হঠাৎই পিকনিকের আয়োজন

in আমার বাংলা ব্লগ13 days ago

হ্যালো",

আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।

সবাইকে আমার নতুন একটি ব্লগে স্বাগতম। প্রথমত সবাইকে একটা বিষয় জানাতে চাই সেটা হচ্ছে আমার ছেলে এখন মোটামুটি অনেকটা সুস্থ। গতকাল সন্ধ্যায় খুব সুন্দর একটা মুহূর্ত কাটিয়েছি। বলতে গেলে এই মুহূর্তটা আমার জন্য খুবই দরকার ছিল। ছেলের অসুস্থতায় খুবই ভেঙে পড়েছিলাম এবং ক্লান্ত ছিলাম। মানসিকভাবেও খুবই ভেঙে পড়েছিলাম। তাই এই মুহূর্তটা আমার জন্য দরকার ছিল। গতকাল বিকেলে আশেপাশের ছোট বোনেরা এসে বলছিল তারা সন্ধ্যায় পিকনিক করবে আমি পিকনিকে অংশগ্রহন করবো কিনা।

1000021756.jpg

ছোট বোনেরা পিকনিক করছে তাই নিজেকে কোনো কাজকর্ম করতে হবে না তাই ভেবে সবাইকে হ্যাঁ বলে দিয়েছিলাম। কারণ আমি নিজে যখন কোনো পিকনিকের উদ্যোগ নেই তখন অনেক কাজে আমার ঘাড়ে পড়ে। না চাইলেও কিছু কিছু দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হয়। যাইহোক তারা পিকনিক করবে মুরগির মাংস, সাদা ভাত, ডিম দিয়ে নতুন আলু ঘাটি এবং সবজি। আলুঘাটি আমাদের উত্তরবঙ্গের বিখ্যাত একটি খাবার।

1000021751.jpg

1000021752.jpg

বিয়ে কিংবা যে কোনো অনুষ্ঠানের খাবারের মেনুতে আলু ঘাটি থাকা চাই।যাইহোক ওদেরকে টাকা বুঝিয়ে দিয়ে আমি বাবুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম দুপুরে। সন্ধ্যার আগে আবার একটু বেড়িয়েছিলাম বাজারে কিছু প্রয়োজনীয় টুকটাক জিনিস কিনতে। বাজার থেকে ফিরে দেখলাম তারা তো এলাহি কারবার শুরু করেছে। বক্স বাজিয়ে নাচানাচি করছে, পাশে আবার রান্না হচ্ছে। রান্না করছেন পাশের বাসার চাচিরা ভাবীরা।

1000021750.jpg

1000021749.jpg

1000021748.jpg

বাসায় এসে বাবু ঘুমিয়ে পড়ে আর আমি সেই ফাঁকে পিকনিকে একটু আয়োজন দেখতে গিয়েছিলাম। আর পাশের বাসাতেই রান্না হচ্ছে তাই সেখানে গিয়ে ছোট বোনদের নাচ দেখছিলাম। আর ওই যে আমাদের প্রধান উদ্দেশ্যে যেটা থাকে সেটা হচ্ছে ফটোগ্রাফি। আমি সাথে কিছু ফটোগ্রাফি করে নিলাম। দেখলাম সবাই মিলেমিশে রান্না করছে। এরপর সবাই বায়না ধরল আমি যেহেতু রেসিপি তৈরি করি তাই মুরগির মাংস টা যেন আমি রান্না করি। কি আর করার মুরগির মাংস টা আমি রান্না করেছি।এর মধ্যে আবার ছেলে ঘুম থেকে উঠে পড়ে তাই রান্নার মাঝামাঝি আমাকে চলে আসতে হয়েছিল বাসায়।

গ্রামের পিকনিকে সবচেয়ে মজার বিষয় কি জানেন রান্না শেষে বাড়ি থেকে বাটি নিয়ে গিয়ে সেই রান্নাগুলো ভাগাভাগি করে বাসায় নিয়ে আসা।যাইহোক এর মধ্যেই ছোট বোন বাসায় এসে বললো রান্নাবান্না শেষ বাসা থেকে বাটি নিয়ে যেতে বলেছে। বাবুকে আম্মুর কাছে রেখে আমি এবং আমার ছোট বোন গিয়েছিলাম খাবার আনতে।এবার একে একে সবার বাটি বসিয়ে খাবার ভাগ করা হচ্ছিল। এর মধ্যে ছেলেকে একবার নিয়ে গিয়েছিলাম সেখানে কিন্তু ও বেশি মানুষের মধ্যে থাকা একদমই পছন্দ করে না তাই সেখানে একদমই থাকতে চাইছিল না।

