বন্ধুর সাথে পড়ন্ত বেলায়!
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো ভালো থাকাটাই হলো মেইন। গতকাল ধরেই প্রচন্ড জ্বরে ভুগছিলাম আমি। আসলে শরীর খারাপ থাকলে কোনো কিছুই করতে ভালো লাগে না। সুস্থ্যতা আসলেই আল্লাহ তায়ালার অনেক বড় নেয়ামত। গতকালের পর থেকে আজকে অনেকটাই সুস্থ্য বোধ করছি। বেশ কিছুদিন ধরেই বাড়িতে অবস্থান করছি। বাড়িতে বসে থাকতেও ভালো লাগে না আসলে। তো সোস্যাল মিডিয়ার কল্যাণে কথা হয়েছিল বন্ধু পলাশের সাথে। পলাশ কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজে পড়াশোনা করছে। আমাদের বন্ধুত্বটা সেই হাই স্কুল থেকে। আসলে হাই স্কুলে যতগুলো বন্ধু পেয়েছিলাম সবাই এখন ভালো ভালো জায়গায় পড়াশোনা করছে কেউ বা বিয়ে করে স্যাটেল! তবে গুটি কয়েক বন্ধু ছিল যারা একেবারে ক্লোজ।
তার মধ্যে পলাশ একজন। এক দশক পেরিয়ে গেল! কিন্তু আমাদের বন্ধুত্বটা এখনও আগের মতো রয়ে গেছে। তো সেদিন রাতে পলাশকে বলেছিলাম চল একদিন দেখা করি। তার বিবিএ পরীক্ষা চলছে। সে বলেছিল নয় তারিখে সে ফ্রি থাকবে। তাই বলেছিলাম সেদিনই দেখা করি। তো আমি নয় তারিখে রওনা দিলাম কিশোরগঞ্জ এর উদ্দেশ্যে। আমাদের নান্দাইল থেকে যেতে বেশিক্ষণ লাগে না। নরমালি অটো, বাস দিয়েই সহজে যাওয়া যায়। সকাল এগারোটার দিকে কিশোরগঞ্জ বটতলা পৌঁছে গেলাম। সেখানে গিয়ে পলাশকে ফোন দিলাম। ফোন দিয়ে জানতে পারলাম সে সদর হাসপাতালে গেছে ডাক্তার দেখাতে। আমাকে বললো কিছুক্ষণ ওয়েট করার জন্য। গুরুদয়াল মাঠের পাশে বেশ কিছুক্ষণ ওয়েট করার পর পলাশকে পেলাম।
অনেকদিন পর দেখা হলো। আমি এবার ডুয়েটে চান্স পেয়েছি এজন্য সে আমাকে কংগ্রাচুলেশনস জানালো সাথে মিষ্টি খাওয়াতে বলছিল, হাহাহা! রেজাল্ট এর কতোজন যে মিষ্টি খাওয়ানোর কথা বললো! কিন্তু কথা হলো আমি যে এতো পরিশ্রম করলাম উল্টা আমাকে মানুষ মিষ্টি খাওয়াবে তা না করে সবাই শুধু মিষ্টি খাওয়ানোর কথা বলতেছিল! আমি পুরাই হতাশ সবাইকে নিয়ে, হাহা! পলাশের সাথে দেখা করে ওর অবস্থা সম্পর্কে ও জানতে পারলাম। সম্প্রতি পলাশ আইলেটস পরীক্ষা দিয়েছিল তবে আশানুরূপ রেজাল্ট করতে পারেনি। এজন্য তার মন খারাপ। তবে সুইডেন যাওয়ার চিন্তা করছে। দেশে বিবিএ করে বেশিরভাগ মানুষই বেকার জীবনযাপন করে।
জিওলজি নিয়ে পড়াশোনা করছে পলাশ। আসলে বাংলাদেশের এডুকেশন প্রসেস টোটালি ফ্রাস্টেটেড! অনার্স, মাস্টার্স করে অনেকেই বেকার। বলা যেতে পারে বেকারত্ব বাংলাদেশের জন্য একটা অভিশাপও বটে! আমাদের এডুকেশন সিস্টেমে প্র্যাকটিক্যাল জিনিসগুলাতে নজর দেয়া হয় না বেশি। যার জন্য বেকারত্বের হার এতো বেশি। পলাশের চিন্তাভাবনার সাথে আমিও একমত। দেশে বিবিএ করে চাকরি পাওয়াটা কঠিন, তার চেয়ে ভালো বাহির দেশে স্যাটেল হয়ে যাওয়া।
গুরুদয়াল মাঠে বলতে গেলে সবসময় মানুষের ভীড় থাকে। তবে কাপলদের সংখ্যাটাই বেশি! এমন পরিবেশে গেলে আপনি নিজেই হতাশ হয়ে যাবেন, হাহা! যাইহোক, কিশোরগঞ্জ এ গেলে ঝালমুড়ি টা মাস্ট! ঝাল ঝাল ঝালমুড়ি খাওয়ার মজাটাই অন্যরকম। আমি আর পলাশ দুজনের জন্য দুপ্লেট ঝালমুড়ি নিলাম। ঝালমুড়ি খেতে খেতে দুজনের মধ্যে অনেক কথায় হলো। আসলে বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের দায়িত্বটাও বাড়তে থাকে। দুজনই আসলে জীবন নিয়ে ভাবছিলাম আর হাসছিলাম। অনেকদিন পর দেখা হলে যা হয় আর কি। ঝালমুড়ি খাওয়ার পরে কিছুক্ষণ মাঠের পাশে হাটাঁহাটিঁ করলাম। পলাশের কাছ থেকে আইলেটস এর কিছু টিপস নিলাম। যেহেতু সে একবার আইলেটস দিয়েছে অবশ্যই সে ভালো করে জানে।
