জেনারেল রাইটিং: পরনির্ভরশীল মানুষেরা সব সময় ফুটবলের মত
আসসালামু আলাইকুম
জেনারেল রাইটিং পোস্ট
পরনির্ভরশীলতা একপ্রকার অভিশাপ। যারা পরের উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে তারা সব সময় অবহেলিত ও মানসিক নির্যাতনের শিকার। যারা এই দুনিয়ার বুকে পরনির্ভরশীল হয়ে বেচে রয়েছে এবং নিজের ভবিষ্যৎ তৈরি করার চেষ্টা করেছে, তারা মানসিক টেনশন নিয়ে দিনের পর দিন পার করে থাকে। পরনির্ভরশীলতা অনেক রকমের হতে পারে। কিছু পরনির্ভরশীলতা ফুটবলের মত। কিছু পরনির্ভরশীলতা জড় পদার্থের মত। আবার কিছু পরনির্ভরশীলতা রয়েছে পরাধীনতার মত। তবে সকল সুযোগ বুঝে পরনির্ভরশীল মানুষকে ঠকাই; প্রতারণার শিকার করে; মাত্রায় অতিরিক্ত খাটিয়ে নিবে; তার থেকে স্বার্থ উদ্ধার করবে কিন্তু তার বিনিময়ে একটু সহানুভূতি দেখালেও অবহেলা দেখাতে কম করবে না। আর এটাই যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। এ সমাজে কিছু শ্রেণীর মানুষের রয়েছে, সহানুভূতিতা দেখিয়ে পরনির্ভরশীল মানুষগুলোর দ্বারা স্বার্থ উদ্ধার করে থাকে। এক পেট খেতে দিয়ে, তিন পাট খাবারের মাইনে খোঁজে।
এতক্ষণ যা কথা বললাম। কথাগুলো হয়তো বুঝতে অনেকের অসুবিধা মনে হতে পারে। যারা জ্ঞান সমৃদ্ধ ব্যক্তি আছেন তাদের কাছে কথাগুলো মূল্যবান মনে হবে। সহজ ভাষায় বলি। ফুটবল যখন খেলা হয়। দুইটা পক্ষ নিজের দলের জয়ী করার জন্য ফুটবলকে ইচ্ছে মত লাথায়। এখানে দুইটা পক্ষের স্বার্থ রয়েছে বলেই ফুটবলের গায়ে লাথি মারতে থাকে। এখানে ফুটবল পরনির্ভরশীল। সে কোথায় গড়িয়ে যাবে, নিজ থেকে জানেনা। যখন যেই দল তাকে লাথি মেরে যেই দিকে ফেলে, ফুটবলকে সেই দিকেই গড়াতে হয়। সে শুধু জড় পদার্থ হয়ে পড়ে থাকতে জানে, আর লাথি খেয়ে এদিকে ওদিকে গড়াতে জানে। সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা অবহেলায় এভাবেই ফুটবল হয়ে বেঁচে থাকে। কিছু মেয়ে রয়েছে স্বামীর সংসারে ফুটবলের মত। কিছু চাকরিজীবী মানুষ রয়েছে বসের কাছে ঠিক এমন ফুটবলের মত। অনেক প্রবাসী মানুষের রয়েছে বিদেশীদের কাছে ও দালালদের কাছে ফুটবলের মত।
একটা মেয়ের জীবন, প্রথমে বাবার হাতে; এরপর স্বামীর হাতে; তারপর সন্তানদের হাতে। যদি কপাল ভালো হয় তাহলে শান্তিতে জীবন যাপন করতে পারে। আর যদি কপাল মন্দ হয় তাহলে ফুটবলের মত। তবে মানুষের জীবনে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত অনেক সংগ্রাম রয়েছে সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু এমন কিছু মানুষ রয়েছে, যাদের জীবনটা লাথি খেতে খেতেই পার হয়ে যায়। অনেকের রয়েছে দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছে তাই জীবনটা অভিশাপ হয়ে উঠেছে। অনেকের রয়েছে স্বামী ভালো না হওয়ার জন্য জীবনটা অভিশাপ হয়ে উঠেছে। ঠিক এভাবে আবার অনেক ছেলেদের জীবন আছে। কোম্পানির চাকরিতে বস যেকোনো মুহূর্তে চোখ গরম করে কথা বলে স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করে। কাজে একটু উনিশ বেশি হলেই অবহেলার পর অবহেলা। আবার অনেক মানুষ রয়েছে ক্ষমতাসীন মানুষের কবলে পড়ে অবহেলিত হয়ে জীবন যাপন করে। এ সময় পরনির্ভরশীলতা তাকে গ্রাস করে। আবার অনেক মানুষ স্বেচ্ছায় পরনির্ভরশীলতা বেচে নেয় নিজেকে কোন ভাবে টিকিয়ে রাখার জন্য।
