বৃষ্টির দিনে একটি গল্প-কথা ||🦊 ১০% বেনিফিশিয়ারি🦊 @shy-fox 🦊||
আজ - ২৮ মাঘ | ১৪২৮ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | শীতকালে |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ রাত্রি সবাইকে.....!!
বৃষ্টির দিন মানেই যেন এক এক জনের কাছে এক এক ধরনের অনুভূতি। এখন তো প্রায় শীতকাল আর এই শীতকালে তেমন বৃষ্টি দেখা যায় না তবে আজ দুদিন যাবত আমাদের এখানে খুব বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি যেন থামছেই না । এমনিতে বৃষ্টির সময়টা আমার কাছে খুবই প্রিয়। আর এই বৃষ্টি যদি শীতের সময় হয় তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। শীতের সময় বৃষ্টি মানেই যেন আরেকটু কনকনে শীতের প্রভাব। শীত কারো কারো কাছে অনেক প্রিয় একটি সময় আবার কারো কারো কাছে শীত মানে যেন খুবই কষ্টের মধ্যে জীবন যাপন করা। ঠিক তেমনি ভাবেই শীতের সময় বৃষ্টির পড়ার অনুভূতি টা যেন অন্যরকম। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি টিনের চালের উপর টপটপ শব্দ। টিনের চালের উপর এরকম টকটক শব্দ টা যে কতটা ভালো লাগে সেটা একমাত্র তারাই বুঝতে পারবেন যারা এরকম একটি মুহূর্ত কোন একটা সময় কাটিয়ে ছিলেন। চারিদিকে যেন খুবই নীরবতা বিরাজমান থাকে। এই নিরবতা এক এক জনের কাছে এক এক রকমের হয়ে থাকে। যাইহোক, সকাল সকাল এই রকম কনকনে শীতের মধ্যে লেপ-কাঁথা ছেড়ে উঠতে মন চায় না। তার পরেও খুবই কষ্ট করে নিজের মনের বিরুদ্ধেই লেপ-কাঁথা ছেড়ে ঘুম থেকে উঠে পড়লাম খুব সকালেই। সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি খিচুড়ি আর ডিম ভাজি রান্না করেছে। সত্যি বলতে খুব ছোটবেলা থেকেই বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি আর ডিম ভাজা আমার খুবই প্রিয়। যেহেতু আমি বেশ কয়েকদিন যাবত মেসে ছিলাম। তাই সেই রকম ভাবে বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি আর ডিম ভাজি খেতে পারিনি। আমি খিচুড়ি আর ডিম ভাজি দেখে লোভ সামলাতে না পেরে অতি তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে খাবার খাওয়ার জন্য মন অস্থির করলাম। বৃষ্টির দিনে এরকম খিচুড়ি আর ডিম ভাজি খেতে কত মজা সেটা একমাত্র তারাই বুঝবে যারা বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি আর ডিম ভাজি খেয়েছে। খুবই সুস্বাদু হয়েছিল সেই খিচুড়ি এবং ডিম ভাজি টা। যেহেতু টিনের চালের উপরে টপটপ বৃষ্টি পড়ে যাচ্ছে সেতু বাইরে বের হওয়ার কোনো অপশন ছিল না। বাইরে বের হওয়ার কোন অপশন না থাকায় আমি সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আমার রুমের মধ্যেই কাটিয়ে দিলাম। তারপরে দুপুর শেষ হওয়ার পরেই বৃষ্টি কিছুটা কমে গিয়েছিল। যেহেতু আমার খুব সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে বাজারে যাওয়ার একটি অভ্যাস আছে তাই আমি আর দেরি না করে দুপুরের খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা করি। বৃষ্টির দিনে চা-কফি দুটোই খুবই ভালো লাগে। তাই আমি আর বেশি দেরি না করে বাজারে গিয়ে এক কাপ চা পান করি। চারিদিকে ঠান্ডা আবহাওয়া আর এই সময় মুখের মধ্যে গরম পানি গেলে সেই মুহূর্তটা সত্যিই অসাধারণ।
