দীর্ঘ নয় দিন ছুটি কাটানোর পরে কর্মস্থলে ফিরে আসলাম।।
সাজাও মন, রাঙাও হৃদয়, ভালোবসার বন্দনে-
প্রথমেই সৃষ্টিকর্তার প্রতি শুকরিয়া জ্ঞাপন করি, তিনির অসীম দয়ায় ধীর্ঘ নয় দিন ছুটি কাটানোর পরে সুস্থ ভাবে কর্মস্থলে ফিরে আসতে পেরেছি। কারন মানুষের এক সেকেন্টের ভরসা নেই। রাস্তঘাটে সবসময় রোড এক্সিডেন্ট হয়ে মানুষ মারা যায়। তবে ঈদের সময় একটু বেশি রোড এক্সিডেন্ট হয়ে থাকে। এই বছর আমি আগেই অনলাইনের মাধ্যমে আসা যাওয়ার ট্রেনের টিকেট সংগ্রহ করে ফেলে ছিলাম। যার ফলে গ্রামে আসার যাওয়া করতে আমার তেমন সমস্যা হয়নি। ধীর্ঘ নয়দিন খুব সুন্দর ভাবেই কেটেছে,শরীর স্বাস্থ ভালোই ছিল, আলহামদুল্লিহ। সবার সাথে ঈদ পালন করে কয়েকদিন বাড়িতে মা-বাবার সাথে থেকে গিয়েছিলাম নানুবাড়িতে। সেখানে একদিন থেকে তারপর গেলাম শ্বশুরবাড়িতে। সেখান থেকে গতকাল সন্ধা সাতটার সময় ঢাকার উদ্যেশ্যে বাসা থেকে বের হয়েছিলাম।
যেহেতো আটটার সময় ট্রেন ছিল তাই সাতটার সময় বের হয়ে গিয়েছিলাম। বাসা থেকে ট্রেন স্টেশন আসতে সময় লেগেছিল মাত্র দশ মিনিট। স্টেশনে এসে অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থাকতে হয়েছিল। সাড়ে সাতটার সময় বের হলেই ভালো হতো। যায়হোক ভেবেছি যদি কোন জ্যামে আটকে যায়। সেই চিন্তা করেই একটু আগে বের হয়েছিলাম। তাছাড়া ঈদের পরে বাড়ি থেকে ঢাকা আসতেছি,বুঝতেই পারছেন হাতে তো ব্যাগ ধরিয়ে দিবেই। সাথে একটি ইয়া বড় ব্যাগ ছিল। ব্যাগের ভিতরে কি কি ছিল সেটা বর্নণা দিলে কয়েক শত শব্দ বেড়ে যাবে। যার ফলে আর বর্ণনা দিলাম না। আপনারা কিছুটা ধারনা করে নেন।
আমি যখন স্টেশনে এসেছিলাম তখন তেমন মানুষ ছিল না। ধীরে ধীরে স্টেশনের দুই পাশে মানুষ এসে দাড়ালো। তবে হটাৎ করে কোথায় থেকে যেন কিছু ভিনদেশি মানুষ এসে আমার পাশে দাড়ালো। তারা ছয়জন মানুষ,গায়ের রং কিছুটা কালো। পাঁচ জনের হাইট নরমাল তবে একজন অনেক বেশি লম্বা ছিল। প্রথম দেখায় বুঝতে পারি নাই,তারা কোন দেশি মানুষ। তারা পরষ্পরে যে ভাষা বলছে, ছয় মাস কুচিং করেও আমি তাদের সেই ভাষা বুঝতে পারবো না,হে হে হে।😛 পরে একজনের সাথে হালকা পাতলা কিছু ইংলিশ ভাষা বলে জানতে পারলাম তাদের বাড়ি আফ্রিকার নাইজিরিয়াতে। তারা বাংলাদেশের একটি ফুটবল ক্লাবে খেলে থাকে। বাংলাদেশি সেই ফুটবল ক্লাব অর্থের বিনিময়ে তাদেরকে দিয়ে ফুটবল খেলায়। মাঝে মাঝে অর্থের বিনিময়ে বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জের মাঠেও খেলে থাকে। গত কাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের একটি গ্রামে ফাইনাল খেলায় অংশগ্রহন করতে এসেছিল। খেলা শেষ করে এখন পারাবত এক্সেপ্রেস ট্রেনে চড়ে ঢাকায় ফিরে যাচ্ছে।
