আমার কথা গুলো একটু শুনেন ভাই,মোবাইলে কণ্ঠ শুনে যা বুঝতে পারলাম লোকটা বয়স হবে ত্রিশ থেকে পয়ত্রিশ বছর। আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে বলেন। তিনি বলেন আমি দিনাজপুর একটি গ্রামের বাজারে ট্রাকে তরকারির বস্তা লোড আনলোড করি ( তিনি গ্রামের যে নাম বলেছিলেন সেই নামটি আমার এখন মনে পড়ছে না)। আমি কখনো শহরে যায় নি, শহরের তেমন কিছু আমি চিনিনা, বুঝি না। আপনাকে যে কারনে ফোন দিয়েছি সেটা হলো, আমার এক খালু একটি হিন্দু এলাকার অনেক পুরাতন পুকুরে মাটি কাটতে গিয়ে ছোট একটি তামার কলস পেয়েছে। কলসটি বাড়িতে এনে পরিষ্কার করে,তার ভিতরে ৬০০৮ (ছয় হাজার আটটি) পয়সা পেয়েছে। পয়সা গুলো তামা বা রুপার হবে।
আমার কাছে আমার খালু এসেছে, এই পয়সা গুলো বিক্রয় করা যাবে কিনা বা এগুলো দিয়ে কিছু করা যাবে কিনা এই বিষয়ে জানার জন্য। তো আমি তো তেমন কিছু বুঝি না,আর আমার তেমন আপন কেউ নাই যে তার কাছে সাহায্য চাইবো। তাই আপনাকে কল দিলাম। আমি বললাম আপনি আমার নাম্বার কোথায় থেকে পেয়েছেন..? তিনি বলেন আপনার নাম্বারটা টাকার মধ্যে পেয়েছি। তখন আমার মনে পড়ে গেল , আমি সর্বপ্রথম মোবাইল পেয়ে বেশ কয়েকবার টাকার মধ্যে আমার নাম্বারটা লিখেছিলাম। হয়তো হাত বদল হয়ে একটি টাকা উনার হাতে পৌছে গেছে,সেখান থেকে নাম্বারটা নিয়ে আমাকে কল দিয়েছে। তিনি বলেন আমি ভেবেছিলাম আপনি ব্যাংকে চাকরি করেন তাই আপনাকে কল দিয়েছেলাম।
আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে, বুঝতে পেরেছি। আমি তাকে আবার বললাম আপনাদের বাড়ির আশে পাশে কি কেউ নেই,আপনাকে এই বিষয়য়ে সাহায্য করার মত...? সে বলে ভাইয়া এগুলো তো গুপ্ত ধন, এলাকাবাসি জানাজানি হয়ে গেলে পুলিশ এসে নিয়ে যাবে। তাই পাড়া প্রতিবেশি কাউকে কিছু জানাইনি। আমি আবার বললাম আপনার খালুর সাথে যারা যারা মাটি কেটেছে তারা কি কেউ দেখে নাই..? তিনি বলেন জি দেখেছে,তবে তারা ভিতরে কি আছে সেটা দেখে নাই। খালু বাসায় এনে পরিষ্কার করতে গিয়ে পয়সা গুলো দেখতে পেয়েছে। আমি মনে মনে ভাবলাম তাহলে তো সত্যই গুপ্তধন পেয়েছে।
আমি বললাম তাহলে আমি এখন কি করবো..? সে বললো আপনি যদি আমাকে এগুলো বিক্রয় করে দিতে পারেন তাহলে অর্ধেক টাকা খালুকে দিবো আর অর্ধেক টাকা আপনি আর আমি ভাগ করে নিবো। আমি বললাম আপনি কি এগুলো কোন স্বর্ণকারের দোকানে দেখিয়েছিলেন..? সে বললো না দেখায় নি। আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে,আমি আপনার সাথে আগামিকাল কে কথা বলবো। একথা বলে ফোন রেখে দিলাম।
একথা গুলো শুনার পর থেকে আমি নিজে নিজে কয়েক ঘন্টা চিন্তা করলাম। লোকটাকি আমার সাথে বাটপারি করতেছে..? না কি সত্যিই এমন কিছু হবে। আবার চিন্তা করলাম সে তার পাড়া প্রতিবেশি কাউকে বিশ্বাস করে না অথচ আমাকে বিশ্বাস করবে। কেমন জানি সন্দেহ লাগলো। বুঝতেছি না কি করবো। এরকম নেগেটিপ পজেটিপ অনেক কিছু চিন্তা করতে করতে ঘুমিয়ে গেলাম। আজ এ পর্যন্তই থাক। ঘুম থেকে উঠে বাকি টা বলবো।
আপনার কথাগুলো শুনে আমি তো নিজেও বুঝতে পারছি না আসলে এটা কি ফাঁদ নাকি সত্যি। লোকটার কথা শুনে মনে হচ্ছে যেন সত্যি পরে আবার ভাবলাম মনে হচ্ছে মিথ্যেও হতে পারে। আবার ভাবতেছি যে যদি কয়েন গুলো আপনাকে দেয় বিক্রি করার জন্য তাহলে এটা মিথ্যে কি করে হবে। আর আপনি যে টাকার মধ্যে আপনার নাম্বার লিখেছেন। আবার মজাও হতে পারে। আমি একেবারেই কনফিউজড হয়ে গেলাম। এখন আমি কিছুই ভাবতে চাই না। পরের পর্বে আপনি ঠিকই বলবেন এটা জানার অপেক্ষায় রইলাম?
জী আপু আমিও অনেক ধরনের চিন্তা করেছিলাম।
সুন্দর লিখেছেন। আশা করি আপনি ঠকেননি। এই কলগুলো মূলতঃ লোককে ঠকানোর জন্যই করা হয়। পরের পর্বে সব পরিষ্কার হবার আশায় আছি।
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর কমেন্ট করেছেন।
আমার মনে হয় লোকটি ফ্রড হতে পারে। সে হয়ত আপনার ফোন নাম্বার পরিচিত কারো কাছ থেকে নিয়েছে কোন ভাবে আপনাকে কোথাও নিয়ে গিয়ে টাকা আদায় করবে। অথবা আরেকটি হতে পারে আপনার পরিচিত বন্ধু মহলের কেউ আপনার সাথে প্র্যানক করেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
দেখা যাক ভাইয়া পরের পর্বে কি আসে।
এমন একট মুহুর্তে গল্প শেষ করলেন বুঝতে পারছিনা শেষে কি হয়েছে। তবে পারিপার্শ্বিক পবস্থা থেকে মনে হচ্ছে লোকটা ধোকা বাজ। কিন্তু আপনি আবার লিখলেন যে কিভাবে পয়সা পেয়েছেন সেটা জানাবেন তাই একটু দ্বিধায় পরে গেলাম।
জী ভাইয়া গল্পটা অনেক মজার ছিল। পরের র্পব গুলো পড়লে বুঝবেন। ধন্যবাদ।