চারিদিকে বৃষ্টির পানিতে কাদা হয়ে গিয়েছে। রাস্তাঘাটে সব জায়গায় যেন কাদায় পরিপূর্ণ। একটি দোকানে একা বসে থাকতে থাকতেই আমার কিছু বড় ভাই এসে আমাদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া শুরু করলো তখন প্রায় বিকেল হয়ে গিয়েছিল। বৃষ্টির দিনে চায়ের দোকানে এরকম আড্ডা দিতে কার না ভালো লাগে বলেন...? সবাই চায় বৃষ্টির দিনে বন্ধুদের সঙ্গে একটু চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে। কারণ আমি মনে করি যে বৃষ্টির দিনে বন্ধুদের সঙ্গে চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে খুবই ভালো লাগে এবং সবার সঙ্গে মুহূর্তটা অনেক সুন্দর ভাবে উপভোগ করা যায়। ঠিক তেমনি ভাবে আমরা সবাই অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছিলাম।
তবে আমি বলতে চাই যে বৃষ্টির দিনে নদীর পাশে যে হাওয়া প্রবাহিত হয় সেটা নিজের গায়ে লাগাতে খুবই ভালো লাগে এবং অনেক সুন্দর একটি তৃপ্তি পাওয়া যায়। তো আমরা হঠাৎ করেই বলছিলাম যে এই বৃষ্টি ভেজা দিনে নদীর পাশে গিয়ে এই দিন টা উপভোগ করতে চাই। যেমন কথার ঠিক তেমনি কাজ, আমরা পাঁচ থেকে ছয় জন তিনটি মোটরসাইকেল নিয়ে বের হই নদী দেখার উদ্দেশ্যে। আমরা যেখানে অবস্থান করেছিলাম সেখান থেকে নদী কিছুটা দূরে হলেও আমরা যেহেতু মন স্থির করেছিলাম যে নদীর পাশে গিয়ে একটু বসতে তাই আমরা মোটর সাইকেল নিয়ে বের হয়ে পড়ে নদী দেখার উদ্দেশ্যে। আমরা ক'জন প্রায় 30 থেকে 40 মিনিট মোটরসাইকেল চালিয়ে একটা সময় যে সেই গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যাই। নদীর ধারে গিয়ে আমরা সত্যিই অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছিলাম। নদীর ভেতর থেকে শ,শ, শব্দে বাতাস বেয়ে আসছে। সেইসাথে নদীর ধারে অনেকগুলো নৌকা বাঁধা ছিল। পাশের একটি দোকান থেকে আমরা সবাই একটি করে কফি নিয়ে চলে যাই নদীর পাশে বাঁধা নৌকায়। কতটা সুন্দর ছিল সেই অনুভূতিটা যেটা সত্যিই আমি আপনাদেরকে বলে বোঝাতে পারবো না। আপনারা যদি কখনো এরকম একটি বৃষ্টি ভেজা দিনে নদীর পাশে নৌকায় বসে এক কাপ কফি খেয়ে থাকেন তাহলেই আপনারা বুঝতে পারবেন যে কত সুন্দর সেই মুহূর্তটা। সকলে মিলে অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছিলাম সেই সময়টাতে।
আমরা কজন মিলে চলে এসেছি বৃষ্টির দিনে নদীর ধারে নদীর হাওয়া খেতে
নদীর ধারে বেঁধে রাখা সারি সারি নৌকা। সারি সারি এই নৌকাগুলোর নদীর ধারে এরকম ভাবে দেখতে সত্যিই অনেক সুন্দর দেখাচ্ছিল। যদি নৌকাতে মাঝি থাকো তাহলে আমরা অবশ্যই বৃষ্টির দিনে একটু হলেও নৌকা ভ্রমণ করতাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে এটা যে , নদীর ধারে নৌকায় কোন মাঝি ছিল না। যদিও মাঝি ছিল না তার পরেও আমরা নৌকা তে উঠেছিলাম।
এটা হচ্ছে নদীর ধারে ছোট্ট একটি ঘর। এই ঘরটি নদীর ধার ঘেঁষে তৈরি করা হয়েছে। বিকেল বেলা নদীর ধারে এই ছোট্ট ঘরে বসে নদী দেখতে খুবই ভালো লাগে। আর বৃষ্টির দিনে এরকম ছোট্ট একটি ঘরে বসে সামনে নদীটার রেখে এক কাপ কফি খাওয়ার মজাই আলাদা। এই সুন্দর একটি মুহূর্তটাও আমরা সেদিন কাটিয়েছিলাম
বৃষ্টির দিনে নদী সামনে রেখে কফি খাওয়ার সেই সুন্দর মুহূর্ত
