অমর একুশে বই মেলায় ঘুরাঘুরি//পর্ব:--দ্বিতীয়
আজ--০৫ আষাঢ় | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বুধবার | বর্ষাকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- অমর একুশে বইমেলায় ঘোরাঘুরি--দ্বিতীয় পর্ব।
- আজ--০৫মআষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
- বুধবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ দুপুর সবাইকে......!!
আপনারা সকলেই জানেন যে বাংলাদেশের পুরো ফেব্রুয়ারি মাস ধরে কোথাও না কোথাও বইমেলা হয়ে থাকে। সবথেকে বড় যে বইমেলাটা হয়ে থাকে সেটা হচ্ছে রেসকোর্স ময়দানে। এই বইমেলাটা দেখার জন্য অনেক দূর দূরান্ত থেকে অনেক মানুষজন আসে। মূলত এই বইমেলাটা অনেকটাই বড় যদিও আমি শুধুমাত্র একবার গিয়েছি তবে প্রথমবার গিয়েই অনেক বেশি অবাক হয়েছিলাম কারণ এত বড় বইমেলা এর আগে কখনোই দেখা হয়নি। কুষ্টিয়াতে যখন লেখাপড়া করতাম তখন দেখতাম কুষ্টিয়াতে বইমেলা হতো তবে এত বড় জায়গা জুড়ে কখনোই বইমেলার আয়োজন করা হয়নি প্রথমবারের মতো খুব কাছ থেকে এত বড় বইমেলা দেখে অনেকটাই অবাক হয়েছিলাম। যেহেতু এখন ঢাকায় থাকা হয় যার কারণে এখন একুশের বইমেলায় যাওয়া খুব একটা বেশি কঠিন কাজ নয়। প্রত্যেকবার যাওয়া-জাওয়া করে পরবর্তীতে আর যাওয়া হয় না তবে এবার আর না যাওয়া হয়নি। বইমেলা শুরু থেকেই আমরা কয়েকজন চিন্তা-ভাবনা করছিলাম যে একদিন বইমেলা ঘুরতে যাব কিন্তু কবে ঘুরতে যাব সেটাই বুঝতে পারছিলাম না যেহেতু কয়েকজন জব করে যার কারণে তাদের জন্যই সমস্যাটা হচ্ছিল।
যেদিন আমরা বইমেলা ঘুরতে যেতে চাই সেদিনই তাদের কোন না কোন কাজ থেকে যায় এরকম করতে করতে প্রায় দু সপ্তাহ কেটে গেল। এরপরে হঠাৎ করেই একটা নির্দিষ্ট তারিখ এ সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম ও দিন আমরা বইমেলা ঘুরতে যাব বই কিনব কিনা সেটা পরের কথা মূল কথা ছিল আমরা বইমেলায় যাব এবং সেখানে ঘোরাঘুরি করব। এরপরে আমরা প্রায় ৮ থেকে ৯ জন বইমেলার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম। প্রথমবার এর মতো যেহেতু আমরা বইমেলা ঘুরতে যাচ্ছি তার মানে বুঝতেই পারছেন আমাদের ভেতরে অনেক আনন্দ এবং এক্সাইটমেন্ট দুটোই কাজ করছিল। ভাই ব্রাদার একত্রে সবাই মিলে বইমেলা ঘুরতে যাওয়ার মাঝেও রয়েছে এক আনন্দ আর এই আনন্দটা একমাত্র তারাই উপলব্ধি করতে পারে যারা এরকম সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছে। মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে আমরা বাসে করে সোজা-সুজি গিয়ে নেমেছিলাম শাহবাগ মেট্রো রেলের সামনে।
সেখান থেকে নেমে আমরা হেঁটে হেঁটে বইমেলার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম প্রথম যখন বইমেলার গেটে গিয়ে পৌঁছালাম তখনই দেখছিলাম খুবই চমৎকারভাবে জায়গাটা সাজানো হয়েছে যদিও প্রথমবার আমরা ভুলে অন্য পথ দিয়ে অন্য জায়গায় চলে গিয়েছিলাম। এরপরে যখন গেটের সামনে যাই তখন সিকিউরিটি ছিল অনেকজন তারা সকলেই আমাদেরকে ভালোভাবে চেক করে নিল মূলত তারা এই জিনিসটা চেক করে যে কেউ বইমেলার ভেতরে গিয়ে আশঙ্কাজনক কোন খারাপ কাজ করার উদ্দেশ্যে কোন জিনিস সাথে নিয়েছে কিনা এই ব্যাপারটাই তারা ভালোমতো চেক করে। যাইহোক বইমেলায় প্রবেশ করার জন্য দুটো গেট ছিল একটা গেট দিয়ে মানুষ প্রবেশ করবে আর অপর একটা গেট দিয়ে মানুষ বের হবে এ ব্যাপারটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে।
