নাটক রিভিউ "আলতা সুন্দরী" ৩০ তম পর্ব
কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি বাংলা নাটক রিভিউ নিয়ে। বৃন্দাবন দাস রচিত জনপ্রিয় এই নাটকের নাম আলতা সুন্দরী। এই নাটকে মোট ৬২ পর্ব। আজকে আমি উপস্থিত হলাম ৩০ তম পর্ব রিভিউ করে শেয়ার করতে। চলুন তাহলে শুরু করি।
নাটকের নাম | আলতা সুন্দরী |
---|---|
রচনা | বৃন্দাবন দাস |
পরিচালক | সালাহউদ্দিন লাভলু |
অভিনয়ে | চঞ্চল চৌধুরী, আ খ ম হাসান, শামীম জামান, রহমত আলী, ম ম মোরশেদ, জয় রাজ, রাশেদা চৌধুরী, মনিরা মিঠু, সাইকা আহমেদ, লারা লোটাস, পুতুল, ডায়না সহ আরো অনেকে। |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
ধরণ | হাস্যরসাত্মক এবং সামাজিক |
মোট পর্ব | ৬২ |
রিভিউ | ৩০ তম পর্ব |
দৈর্ঘ্য | ২০ মিনিট |
প্ল্যাটফর্ম | ইউটিউব @cdchoicedrama চ্যানেল |
চরিত্রেঃ
- শামীম জামান (আলতা সুন্দরী/নছের)
- আর খ ম হাসান (নায়ক মেসের)
- চঞ্চল চৌধুরী (রহিম বাদশা) সহ আরো অনেকে
আলতা সুন্দরী নাটকের ৩০ তম পর্বের শুরুতে আমরা লক্ষ্য করে দেখি যে গানের দলের ওস্তাদ এবং হাশেম জোয়ারীর মধ্যে কথা কাটাকাটি চলছে। আসেন জুয়াড়ির ঢাকা শহর থেকে নায়ক নায়িকা এনেছে তাই সে গানের দলে বেশ অধিকার ফেলানোর চেষ্টা করছে। যেমন অবস্থা সৃষ্টি করেছে যেন গানের দলের ওস্তাদ কে এড়িয়ে চলার চেষ্টা। সে গানের দলের ওস্তাদ কে অমান্য করে চলার সুযোগ নিচ্ছে কিন্তু কোনভাবেই বিষয়টা রহিম বাদশা মেনে নিতে পারছে না। এমন অবস্থায় হঠাৎ নায়িকা আসলো চা খাওয়ার জন্য। নায়িকাকে চা খাওয়ানোর জন্য গুলজার রেডি রয়েছে। কিন্তু একপর্যায়ে দেখা যায় চা খাওয়া শেষ করে এসে রাতেও তাদের দুইজনার মধ্যে মনোমালিন্য হয়ে চলল। তাই গানের দলের ওস্তাদ ফেলু গায়েন গানের দল স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর এমনই একটা পর্যায়ে গানের দলের পুরাতন নায়ক ওস্তাদের পক্ষ হয়ে হাসেম জোয়ারীকে অপমান করলো। কারণ সে ওস্তাদের উপরে কথা বলে কোন মুখে। সে তো গানের দলের লোকই নয়। গানের দলের নাম ভাঙ্গিয়ে হাসেম জুয়ারী জুয়া খেলে ইনকাম করে।
এদিকে নায়িকা প্রথম গুলজার এর বাড়িতে পা রাখবে। গুলজার তাকে নিজ হাতে চা তৈরি করে খাওয়াবে তাই বেশ কয়দিন ধরে প্র্যাকটিস করছে। গুলজার কে এমন একটা পর্যায়ে ফেলেছে হাসেম জোয়ারী, গুজার নিজেও বুঝে উঠতে পারিনি। গুলজারের মনের মধ্যে চিন্তা কিভাবে গানের দলের নায়ক হয়ে অংশ নেওয়া যায়। আর এই মুহূর্তে নায়িকার আবির্ভাবে সে যেন নতুন করে সেজে উঠেছে। তার বউ মায়ের বাড়িতে চলে গেছে তাকে বাড়িতে আনার কোন খোঁজ খবর নেই কিন্তু নতুন নায়িকার প্রতি এক অন্যরকম আকৃষ্টতা এবং গানের দলে যুক্ত হওয়ার জন্য তার মনের মধ্যে যেন সব সময় টেনশন চলে। অবশেষে নায়িকা কে সাথে নিয়ে সবাই আসলো চা খেতে। তারা এক টেবিলে বসে বেশ সুন্দরভাবে চা পান করলো আর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে থাকলো। একপর্যায়ে নায়িকা গুলজার কে বলল সে যেন তাকে আপনি করে না বলে তুমি করে বলে। এমন কথা শুনে তো গুলজার এর হয়ে গেছে। কিন্তু তার বোন কিছুতেই নায়িকাকে ভালো দৃষ্টিতে দেখছে না।
এদিকে গুলজারের বাড়িতে চায়ের আয়োজন চললেও নতুন নায়ককে নায়িকা পাত্তা না দিয়ে বাকি সবাইকে সাথে নিয়ে গেছে সেখানে। নতুন নায়ক বেশ অপমানিত হয়েছে। গানের দলের ওস্তাদ যখন তাকে প্রশ্ন করে তা পান করতে যায়নি কেন। সকল দুঃখের কথা সে খুলে বলল। সে বুঝতে পেরেছে নিশ্চয়ই হাসেম জোয়ারী তার উপর দিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু হাসান জুয়ারী তো তাকে নিয়ে এসেছে। তাই ফেলুগায়েন খুব সুন্দর ভাবে তাকে বুঝিয়ে বললো বাবা তুমি আমাদের দল ছেড়ে যেখান করছিলে সেখানে চলে যাও পারলে সাথে নায়িকা কে নিয়ে যাও। এতেই তার জন্য মঙ্গল হয়। কারণ নায়িকা আসার পর থেকে গানের দলে বিভিন্ন বিভ্রান্তি হচ্ছে যা সহ্য করতে হচ্ছে ওস্তাদকে।
