নাটক রিভিউ "আলতা সুন্দরী" ২২ তম পর্ব
কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি বাংলা নাটক রিভিউ নিয়ে। বৃন্দাবন দাস রচিত জনপ্রিয় এই নাটকের নাম আলতা সুন্দরী। এই নাটকে মোট ৬২ পর্ব। আজকে আমি উপস্থিত হলাম ২২ তম পর্ব রিভিউ করে শেয়ার করতে। চলুন তাহলে শুরু করি।
নাটকের নাম | আলতা সুন্দরী |
---|---|
রচনা | বৃন্দাবন দাস |
পরিচালক | সালাহউদ্দিন লাভলু |
অভিনয়ে | চঞ্চল চৌধুরী, আ খ ম হাসান, শামীম জামান, রহমত আলী, ম ম মোরশেদ, জয় রাজ, রাশেদা চৌধুরী, মনিরা মিঠু, সাইকা আহমেদ, লারা লোটাস, পুতুল, ডায়না সহ আরো অনেকে। |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
ধরণ | হাস্যরসাত্মক এবং সামাজিক |
মোট পর্ব | ৬২ |
রিভিউ | ২২ তম পর্ব |
দৈর্ঘ্য | ২০ মিনিট |
প্ল্যাটফর্ম | ইউটিউব @cdchoicedrama চ্যানেল |
চরিত্রেঃ
- শামীম জামান
- আর খ ম হাসান
- চঞ্চল চৌধুরী
রহিম বাদশা ছেলেটা তার নিজ গ্রাম ছেড়ে গানের দলের ওস্তাদের গ্রামে এসে অবস্থান করছে। তার মনের মধ্যে বেশ খুব জমেছে কেন গুলজার গানের দলকে বন্ধ করে দিল। আর কনফিউশন রয়েছে আসলে আলতা সুন্দরী মানুষটাকে। তাকে নিয়ে কি সবাই মিথ্যা বলছে নাকি সে কোন কিছু বুঝতে পারছে না। এজন্য এই গ্রামে অবস্থান করার মুহূর্তে হঠাৎ আলতা সুন্দরীর সাথে তার দেখা হল। কিন্তু আলতা সুন্দরীত আর সেই গানের দলের সাজ সেজে নেই। দুজনার সাথে কথা হল। আলতা সুন্দরী তার কাছে জানতে চাইলে সে কি গানের দলে যুক্ত হতে চাই। রহিম বাদশা বলল তার মনে একটা আশা উদ্দেশ্য রয়েছে। কিন্তু তার যে এই গ্রামে আসার পরে বিশৃঙ্খলার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এই গ্রামের লোকজন সব বদরাজি তাই তার ঝামেলা হচ্ছে। আর তার উদ্দেশ্য ছিল আলতা সুন্দরীকে ভালোবেসে বিয়ে করার কিন্তু আলদা সুন্দরীর দেখাই প্রেরণা আর। এ মুহূর্তে আলতা সুন্দরী বুঝাতে ছিল সেই নিচে মেয়ে মানুষ সেজে নাচ-গান করে থাকে। রহিম বাদশা গ্রামে এসে ঝামেলা পাকিয়েছে তাই আজকে তার করুণ পরিণতি হয়েছে। তার এমন কথা শুনে রহিম বাদশা রেগে গেল এবং উল্টাপাল্টা বলে তার কাছ থেকে সরে গেল।
রহিম বাদশার মনটা খারাপ। পথের মধ্যে মাসুমার সাথে দেখা হলো তার। মাসুমা তার মন খারাপ দেখে চিন্তা করলো তার বাড়িতে নিয়ে যেতে। কিন্তু হঠাৎ দেখতে পারলো গুলজার মাসুমাদের বাড়িতে এসে চিৎকার করছে। গুলজার মাসুমাকে রহিমের হাত ধরতে দেখে রেগে গেল এবং বলল সে মেয়ে মানুষ হয়ে কিভাবে অচেনা একটি ছেলের হাত ধরে হাসতে হাসতে বাড়ির দিকে আসছে। কিন্তু এই সুযোগে রহিম একটা প্রতিবাদ করে বসলো গুলজার কে সামনে পেয়ে। কেন গুলজার গানের দল বন্ধ করে দিয়েছে। গানের দলের ওস্তাদকে কেন সে মান্য করতে পারেনা। সে ইচ্ছে মত যাচ্ছে তাই গুলজার কে বলা শুরু করল। রহিম চাই গুজারকে শিক্ষা দিতে। এমন কথা শুনে গোলজার তো রেগে আগুন হয়ে গেল তাই বাড়ির মধ্য থেকে দেওয়ানার জন্য দৌড়ে চলে গেল। মাসুমা দেখল বেশ খারাপ একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে তাই দ্রুত রহিমকে নিয়ে পালিয়ে গেল।
