অপরাধবোধ || একটি বাস্তব ঘটনা
হ্যালো",
আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।
সবাইকে আমাদের নতুন একটি ব্লগে স্বাগতম। আজ আমি আপনাদের সাথে একটি বাস্তব ঘটনা শেয়ার করব। আসলে আমাদের সাথে কখন কি ঘটনা ঘটে যায় সেটা বলা বড় মুশকিল। নিজেদের অজান্তে যদি কোন একটা অপরাধ ঘটে আর যখন সেটা আমরা বুঝতে পারি তখন সেই অপরাধবোধ আমাদেরকে কুড়ে কুড়ে খায়। ঠিক তেমনি একটি বাস্তব ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি। আশা করছি ভালো লাগবে।
স্বপ্না এবং খাইরুলের খুব সুখের একটি সংসার। তাদের সংসারে অভাব আছে কিন্তু কখনো একে অপরের প্রতি অবিশ্বাস ছিল না। কিছু কিছু সংসারে আছে ছেলে আর ছেলের বউয়ের ভালোটা শাশুড়ি সহ্য করতে পারে না। স্বপ্নের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। তার স্বামীর সাথে এত সুন্দর সম্পর্ক তার শাশুড়ি সহ্য করতে পারত না। সবসময় চেষ্টা করত টুকিটাকি বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা সৃষ্টি করা। খাইরুল বাহিরে কাজ করে। সারাদিন পর কাজ শেষে যখন বাড়িতে আসতো বাড়িতে এসেই দেখতো তার মা এবং বউ কোন না কোন ভাবে ঝগড়া বাঁধিয়ে বসে আছে।
এটা প্রতিনিয়তই চলতো।কখনো কখনো ঝগড়া একদম চরম পর্যায়ে যেত। আর খাইরুল পড়েছে তো মাঝামাঝি অবস্থায় কাকে কি বলবে বুঝে উঠতে পারত না।এভাবে চলছিল তাদের সংসার। এরই মধ্যে তাদের সংসারে আসে নতুন অতিথি। স্বপ্না এবং খাইরুলের কোল আলো করে আসে একটি ফুটফুটে মেয়ে সন্তান। দেখতে দেখতে মেয়ের ও দুই বছর বয়স হয়ে যায়। কিন্তু তাদের সংসারে ঝামেলা শেষ হয়না। এরই মধ্যে একদিন খায়রুল কাজ ছেড়ে বাসায় এসে দেখে তার বউ এবং মা খুবই ঝগড়া শুরু করে দিয়েছে। মাকে কিছু বলতে পারছিলো না বউকেও কিছু বলতে পারছে।
একটা সময় রেগে গিয়ে স্বপ্নাকে সে দুটো কথা শুনিয়ে ফেলে। স্বপ্না সেই কথাগুলো সহ্য করতে না পেরে রেগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাপের বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে যায়।রাস্তার মাঝামাঝি এমন সময় স্বপ্নার ফোনে একটা কল আসে যে খাইরুল গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সাথে সাথে সে ছুটে যায় আবারও তার বাড়িতে। কিন্তু ততক্ষণে আর শেষ রক্ষা হয়নি। স্বপ্না ফিরে এসে দেখে খাইরুলের নিথোর দেহ মাটিতে পড়ে আছে। দাফন কাফন শেষ হলে কিছুদিন পর সেই বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় এবং মেয়েকেও তারা রেখে দেয় স্বপ্নার কাছে আসতে দেয় না।
কেটে গেছে বেশ কয়েকটি বছর। মেয়ের বয়স এখন নয় বছর।এখনো স্বপ্না একাকী জীবন কাটাচ্ছে। সে এখনো বিশ্বাস করে যে এটা তার জন্যই হয়েছে। সে যদি রেগে গিয়ে বাড়ি থেকে চলে না যেত তাহলে আজ হয়তো খাইরুল পৃথিবীতে বেঁচে থাকত। আর এই অপরাধবোধ তাকে তিলে তিলে শেষ করছে।
আত্মহত্যা কখনোই কোন সমাধান নয় কিন্তু বেচারী কোন দিকে সমাধান টানতে পারছিল না তাই নিজের জীবন দিয়ে সব ঝামেলা শেষ করে দিয়ে গেল। হয়তো স্বপ্না বাকিটা জীবন এভাবেই কাটিয়ে দেবে। এখনো এমন পরিবার অনেক দেখা যায়, যে পরিবারের ছেলে ছেলের বউয়ের ভালো পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা সহ্য করতে পারে না। যার ফলে এরকম অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে থাকে। তো যাইহোক আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে। সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
❤️আমার পরিচয়❤️
আমি হাবিবা সুলতানা হীরা । জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশাঃ গৃহিণী। শখঃ নতুন নতুন রেসিপি বানাতে ভালো লাগে। তাছাড়া গান গাওয়া, আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা ও বাগান করতে আমি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমি স্টিমিটে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে যুক্ত হই।
https://x.com/HiraHabiba67428/status/1892278088404275275?t=C255TiKEs32-PBRm2wlILw&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.