উন্নত জীবনের আশায় জীবন বিসর্জন (চতুর্থ পর্ব)
শাকিল বাড়িতে গিয়ে তার বাবাকে টাকার কথা জানায়। সাথে এও জানায় যে লোকের মাধ্যমে শাকিল ইতালি যাবে সে খুবই বিশ্বস্ত। তার বন্ধুর একেবারে কাছের লোক। কিন্তুু শাকিল আশ্বস্ত করলেও তার বাবা চিন্তায় পড়ে যায়। এতগুলো টাকা যদি নষ্ট হয় তাহলে তাদের কপালে দুর্ভোগ নেমে আসবে সেটা সে ভালোই বুঝতে পারে। তারপরেও সে চিন্তা করে ছেলে যেহেতু কিছু করার চিন্তা করছে তাই এ ব্যাপারে তাকে বাধা দেয়া ঠিক হবে না। তার পরেও তিনি টেনশনে পড়ে যান। কারণ তিনি জানেন যদি বিশ্বস্ত কোনো লোক পাওয়া না যায়। তাহলে বিপদে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা।
ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
এদিকে শাকিল বাবার কাছ থেকে গ্রিন সিগন্যাল পাওয়ার পরে সেই লোকের সাথে রেগুলার যোগাযোগ করতে শুরু করে। আর সেই লোক আসলে একজন মানব পাচারকারী। সে শাকিলকে বারবার টাকার জন্য তাগাদা দিতে থাকে। শেষ পর্যন্ত শাকিল তার বাবার কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে সেই লোকটাকে দেয়। এদিকে শাকিল মাঝে মাঝে বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করতে থাকে। সেই দালাল শাকিলকে জানায় তাদেরকে সরাসরি ইতালি পাঠানো হবে। দেখতে দেখতে শাকিলের ফ্লাইটের দিন চলে আসে।
তাদেরকে আগে থেকেই বলা হয়েছে। শাকিলের সাথে আরও বেশ কিছু লোক যাবে। তাদের সবারই গন্তব্য ইতালি। তাদেরকে বলা হয়েছে তাদের প্রথমে দুবাইতে একটা ট্রানজিট থাকবে। তারপর সেখান থেকে ইতালির ফ্লাইটে উঠে যাবে। শেষ পর্যন্ত শাকিলের সেই বহু কাঙ্খিত দিন চলে আসে। শাকিলের পরিবারের সকলে তাকে এয়ারপোর্টে গিয়ে বিদায় জানায়। শাকিল সেখানে পৌঁছে তার মতো আরও অনেককে দেখতে পায়। যারা ইতালি যাওয়ার জন্য এসেছে। এর ভেতরে কয়েকজনের সাথে শাকিলের কথাবার্তা হয়। তারপর তারা তাদের ফ্লাইটে উঠে বসে। প্রথমে পূর্ব নির্ধারিত কথামতো তাদের প্লেন দুবাই গিয়ে ল্যান্ড করে। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ বিরতির পরে তাদের পরবর্তী ফ্লাইট এর এনাউনসমেন্ট শুনতে পায়।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
শাকিলের বন্ধু সাজিদ খুবই খারাপ একজন লোক। সাজিদ তো শাকিলের পরিবারের আর্থিক অবস্থার কথা খুব ভালোভাবেই জানে,কিন্তু সবকিছু জানা সত্ত্বেও দালালদের খপ্পরে শাকিলকে ফেলাটা মোটেই উচিত হয়নি তার। আসলে বর্তমানে বন্ধু বান্ধবেরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে থাকে। যাইহোক দুবাই যাওয়ার পরেই তো শাকিল এবং তার সাথে থাকা সবার উপর অত্যাচার শুরু হয়ে যাবে।
শাকিলের মত হাজারো মানুষ এভাবে ভুক্তভোগী। শাকিল তার বন্ধুর ফাঁদে পড়ে অনেক বড় ধরনের ভুল করে বসলো। তার বাবার শেষ সম্বলটুকু মানব পাচারকারীর হাতে তুলে দিল। আপনার এই পোস্টটি পড়ে অনেক কিছুই শেখার আছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এমন বাস্তবসম্মত একটি পোস্ট ধারাবাহিকভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।