অনেকদিন পর হঠাৎ ডিউটি পারুলদের বাড়িতে এসে উপস্থিত। বিউটি তার নিজের নামে কলঙ্ক রটিয়েছিল এটা সত্য কথা। আলতা সুন্দরী তাকে নষ্ট করে নিয়ে এটাও সত্য কথা। সে মূলত পারুল আর আলতা সুন্দরীর মধ্যে প্রেম ভালোবাসা কতটুকু জোর আছে সেটা পরীক্ষা করার জন্য নিজের নামে মিথ্যা রটিয়ে আলতা সুন্দরীর মনে জায়গা নিতেছে চেষ্টা করেছিল। কারণ কোন একদিন পারুল তাকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছিল আলতা সুন্দরী অর্থাৎ নছের একমাত্র পারুলের জীবন সাথী। আর সেই কথার জেট ধরে বিউটি পারুলের বান্ধবী হয়ে নছেরকে নিজের করে পাওয়ার চেষ্টা করছিল। তবে আজকে পারুল বিউটির মুখে সত্যি কথা জানার পর আলতা সুন্দরী ওরফে নাছেরকে কাছে পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছে। কিন্তু অনেক দিন আলতা সুন্দরী তাদের বাড়িতে আর আসে না কারণ পারুল তাকে অনেক অপমান অপদস্থ করেছিল বিউটির মিথ্যা কলঙ্কের কথা শুনে।
এদিকে গোলজার রেগে মেগে আগুন। রহিম কিভাবে তার শিক্ষা দেওয়ার জন্য মুখের উপর কথা বলল। সে মনে করছে সবকিছু তার বোনের জন্য শুনতে হচ্ছে। সে কিছুদিন আগে রাগের মাথায় বোনকে বিষ খাওয়ার কথা বলে যে বিষের বোতলটা রেখে গেছিল সে বোতল এখন তার বোন কোথায় রেখেছে সেই বিষয়টা জানতে চাই। কারণ সে নিজেই বিষ খাওয়ার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু বিউটি মনে করল ভাই বিষের বোতলের কথা জানতে চাচ্ছে হয়তো তার নিজেকে বিষ খেতে বলবে এখন। তবে বিউটি হাসিখুশি মনে বলল আগে ভাবিকে বাড়িতে নিয়ে আসো আমি তো অবশ্যই বিষ খাব কিন্তু আমি বিষ খেয়ে মরে গেলে তোমার রান্না করে খাওয়াবে কে, তাই ভাবিকে নিয়ে আসো তারপরেই না হয় বিষ খাওয়া যাবে। কিন্তু গুলজারের মনের মধ্যে কি চিন্তাধারা ছিল সেটা মোটেও বুঝলো না বিউটি।
পারুলের মনের ভুল ভেঙেছে কিন্তু সে তার প্রেমিককে পাচ্ছে না। কারণ তার প্রেমিক তার মনের কাছ থেকে এখন অনেক দূরে। তার ভুল ভাঙ্গাতে হলে অনেকটা সময় লাগবে পারুলের। তাই ঘরের মধ্যে বসে কান্না করা ছাড়া এখন কোন উপায় নেই তার। তাই পারুল তার মার কাছে অনুরোধ করে বলছে সে যেখান থেকে পারুক না কেন নছেরকে খুঁজে এনে দিক। কিন্তু তার মা বলল তোর প্রিয় মানুষকে তুই খুজে আনবি আমি কি করে খুঁজে এনে দেবো। আগে যদি তার মায়ের কথা শুনতো ছেলেটাকে অপমান না করত তাহলে আর এত কিছু হতো না। কেন সে বিউটির মিথ্যা কথা শুনে ছেলেটার সাথে খারাপ ব্যবহার করল।
