তৃতীয় বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ। স্মৃতিকথা মূলক মৌলিক রচনা।

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago (edited)
আস-সালামু আলাইকুম

প্রিয় আমার বাংলা কমিউনিটির ভাইবোন বন্ধুরা,

আশা করি আপনারা সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iPYyjSm28VkXVTV3VNVdDnChZkfiAnm26XfM54eKMs5URRF4TUXhTH6RnRBBxGu3ayXYRzoXpzr.png

ব্যানার ডিজাইনের ক্রেডিট : @hafizullah

আজকে আমি আপনাদের মাঝে নিয়ে চলে আসলাম আরও একটি নতুন পোস্ট। দেখতে দেখতে এই কমিউনিটির বয়স ৩ বছর হয়ে আসতে চলেছে। আর তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে দেখলাম rme দাদা বিশেষ এক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য চারটি সাবজেক্ট উপস্থাপন করেছেন। আজকে আমি তার মধ্য থেকে স্মৃতি কথা মূলক রচনাটাকেই বেছে নিয়েছি। আর সেই সম্পর্কে মূলত আজকের পোস্টটি হতে চলেছে। তো চলুন তাহলে শেয়ার করে নেওয়া যাক আমার বাংলা ব্লগের সম্পর্কে স্মৃতিমেদুর মৌলিক রচনাটি।

স্মৃতি কথা মূলক মৌলিক রচনা

•ভূমিকা

সেই 2022 সালের আগস্ট মাস থেকেই এই কমিউনিটিতে যুক্ত আছি। যার কারণে জমা হয়েছে অনেক স্মৃতি। বেশ কিছু ভালোলাগার স্মৃতি এবং দু একটা খারাপ লাগার স্মৃতি ও আছে। তবে খারাপের তুলনায় ভালো স্মৃতি গুলাই বেশি। এছাড়াও রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ক্যাটাগরির স্মৃতি,রয়েছে কিছু এলোমেলো স্মৃতি।

•এই প্ল্যাটফর্মে প্রথম যুক্ত হওয়ার স্মৃতি।

সালটা ছিল ২০২২ যখন আমার কাজ ছিল পড়াশোনা করা। যদিও বা পড়াশুনার থেকে অন্য কাজই বেশি করা হতো। অর্থাৎ ঘুরে বেড়ানো,খেলাধুলা করা,মোবাইল টিপা ইত্যাদি। একদিন নানির বাসাতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। আর শুধু সেদিন না নানির বাড়িতে বেড়াতে গেলেই দেখতে পেতাম মারুফ ভাইয়া ল্যাপটপে ডিসকর্ড এর মধ্যে ঢুকে বসে থাকতো। আমি ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করতাম এটা ডিসকর্ড অ্যাপ নাকি? তো উনি আমাকে বলতেন হ্যাঁ। তবে উনি এখানে কি করতেন সেটা কখনোই বিস্তারিত বলতেন না।তারপর একদিন দেখলাম মারুফ ভাইয়ের ছোট ভাই অর্থাৎ নয়নকে কমিউনিটির বেশ কিছু কাজ সম্পর্কে শেখাচ্ছে। তবে আমি সেদিন এগুলোকে অতটাও গুরুত্ব দিয়েছিলাম না। কিন্তু সেই নানি বাড়ি থেকে চলে আসার কিছুদিন পর। হঠাৎ করে একদিন মারুফ ভাইয়া ফোন দিয়ে বলে এই প্লাটফর্মে কাজ করার কথা। আমি প্রথম প্রথম বেশ দ্বিধাদ্বন্দ্বতায় ভুগছিলাম। তারপর ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করেছিলাম এখানে কি কি পোস্ট করতে পারবো। উনি ফটোগ্রাফি রেসিপি সহ আরো বেশ কয়েক রকম পোস্ট করার কথা বললেন। তবে ফটোগ্রাফি পোস্ট করার কথা শুনেই আমি বেশি আগ্রহী হয়েছিলাম। তাই পরে রাজি হয়ে যায় এই প্লাটফর্মে যুক্ত হওয়ার জন্য।একদিন মারুফ ভাইয়া আমাকে তার বাসায় যেতে বললেন কাজ শেখার জন্য। উনি সেই সময় আমাকে বেশ কিছুই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। এবং একটা আইডি খুলে এই প্ল্যাটফর্মে জয়েন করিয়ে দিয়েছিলেন। তারপর এখানে ইন্ট্রো পোস্ট করলাম। এবং এর মাধ্যমে যুক্ত হয়ে গেলাম এই কমিউনিটিতে।