তাই আমি মনে করি, নিজের শরীরে যতক্ষণ বল শক্তি রয়েছে; রক্তের তেজ রয়েছে; ততক্ষন চেষ্টা করতে হবে নিজের যোগ্যতা দিয়ে নিজেকে টিকিয়ে রাখার। স্বামীর সংসারেও চেষ্টা করতে হবে নিজের যোগ্যতা তৈরি করার। তবে স্বামীকে অভাবটেক করে নয়। নিজের বুদ্ধিমত্তা দ্বারা সঠিক পথ দেখিয়ে। বিদেশে যাওয়ার আগেই স্বদেশে নিজের অবস্থান তৈরি করার চেষ্টা করতে হবে। যখন কিছু করার থাকবে না তখন বিদেশে যদি যাওয়া লাগে, সেটা সারা জীবনের জন্য নয়। নিজের যোগ্যতা অর্জন হয়ে গেলেই ফিরে আসতে হবে। এছাড়া আপনি যদি কোম্পানির চাকরি করেন পরনির্ভরশীলতা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার চেষ্টা করবেন যেভাবে পারেন। হয় ভালো পর্যায়ে ওঠে যেতে হবে অথবা নিজের ভালো পর্যায় তৈরি করতে হবে। তাই বলে কারোর পায়ের নিচে পড়ে থেকে জীবন পার করার মানে হবে না। সর্বোপরি আমি এটাই বলতে পারি, আপনি যখনই যেভাবে পরনির্ভরশীল হয়ে জীবন যাপন করবেন। তখন আপনার কোন মূল্যায়ন থাকবেনা। সবাই আপনাকে ফুটবলের মত ব্যবহার করার চেষ্টা করবে। বলতে গেলে, অন্যের উদ্যোগে নিজের পরিচালিত হওয়ার মতন, নিজেই উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার চেষ্টা করুন। তাই জীবনের প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে নিজেকে নির্ভরশীল রূপে গড়ে তুলুন। আপনার নির্ভরশীলতা আপনাকে দেবে মুক্তি।
পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ
বিষয় | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Huawei P30 Pro-40mp |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
দেশ | বাংলাদেশ |
ব্লগার | আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি |
আমার পরিচয়
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
X--promotion
আজকের কাজ সম্পন্ন
অনেক ভালো লাগলো ভাবি আপনার সুন্দর এই জেনারেল রাইটিং পরে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। সত্যি পরনির্ভরশীল জীবন গুলো সব সময় অবহেলিত হয়ে থাকে। তাই পরনির্ভরশীলতার গন্ডি পেরিয়ে আমাদের নিজের মধ্যে সেই আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে হবে। যেখানে নিজের পায়ে দাঁড়ানো বোঝায়।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
আহা, কি সুচিন্ত, চিন্তা ভাবনা আপনার আপু। আপনার পোষ্টের আজকের কথাগুলো আমার একেবারে মনে ধরেছে। তবে হ্যাঁ আপনি সঠিক বলেছেন যতক্ষণ নিজের শরীরের শক্তি রয়েছে ফুটবলের মতো পরনির্ভরশীল না হয়ে নিজের স্থানকে শক্ত করতে হবে, নিজের কর্ম বলে। তাই নিজের পথ নিজেকে তৈরি করতে হবে। নিজেকেই উদ্যোক্তা রূপে তৈরি করতে হবে। জাস্ট অসাধারণ ছিলো আপনার লেখাগুলি। অপেক্ষায় রইলাম আপনার পরবর্তী এরকম লেখা পড়ার জন্য।
আপনার মনে ধরেছে জেনে খুশি হয়েছি
গুরুত্বপূর্ণ একটা অনুভূতি নিয়ে আজকের পোস্ট উপস্থাপন করেছেন। আপনার এই জেনারেল রাইটিং টা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আপনি খুব সুন্দর ভাবে গুছিয়ে অবহেলিত মানুষের জীবন উন্মোচন করেছেন এই পোস্টে। একদম সত্যতা খুঁজে পেলাম আপনার লেখায়। অবহেলিত মানুষগুলো ঠিক ফুটবলের মতই হয়ে থাকে। আমাদের সমাজের দিকে তাকালে এমন অবহেলিত ও পরাধীন মানুষের সংখ্যা অনেক দেখা যায়। চাকরি করলেও পরনির্ভরশীলতা রয়েছে মানুষের। হয়তো সেটা সবার মাঝে বলা যায় না কিন্তু কিছু কিছু বিষয়ে অবহেলার শিকার হয়ে নিজের মনের মধ্যে কষ্ট আটকে রাখতে হয়। একদম আমাদের মত মানুষের মনের অনুভূতি বের করে প্রকাশ করেছেন এই পোস্টে।
পাশে থেকে মন্তব্য করেছেন থেকে খুশি হয়েছি ভাইয়া
আপনি ঠিক কথা বলেছেন এই সমাজে পরনির্ভরশীল লোকেরা অনেকটা জড় বস্তুর মত হয়ে থাকে। কেননা তাদের জীবনের কোন স্বাধীনতা কখনোই থাকে না। তারা অন্যের কথায় সব সময় উঠবস করে। এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ দাদা ঠিক বলেছেন
আসলে পরনির্ভরশীল মানুষেরা হচ্ছে আগাছার মতো। তারা সবসময়ই অন্যের ঘাড়ে বোঝার মতো হয়ে বসে থাকে। তাই তারা কারো কাছেই দাম পায় না। তাই আমাদের সবার উচিত নিজের পায়ে দাঁড়ানো। তাহলে মানুষ আমাদেরকে সম্মান করবে। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।