আমি তো আপনাদের আগেই বলেছি যে বৃষ্টির দিন মানে যেন সবাই মিলে একত্রে কফি খাবার সুন্দর একটি সময়। আর এই সুন্দর মুহূর্তটা যদি নদীর পাশে হয় তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। আমরা সকলে মিলে এক কাপ করে কফি নিয়ে চলে যাই নদীর ধারে নদীর ধারে বেঁধে রাখা নৌকা গুলোর উপর উঠে আমরা অনেকটা সময় নিয়ে কফি খেয়ে ছিলাম। যদিও তখন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছিল কিন্তু এই মুহূর্তে টা উপভোগ করার জন্য আমরা কেউই নৌকা থেকে নামছিলাম না। এরকম থাকতে থাকতে একটা সময় আমরা বুঝতে পারলাম যে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে, আর এখন আমাদের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করতে হবে। সুতরাং আমরা আড্ডাবাজি বাদ দিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করার জন্য মন স্থির করলাম।
যেহেতু সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল সেহেতু আমরা অতি তাড়াতাড়ি মোটরসাইকেল করে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করেছিলাম। ততক্ষণে বৃষ্টি একদম থেমে গিয়েছিল। যদিও তখন বৃষ্টি থেমে গিয়েছিল কিন্তু শীত একটুও কমেনি। প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে আমরা সবাই রাত্রে যে যার মতো বাসায় চলে যাই। এটাই ছিল আমার আজকের বৃষ্টির দিনের গল্প কথা। যাইহোক এখানেই আমি আমার পোস্ট শেষ করছি আবার হয়তোবা দেখা হবে কোন একটা সময় কোন একটি পোস্টে নতুন ভাবে নতুন রূপে। ততক্ষণ পর্যন্ত সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন পরিবারের সাথেই থাকুন এবং আশেপাশের মানুষকে খুশি রাখার চেষ্টা করুন ,ধন্যবাদ সকলকে।
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করিছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন।
ভাইয়া কি বলবো সত্যি বৃষ্টি অনেকেরই খুবই পছন্দের হয়ে থাকে। আমারও বৃষ্টির দিন মোটামুটি ভালই লাগে। তবে সবার জন্য বৃষ্টি সুখ বয়ে আনে না এটা আমরা সবাই জানি। যারা রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে রাস্তায় এবং মাঠে-ঘাটে কাজ করতে হয় তাদের জন্য কিছুটা কষ্টের মুহূর্ত বয়ে আনে এটি। যাইহোক খুবই সুন্দর কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছেন আপনি এবং খুব সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য ভাইয়া।
ধন্যবাদ ভাই মন্তব্য করার জন্যে
ছোটবেলায় আমাদের বাড়িতে টিনের ঘর ছিল। তারপর যখন বাড়িতে দালান উঠল হারিয়ে ফেললাম টিনের চালের সেই বৃষ্টি পড়ার শব্দ আর ঝড়ের দিনের অভিজ্ঞতা। আপনি ঠিকই বলেছেন এই অভিজ্ঞতা যার হয়নি তিনি কিছুতেই বুঝতে পারবেন না। শীতের দিনে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে চায়ের দোকানে আড্ডা আর নদীর তীরে বাতাসের মধ্যে ঘুরে বেড়ানো কি যে এক স্বর্গীয় শান্তি তা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। যাই হোক সময়টাকে উপভোগ করুন। কারণ যে সময় চলে যায় তা আর ফিরে আসে না। শুভকামনা রইল আপনাদের জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে গঠনমূলক মন্তব্য প্রকাশ করার জন্যে
বৃষ্টির দিনটা আপনি অনেক সুন্দরভাবে কাটিয়েছেন।সকালে ডিম ভাজি দিয়ে খিচুড়ি এর পর চা খাওয়া সহ বড়ভাই এবং বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা সব মিলে সুন্দর একটি দিন কাটিয়েছেন।সব কিছু খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন।ধন্যবাদ আপনাকে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য