•এ বি বি স্কুল থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করার স্মৃতি।

এই কমিউনিটির ভেরিফাইড মেম্বার হতে হলে আমাদেরকে বেশ কিছু নিয়মকানুন শেখানো হয়। যেগুলা আমাদেরই পরবর্তীতে কাজে লাগে। আর এই নিয়ম কানুন শেখানোর জন্য আলাদা একটি স্কুল আছে যেটাকে আমরা এ বি বি স্কুল নামে চিহ্নিত করে থাকি। আর এই কমিউনিটির প্রতিটা ভেরিফাইড মেম্বার এ বি বি স্কুলের লেভেল ওয়ান থেকে লেভেল ফাইভ পর্যন্ত পাস করেই ভেরিফাইড হয়েছেন। আর আমিও তার ব্যতিক্রম নয়।সেই সময় লেভেল ওয়ান এর ক্লাস নিতেন শুভ ভাই। তিনি বেশ কঠোরভাবেই আমাদের সাথে কথা বলছিলেন এবং আমি আপন মনেই সেগুলো শুনছিলাম।তো এই ক্লাস নেয়ার কিছুদিন পর নেয়া হলো লেভেল ওয়ানের ভাইবা। প্রথমবারই ফেল করলাম। আসলে চেষ্টা কম করেছিলাম না তবে নার্ভাস হয়ে যাওয়ার কারণে পাস করতে পারিনি। পরে আবারো পরীক্ষার ডেট দেওয়া হলো। এবারও বেশ নার্ভাস ছিলাম। আর ভেবেছিলাম এবার যেভাবেই হোক পাস করতে হবে। তাই বেশ কিছু উত্তর খাতায় লিখেও নিলাম। ভাবলাম ইমার্জেন্সি না হওয়া পর্যন্ত কখনোই দেখবো না। তো পরবর্তীতে ভাইবা নেওয়ার দিন প্রথমে সব প্রশ্নের উত্তর ঠিকঠাক দিলাম।

কিন্তু আর্ট পোস্ট কিভাবে শেয়ার করব সেটা জানতে চাইলে আটকে গেলাম। আসলে ওখানে আমার একটা ঝামেলা হয়েছিল, সেটা হচ্ছে ট্রেসিং নামের ওয়ার্ডটা আমার কাছে অজানা ছিল। যার কারনে ওখানে আটকে গিয়েছিলাম। তো আমি এক নজরে ওই ওয়ার্ডটা দেখেও নিয়েছিলাম। আর সেই সময় কথার মধ্যে অন্যরকম ভাব চলে এসেছিল যার কারণে শুভ ভাই জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমি দেখে বলছি কিনা। কিন্তু সেই সময় মিথ্যা বলেছিলাম যার কারণে আমি এখন আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থী। হয়তোবা এগুলো আমি না বলতেও পারতাম কিন্তু নিজের মধ্যে একটি অপরাধ বোধ কাজ করে তাই আজ বলে দিলাম। তো যাই হোক এভাবেই সেদিনের মতো কোনরকম লেভেল ওয়ান পাস করে গিয়েছিলাম। পরবর্তীতে নিজ থেকেই উত্তর দেয়ার মাধ্যমে পাশ করার চেষ্টা করেছি। এবং বেশ কষ্ট করে হলেও পাস করেছিলাম এবিবি স্কুলের লেভেল ফাইভ পর্যন্ত।এই সময় মাঝে মাঝে মনে হতো ছেড়ে দেই। কিন্তু আম্মু এবং মারুফ ভাইয়া আমাকে উৎসাহিত করেছিল যার কারণে টিকে গিয়েছিলাম।

