ছোটগল্পঃ- " অনুভবে তুমি "
19-02-2025
০৭ ফাল্গুন , ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
এস এস সি ভালো রেজাল্ট করার পর শিফা তার স্বপ্নের কলেজে ভর্তি হতে পেরেছে। কলেজে এসে শুরুতে বেশ ভালো কয়েকজন সহপাঠীও পেয়েছে। যাদের সাথে পড়াশোনা আড্ডা দেয় সবসময়। একই ক্লাসে রাফি নামের একটা ছেলে ছিল। চোখে চশমা দেখতে একদম সহজ সরল। কিন্তু ছেলেটা ভীষণ মেধাবী। কলেজে এসেই স্যার ম্যাডামদের মন জয় করে নিয়েছে। পড়াশোনার ব্যাপারে খুব সিরিয়াস রাফি। ক্লাসের সবচেয়ে ভালো ছেলেটাও শিফাকে ভালো লেগে যায়। লুকিয়ে লুকিয়ে তাকে দেখে। কিন্তু সাহস করে সামনে গিয়ে কিছু বলতে পারে না। একদিন শিফা কিছু খাওয়ার জন্য ক্যান্টিনের দিকে যাচ্ছিল। ক্যান্টিন থেকে কিছু কিনে নিয়ে আসার পথে হঠাৎ করেই রাফি সামনে এসে দাড়ায়ঁ!
শিফা তখন বলে উঠে, " কিছু বলবা? " রাফি মাথা নিচু করে উত্তর দেয়! "হ্যা! তোমাকে আমার কিছু কথা বলার ছিল! "
"তাহলে বলো কি বলবে? " রাফি তখন বলে উঠে, " এখানে না। আমাদের ক্লাসের বাগানটায় চলো! সেখানে বলবো। "
শিফা কিছুটা চিন্তায় পরে যায়। কি এমন কথা যেটা বলার জন্য রাফি বাগানে যেতে বললো। " জরুরি কিছু বলবে! জরুরি কিছু হলে এখানেই বলো! "
রাফি তখন শিফাকে এক প্রকার রিকোয়েস্ট করে বসে। "প্লিজ, একটু সময় দাও আমাকে। বাগানে চলো। আমি জাস্ট কথায় বলবো! "
শিফা তখন রাফির পিছু পিছু বাগানে যায়। " এবার বলো কি বলবে?" আসলে শিফা আমি তোমাকে ভীষণ পছন্দ করি। কিন্তু সাহস করে বলতে পারি না। আমি তোমাকে ভালোবাসি শিফা!
এটা শোনার পর শিফা থ হয়ে যায়! " আস্তাগফিরুল্লাহ রাফি! তুমি যেটাকে ভালোবাসা ভাবছো সেটা ভালোবাসা না আসলে! এসব প্রেম টেম আমার দ্বারা হবে না রাফি। বিয়ের আগে আমি কোনো হারাম রিলেশনে জড়াতে চাই না! দেখো, আমাদের মা বাবা আমাদেরকে এখানে পাঠিয়েছে পড়াশোনা করার জন্য। এখন আমরা যদি ঠিকমতো পড়াশোনা না করি তাহলে কি আমাদের স্বপ্নপূরণ হবে! তুমি যদি সত্যিই আমাকে ভালোবেসে থাকো তাহলে আগে পড়াশোনা করো ঠিকমতো, ক্যারিয়ারে ফোকাস করো। আমার কপালে যদি তোমাকে আল্লাহ তায়ালা লিখে থাকেন তাহলে একদিন না একদিন আমাদের মিল হবেই! "
এই বলে শিফা চলে যায়। শিফা চলে যাওয়ার পর রাফির চোখ থেকে জল জল করে পানি পরছে। এক হাত দিয়ে চোখের পানি মুছছে! তারপর থেকে রাফি পড়াশোনায় আরও মনোযোগী হয়ে উঠে। শিফা সামনে দিয়ে গেলেও তার দিকে তাকায় না। এমনকি শিফার সাথে রাফি কোনো কথাও বলে না। দেখতে দেখতে তাদের কলেজ লাইফটা শেষ হয়ে গেল। দুজনেই এইস এস সি তে গোল্ডেন এ+ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। তারপর এডমিশন পরীক্ষার পরে রাফি চান্স পায় বুয়েটে আর শিফা চান্স পায় রাবিতে!
চার বছর পর রাফি বুয়েট থেকে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বের হলো। শিফাও ওদিকে তার অনার্স শেষ করে মাস্টার্সে পড়াশোনা করছে। শিফার জন্য তার পরিবার ভালো একটা পাত্রের সন্ধ্যান পেয়েছে। রাফি যেদিন শিফাকে দেখতে আসে সেদিন রাফিকে দেখে চমকে যায়! যারা সাথে চার বছর আগে পরিচয় ছিল তার সাথেই আবার দেখা। পরিবারের সবাই শিফাকে পছন্দ করেছে এবং সেদিনই আকদ করিয়ে ফেলে।
তারপর দুজনকে একটা রুমে পাঠানো হয় কথা বলার জন্য! কেউ কোনো কথা বলছে না! হঠাৎ করেই শিফা বলে উঠলো, " কেমন আছো তুমি! " আমি অনেক ভালো আছি। কারণ আমার ভালোবাসার মানুষটিকে আজ আমার করে নিতে পেরেছি। " তুমি আমাকে এতোটাই ভালোবাসতে! শিফার চোখ দিয়ে জল জল করে পানি পরছে।
" হুমম! তোমাকে এতোটায় ভালোবেসেছিলাম যে অন্য মেয়ের দিকে কখনো তাকায় নি! তুমি বলেছিলে না আমাদের ভালোবাসা যদি সত্যি হয় একদিন না একদিন আমাদের মিল হবেই। দেখো, আজ তুমি আমার বউ! তুমি সব সময় ছিলে আমার অনুভবে! "
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ডুয়েটে অধ্যয়নরত আছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত তিন বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
দারুন লিখেছেন ভাইয়া অসম্ভব ভালো লাগলো। শিফা এবং রাফির ভালোবাসাটা প্রকৃত ভালোবাসা। তাইতো তারা হারাম রিলেশনে না গিয়ে একদম নিজের করে সারা জীবনের জন্য পেয়ে গেল। সব থেকে বেশি ভালো লাগছে ভালোবাসাটা শেষ পর্যন্ত পূর্ণতা পেল এটা পড়ে। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি অনুভবে তুমি গল্পটি শেয়ার করো যেন।
আপনাকেও ধন্যবাদ আপু গল্পটি পড়ার জন্য!
অনেক সুন্দর একটা ছোট গল্প লিখেছেন আপনি। আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে আপনার লেখা গল্পটা পড়তে। রাফির দেওয়া প্রস্তাবের শিফা রাজি না হলেও, শেষ পর্যন্ত তার কথা অনুযায়ী সে শিফাকে নিজের করে নিয়েছে। শেষ পর্যন্ত তাদের এত সুন্দর মিলন দেখে অনেক ভালো লাগলো।