গুরুদয়াল মাঠে একটা বিষয় দেখলাম। আগের থেকে অনেক টং এর ছোট ছোট দোকান বসেছে। আসলে এমন জায়গায় এসে খাওয়া-দাওয়া করাও কঠিন। যদি দেকানদার কোনোভাবে বুঝে যায় আপনি গুরুদয়াল মাঠে নতুন এসেছেন তাহলে আপনার কাছ থেকে বেশি টাকা নিবে। আর কাপল দেখলে তো কথায় নেই। তবে নিয়মিত কাপল যারা তারা আবার এ বিষয়ে যথেষ্ট এক্সপার্ট। তো পলাশের সাথে কথা বলে বিকালের দিকে চলে আসলাম বাড়িতে।
Device | Oppo A12 |
---|---|
Photographer | @haideremtiaz |
Location | Gurudoyal Govt.College |
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ডুয়েটে অধ্যয়নরত আছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত তিন বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Twitter share
Puss tweet
স্কুল-কলেজের বন্ধুদের সাথে সত্যিই অনেক গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়। আর তাদের সাথে যখন দেখা হয় তখন অনেক ভালো লাগে। ভাইয়া আপনি আপনার বন্ধুর সাথে দারুন সময় কাটিয়েছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো।
স্কুল কলেজের বন্ধুত্বটাই সেরা আসলে আপু। অনেকদিন পর দারুণ সময় অতিবাহিত করেছিলাম।
আসলে অনেক দিন পর বন্ধুকে দেখলে খুব ভালো লাগে। আপনি বন্ধুর সাথে পড়ন্ত বিকেলে খুব সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। আপনাদের দুজনের মুহূর্ত বেশ ভালো কাটিয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।
আসলেই ভাই দারুণ সময় অতিবাহিত করেছিলাম।
অনেক অনেক ভালো লাগলো বন্ধুর সাথে সুন্দর সময় কাটিয়েছেন দেখে। বেশ ভালো লাগলো আপনার চান্স পাওয়ার খবর শুনে। এমনিতে বন্ধুদের সাথে ঘোরাঘুরি করতে পারলে অনেক ভালো লাগে। বেশি দারুন সময় কাটিয়েছেন একত্রে।
জি ভাইয়া, সবাই মিলে দারুন সময় কাটিয়েছি।
গ্রামে গেলে বন্ধুদের সাথে দেখা হলে খুব ভালো লাগে। একটা নির্দিষ্ট সময় থাকে বন্ধুদের ছাড়া কারও সাথে মিশতে ইচ্ছে করে না। বিকেল বেলা হলে তো বেশ ভালো লাগে বন্ধুদের সাথে অনেক দূরে হাঁটাহাঁটি করা যায়। অনেক মজার খাওয়া-দাওয়া করলেন। আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।
বিকেল বেলায় জমে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়াটা।
প্রথমেই আপনার সুস্থতা কামনা করি ভাইয়া। আসলে শরীর খারাপ থাকলে কিছুই ভালো লাগেনা। আপনার স্কুলের বন্ধুর সাথে অনেকদিন পর বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন দেখছি। অনেকদিন পর পুরনো বন্ধুদের সাথে সময় কাটালে এমনিতেই অনেক ভালো লাগে। ঠিকই বলেছেন, আমারও মনে হয় ভালো করে পড়াশোনা করে বাইরের দেশে সেটেল হতে পারলে ভালো। ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পরে।
পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা করলে মন এমনিতেই ভালো হয়ে যায় আসলে।
পড়ন্ত বিকেল বেলায় বন্ধুর সাথে অনেক সুন্দর ঘোরাঘুরি করেছেন আর খাওয়া-দাওয়া করেছেন আপনি। যতটা বুঝতে পারলাম খুবই ভালোলাগার মুহূর্ত আপনাদের মধ্যে বিরাজমান ছিল। আসলে বন্ধু বলে কথা। ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার সুন্দর একটি ব্লগ।
আসলেই আপু, অনেক বছরের বন্ধুত্ব আমাদের। এজন্য দেখা করলে অনেক কথা হয়
অনেকদিন পরে স্কুলের বন্ধুর সাথে দেখা হয়েছে এবং সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে বিস্তারিতভাবে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
আসলেই ভাই অনেকদিন পর বন্ধুর সাথে ভালো সময় কাটিয়েছিলাম।