গতকাল পারাবত এক্সেপ্রেস ট্রেনটি নির্ধারিত সময় থেকে ৪০ মিনিট লেইট করে এসেছে। যায়হোক ট্রেন আসার পরে হুড়হুড়ি করে আমি ট্রেনে উঠে গেলাম। সেই নাইজিরিয়ান লোক গুলো কোন বগিতে উঠেছে সেটা আমি জানি না। আমি আবার দুইটি টিকেট কেটেছিলাম। আমার ওয়াইফ না আসার কারনে একটি টিকেট বিক্রয় করে দিয়েছিলাম। ঈদের ছুটিতে গ্রামে যাওয়া মানুষ সবাই ঢাকায় ফিরছে। যার ফলে ট্রেনে প্রচন্ড জ্যাম হয়েছিল। অনেক কষ্ট করে ট্রেনে উঠে নিজের সিটে বসতে পেরেছিলাম। তবে ট্রেন কিন্তুু ঢাকা আসতে বেশি সময় লাগে নাই। ৮:৪০ মিনিটে ট্রেন ছেড়ে দশটার মধ্যেই বিমানবন্দ স্টেশনে চলে এসেছিল। সেখান থেকে কমলাপুর আসতে সাড়ে দশটা বেজেছিল। আমার সাথে একটি ব্যাগ থাকার কারনে আমি মালিবাগ ট্রেন স্লো করার ফলে সেখানেই নেমে গেছিলাম।
তবে গতকাল মালিবাগ ট্রেন থেকে নামার পরে ভাগ্য আমার সঙ্গ দেয়নি। ট্রেন থেকে নেমেই হাটতে গিয়ে হঠাৎ হোঁচট খেয়ে পড়ে গেছিলাম। তবে তেমন কোন ব্যথা পায়নি। সানগ্লাসটা পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক কষ্ট করে লাব্বাইক বাসে উঠলাম। মানুষের এত জ্যাম ছিল যে, ব্যাগ নিয়ে উঠতে অনেক কষ্ট হয়েছে। আর রাস্তায়ও প্রচুর জ্যাম ছিল। মানুষের ভিড়ে গরমে অবস্থা নাজেহাল অবস্থা হয়েছে। সেই খিঁলগাও থেকে দাড়িয়ে মানুষের চাঁপা খেয়ে সাইনবোর্ড পর্যন্ত এসেছিলাম। সেখান থেকে ব্যাগ নিয়ে ওভার ব্রিজ পার হয়ে আবার মৌমিতা বাসে উঠলাম। বাসায় আসতে সাথে সাড়ে বারোটা বেজেছিল।
বাসায় এসে দেখি রুমের অবস্থা নাজেহাল। সব বিছানা পত্র জেড়ে রুম গুছিয়ে গোসল করে ঘুমাতে ঘুমাতে দেড়টা বেজে গেছে। তারপর কিছু কমেন্ট করে রাত আড়াইটার দিকে ঘুমিয়েছিলাম। অফিসের টাইম সকাল নয়টা হলেও আজকে একটু দেরিতে আসলাম। কারন অপেনিং ডেতে একটু দেরি করে আসলে তেমন কিছু হয় না। অনেক দিন পরে অফিসে এসে খুবই ভালো লাগছে। তবে অন্যদিকে কাজের প্যারাও আছে। আবার টাইম টু টাইম জীবন শুরু হয়ে গেলো। এটাই মানুষের জীবন।।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | ধীর্ঘ নয় দিন ছুটি কাটানোর পরে কর্মস্থলে ফিরে আসলাম।। |
স্থান | ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ২৪/০৬ /২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
তাহলে আমি কি ভুল করলাম। আমি তো দীর্ঘ ১১ দিন পরে কর্মস্থলে ফিরে এসেছিলাম। তাহলে আমিও তো একটি পোস্ট করতে পারতাম। একেই বলে বুদ্ধি। হি হি হি। কর্মস্থলে ফিরে এসে বেশ সুন্দর করে মনের অনুভূতিগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। বেশ ভালোই লাগলো।
ব্লগিং হলো আমার শ্বাস প্রশ্বাস। আমি সবসময় অন্তর থেকে সেটা ফিল করি। তাই আমার কাছে যে কোন বিষয় নিয়ে লিখতে ভালোই লাগে। ধন্যবাদ।
দীর্ঘ ৯ দিন পর ছুটি কাটিয়ে নিজের কর্মস্থলে ভালোভাবে ফিরতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো। আসলে ঈদের সময় আসা-যাওয়া করা খুব ঝামেলা ও কষ্টদায়ক। ঢাকায় যাওয়ার সময় মালিবাগ রেল ক্রসিং এ ট্রেন স্লো করাতে আপনি সেখানে নেমে পড়েন। যাইহোক আপনি পড়ে গিয়েও ব্যথা পাননি জেনে ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করে নেয়ার জন্য।