এদিকে রহিম বাদশা গানের দলে যুক্ত হতে পারে কিনা এমনই চিন্তা নিয়ে গানের দলের লোকজনের সাথে ঘুরঘুর করছে। তার মনের মধ্যে একটাই চিন্তা সে যদি গানের দলে যুক্ত হতে পারে অবশ্যই আলতা সুন্দরীর সাথে তার দেখা হবে। এদিকে গুলজারের ভয়ে গানের দল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে ছিল। বিউটির মুখের সত্য কথা প্রমাণ হওয়ার পর থেকে গানের দলের লোকজন কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে। তাই তারা আবারো আগের মতো গানের দলকে সচল করার জন্য মিটিং এর আয়োজন করেছে। কিন্তু দেখা গেল হাসেম জোয়ারী হঠাৎ করে গানের দলের জন্য শহর থেকে নায়ক আর নায়িকা ধরে এনেছে। গানের দলের ওস্তাদকে কিছু না বলে হাসেন জুয়ারী এমন মানুষ নিয়ে এসে উপস্থিত এ বিষয়টা ওস্তাদের কাছে খুবই বিরক্তকর মনে হল।
দীর্ঘ ঝামেলার পর আজকের এই পর্বে আমরা একটা বিষয় নিশ্চিত হতে পেরেছি বিউটি নিজের নামে কলঙ্ক রটিয়েছিল সম্পূর্ণ বিষয়টা ছিল মিথ্যা। সে আলতাসুন্দরীকে নিজের করে পাওয়ার জন্য এমন মিথ্যা কলঙ্ক রটিয়েছিল নিজের নামে। একমাত্র তার জন্যই গ্রামের গানের দলটা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে ছিল। এই অভিনয়ে আমরা একটা জিনিস বেশি লক্ষ্য করে দেখেছি তা হচ্ছে একমাত্র গুলজার যে নিখুঁতভাবে অভিনয় করে চলেছে। যার অভিনয়টা দর্শকদেরকে মনোরঞ্জন করে। সে মাথা গরম করে কখন কি করে বসে তার নেয় ঠিক। এদিকে পারুল আবারও তার প্রেমিককে ফিরে পাওয়ার চিন্তা করছে। পারুলের মনের ভুল দূর হয়ে গেছে। রহিম বাদশা গানের দলে যুক্ত হতে পারে কিনা এমনই চিন্তা নিয়ে আলতা সুন্দরীকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। কিন্তু মাসুমা বুঝাইও বুঝাতে পারছে না আলতা সুন্দরী একজন ছেলে মানুষ। আলতো সুন্দরী মনে মনে রহিম কে ভালোবেসে ফেলেছে। তবে এত কিছুর মধ্যে গানের দল যখন আবারো সচল হওয়ার চিন্তা-ভাবনা সেই মুহূর্তে হাশেম জুয়ারী শহর থেকে নায়ক-নায়িকা ভাড়া করে এনে যেন আবারও অন্য ঝামেলায় ফেলল গানের দলকে। হয়তো আগামী পর্বে আমরা আরো নতুন কিছু দেখতে চলেছি নতুন নায়ক নায়িকার জন্য। তবে এক্ষেত্রে বলতে পারি সকল অভিনয়ের মধ্যে বিউটি এবং তার ভাই গুলজার এর অভিনয় বেস্ট ছিল।
রিভিউটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
আমি মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের bidyut01 এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। এক পরিবার থেকে "আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে" চারজন সদস্য রয়েছি। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ভালোলাগা রেসিপি তৈরি, নাটক রিভিউ, ভিডিও ও ফটোগ্রাফি করা সহ ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে সদস্য হয়ে পোস্ট শেয়ার করার।