ভাগ্য || বাস্তব জীবন থেকে নেওয়া একটি ঘটনা
"হ্যালো",
আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।
সবাইকে আমার নতুন একটি ব্লগে স্বাগতম। সুখ এমন একটা জিনিস যা সবার কপালে থাকে না। আজ আপনাদের সাথে যে গল্পটি আমি শেয়ার করব সেটি আজ আমি স্বচক্ষে দেখেছি এবং আমি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে একটা মানুষের সঙ্গে এমনটা কখনো ঘটতে পারে। আসলে টাকা পয়সা আধিপত্য কখনো মানুষকে সুখী করতে পারে না সুখী হতে গেলে ভালবাসার দরকার যত্নের দরকার এবং মানসিক শান্তির দরকার। যাইহোক আশা করছি আজকের ঘটনাটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
আমার পাশের বাড়ির এক বড়মা আছেন। তাদের সঙ্গে আমাদের রক্তের কোনো সম্পর্ক নেই।তবে পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় আন্তরিকতা বেশ ভালো। ক'দিন ধরেই শুনছিলাম তিনি অসুস্থ। তবে বৃষ্টি, কাঁদা রাস্তায় এজন্য দেখতে যাওয়ার সময় হয়নি আমার। তবে অনেকেই এসে আমাকে বলছিলেন আমাকে নাকি উনি দেখতে চেয়েছেন। তাই অবশেষে আজ সন্ধ্যায় গিয়েছিলাম তাদের বাসায়। গ্রামে তাদের বিল্ডিং বাড়ি। তাদের জমিজমারও কোন অভাব নেই। স্বামী ছেলে দুজনেই চাকরিজীবী।
তো যাই হোক আমার চাচাতো ভাইয়ের বউয়ের সঙ্গে এবং আমার ছোট বোনকে নিয়ে আজ গিয়েছিলাম আমার সেই বড়মাকে দেখতে। বাসার মধ্যে ঢুকে দেখি একটা ঘরে একা একাই কান্না করছে। ঘরে ছেলের বউ আছে, ছেলে আছে, নাতি নাতনিরা আছে। কিন্তু দিনশেষে কেউ তার ঘরে ঢোকে না। তার সাথে দুটো কথা বলে না। শুধুমাত্র স্বামী ছাড়া কেউ তার দেখাশোনাও করে না। বাহিরের এক মহিলা গিয়ে তার দেখাশোনা করে। যত্ন নেয়।
আমি যাওয়ার সাথে সাথে আমাকে দেখে অনেক কান্নাকাটি করছিল এবং আমাকে বলছিল আমি যেন তার হাতটা ধরে কিছুক্ষণ বসে থাকি। তখন আমি আমার বড়মাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনার তো ছেলের বউ আছে নাতিরা আছে তাহলে এমন কান্নাকাটি করেন কেন?তাদের সাথে গল্প করে সময় কাটাবেন। তিনি উত্তরে বললেন তার কাছে কেউ আসে না তার খোঁজখবর নেয় না। এই কথাটা শোনার পর আমার কাছে খুবই খারাপ লাগলো বিষয়টা।অথচ আমরা বাসার যাওয়ার পর ছেলের বউ আমাদের সাথে অনেক ভালো ব্যবহার করছিল। বোঝাই যাচ্ছিল না তার মনের মধ্যে এতটা হিংসা আছে যে তার শাশুড়িকে একটু দেখাশোনা করে না। আসলে এসব বউদের বলার মত কোন ভাষা আমার কাছে নেই।
যাইহোক বেশ অনেকক্ষণ ধরে উনার সঙ্গে গল্প করছিলাম এবং উনি খুবই খুশি হয়েছিলেন আমি ওনাকে দেখতে যাওয়াই। মন থেকে অনেকক্ষণ দোয়া করলেন আমাকে। আসলে এই মানুষগুলোর পরিণতি এমনটা দেখে খুবই খারাপ লাগছিল এত জমিজমা সম্পত্তি থেকেও মনের দিক দিয়ে এবং শারীরিক ভাবে কতটা অসুখী। আমি চাইবো এমন পরিণতি যেন কারোর না হয়। আমার কোন শত্রুরও না।
যাইহোক বন্ধুরা সবাই উনার জন্য দোয়া করবেন যেন অনেক তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন।আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
❤️আমার পরিচয়❤️
আমি হাবিবা সুলতানা হীরা । জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশাঃ গৃহিণী। শখঃ নতুন নতুন রেসিপি বানাতে ভালো লাগে। তাছাড়া গান গাওয়া, আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা ও বাগান করতে আমি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমি স্টিমিটে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে যুক্ত হই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
