শৈশবের অতীত স্মৃতি || জীবনের গল্প
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমি ভালো আছি এবং সুস্থ থাকার চেষ্টা করছি, যদিও এই সময়টা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। এটা অবশ্য আমার জীবনে একটা কমন বিষয়, কারন বুঝ হওয়ার পর এখন পর্যন্ত প্রতি বছর নভেম্বর আস আসলেই আমি কিছুটা অসুস্থ হবো, তাই এখন আর এটা নিয়ে খুব বেশী চিন্তা করি না। ঐ যে কথায় বলে না সয়ে যায় সব একটা সময়। আমার ক্ষেত্রেও অনেকটা তাই হয়েছে হি হি হি। যাইহোক, পরিবেশ হঠাৎ করে আবার পরিবর্তন হয়ে গেলো মনে হচ্ছে, বেশ শীতল চারপাশের পরিবেশ ও প্রকৃতি।
শীত অনেকটাই চলে আসছে আমাদের এই দিকে, আগে অবশ্য ঢাকার ভিতর থাকার কারনে কখন শীত আসতো আর কখন যেতো পত্রিকা পড়া ছাড়া খুব একটা টের পেতাম না। তবে ঢাকা ছাড়ার পর এখন সেটা বেশ ভালোভাবেই টের, শেষ রাতে বেশ ভালো শীত লাগে। মনে হচ্ছে আর কয়দিন গেলেই কম্বর নামাতে হবে হি হি হি। আর পিঠাপুলির কথা নাই বললাম, সেগুলো আপনাদের রেসিপি দেখেই বুঝে নিবো হি হি হি। ছোট বেলায় শীত আসলেই খুব উদগ্রীব হয়ে যেতাম, কোন কোন পিঠা খাবো? কিভাবে খাবো? কোথায় বেড়াতে যাবো? কবে যাবো? ইত্যাদি বিষয় নিয়ে। একটা অন্যরকম উত্তেজনা কাজ করতো মনের মাঝে।
যদিও এখন আর সেগুলো নেই, কারন আমাদের সময় পরিবেশটাই এমন ছিলো। বিশেষ দিন কিংবা সিজনে বাড়ির সবাই দারুণভাবে উপভোগ করার চেষ্টা করতাম এবং সেটার জন্য বেশ আগ হতেই আমরা প্রস্তুতি নেয়ার চেষ্টা করতাম। আমাদের আগ্রহ দেখে বড়রাও যেমন খুশি হতো ঠিক তেমনি তারাও আগ্রহ নিয়ে আমাদের সাথে তা উপভোগ করার চেষ্টা করতেন। সত্যি বলতে পরিবারের সকলের উপস্থিতি এবং আন্তরিকতার কারনে মুহুর্তগুলো দারুণ আনন্দময় হয়ে উঠতো। একে অন্যকে নানাভাবে সহযোগিতা করতো এবং বিশেষ মুহুর্তগুলোতে নানাভাবে উৎসাহ বা আনন্দ দেয়ার চেষ্টা করতো।
পরিবারের সেই দৃশ্যগুলো এখন আর দেখা যায় না, সম্পর্কগুলোর বন্ধনও এখন আর তেমনটা নেই। কারন এখন আমরা আনন্দ কিংবা পাারিবারিক অনুষ্ঠান নিয়ে ততোটা উত্তেজনাবোধ করি না বরং যতটা উত্তেজনাবোধ করি সেলফি কিংবা ফটোসেশন নিয়ে, ফেসবুক কিংবা ইনস্টাগ্রাম নিয়ে। পারিবারিক বন্ধনগুলো এখন একটা ঠুনকো কিছু আমাদের কাছে, বরং সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকা অচেনা মানুষগুলো বেশী প্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন হয়ে গেছে, আমাদের পারিবারিক সম্পর্কগুলো নষ্ট হয়ে গেছে এবং যার নির্মম প্রভাবে আমাদের সামজিক অনুষ্ঠানগুলোও পাল্টে গেছে।
সময় এবং প্রযুক্তি সত্যি আমাদের নিদারুণভাবে পরিবর্তন করে দিয়েছে, পরিবর্তন করে দিয়েছে আমাদের পারিবারিক এবং সামাজিক বন্ধনগুলো, পারস্পরিক সম্পর্কগুলো। যার কারনে আমরা পাশাপাশি থেকেও একে অন্যের নিকট হতে অনেক বেশী দূরে থাকি মানসিকভাবে, একই ছাদের নিচে বসবাস করেও পরস্পর বহু দূরে অবস্থান করি এবং আচার অনুষ্ঠান কিংবা রীতিনীতিগুলো এখন শুধুই উপরের দিক হতে চাকচিক্য থাকে কিন্তু ভেতরের দিক হতে শুধুই শুন্যতায় ভরা। ছোটবেলার অতীতের সেই সকল স্মৃতিগুলো বেশ ভাবায়, কি ছিলো আর এখন কি আছে?
Image taken from Pixabay
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাই ছোটবেলায় দেখতাম পারিবারিক বন্ধন কতটা মজবুত ছিলো। কিন্তু এখন আসলে সেই দৃশ্য চোখে পড়ে না। সবাই শুধু নিজের স্বার্থ হাসিল করা নিয়ে ব্যস্ত। এতে করে আমাদের জীবন থেকে আনন্দ জিনিসটা দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে। ঈদ কিংবা বড় বড় উৎসবের সময়ও এখন তেমন আনন্দ হয় না। কারণ সবাই মিলেমিশে যেকোনো কিছু করলে অনেক আনন্দ লাগে। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ঢাকায় তো শীত জানুয়ারি মাসেই একটু টের পাওয়া যায়।জনবহুল শহর হওয়ার সুবিধা আরকি,হাহাহা।শৈশবের দিনগুলো সবারই খুব ভালো কেটেছে যেগুলো আমরা পোস্ট দেখলেই বুঝতে পারি সবার। মজার দিনগুলো আর কখনোই ফিরে পাওয়া সম্ভব না।আর বন্ধন গুলো পরিবর্তন হয়ে গেছে আগের মত নেই।আপনি ঠিক বললেন একদম ভাইয়া ,ধন্যবাদ।
যথার্থ বিশ্লেষণ করে লিখেছেন বর্তমান পারিবারিক সম্পর্ক গুলোর বন্ধন নিয়ে। বর্তমানে আমরা সবাই এত বেশি কমার্শিয়াল হয়ে গেছি যে আসলেই কেউ কারণ নয়। সমাজের কোন উন্নয়ন যে এই অধঃপতন ঘটালো আমি ভাবি৷ সোসাল মিডিয়াই কি সব কিছির মূলে? নাকি মানুষের মানসিক জটিলতা এর জন্য দায়ী!
বয়স বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু হারিয়ে যায়, তেমনি আমাদের শৈশবগুলি।আসলেই শীতের শুরুতে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে।তাছাড়া আগের সেই জড়ো হয়ে বসে একত্র হওয়াটা এখন গল্পের মতো, দারুণ লিখেছেন কথাগুলো।ধন্যবাদ আপনাকে।