•প্রথম সাইফক্স এর ভোট পাওয়া স্মৃতি।

দুঃখজনক বিষয় হলো লেভেল ফাইভ পর্যন্ত পাশ করার পরেও জানতাম না যে কিভাবে সুপার অ্যাক্টিভ লিস্টে যেতে পারব। সবাইকে সাইফক্সের ভোট পেতে দেখে ভাবতাম আমিও কিভাবে সাইফক্সের ভোট পাব। তো একপর্যায়ে অনেক চেষ্টার মাধ্যমে একটিভিটি বজায় রেখে সুপার একটিভ লিস্টে যেতে সক্ষম হয়েছিলাম। এবং আমার মনে আছে প্রথম সাই ফক্সের ভোট যে পোস্টে পেয়েছিলাম সেই পোস্টে টাইটেল ছিল বিকেল বেলায় ঘোরাঘুরি নিয়ে। প্রথমবার সাইফক্সের ভোট দেখে বেশ আনন্দিত হয়েছিলাম সেই মুহূর্তে।

•এই প্লাটফর্ম থেকে প্রথম টাকা উত্তোলনের স্মৃতি।

প্ল্যাটফর্মে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ একদিন জানার চেষ্টা করলাম কিভাবে টাকা উত্তোলন করা যায়। কিন্তু আমি শুধু এটুকুই জানতাম স্টিমকে কিভাবে পোলনিক্স এ নেওয়া যায় এবং জানতাম কিভাবে স্টিমকে USDTতে কনভার্ট করা যায়। কিন্তু জানতাম না পরবর্তীতে কি করতে হয়। অর্থাৎ জানতাম না কিভাবে টাকা হাতে নিয়ে আসা যায়। তাই ইউটিউবে সার্চ দিয়ে বেশ কয়েকটা ভিডিও দেখে তারপর শিখেছিলাম টাকা উত্তোলন করার পদ্ধতি। যদিও বা পদ্ধতিটা শিখতে বেশ সময় লেগেছিল। তবে পরবর্তীতে অনেক কষ্ট করার মাধ্যমে টাকাগুলোকে বিকাশ একাউন্টে আনতে সক্ষম হয়েছিলাম। পরবর্তীতে আমার প্রথম উত্তোলন করার টাকা গুলো র‍্যাকেট কেনার কাজে ব্যয় করেছিলাম। তবে টাকাগুলো আমি বিকাশের মাধ্যমে দিয়েছিলাম যার কারণে সরাসরি হাতে পায়নি সেই টাকাগুলো। তবে যেহেতু টাকা দিয়ে কেনা জিনিসটা হাতে পেয়েছিলাম। তাই সব মিলিয়ে সেই অনুভূতিটা ছিল বেশ দারুন।

•আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির বিভিন্ন কাজ উপভোগ করার স্মৃতি।

এই প্লাটফর্মে সবাই নিজেরদের সৃজনশীলতার মাধ্যমে বিভিন্ন কিছু তৈরি করে থাকে। আবার অনেকেই অনেক মূল্যবান কথা আমাদের মাঝে শেয়ার করে থাকেন। তবে সৃজনশীলতার তার মাত্রা ছড়িয়ে যায় সেই সময় যখন পোস্টটি কোনো প্রতিযোগিতার জন্য হয়ে থাকে। অর্থাৎ কিছু কিছু প্রতিযোগিতার পোস্টগুলো দেখে তো আমি রীতিমতো অবাক হয়ে যাই। সত্যি এগুলো দেখেই ভালো লাগতো মনে হতো সবাই নিজের সৃজনশীলতার অনেক বিকাশ ঘটিয়েছে। আর এগুলা এখনো চলমান ই আছে। তাই এখনও প্রতিনিয়তই উপভোগ করে যাচ্ছি আমার নজরে সবার কোয়ালিটি ফুল পোস্টগুলো।

•আমার বাংলা ব্লক কমিউনিটিকে মিস করার স্মৃতি।

আসলে কোনো কিছু থেকে দূরে না গেলে বোঝা যায় না সেটাকে কতটা ভালবেসে ফেলেছি। আমি যখন পরীক্ষার জন্য কিছুদিনের জন্য এই কমিউনিটি থেকে ছুটি নিয়েছিলাম। তখনই ফিল করেছিলাম এই কমিউনিটির জন্য অনেক টান কাজ করছে। অর্থাৎ যে কোনো ঘটনা দেখলেই মিস করতাম এই প্লাটফর্মকে। ইচ্ছে করতো কয়েকটা ছবি তুলে নিয়ে গিয়ে পোস্ট সাজাতে। তবে সব ঘটনার ছবি তুলে না রাখতে পারলেও কিছু কিছু ঘটনা ছবি তুলে রেখেছিলাম,যেগুলো পরবর্তীতে পোস্ট আকারে আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছিলাম। তো এছাড়াও আরো একবার পার্সোনাল কারণে ইরেগুলার হয়েছিলাম। তখনো বেশ মিস করেছিলাম এই কমিউনিটিতে।

