উন্নত জীবনের আশায় জীবন বিসর্জন (প্রথম পর্ব)

কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


শাকিল প্রতিদিনের মতো মন খারাপ করে বাড়িতে ফেরে। বাড়িতে ফিরতেই তার মা তাকে জিজ্ঞেস করে কিরে চাকরি বাকরির কোনো ব্যবস্থা হোলো? শাকিল বললো না মা এখনো কিছু হয়নি। শাকিলদের পরিবারে ৫ জন মানুষ। বাবা-মা আর শাকিলরা তিন ভাই বোন। সাকিলের বাবা একটি ছোট সরকারি চাকরি করতো। তিনি রিটায়ারমেন্টে যাওয়ার পরে শাকিলদের অর্থনৈতিক অবস্থা কিছুটা খারাপ হয়েছে। পেনশনের চেয়ে অল্প কিছু টাকা পাওয়া যায়। সেটা দিয়ে এই উর্ধ্বগতির বাজারে সংসার আর চলতে চায় না। রিটায়ারমেন্টের পরে যে এককালীন টাকা পেয়েছে শাকিলের বাবা। সেই টাকা সে ব্যাংকে রেখে দিয়েছে।

তীব্র গরমে অসহনীয় ঢাকা শহর_20240501_211619_0000.png

ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

চিন্তা করেছে সেই টাকা দিয়ে একটা বাড়ি করবে। যাতে অন্তত নিজেদের মাথার উপরে একটা ছাদ থাকে। চাকরি জীবনের সারা জীবন তারা মানুষের বাড়িতে ভাড়া থেকেছে। রিটার্মেন্টে যাওয়ার পর বেতন হিসেবে যা পায় সে টাকায় তাদের সংসার চলে না। যার ফলে প্রতি মাসেই সেই এককালীন টাকা থেকে কিছু কিছু টাকা খরচ করতে হচ্ছে। শাকিল পরিবারের বড় ছেলে হওয়ায় এখন সংসার নিয়ে তাকে চিন্তা করতে হচ্ছে। মাস্টার্স শেষ হয়েছে শাকিলের দু'বছর হোলো। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার চাকরি-বাকরির কোনো ব্যবস্থা হয়নি। এই দু বছরের শাকিল অসংখ্য জায়গায় চাকরির চেষ্টা করেছে। কিন্তু কোন জায়গাতেই তার চাকরি হয়নি। মন খারাপ দেখে শাকিলের মা আর তাকে কিছু জিজ্ঞেস করে না।


শাকিল বাড়িতে ফিরে দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবার বিকালে বাইরে বের হয়ে যায়। বাইরে গিয়ে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আড্ডা দিতে থাকে। এর ভেতরে হঠাৎ করে শাকিলের নাম্বারে অপরিচিত নাম্বার থেকে একটা ফোন আসে। শাকিল অবাক হয়ে দেখে নাম্বারটা সম্ভবত বিদেশী কোনো নাম্বার। শাকিল ফোনটা রিসিভ করতেই ওপার থেকে তার ছোটবেলার বন্ধু সাজিদের গলা শুনতে পাই। হঠাৎ করে এতদিন পর সাজিদের ফোন পেয়ে সে খুবই অবাক হয়। শাকিল প্রথমেই জিজ্ঞেস করে তুই এখন কোথায় আছিস? সাজিদ জানায় সে ইতালিতে আছে। সাজিদ আর শাকিল একসাথেই লেখাপড়া করতো। একই এলাকাতে তাদের বাড়ি ছিলো। কিন্তু এইচএসসি পাশ করার পরে সাজিদ তার আত্মীয়দের মাধ্যমে বিদেশে পাড়ি জমায়। তারপর থেকে এতগুলো বছর তার কোনো খবর ছিলো না। ছোটবেলার বন্ধুর ফোন পেয়ে শাকিল খুব খুশি হয়। তারপর দুই বন্ধু মিলে দীর্ঘক্ষণ কথা বলতে থাকে। (চলবে)


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।



ধন্যবাদ

Sort:  
 4 days ago 

সাজিদ তো দেখছি আমার মতোই এইচএসসি পাশ করে বিদেশে চলে যায়। আমিও এইচএসসি পাশ করে অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে থাকা অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। যাইহোক শাকিলের জন্য বেশ খারাপ লাগছে। সংসারের বড় ছেলে হওয়া সত্ত্বেও, সংসারের জন্য তেমন কিছু করতে পারছে না। পড়াশোনা শেষ করে যদি চাকরি না পাওয়া যায়, তাহলে কষ্টের কোনো শেষ নেই। যাইহোক এতো সুন্দর একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 days ago 

সংসারের বড় ছেলেরা সংসারের জন্য কিছু করতেন না পারলে বিষয়টি খুবই দুঃখজনক হয়ে থাকে। তবে দেশের পরিস্থিতি অনুযায়ী শাকিবের মতো অসংখ্য ছেলেরা ভুক্তভোগী। পুরনো বন্ধুর ফোন ফেলে আসলেই মনের মধ্যে অজানায় ভালো লাগা কাজ করে। খুবই সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন, অসংখ্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 61016.36
ETH 3388.27
USDT 1.00
SBD 2.56