প্রথমবার যখন বইমেলার গেট দিয়ে বইমেলার দিকে প্রবেশ করলাম তখন সামনেই দেখতে পাচ্ছিলাম যে বই রাখার জন্য অনেক বড় একটা বুক সেলফ তৈরি করে রাখা হয়েছে। বুকসেল তৈরি করে রাখা হলেও এর মধ্যে কোন বই নেই এটা শুধুমাত্র দর্শকদের মনোরঞ্জন করার জন্যই তৈরি করে রাখা হয়েছে আর চারিদিকে অনেক সুন্দর লাইটিং এর ব্যবস্থা করা ছিল। যার কারনে অনেকেই সেখানে গিয়ে অনেক সুন্দর সুন্দর ছবি তুলছিল যদিও আমরা অনেকজন একত্রে গিয়েছিলাম যার কারণে সবাই মিলে সেখানে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা হয়নি তবে সেই জায়গায় অনেকটা সময় দাঁড়িয়ে থেকে সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করা হয়েছে। চারিদিকে এত চমৎকারভাবে সাজানো হয়েছিল যে দেখে রীতিমতো মুগ্ধ হয়েছিলাম বিশেষ করে চারিদিকে অনেক সুন্দর সুন্দর লাইটিং করে রাখা হয়েছিল লাইটিং করার কারণে পুরো জায়গাটা অনেক বেশি আলোকিত ছিল দেখতেও অনেক বেশি সুন্দর লাগছিল। প্রথমবারের মতো বইমেলায় এরকম একটা মুহূর্ত দেখতে পেরে বেশ ভালো লাগছিল আমরা পুরো জায়গাটা ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম আর সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলাম।
আস্তে আস্তে হাঁটতে হাঁটতে আমরা সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলাম যতই আমরা সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলাম ততই আমরা দেখছিলাম যে চারিদিকে শুধু বইয়ের স্টল। বইয়ের স্টল গুলোতে অনেক মানুষের ভিড় সেই সাথে আপনারা অনেকেই জানেন যে এবারের বই মেলাতে অনেক রকম কিচ্ছা কাহিনী ঘটে গিয়েছে এমন অনেক মানুষ আছে যারা কিনা কখনোই বই লেখেনি সেই মানুষগুলো যেমন তেমন একটা বই লিখে বই মিলাতে এসে তারা দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাচ্ছে মূলত তারা চাচ্ছে যে প্রচুর রকম ভাবে ভাইরাল হতে আমি জানিনা তারা বই লেখে ভাইরাল হওয়ার মাঝে কি আনন্দ খুঁজে পায়। অনেকেই জানে যে মুস্তাক এবং তিশা নামক ২ ব্যক্তির যারা কিনা হাজবেন্ড এবং ওয়াইফ এই দুজনের নিয়ে বইমেলাতে অনেক রকম কাণ্ড ঘটে গিয়েছে আপনারা হয়তোবা অনেকেই অনলাইনে দেখেছেন তাদের এরকম চিন্তা ভাবনা এবং কার্যকলাপ দেখে নিজের কাছে অনেকটাই খারাপ লেগেছে। যাইহোক সেদিকে আর না যাই।
আমরা একদম শুরু থেকে শেষ অব্দি চেষ্টা করেছিলাম প্রত্যেকটা বইয়ের স্টলে যাওয়ার। যদিও প্রত্যেকটা বইয়ের স্টলে যাওয়া হয়নি তবে বইমেলাতে সবথেকে বেশি জনপ্রিয় স্টল এবং সব থেকে বেশি পছন্দের লেখক এর বইয়ের স্টলে গিয়েছিলাম। বিশেষ করে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, জীবনানন্দ দাশ, হুমায়ূন আহমেদ এরকম কয়েকটা লেখকের বই যেই স্টল গুলোতে ছিল আমরা সেই স্টল গুলো ভালোভাবেই ঘোরাঘুরি করেছিলাম। আমি আপনাদেরকে আগেই বলেছি আমরা মূলত সেখানে ঘুরতে গিয়েছিলাম বই কেনার উদ্দেশ্য কারোর ছিল না তবে অনেকেই বই কিনেছিল অনেক উপন্যাস এবং গল্পের বই আমি প্রথমে ভেবেছিলাম যে একটা উপন্যাসের বই কিনব কিন্তু পরবর্তীতে আর সেটা কেনা হয়নি। তবে যদি কখনো উপন্যাসের বই কিনি তাহলে প্রথমে আমি পদ্মযা উপন্যাস এই বইটা কিনব। শুনেছি এই বইটার উপন্যাস অনেক সুন্দর পড়া হয়নি তবে ফেসবুকে খন্ড আকারে কয়েকটা প্যারা পড়া হয়েছে খুবই ভালো লেগেছে আমার কাছে।