জী আপু মালিবাগ রেল ক্রসিং এ ট্রেন স্লো করার কারনে অনেক সুবিধা হয়েছে। তা না হলে ব্যাগ নিয়ে অনেকটা হাটতে হতো। ধন্যবাদ।
ছুটি কাটিয়ে ভালো মতো কর্মস্হলে ফিরে এসেছেন জেনে অনেক ভালো লাগলো। আসলে কোথাও গেলে বাসায় আসলে বাসার অবস্থা এমন নাজেহাল থাকে।আপনি তো দেখছি অনেক জায়গায় বেড়িয়েছে।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর কাটানো মূহুর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
যে আপু এই ঈদে বাড়িতে গিয়ে অনেক জায়গায় বেড়িয়ে ছিলাম। সব মিলিয়ে খুবই ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ।
কর্মব্যস্তময় জীবনে আমাদেরকে সব সময় কর্ম নিয়ে থাকতে হয়। কারণ আমাদের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণের জন্য আর্থিক লেনদেন দরকার। সেই অর্থ পাওয়ার জন্য অবশ্যই আমাদেরকে যে কোন কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। দীর্ঘ 9 দিন ছুটিতে থাকার পরে অবশেষে আপনি কর্মস্থলে ফিরলেন। আশা করি সব কিছুই ভালোভাবে যাবে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
যে আপু আজকে রিজিকের সন্ধানে মা বাবা ভাই বোনকে ছেড়ে, বাড়িঘর ছেড়ে দূরে থাকতে হচ্ছে। যাই হোক আশা করি সবকিছু ভালোই হবে। ধন্যবাদ।
অবশ্যই সৃষ্টিকর্তা শুকরিয়া আদায় করতে হবে যে তিনি ভালো রেখে ঈদ উদযাপন করার পরে আবার ভালো অবস্থায় কর্মস্থলে ফেরত পাঠিয়েছেন।
তবে আপনাদের তুলনায় আমরা কিন্তু ছুটি পেয়েছি একদমই কম।
৯ দিন ছুটি কাটাতে হলে আমাদের তিনটা ঈদ উদযাপন করতে হবে।
যাইহোক ভালোভাবে পৌঁছেছেন জেনে ভালো লাগলো।
ভাই আমাদের সমন্বয় সাপেক্ষে ছুটিগুলো দিয়ে থাকে। কিন্তু আপনাদের বেলায় এরকম সিস্টেমটি চালু করেনি। আশা করি ধীরে ধীরে আপনাদেরও ছুটির মাত্রা বাড়বে। ধন্যবাদ।
আজকে আমাদের ও অফিস খুলেছে। আফ্রিকার নাইজিরিয়ার মানুষ গুলোর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন। এদের ভাষা বোঝা সত্যি মুশকিল। আপনার পোস্ট পড়ে বোঝা যাচ্ছে ঈদের ছুটিতে ভীষণ আনন্দ উপভোগ করেছেন। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।
জী ভাই আসার সময় হঠাৎ করে আফ্রিকার নাইজেরিয়ান মানুষের সাথে পরিচিত হলাম। ধন্যবাদ
খুবই বাস্তব একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন ভাইয়া। ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফিরে আসা এবং সেই সময়ের বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা সত্যিই চমৎকার। দীর্ঘ যাত্রা এবং বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত সুস্থভাবে ফিরে আসার জন্য আলহামদুলিল্লাহ। কর্মস্থলে ফিরে আসার পরের অনুভূতিগুলোও খুব ভালোভাবে ফুটে উঠেছে। আপনাকে ধন্যবাদ এমন একটি সুন্দর পোস্টের জন্য।