যাইহোক এরপর আমরা সব খাবার নিয়ে বাসায় চলে আসি এবং বাসায় বসে আমাদের পিকনিকের খাবার খাই। সবাই মিলেমিশে একসাথে বসে খাওয়ার মজাই আলাদা তবে গ্রামে এটা খুব একটা হয় না। যাইহোক প্রত্যেকটা খাবারই কিন্তু খুবই মজার হয়েছিল আর পিকনিকের রান্না গুলো সব সময় অনেক বেশি মজার হয়। যদিও আমাদের ইচ্ছে ছিল হাঁস দিয়ে পিকনিক করার কিন্তু অনেকে হাঁস খায় না তাই মুরগি দিয়ে পিকনিক করা হয়েছিল।

খাওয়া দাওয়া যেমনই হোক না কেন সুন্দর সময় কাটিয়েছি এটাই আমার জন্য অনেক। খুবই ভালো লাগছিল আর এরকম পিকনিকের আয়োজন আমার বরাবরই অনেক ভালো লাগে। শীতকালে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার পিকনিক করা হয়েছে। তবে সবাই বলছিল আবারো নাকি পিকনিক করবে এবং সেটা খুবই বড় আয়োজনে। যাইহোক পিকনিকের খাবার দাবার গুলো আপনাদের কাছে কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে।সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

❤️আমার পরিচয়❤️

আমি হাবিবা সুলতানা হীরা । জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশাঃ গৃহিণী। শখঃ নতুন নতুন রেসিপি বানাতে ভালো লাগে। তাছাড়া গান গাওয়া, আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা ও বাগান করতে আমি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমি স্টিমিটে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে যুক্ত হই।

1000000117.png

1000000119.gif

1000000116.png

Sort:  
 12 days ago 

হঠাৎ করে যদি কোনো কিছুর আয়োজন করা হয়, তখন আমার কাছে বিষয়টা খুব ভালো লাগে। আর যদি হয় পিকনিক তাহলে তো কোনো কথাই নেই। আপনারা দেখছি হঠাৎ করে পিকনিকের আয়োজন করেছিলেন। আমাকে খবর দিলে আমিও চলে যেতাম খাওয়ার জন্য। অনেক ভালো সময় কাটানো হয়েছিল বুঝতেই পারছি দেখে। সবাই মিলে মাঝেমধ্যে এভাবে আনন্দ করতে ভালো লাগে।

 9 days ago 

আপু পিকনিকটা হঠাৎ করে আয়োজন করা হয়েছিল যেহেতু একটু মানসিক চাপে ছিলাম তাই ভাবলাম পিকনিকে অংশগ্রহণ করি। এতে করে হয়তোবা ভালো লাগবে। তো বেশ ভালই মজা হয়েছিল।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 13 days ago 

সায়ানের জন্য সুস্থতা কামনা করছি আপু। আসলেই নিজের সন্তানদের অসুস্থতার সময় ঘনীভূত হলে মা বাবা কোনভাবেই ঠিক থাকতে পারে না। স্রষ্টা আপনার মানসিক শক্তিকে দৃঢ় করুন। যাই হোক এমন একটি খারাপ সময়ে এরকম পিকনিক হওয়াটা খারাপ কিছু নয়। মুরগির মাংস এবং আলু ঘটি আর ডিম চমৎকার রান্না হয়েছে দেখতেছি। গ্রামীন এই পিকনিক গুলোতে একটু আনন্দ উল্লাস মন খুলে করা যায় তাই মন ফ্রেশ হয়ে যায়।

 9 days ago 

জ্বি ভাইয়া কয়েকদিন ছেলের অসুস্থতায় বেশ টেনশনে ছিলাম তাই পিকনিক টা করে বেশ ভালোই লেগেছে।

 12 days ago 

পিকনিক উপলক্ষে যেহেতু বক্স বাজিয়ে নাচানাচি হচ্ছে সেহেতু বেশ ভালোই আনন্দ হয়েছে সেই সাথে খাবার মেনুতেও বেশ লোভনীয় রেসিপিগুলা যুক্ত করেছিলেন। ব্যস্ততার মাঝেও এমন সুন্দর সময় কাটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 9 days ago 

