পাষান মা || জেনারেল রাইটিং
"হ্যালো",
সবাইকে আমার নতুন একটি ব্লগে স্বাগতম। আজ অনেকদিন পর আপনাদের সামনে নতুন একটি বাস্তব ঘটনা শেয়ার করতে এসেছি। মাঝেমধ্যে চেষ্টা করি আমার আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো কিংবা নিজের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো ছদ্মনাম দিয়ে গল্প আকারে লিখে আপনাদের সাথে শেয়ার করার।টাইটেল দেখে অনেকে হয়তো ভাবছেন মা কখনো পাষাণ হয়।হ্যাঁ হয় হয়তো আপনার আমার মা পাষাঢ় নয় কিন্তু অনেকের মায় আছেন যারা নিজের সুখের জন্য কিংবা একটুখানি ভালো থাকার জন্য স্বামী সন্তান সংসার সবকিছু ছেড়ে চলে যায়।তেমনি এমন একটি ভয়ংকর কষ্টে ভরা গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি। আশা করছি ভাল লাগবে।
বিউটির অভাবের সংসার।তার সংসারে তিনটি মেয়ে সন্তান। স্বামী দিনমজুরের কাজ করে কোনোমতে সংসার চালায়। বাড়তি কোন আয় নেই সংসারে। মাঝে মাঝে তাদের সংসারে অনেক অশান্তি হয় স্বামী স্ত্রীর মধ্যে। তখন আশেপাশের দু একজন বিউটিকে বলে ঢাকা গিয়ে গার্মেন্টসে চাকরি করতে। তাহলে তার সংসার অনেক ভালো চলবে মেয়েদের পড়াশোনা হবে এবং ভালো করে বিয়ে দিতে পারবে। বিউটিও অনেক ভেবেচিন্তে তিন সন্তানকে নিয়ে ঢাকা যায়।বেশ কয়েক মাস চাকরি করে এবং তাদের সংসারে সুখের দেখা দেয়।বড় মেয়েটা ক্লাস এইটে পড়ে, মেজ মেয়েটা ক্লাস ফাইভে পড়ে, ছোট মেয়েটা একদমই ছোট বছর তিনেক বয়স হবে।
ঢাকায় একজন চাকরি করে তিন চারজন বসে খাওয়া অনেক খরচ সাপেক্ষ। তখন বিউটি সিদ্ধান্ত নেয় মেয়েদেরকে নানু বাড়িতে পাঠাবে। অবশেষে বিউটি তার মেয়েদেরকে নানু বাড়িতে পাঠিয়ে স্বামী স্ত্রী দুজন মিলে চাকরি করছিল। মাসে মাসে টাকা পাঠাতো মেয়েদের জন্য। হঠাৎ করে বিউটির স্বামীর একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে যায় গ্রামে। তাই সে গ্রামে চলে আসে। এবার গ্রামে এসে প্রায় মাসখানেক লাগে সেই কাজ সারতে। একদিন হঠাৎ করে বিউটি তার স্বামীর কাছে ডিভোর্সের কাগজ পাঠায়।ডিভোর্সের কাগজ পেয়ে বিউটির স্বামী তো পাগল প্রায়।
যাইহোক এরপর বিউটি অন্যত্র বিয়ে করে। মেয়েদের জন্য বাবার বাড়িতে টাকা পাঠানো বন্ধ করে। যার ফলে মেয়েদেরকে তার নানা বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এরপর মেয়েরা তার বাবার কাছে আশ্রয় নেয়।এমত অবস্থায় তাদের পড়াশোনা একেবারেই বন্ধ হয়ে যায় কারণ বাবার পক্ষে একা একা রোজগার করে আমার খরচ চালানো সম্ভব নয় কোন মতে দু বেলা ভাত খেয়ে দিন কাটে। মেয়েরা তার মাকে এত পরিমাণে অভিশাপ দেয় যেটা শোনার পর মনে হয় আসলে ওই মহিলার মা হওয়ার কোন যোগ্যতাই নেই।
যে মা কিনা তার সন্তানদের ভালোর জন্য ঢাকা গিয়ে চাকরি করছিল সেই মা নিজের সুখের জন্য সন্তানদেরকে এভাবে পর করে দিতে পারে আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। আমার জানা নেই এই তিনটা মেয়ের ভবিষ্যৎ কি তবে মেয়েগুলো যখন আমার সামনে পড়ে তখন আমার কাছে খুবই খারাপ লাগে। আমার তো মনে হয় আমি আমার বাচ্চাকে ছেড়ে কোথাও থাকতে পারবো না সেখানে ওই মহিলা তিনটা বাচ্চাকে রেখে কিভাবে বছরের পর বছর দিনের পর দিন কাটাচ্ছে আসলে আমি ভেবে পাইনা। যাই হোক কি আর করার হয়তো এটাই তাদের নিয়তি।
তো যাই হোক বন্ধুরা আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে পরবর্তীতে নতুন কোন কিছু নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
❤️আমার পরিচয়❤️
আমি হাবিবা সুলতানা হীরা । জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশাঃ গৃহিণী। শখঃ নতুন নতুন রেসিপি বানাতে ভালো লাগে। তাছাড়া গান গাওয়া, আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা ও বাগান করতে আমি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমি স্টিমিটে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে যুক্ত হই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে আপু মা হচ্ছে সাতজাতের। বিউটির এমন কি হলো মাসখানেক এর মাধ্যে সব কিছু ভুলে স্বামীকে ডিভোর্স দিল।আসলে মানুষকে বুঝা অনেক মুশকিল। ধন্যবাদ আপু গল্পরি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আসলে অনেক সময় নিজের ভালোটাই মানুষ বড় করে দেখার চেষ্টা করে।হয়তো এই জন্যই এমনটা করেছে বিউটি। যাইহোক ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করার জন্য।
