মানুষ গড়ার কারিগর এবং কিছু অনুভূতি
শুভ দুপুর সবাইকে,
সমাজ কিংবা সভ্যতা এমনিতেই সব পরিবর্তন হয়ে যায় নাই, আমরা প্রায় বলে থাকি সময় সব কিছু পরিবর্তন করে দেয়। আসলে এটা সত্য না, সময়ের স্রোতের সাথে আমরা বরং পরিবর্তন হয়ে যাই। আমাদের আচার ব্যবহার এবং কর্মকান্ডের মাধ্যমে আমরা সকল কিছুর পরিবর্তন করে দেই, চারপাশের দৃশ্যাবলী যার প্রভাবে পরিবর্তন হয়। তবে হ্যাঁ, আমাদের কার্যাবলীর উপর সময়ের একটি প্রভাব সব সময়ই বিদ্যমান থাকে।
আজকে আসলে কিছু অনুভূতি শেয়ার করার ইচ্ছা পোষণ করছি। কারন আমাদের সমাজে কিছু মানুষের উপস্থিতি রয়েছে, যাদের কাছে আমি বা আমরা চিরঋণী। তাদের চেষ্ট এবং আন্তরিকতা আমাদের সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে দারুনভাবে সহযোগিতা করেছে এবং আমাদের বোধশক্তি কিংবা বিবেককে জাগ্রত রাখার ক্ষেত্রে তাদের অসীম অবদান রয়েছে। মনে হয় বুঝতে পেরেছেন, আমি কাদের কথা বলতে চাচ্ছি। হ্যাঁ, তারা আমাদের শ্রদ্ধার পাত্র এবং গুরুজন, শিক্ষকশ্রেণী।
আমি জানি না, আপনার জীবন কতটা প্রভাবিত হয়েছে শিক্ষকদের দ্বারা কিংবা শিক্ষকদের নিবিড় পরিচর্যা আপনি কতটুকু পেয়েছেন? কারন এখনতো সব কিছুর ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে, তার সাথে সাথে পরিবর্তন ঘটেছে বর্তমান শিক্ষকদের মানসিকতারও। কিন্তু আমাদের সময় শিক্ষকরা ছিলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন, তারা সব সময় তাদের ছাত্রদের নিয়ে এবং ছাত্রদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত থাকতেন। কখনো নিজের স্বার্থ কিংবা মুনাফার কথা চিন্তা করতেন না। বরং প্রয়োজনে তারা নিজের টাকা খরচ করতেন ছাত্রদের পিছনে। সত্যি আমরা এই ক্ষেত্রে অনেক ভাগ্যবান ছিলাম।
অন্তত আমার ক্ষেত্রে এটা সবচেয়ে বেশী প্রযোজ্য, কারন আমি এই রকম কিছু শিক্ষকদের সান্নিধ্য পেয়েছিলাম, যাদের চেষ্টায় আমি সঠিক পথে ফিরে এসেছিলাম। সঠিক পথে মানে, আমি প্রচন্ড জেদি এবং দুষ্ট টাইপের ছেলে ছিলাম। খুব কম শিক্ষকই আমাকে শাসনের মাধ্যমে লাইনে আনা বা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছিলেন। কিন্তু কিছু শিক্ষক ছিলেন ব্যতিক্রম, যাদের আদর এবং ভালোবাসার নিকট আমার সকল কিছু ছিলো পরাস্ত। যার কারনে আমি ভালো ছাত্রদের মাঝে ফিরে আসতে পেরেছিলাম এবং ক্লাসে প্রথম দশজনের মাঝে আমি অন্যতম একজন হতে পেরেছিলাম।
দেখুন, একজন ছাত্র কিংবা শিক্ষার্থী যাই বলুন না কেন, তার পেছনে যতটা অবদান থাকে পিতা-মাতার, তারচেয়ে ঢের বেশী থাকে শিক্ষকদের অবদান। তারা শিক্ষার্থীকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বেশী অবদান রাখেন, ছাত্রের মাঝে মনুষ্যত্বের বীজ বপন করা, প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা, নীতি-নৈতিকতার বিষয়টির উপস্থিতি ঘটানো এবং সর্বোপরি ব্যক্তিজীবনে সাফল্য অর্জন করার সকল শিক্ষাই দিয়ে থাকেন শিক্ষকরা। এই জন্যই সব সময় এই কথা বলা হয় মানুষ গড়ার আসল কারিগর হলেন শিক্ষকরা।