যাইহোক এ পড়বে আমি আপনাদের মাঝে কয়েকটা বয়েই এর স্টল দেখালাম তবে পরবর্তী পর্বে আমি আপনাদের সামনে প্রত্যেকটা বইয়ের ইনস্টল নিয়ে হাজির হবে এবং সেখানে কোন কোন লেখকের বই ছিল এ ব্যাপারটার তুলে ধরার চেষ্টা করব। এটাই ছিল আমার আজকের পোস্ট আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের সকলের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে....!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
বিষয় | বইমেলায় ঘুরাঘুরির মুহূর্ত--দ্বিতীয় পর্ব |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।
@jibon47
VOTE @bangla.witness as witness
OR
অমর একুশে বই মেলাতে দারুন কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছেন। যদিও প্রথম পর্ব আমার দেখা হয়নি তবে দ্বিতীয় পর্ব দেখে বেশ ভালো লাগলো। দারুন ছিল আপনার ফটোগ্রাফি গুলো। পদ্মজা উপন্যাসটা সম্পর্কে আমিও শুনেছিলাম তবে কখনো পড়িনি। আপনার কাটানো সুন্দর মুহূর্ত গুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
পদ্মজা উপন্যাসটা যদি আমি পড়িনি কিন্তু এই উপন্যাসটা করার খুব ইচ্ছে। বইটা খুব দ্রুতই কিনে ফেলবো ভাবছি। গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনি ঠিকই বলেছেন ভাইয়া বই মেলা নিয়ে এ বছর অনেক ঘটনা ঘটে গিয়েছে। কিছুদিন আগে তো ফেসবুক, ইউটিউবে এগুলো ছাড়া আর কোন কিছু আসতোই না মনে হতো। তবে আপনার শেয়ার করা বইয়ের স্টল গুলো দেখতে কিন্তু ভীষণ ভালো লাগছে। আজকের পর্বটি দারুন লাগলো । আপনার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।
এবারের বইমেলা নিয়ে অনেক রকমের কান্ড ঘটে গিয়েছে যেটা বইমেলার সঙ্গে আসলেই যায় না বর্তমান সময়ে মানুষ কিসের মধ্যে কি লিখে বই পাবলিস্ট করছে। এতে করে তারা নিজেদের ব্যক্তিত্ব ধরে রাখতে পারছে না। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
আপনার মাধ্যমে বইমেলার অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি দেখতে পেলাম। যে ফটোগ্রাফি গুলো দেখে বইমেলা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা নিতে পেরেছি।
গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আশা করি ভালই ধারণা পেয়েছেন।
বেশ কয়েকজন বন্ধু মিলে বইমেলা ঘুরেছেন, তাও আপনার জন্য প্রথমবারের এক্সপেরিয়েন্স! আসলেই ফেব্রুয়ারিতে যে বইমেলা টা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার শাহবাগে, সেটি অনেক বড় পরিসরে হয়। একদিনে চাইলেও সব স্টল ঘোরা সম্ভব হয় না।
একদম সত্য কথা বলেছেন আপু শাহবাগের সেই বড় পরিসরে বইমেলাটা একদিনে চাইলেও সকল স্টল ঘোড়া সম্ভব নয়। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।