একটা বিকেল - স্বরচিত লেখা || ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
কখনো ছোট গল্প লেখার চেষ্টা করিনি ।নিজের আত্ম উপলব্ধিগুলোকে কবিতার মাধ্যমে বহুবার তুলে ধরেছি আপনাদের সামনে ।প্রকৃতির সাথে নিজেকে মিশিয়ে নিজের অবস্থাকে কেন্দ্র করে এবং নানান আমার ভাবনা চিন্তা কে এক জায়গায় করে আমি কবিতা লিখেছি অনেক। ভেতরের জমিয়ে রাখা কথাগুলোকে গল্প বানানো হয়নি ।বানানো হয়নি উপন্যাস।
আজকে সকালবেলায় হঠাৎ করেই আপনা থেকেই কিভাবে যেন এই লেখাটা লিখে ফেললাম ।জীবনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কিছু অনুভূতি এভাবেই লেখার মাধ্যমে একবার প্রকাশ করতে পারলে, নিজেকে বেশ হালকা লাগে। লিখতে পেরে বেশ ভালো লাগলো ।লেখাটা কেমন হয়েছে জানার অপেক্ষায় থাকলাম।
মনে পড়ে যায় সেই বিকেলবেলার কথা। পড়ন্ত বিকেলের উপচে পড়া গরমের মধ্যে আমি গুটি গুটি পায়ে একপা দু'পা কিত্ কিত্ খেলতে খেলতে নিচে নেমে আসলাম। রাস্তাঘাট বড়ই অসহায় তখন। জনমানবের সমাগম এতই কম যে , কাক-শালিক খেলা করে বেড়াচ্ছে পাড়ার কুকুর গুলোর সাথে। মাথার চুল থেকে কান বরাবর ঠোঁটের লোমকূপ বেয়ে ঘাম ঝড়ছে অবিরত। পায়ের জুতোটাকে টান মেরে ছুঁড়ে ফেলতে ইচ্ছা করে মাঝেমধ্যে।
এই অসহ্য গরমেও ভিজে মাটির গন্ধ অনুভব করি তখন। রাস্তার মোড়ে মোড়ে রোবটের মত দাঁড়িয়ে থাকা যমরাজের চোখ লুকিয়ে হেঁটে চলেছি বেশ কয়েক মিনিট হল। দূর থেকে দেখতে পেলাম তাকে। বসে বসে সময় এর নামতা গুনছিল হয়তো।
অসহ্য গরমটা হঠাৎ কালো মেঘে ঢেকে যায়। ঘাটের পারে আমগাছ গুলো ভয়ের চোটে কাঁপতে থাকে। কিন্তু আমার ভয় লাগে না। ক্লান্ত বিকেলটার দমকা হাওয়া জুড়ে তখন আলু কাবলি মাখার গন্ধ। আমার ঘরের জানালা গুলো মেঘেদের গানে ছটফট করছে তখন। আমি ভুলে গেছি জানালাগুলো বন্ধ করে আসতে। দেখতে দেখতে মেঘ খুব কাছে আসতে থাকে।
বৈশাখী বিকেলের সুন্দরী বাতাস হঠাৎ নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে মেতে ওঠে। আমি ছুটতে থাকি সেই যুদ্ধের মাঠ দিয়ে। সামনের শত শত বাধাকে তলোয়ার দিয়ে কেটে ফেলে আমার গতিবেগ।
হঠাৎ বৃষ্টি নামে। এমন বৃষ্টি আগে কখনও দেখিনি। তখন আমি খেলা করে চলেছি আকাশের সাথে। ওরা আমার ওপর ঝড়ে পড়তে চায়, ভেজাতে চায় আমার নীল বসন। বৃষ্টির এক একটা ফোঁটাকে তাক লাগিয়ে দিয়ে আমি নিজেকে বানিয়ে ফেলি মেঘবালিকা। আমি হাসতে থাকি। হাসতে থাকি ভেজা রাস্তায় বৃষ্টির হাত ধরে।
বেশ অনেকটা দূর এসে একটা দোকানের শেডের নিচে দাঁড়াই। নিজের নিঃশ্বাস- এর ঝলমলে শব্দ টা কানের ভেতর বাজতে থাকে বৃষ্টির আওয়াজ এর সাথে।
আমি আবার খেলতে নামি। খেলতে দেখি তাকে।তাকে হাসতে দেখি আম পড়া ঝড়ের আনন্দে। হাসির ঝলক বৃষ্টির ফোঁটায় ফোঁটায় প্রতিফলিত হতে থাকে আকাশে-বাতাসে ,রাস্তা-ঘাটে । হাসির ঝলকানি মাখা ওই সামান্য আদুরে বৃষ্টিটুকু খুব যত্নে অজানা কোন বাক্সে বন্দি হয়ে যায় , সে খবর আমি ছাড়া অন্য কেউ জানতে পারে না।
গল্প লিখেছিলাম দুইবার ।জীবনে প্রথম ওই দুটো গল্প লিখতে পেরে খুব আনন্দ পেয়েছিলাম ।কিন্তু দোষের মধ্যে গল্প গুলো বেশ বড় বড় ।আমি যদি এখানে পোস্ট লেখা শুরু করি এক সপ্তাহ ধরে ওই গল্প চলতে থাকবে। তবে এরকম ছোট গল্প লিখতে পেরে খুব মজা পেয়েছি। আমার নিজের কাছে অত্যন্ত ভালো লেগেছে। সকলে ভাল থাকুন। সুস্থ থাকুন। নমস্কার।
আরি সাবাশ
ফাটিয়ে দিয়েছেন তো একদম। দারুন লিখেছেন। কে বলে প্রথম বার লেখা।
দুরন্ত লিখেছেন। মনেই হয় না অ্যামেচার লেখক। লিখতে থাকুন। বলা হয় লিখতে লিখতে কলম ধারালো হয়। থেমে গেলেই কলমও ভোতা হয়ে যায়। রোজ লিখুন আর আমাদের পড়ান।
আনন্দে থাকুন খুব।
একদমই তাই, লিখতে লিখতেই তো হাত খোলে। ধন্যবাদ এত অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য।