খুব দুঃখজন ঘটনা আপু।অভাবের সংসারে সুখ আনতে বিউটি চাকুরী করতে ঢাকায় গিয়ে বরকে ডিভোর্স পাঠায় এবং তিন বাচ্চার খরচ বাবাদ টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেয়। আসলে মুখে অভিশাপ দিতে হবে না বাচ্চাদের চোখের জল বিউটির জীবনে অভিশাপ হয়ে দাঁড়াবে। এরকম মা আমাদের সমাজে অনেক আছে। যারা কিনা নিজের সুখের জন্য সন্তানের জীবন নরকে পরিণত করেন। ধন্যবাদ আপু পোস্টটি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
হ্যাঁ আপু এমন মা আমাদের সমাজে অনেকেই আছেন।যাদের কর্মের ফল সন্তানরা ভোগ করে।ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আসলে এরকম অনেকেই রয়েছে, যারা কিনা নিজের স্বার্থের জন্য নিজের সন্তানদেরকেও ছেড়ে দিতে পারে। বিউটি তো ভালোভাবেই সংসার চালানোর জন্য ঢাকায় গিয়েছিল, আর চাকরি করছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তার মধ্যে সুখের নেশাটা জেগে ওঠে। আর স্বামী সন্তান সবকিছু ছেড়ে দিয়ে নতুন করে আবারও বিয়ে করে। তবে তার এই পাপের শাস্তি তাকে অবশ্যই একদিন না একদিন পেতে হবে। কথায় আছে না পাপ বাপকেও ছাড়ে না। সে তো পারতো নিজের স্বামী সন্তানকে নিয়ে ভালোভাবে খেতে। বাচ্চাদেরকে এরকম মুখে ফেলে দিয়েছে, বাচ্চারা তো অভিশাপ দিবেই।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু গঠনমূলক একটা মন্তব্য করার জন্য। আমিও বিশ্বাস করি আপু অবশ্যই সে তার পাপের সাজা পাবে।
আসলে মা কিভাবে যে এত নিষ্ঠুর হতে পারে আমি শুধু এটাই ভেবে পাইনা। নিজের সন্তানদেরকে কিভাবে এরকম ভাবে রেখে একটা মা চলে যেতে পারে। সন্তানদের ভালো-মন্দ কি তাদের মাথায় থাকে না। আসলে এইরকম কিছু মায়ের জন্য অনেক মানুষ সব মাকেই খারাপ মনে করে। কিন্তু পৃথিবীর সব মা তো আর এক না। কিছু কিছু মা রয়েছে যারা মা হওয়ার মর্যাদাই রাখে না। এরকম মায়েদের জন্য পুরো মা জাতিকে কলঙ্কিত হওয়া লাগে। বাচ্চাদেরকে দেওয়া কষ্টের ফল বিউটি একদিন না একদিন অবশ্যই পাবে।
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া এই মায়েদের জন্য সব মা কলঙ্কিত হয়।যাইহোক ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
অত্যন্ত দুঃখজনক এবং সম্প্রতির সমাজের অধঃপতন প্রতিবিম্বিত একটি গল্প। মা-বাবার দায়িত্ব এবং সম্পত্তির অভাবে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতা এখানে খুব স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। একটি বৃহত্তর সমাজতন্ত্রে এই ধরনের অবস্থা অত্যন্ত দুঃখজনক।
[@redwanhossain]
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আমার মনে হয় বিউটি যে গার্মেন্টসে কাজ করতো,সেখানকার কোনো ছেলের সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত বিয়ে করে ফেলে। বিউটি মা নামের কলঙ্ক। তিন মেয়েকে রেখে অন্য কাউকে বিয়ে করা বিউটির মোটেই উচিত হয়নি। বেশ খারাপ লাগলো ঘটনাটি জেনে। তবে বিউটি কখনোই সুখী হতে পারবে না। আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই এর বিচার করবেন। যাইহোক এই গল্পটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
হ্যাঁ ভাইয়া কাউকে কষ্ট দিয়ে কখনো সুখী হওয়া যায় না। আমারও বিশ্বাস বিউটি কখনো সুখী হতে পারবে না। সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলে এসব মহিলারা আসলেই পাষাণ। না হলে নিজের বাচ্চাদের রেখে অন্যত্র বিয়ে করে সুখে সংসার করে কিভাবে। একটি বারও বাচ্চাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে না ।স্বামীর কথা না হয় বাদই দিলাম। যাইহোক পরবর্তীতে এসব মহিলাদের জীবনেও ভালো কিছু হয় না ।একটা সময় না একটা সময় নিয়তি তাদেরকে ঠিক শিক্ষা দেয় ।ভালো ছিল গল্প টি। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও ধন্যবাদ আপু গল্পটি পড়ে গঠনমূলক একটি মন্তব্য করার জন্য।