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আমরা কেমন জানি অকৃতজ্ঞ হয়ে যাচ্ছি, শিক্ষকদের প্রতি আমাদের দায়কে আমরা দিন দিন অস্বীকার করে যাচ্ছি, তাদের সঠিক মূল্যায়ন করছি না। আসলে শিক্ষকদের অবস্থান পরিবর্তন হওয়ার পেছনে আমাদের অবদনও কম না, বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা এবং আমাদের মানসিকতাও দায়ী। আসুন একটু চেষ্টা করি অন্তত তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার ক্ষেত্রে, যাদের কারনে আমি/আপনি কিছুটা হলেও জ্ঞান অর্জনের এবং সঠিক বিষয়টির শিক্ষা গ্রহন করার সুযোগ পেয়েছি।
Image One by 14995841 from Pixabay & Image Two by Brigitte makes custom works from your photos, thanks a lot from Pixabay
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
100 SP | 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP |
একজন সফল ছাএের জীবন গড়ার পেছনে একজন আদর্শ শিক্ষক অবশ্যই থাকেন। কিন্তু বর্তমানে যেমন শিক্ষকরা তাদের পেশা কে শুধু টাকা অর্জনের লক্ষ্যে ছাএদের শিক্ষা দেয়। সপ্তাহে তিনদিন পড়াবে মাসে এক হাজার টাকা বেতন আগে দিতে হবে। এই হলো বতর্মান সমাজের শিক্ষকের অবস্থা। কিন্তু এখনো অনেক ব্যতিক্রম শিক্ষক রয়েছেন।
শিক্ষকদের সম্পর্কে শিক্ষক দিবসে খুব ভালো লিখেছেন। ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল শিক্ষক।।
বাবা-মার পরেই শিক্ষকদের অবস্থান সেটা তো আর এমনি এমনি হয়নি। প্রত্যেকটি শিক্ষকদের জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। কারণ শিক্ষকের জন্য একজন শিক্ষার্থী মানুষ রূপে নিজেকে তৈরি করতে পারে, নৈতিক শিক্ষা থেকে শুরু করে তাত্ত্বিক শিক্ষা প্রযন্ত তো সবকিছুর শিক্ষা দিয়ে থাকে আমাদের। খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন ভাই।।
ধন্যবাদ ভাই আপনাকেও, লেখাগুলো পড়ে আপনার সুন্দর মন্তব্য ভাগ করে নেয়ার জন্য।
শিক্ষাক জাতি গড়ার কারিগর। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমেই আমরা শিক্ষিত হই,যদি শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড হয় তাহলে সেই মেরুদণ্ড শক্ত ও মজবুত করায় কাজ করে শিক্ষকবৃন্দ
হ্যা, খুবই সত্য বলেছেন আপনি। ধন্যবাদ
আপনার পোস্টটি পরে শিক্ষকদের প্রতি ভালোবাসা আরো ১০০% বেড়ে গেলো।১০০% বললেও কম হবে এর বেশি ভালোবাসা বেড়ে যাওয়ার কথা ছিল।সত্যিই আমাদের জীবনকে সুষ্ঠ সুন্দরভাবে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষকদের ভূমিকা অপরিসীম।শিক্ষকদের এমন ত্যাগের বিনিময়ে আমরা হয়তো এই পর্যন্ত আস্তে পেরেছি।
আমার জীবনে শিক্ষকদের ভূমিকা পিতামাতার থেকে কোন অংশে কম নয়।বরং তারা আমাকে যতটুকু দিয়েছিল সেটা যদি আমি অর্জন করে নিতে পারতাম তাহলে আমি আরো বেশি সফলতা পেতাম।