কিছু কিছু মেয়ে শ্বাশুড়িদেরকে একেবারেই দেখতে পারে না। আবার নিজের মায়ের জন্য সবকিছুই করতে পারে। এটা আসলে ঠিক না। আপনার পাশের বাড়ির বড়মার ছেলে উনার ওয়াইফকে কিছু বলে না কেনো, সেটাই বুঝলাম না। হয়তোবা বললেও তার ওয়াইফ মনে হয় কথা শোনে না। যাইহোক উনাকে দেখতে গিয়ে খুব ভালো করেছেন আপু। এতে করে উনার মনে কিছুটা হলেও শান্তি পেয়েছে। যাইহোক সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক সেই কামনা করছি। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে ভাইয়া তাদের পারিবারিক বিষয়গুলো আমি খুব একটা জানিনা। তবে ওনার অবস্থা দেখে আমার খুবই খারাপ লেগেছিল। আমারও একটা চাওয়া এসব মেয়েদের মাথায় একটু সুবুদ্ধির উদয় হোক। ধন্যবাদ ভাইয়া গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।
আপনার এই লেখাটি পড়ার পর আমি সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি আপু। জীবনের কঠিন বাস্তবতার এমন হৃদয়স্পর্শী বর্ণনা দিয়ে আপনি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন যে, সুখ আর শান্তি আসলে সম্পত্তি বা টাকার ওপর নির্ভর করে না। আপনার প্রতিবেশীর কষ্টের কাহিনী আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে—বিশেষ করে আন্তরিকতা, ভালোবাসা আর যত্নের মূল্য। আশা করছি আপনার এই গল্প অনেকের মনে দাগ কাটবে এবং অন্যদের প্রতি সহানুভূতি ও যত্নবান হতে উদ্বুদ্ধ করবে। আপনার প্রতিবেশীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। আপনার পরবর্তী লেখা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম। শুভকামনা রইল!
[@redwanhossain]
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আমার শেয়ার করা ঘটনাটি পড়ে সুন্দর একটি গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।
খুব দুঃখজনক ঘটনা আপু। আসলে বয়স বাড়লে কাছের লোকজনে অবহেলা করে তা মেনে নেওয়া কষ্টের হয়ে যায়। দুষ্ট লোকের মিষ্টি কথা কথায় আছে এরকম আপনার বড় মার ছেলের বউ এর অবস্থা। আপনি আপনার বড় মাকে দেখতে গিয়েছেন এবং তিনি খুব খুশি হয়েছে জেনে ভালো লাগলো ধন্যবাদ পোস্টটি আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
ঠিক বলেছেন আপু বয়স বাড়লে কাছের লোক অবহেলা করে আমি আমার পাশের বাড়ি বড়মাকে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না। খুবই খারাপ লেগেছে আমার কাছে বিষয়টা।যাইহোক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
আসলে আপু আমাদের সমাজে এ ধরনের ঘটনা এখন অসংখ্য দেখা যাচ্ছে। বাইরে ভালো মানুষের মুখোশ পরে ভেতরে তারা নিজের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে ।এরকম লোক আমিও স্বচক্ষে দেখেছি ।যাই হোক কিছুই করার নেই ।অবশেষে এই মানুষ গুলোর সুবুদ্ধির উদয় হোক এটাই কামনা করি। ধন্যবাদ।
একদম ঠিক বলেছেন আপু উপরে ভালো মানুষের মুখোশ আর ভেতরে ভিতরে এমন হিংসে যারা কিনা একটা অসুস্থ মানুষের প্রতি সদয় হয় না। যাইহোক কি আর করার হয়তো এটাই নিয়তি ছিল তার। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
শেষ বয়সে আমাদের সমাজে সেই মানুষেরই অবহেলা ও অবজ্ঞাই দিন কাটাই যারা কিনা নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিল তার সন্তানদের জন্য। কিন্তু আজ সেই সন্তানেরাই তাদের অবহেলীত হওয়ার কারন। আপনার গল্পটি পড়ে আমার নিজের কাছে খুবই খারাপ লেগেছে আপু। অনেক মানুষ আছে যাদের সাথে কথা বললে বোঝা যায় না তারা এতটা খারাপ কিন্তু তারা মনের ভেতর বিষধর সাপ পুষে রাখে।
বিষয়টা আমার কাছেও খুবই খারাপ লেগেছিল ভাইয়া। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
খারাপ লাগার মতোই ছিলো ব্যাপারটা।