খুবই আনন্দ হয়েছে পিকনিকে। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 12 days ago 

আপু আপনার ছেলের সুস্থতা কামনা করছি। সন্তানের অসুস্থতা হলে সাথে সাথে প্রতিটা মায়ের মানসিকতাও অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর মানসিকতা কাটিয়ে উঠার জন্য মাঝে মাঝে কিছু আনন্দ উপভোগ করতে হয়। এটা ঠিক বলেছেন। নিজে কোন দায়িত্ব নিলে তা সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিজের উপরে পড়ে। আপনাদের পিকনিকের রান্না গুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে অনেক স্বাদ হয়েছিল। আর পিকনিকের রান্নাগুলো খাওয়ার মজাই অন্যরকম লাগে।

 9 days ago 

একদম ঠিক বলেছেন আপু এই পিকনিকটা করার পর মানসিক অসুস্থতা অনেকটাই কেটে গিয়েছে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 12 days ago 

আপনার ছেলের সুস্থতা কামনা করছি আসলে বাচ্চা অসুস্থ হলে মায়ের যে কি অবস্থা হয় তা শুধু মায়েরাই বুঝতে পারে।আপনারা দেখছি মাঝে মাঝেই পিকনিক করেন।মুরগির মাংস আপনি রান্না করেছেন জেনে ভালো লাগলো।আসলেই মজার এই বিষয়টি যে পিকনিক শেষে বেঁচে যাওয়া খাবার ভাগ করে সবাই বাড়িতে নিয়ে যায়।আলু ঘাটি কখনো খাওয়া হয়নি খাবো কোন একদিন বানিয়ে। ধন্যবাদ সুন্দর পিকনিক করার মূহুর্ত গুলো তুলে ধরে আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন জন্য।

 9 days ago 

হ্যাঁ আপু আমরা মাঝেমধ্যে এমন পিকনিক করি। আর খুবই মজা হয়। পিকনিকের খাবারগুলো বেশ মজা হয়েছিল। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 12 days ago 

আপনাদের তো মাঝে মধ্যেই দেখি পিকনিকের আয়োজন করা হয়। আপনাদের ওই অঞ্চলগুলোতে আলু ঘাটি খুবই জনপ্রিয়। তবে আমার কখনো এই রেসিপিটা খাওয়া হয়নি। আপনার ছোট বোনেরা খুব সুন্দর পিকনিকের আয়োজন করেছে। বিভিন্ন রকম খাবারের ফটোগ্রাফি দেখে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করার জন্য।

 9 days ago 

হ্যাঁ আপু আমাদের অঞ্চলে আলুঘাটি খুবই জনপ্রিয় এবং যেকোনো অনুষ্ঠানে এই খাবারটা থাকা চাই। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 12 days ago 

পিকনিকের আয়োজন করার ব্যাপারটা কিন্তু অনেক ভালো ছিল আপু। পিকনিকের আয়োজন করবেন এটা আমাকে আগে বলতেন তাহলে আমিও যেতাম। অনেক মজাদার ভাবে খাবার গুলো তৈরি করা হয়েছে। সবাই মিলে এভাবে মাঝেমধ্যে আনন্দ করলে মন-মানসিকতা ও খুব ভালো থাকে। নিশ্চয়ই আপনার কাছে গতকালকের মুহূর্তটা কাটানোর পর খুব ভালো লেগেছিল।

 9 days ago 

আপনারা চলে আসেন ভাইয়া আপনাদেরকে নিয়ে পিকনিক করবো। অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 12 days ago 

অনেক ধরনের আয়োজন করেছেন তো দেখছি পিকনিকে। মাঝে মাঝে পিকনিকের আয়োজন করলে অনেক ভালো লাগে। উত্তরবঙ্গের বিখ্যাত একটি খাবার আলুঘাটি।আপনারা তো দেখছি বেশ ভালই মজা করেছেন। পিকনিকে মজা করার অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।

 9 days ago 

হ্যাঁ আপু পিকনিকে বেশ ভালো মজা করেছি এবং অনেক মজা করে খাওয়া দাওয়া করেছি। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.25
JST 0.037
BTC 105191.71
ETH 3189.57
SBD 4.40