কিছু লোক কথায় বলে,""মা বাবায় বানায় ভুত আর ওয়াস্তাদে বানায় পূত"' যদিও কথাটা খারাপ শোনা যায়। তবে কিছুটা যৌক্তিক ও বটে।
অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনার পোস্টটি পড়ে আমার খুব ভালো লেগেছে।অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো।
হ্যা, ভাই এই কথাটা খুবই যুক্তিযুক্ত, ওস্তাদগন আছেন বলেই আমরা সন্তান হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পারছি। খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন। ধন্যবাদ
অসম্ভব বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে। ঠিকই বলেছেন ভাই বর্তমান সময়ের শিক্ষকরা তাদের ছাত্র-ছাত্রী ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে না কিন্তু আমাদের সময় শিক্ষকরা তারা তাদের নিজের স্বার্থের দিকে তাকাইনি তারা শুধু চেয়েছিলাম তাদের শিক্ষার্থীর ভালো একটা ভবিষ্যতের। আসলে সব কিছু সময়ের পরিক্রমায় পরিবর্তন হয়ে থাকে। আর সেটার জন্য আমাদের মানসিকতায় দায়ী থাকে। ধন্যবাদ ভাই আপনার এই অসাধারণ চিন্তাভাবনা কে।
আমাদের সময় শিক্ষকদের মাঝেও নৈতিকতা ছিলো কিন্তু এখন নেই, বরং তারা ব্যবসার মতো মুনাফার কথা চিন্তা করে। ধন্যবাদ
আমাদের জীবনের অর্ধেকটা সময় কাটে শিক্ষকদের আশ্রয়কৃত ছায়ায়।একজন শিক্ষক হলেন বটগাছ আর আমরা তার নিচের ছায়া।কারণ প্রতিটি শিক্ষক কখনো শিক্ষাগুরু, কখনো মা-বাবা আবার কখনো বা একজন ভালো বন্ধু হয়ে আমাদের দায়িত্ব পালন করেন।তাই সকল শিক্ষককে আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা ও শত কোটি প্রণাম।
খুব সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া।তবে আমাদের এখানে কাল শিক্ষক দিবস ছিল।ধন্যবাদ ভাইয়া।
এইটা আপনি যথার্থ বলেছেন, শিক্ষকরা হলেন বটগাছের মতো। ধন্যবাদ
আমাদের উচিত বছরে একবার হলেও শিক্ষকদের খোজ খবর নেওয়া। যাদের হাতে আমাদের সোনার জীবন গড়া। ভালোবাসা সকল শিক্ষকদের জন্য।
যতটা সম্ভব তাদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের চেষ্টা করা। ধন্যবাদ
মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকের অবদান অনেক বেশি।সব সময়
প্রতিটি ছাত্র -ছাএীর তার শিক্ষকের প্রতি ভালোবাসা থাকা উচিত সারা জীবন।
শিক্ষকদের কল্যানেই আমরা শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। ধন্যবাদ
বাবা মায়ের পরের অবস্থানে রাখা শিক্ষক-শিক্ষিকা দেরকে।আপনি আপনার গল্পে সেটাই তুলে ধরেছেন ভাই।
আপনাকে ধন্যবাদ এ রকম গল্প যেন আরো সামনে দেখতে-পরতে পারি সেই আশাই কামনা করছি।
ধন্যবাদ আপনাকেও বুঝতে পারার জন্য।
শিক্ষকদের প্রতি অকৃতজ্ঞতাই তো আমাদের জীবনকে দিন দিন নর্দমার কিটে পরিণত করছে।শুধু একটাই ইচ্ছা সবাই যেনো আমরা এই মানুষগুলোকে সারাজীবন সম্মান করে যেতে পারি।