•এলোমেলো কিছু স্মৃতি

আসলে কিছু স্মৃতি থাকে গোছানো আর কিছু স্মৃতি আগে অগোছালো। যেমন অনেক সময় হ্যাংআউটের বিভিন্ন কথাবার্তা হয় যেগুলো উপভোগ করি। অনেক সময় এডমিন মডারেটর রাও অনেক মজার মজার কথা বলে থাকেন যেগুলো কেউ বেশ ইনজয় করি। এগুলো কিন্তু বেশ ভালো লাগার মত কিছু স্মৃতি,তবে অগোছালো।

•কনটেস্টে অংশগ্রহণ করে প্রথম পুরস্কার পাওয়ার স্মৃতি।

আমাদের এই কমিউনিটিতে প্রতি মাসেই দুইটা করে কনটেস্টের আয়োজন করা হয়ে থাকে। একসময় কনটেস্ট গুলোতে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেতাম। কিন্তু বর্তমান সেটা সব সময় সম্ভব হয় না। তবে অতীতে কনটেস্ট জয়েন করার মাধ্যমে শুধু একবারই পুরস্কার পেয়েছিলাম। যতটুকু মনে আছে কনটেস্ট টা ছিল চিংড়ি মাছ দিয়ে কিছু বানানোর। আর আমি এবং আমার আপু মিলে চিংড়ি মাছের কিমা দিয়ে সামুচা বানিয়ে শেয়ার করেছিলাম। আর সেটাতেই মূলত প্রথম পুরস্কার পেয়েছিলাম। তবে মজার বিষয় হচ্ছে সেই কনটেস্ট টিতে নির্ধারিত পুরস্কার তো পেয়েছিলাম তার সাথে দাদা আমাদেরকে এক্সট্রা প্রাইজও দিয়েছিলেন। সত্যি সেই পুরস্কার পাওয়ার অনুভূতিটা ছিল বেশ দারুন।

•খারাপ স্মৃতি

এই প্লাটফর্মে খারাপ স্মৃতি নাই বললেই চলে। তবে আমার মনে আছে একটা খারাপ স্মৃতি আছে অনেকেরই। আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে একবার একজন ইউজার কমিউনিটির নামে অনেক দুর্নাম ছরিয়েছিল। যে কারণে ঘটে গিয়েছিল অনেক ঘটনা। ওনার নাম আমার মনে নাই তবে মনে আছে এক পর্যায়ে rme দাদা বলেই দিয়েছিল এই কমিউনিটি থেকে সকল বাংলাদেশী ইউজার কে বাদ দেওয়া হবে। তবে পরবর্তীতে উনি ভেবেচিন্তে আর সেটা বাস্তবায়ন করেননি। তো আমি খারাপ স্মৃতি বলতে এটাকেই খুঁজে পাই।

•উপসংহার

তো পরিশেষে এটাই বলতে চাই এই কমিউনিটিতে অনেক ভালো ভালো স্মৃতি অর্জন করতে পেরেছি। হয়তোবা ভবিষ্যতে আরো অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়ে যাবো এবং ইনশা-আল্লাহ তৈরি হবে আরো নতুন নতুন স্মৃতি।

সমাপ্ত

তো প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির ভাই বোন বন্ধুরা, এই ছিল আমার আজকের পোস্ট। পোস্টটি পড়ে আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে কমেন্টে জানাতে পারের। যতটুকু সম্ভব এই কমিউনিটি সম্পর্কে নিজের স্মৃতিগুলো আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। তো যাই হোক আজকের মত এটুকুই। আবারো খুব শীঘ্রই নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে ইনশা-আল্লাহ। ততক্ষণ সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন নিজের খেয়াল রাখবেন।

আল্লাহ হাফেজ

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.20
JST 0.034
BTC 98043.90
ETH 3346.07
USDT 1.00
SBD 3.02