লোকাল ট্রেনে একদিন।।
বাংলা ভাষায় মনের আনন্দে ব্লগ লেখো-
হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই, আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে একদিন লোকাল ট্রেনে ভ্রমণ করার সময় তিক্ত একটি অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করবো। ভাগ্য মানুষের সাথে কিভাবে খেলে সেই চিত্র এখানে ফুটে উঠেছে।
আপনারা তো জানেন আমি বেশি অংশ ট্রেনে আসা-যাওয়া করি। কারণ ট্রেন হলো আনন্দদায়ক ভ্রমণের অন্যতম একটি মাধ্যম। অন্যদিকে লঞ্চে ভ্রমণ করতেও খুবই ভালো লাগে। আমাদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া হওয়ার কারণে লঞ্চে আমাদের যাতায়াত করার কোন রাস্তা নেই। আমরা সাধারণত ট্রেন বা বাসেই যাতায়াত করে থাকি। কিছুদিন পরপরই বিভিন্ন কারণে আমার বাড়িতে আসা-যাওয়া করতে হয়। আর আসা যাওয়ার পথে আমাদের সাথে বিভিন্ন ধরনের গঠনা ঘটে থাকে। কিছু কিছু ঘটনা জীবনের মধ্যে সাক্ষী হয়ে থাকে। কিছু কিছু ঘটনা কখনো ভুলবার নয়, এগুলো বলতে দেয় না। কারণ এগুলোর সাথে ভাগ্য জড়িত। ভাগ্য আমাদেরকে নিয়ে কঠিন ভাবে খেলে। আজকে এমন একটি ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি।
গত সপ্তাহে আমি ট্রেনে বাড়ি যাওয়ার পথে মহানগর প্রভাতী ট্রেন মিস করে স্টেশনে বসে ছিলাম। সেই ঘটনাটা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। সেই ইন্টারসিটির ট্রেনটি মিস করে দেড় ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আমি লোকাল ট্রেনের একটি টিকেট কেটে ছিলাম। ট্রেনের টিকিট কাটার সময় বুঝা যায় না, কোন বগিতে আমাদের সিট পড়ে। মূল কথা হলো ট্রেনে সিট পাওয়া হলো সোনার হরিণ পাওয়ার মত। ভাগ্য ভালো থাকলেই ট্রেনের সিট পাওয়া যায়। যাইহোক যেহেতু দেড় ঘন্টা যাবত লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম আমার ভাগ্যে একটি ছিট জুটে ছিল।
লোকাল ট্রেনের টিকেট নিয়ে আমি কমলাপুর স্টেশনে অবকাশ যাপন কেন্দ্রে বসে বসে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট সময় অপেক্ষা করেছিলাম। আমি ৭ টা ৫০ মিনিটে ট্রেন মিস করে অপেক্ষা করতেছিলাম। আমি যে লোকাল ট্রেনের টিকেট কেটে ছিলাম সেটি নয়টা ৪৫ মিনিটে ছাড়া কথা ছিল। অথচ সেই ট্রেন কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছেছে দশটার সময়। তারপরে ইঞ্জিন ঘুরিয়ে ট্রেন ছাড়তে ছাড়তে আরো ১৫-২০ মিনিটের মত সময় লেগেছিল। যাইহোক ট্রেন চার নাম্বার লাইনে আসার পরে আমি টিকেট নিয়ে আমার সিটে বসতে গেলাম। কিন্তু ট্রেনে সিট যে বগিতে পড়েছে, সেটা দেখে আমি তো অবাক হয়ে গেলাম।