এদিকে রহিম বাদশা পাগলপারা হয়ে রয়েছে আলতা সুন্দরী কে দেখার আশায় পাওয়ার আশায়। সেই সুযোগে মাসুমা সুযোগ নিয়েছে সে আলতা সুন্দরীর শাশুড়ি বাড়ির পরিচয় রহিম বাদশা কে জানাবে, যদি আলতা সুন্দরীকে সে না পায় তাহলে মাসুমাকে ভালবাসতে হবে তার। রহিম বাদশা তার শাশুড়ি বাড়িতে গিয়ে শুধু একবার দেখে আসবে আলতা সুন্দরী কে। সে সচক্ষে তাকে দেখতে চাই এবং তার সাথে কথা বলতে চাই। মাসুমা যখন তাকে এমন একটা কথা বলল তার মনটা খারাপ হলো। তবুও রহিম বাদশা মাসিমাকে বলল যদি আলতা সুন্দরী সত্যি বিয়ে হয়ে যায় তাহলে সে মাসুমাকে ভালবাসবে। মাসুম আর মনের একটাই কথা কেন রহিম বুঝতে পারছে না আলতা সুন্দরী একজন ছেলেমানুষ। আর মাসুমা তাকে মনে প্রানে ভালোবাসে সে ছেলেমানুষ হয়ে কেন বোঝেনা। ঠিক এভাবেই যেন মাসুমা তার নিজের কৌশলে রহিমকে আপন করে নেওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আমি এই নাটকের প্রত্যেক অভিনেতার অভিনয়গুলোকে পছন্দ করি। বিশেষ করে এই নাটকে খুব সুন্দর অভিনয় করে থাকে গানের দলের নায়ক মেসের। এছাড়াও হাসেম জোয়ারীর অভিনয় নিখুঁত হয়ে থাকে। আমরা এমন একটা পর্যায়ে দেখতে পারছি যেখানে গানের দলের ওস্তাদকে অতিক্রম করে হাসেম জোয়ারে নিজের অবস্থান তৈরি করার চেষ্টা করছে এবং সেই দলের বেশ কিছু মানুষকে ছাটাই করে দিয়ে নতুন নায়ক নায়িকা সংযোজন করার চিন্তা করছেন। আর এই জন্যই ওস্তাদের সাথে তার মনোমালিন্য হয়। তবুও তারা তাদের কৌশল চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে গোলচার যেন গানের দলের নায়ক হতে পারে তাই তার মত আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। একদিকে নায়িকাকে চা তৈরি করে খাওয়াচ্ছেন। আরেকদিকে তার মিষ্টি কথা শুনে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন বেশি বেশি। আরো আমরা লক্ষ্য করি রহিমের পাগলামি। সে কারোর কথা শুনতে চায় না বুঝতে চায়না আলতা সুন্দরী একজন ছেলে মানুষ। তাই প্রমাণসহ স্বচক্ষে দেখতে আলতা সুন্দরী শাশুড়ি বাড়িতে যেতে চাই এবং তার সাথে দেখা ও কথা বলে আসতে চাই রহিম। এ যেন এক পাগল প্রেমিকের পরিচয়। তাই এই নাটকের মধ্যে যেমন হাসি আনন্দ ভালোলাগা রয়েছে তেমন রয়েছে বেদনা। সব মিলে নাটকের সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করে। তাই আপনাদের কাছে আমার আহ্বান থাকবে সুযোগ করে এই নাটকটা দেখবেন। গ্রামীণ পর্যায়ের অভিনীত নাটক আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।
রিভিউটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
আমি মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের bidyut01 এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। এক পরিবার থেকে "আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে" চারজন সদস্য রয়েছি। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ভালোলাগা রেসিপি তৈরি, নাটক রিভিউ, ভিডিও ও ফটোগ্রাফি করা সহ ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে সদস্য হয়ে পোস্ট শেয়ার করার।
অনেক সুন্দর করে আপনি আলতা সুন্দরী নাটকের ৩০ তম পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আমার কাছে এই পর্বটার রিভিউ পড়তে অনেক ভালো লেগেছে। অন্য পর্বগুলোর মত এই পর্ব টাও খুব সুন্দর ছিল। খুব সহজেই পুরো কাহিনী জানতে পারি কারণ আপনি অনেক সুন্দর করে রিভিউ শেয়ার করেন। আশা করছি এভাবে সবগুলো পর্বের রিভিউ শেয়ার করবেন আমাদের মাঝে।
অনেক ভালো লেগেছে আমার কাছে আজকের এই নাটকটার রিভিউ সম্পূর্ণ পড়তে। নাটকের রিভিউ আমার অনেক ভালো লাগে। আমি মাঝেমধ্যেই নাটক দেখার জন্য চেষ্টা করি। তবে সময়ের কারণে এখন আর খুব একটা নাটক দেখতে পারিনা। কিন্তু আমি যখনই নাটক দেখি তখনই শিক্ষনীয় নাটকগুলো দেখার জন্য চেষ্টা করি। এই নাটকটা অনেক সুন্দর ছিল। আপনি খুব সুন্দর ভাবে রিভিউ টা উপস্থাপন করেছেন। এত সময় নিয়ে নাটক না দেখে আমি মনে করি রিভিউ পড়ে নিলেই ভালো। এটার মাধ্যমে সম্পূর্ণ কাহিনী অল্প সময়ের মধ্যেই পড়ে নেওয়া যায়।