আমাকে যে বগিতে সিট দেওয়া হয়েছে সেই বগিতে বগির এমাথা থেকে ও মাথা পযর্ন্ত লম্বা লম্বি ভাবে সিট বসানো। মানে মেট্রো ট্রেনের মত, দুই পাশে দুইটি লম্বা করে সিট। এগুলোতে মানুষ গায়ের সাথে গা লাগিয়ে বসে বসে আসা-যাওয়া করে। তো আমি সিট পেয়েছিলাম ১১ নম্বরে। আমার দুই পাশে নয় ও দশ, বারো ও তের নাম্বার সিটে দুইজন করে চারজন মহিলা বসলো। মানে আমি চার জন মহিলার মাঝখানে একটি ছেলে মানুষ বসে আছি। এ বিষয়টা আমার কাছে একটু খারাপ লাগতেছিল। সেজন্য আমি চিন্তা করলাম যে কোন একজন মহিলার মাধ্যমে আমার বগিটা পরিবর্তন করে ফেলবো। সেজন্য আমি বগি থেকে বের হয়ে বাহিরে দাঁড়িয়ে এমন কোন মহিলার অপেক্ষা করতে লাগলাম। ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার সময় হয়েছে অথচ আমি এমন কোন মানুষের সাথে আমার সিট বা বগি চেঞ্জ করতে পারলাম না। অবশেষে ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার সময় আমি অন্য একটি বগিতে সিট খালি পেয়ে বসে গেলাম।
বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে আসার পর একজন মহিলা আমাকে বলতেছে আমার সিট টা কোন জায়গায় একটু খুঁজে বের করে দেন। আমি বললাম আপনি কি একা, তিনি বললেন জী আমি একা। তখন আমি চিন্তা করলাম এই মহিলাকে আমার সিটে বসিয়ে দেয়, আর তার সিটে আমি গিয়ে বসে যাই। তাহলে আর কোন ঝামেলা হবে না। আমি ওই মহিলার টিকিটের দিকে না তাকিয়ে দ্রুত ট্রেন থেকে বের হয়ে, মহিলাকে আমার বগিতে আমার সিটে বসিয়ে, আমার টিকিট তার হাতে দিয়ে দ্রুত বের হয়ে আসলাম। ওই বগি থেকে বের হয়ে এসে ওই মহিলার টিকিটের দিকে তাকিয়ে দেখি সে ঢাকা থেকে নরসিংদী পর্যন্ত টিকেট কেটেছে। এখন তো আমি মাথায় হাত দিয়ে বসে গেলাম, অথচ আমার টিকেট ছিল ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত। যাই হোক এখন তো আর কিছু করার নেই, ওই মহিলার ক্রিকেটে সিট ছিল ক বগিতে।
আমি মহিলার টিকিট নিয়ে ক বগিতে গিয়ে দেখি ওই সিটের মধ্যে একজন অসুস্থ মহিলা বসে আছে, যাকে তার হাসবেন্ড অনেক কষ্ট করে ধরে রেখেছে। এখন আমি ওই মহিলাকে কিভাবে বলি.. এই সিট আমার, সিট ছেড়ে দেন...। নিজের ভাগ্যকে মেনে নিয়ে সারাটা রাস্তা আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আসলাম। লোকাল ট্রেনে কি পরিমান জ্যাম থাকে সেটা তো সেটা তো আপনারা জানেন। সে দিন অনেক কষ্ট হয়েছিল। এক তো আগের ট্রেন মিস করেছি একটা কষ্ট, তারপর প্রায় দেড় ঘন্টা দাঁড়িয়ে একটি টিকেট কাটলাম, সেই সিটে বসতে গিয়ে চারপাশে মহিলা দেখে উঠে চলে আসলাম, অনেক কষ্ট করে সেই সিট চেঞ্জ করে অন্য সিটে বসতে গিয়েও বিবেকের কাঠগড়ায় আটকে গেলাম। উপরওয়ালা যদি ভাগ্যে সিট না রাখে তাহলে আমাদের কারো সাধ্য নেই সিটে বসে যাওয়ার। এটাই ভাগ্য, এটাই নিয়তির খেলা।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
নাম | লোকাল ট্রেনে একদিন ।। |
স্থান | কমলাপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ০৬-১১-২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP