শৈশবের অতীত স্মৃতি || জীবনের গল্প

in আমার বাংলা ব্লগ20 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমি ভালো আছি এবং সুস্থ আছি। তবে বরাবরের মতো মানসিকভাবে বেশ চাপে আছি। আসলে বাস্তবতা ছাপিয়ে যখন আমাদের প্রত্যাশার মাত্রা বেশী হয়ে যায়, তখন নির্ধারিতভাবে এমন চাপে পড়াটাই স্বাভাবিক। হ্যা, ঠিকই ধরেছেন চলতি বছরে আমার প্রত্যাশার পরিমানটা বেশ বেশী হয়ে গিয়েছিলো যার কারনে বছরের শেষে এসে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছি, হিসেবের অনেক কিছুই এখন মিলাতে পারছি না। মাঝে মাঝে এমন হয় না, সাজানো গোছানে অনেক জিনিষই শেষ পর্যন্ত অগোছালো থেকে যায়।

এটা একটা বাস্তব সত্য, আমার জন্য কারন অনেক বিষয়ে আমি অন্যদের পরামর্শ দেই কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেই সেটা মানতে পারি না। একটু চিন্তা করে দেখুন তো আপনার জীবনে এমন কিছু আছে কিনা। কোন সমস্যায় অন্যদের যে বিষয়ে আপনি পরামর্শ দিচ্ছেন, ঠিক সেই বিষয়ে আপনার নিজেরও অনেক ঘাটতি আছে, অনিচ্ছা সত্বেও আপনি বার বার সেটা করেই চলছেন। আমার আছে, অসংখ্য বিষয় আছে এমন, কেন জানি আমি পারি না। খুব বেশী আপসেট হয়ে যাই একটা সময় পার করার পর। ঐ যে প্রত্যাশার মাত্রাটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি না, যার ফলাফলটা এমন হতে বাধ্য হয়।

wood-3119970_1280.jpg

যাইহোক, বাস্তবতার শিকলে আমরা সবাই বন্দী কমবেশী। কারো কষ্ট বা সমস্যা একটু বেশী আবার কারো কষ্ট বা সমস্যা একটু কম, তবে যার যার অবস্থান হতে তারটাই সেরা। আজকে অবশ্য এই বিষয়ে আর কিছু বলতে চাই না, কারন ভেতরের ক্ষতটা নিয়ে খুব বেশী কথা বলাও ঠিক না। পরে দেখা যাবে আপনারাও সুযোগ নিয়ে সেই বিষয়ে আমাকে খোঁটা দেয়া শুরু করে দিয়েছেন, হি হি হি। অবশ্য এটা হওয়াটাই স্বাভাবিক, ছোটবেলায় আমরা এটা খুব বেশী পরিমানে করতাম। স্কুলের শিক্ষকরা কোন কারনে কোন ছাত্রকে যদি কোন বিশেষণে বিশেষায়িত করতো তাহলে আমরা কিন্তু সেটা নিয়মিত ব্যবহার করার সুযোগ নিতাম।

ছোটবেলার বিষয়গুলো সত্যি অনেক বেশী মজার ছিলো, বিশেষ করে শীতকালের ঘটনাগুলো আমাদের বেশী আনন্দ দিতো। নতুন আলু উঠতো, তাই ছোট ছোট আলু নিয়ে আমরা বেশ মজা করে খেতাম। আমাদের সময় তখনও মানুষের বাড়িতে মাটির চুলা ছিলো এবং অনেকেই তখনো গাছের লাড়কি ব্যবহার করতো। তো রান্না শেষে চুলায় গরম কয়লা থাকতো আর আমরা সেই সুযোগটাই সুন্দরভাবে ব্যবহার করতাম। ছোট ছোট আলু নিয়ে কয়লার মাঝে দিয়ে দিতাম এবং আধঘন্টা পর এসে সেগুলোকে উদ্ধার করতাম বেশ আনন্দ নিয়ে। তারপর হতো আসল স্বাদের খেলা।

কি দারুণ ছিলো সেই দিনগুলো, পোড়া আলু খেতে সত্যি দারুণ লাগতো। কয়লার তাপে তাপে আলুগুলো যেমন সিদ্ধ হতো ঠিক তেমনি উপরের পাশটাও পুড়ে কালো হয়ে যেতো। অনেক সময় আমরা সেগুলো ভাগাভাগি নিয়েও মারামারি শুরু করে দিতাম। তখন বাড়িওয়ালা মানেই সেই চুলাওয়ালা রেগে গিয়ে বলতেন তোরা আর এই বাড়িতে আসবি না এমন মারামারি করলে। আমরা আবার ভদ্র ছেলের মতো সেখান হতে চলে আসতাম। তারপর আবার বাহিরে এসে কাড়াকাড়ি শুরু করে দিতাম। স্বাদের সাথে দারুণ আনন্দ হতো। বর্তমান প্রজন্ম সেই আনন্দ যেমন পাচ্ছে না ঠিক তেমনি সেই স্বাদও পাচ্ছে না।

Image taken from Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 20 days ago 

সত্যি বলতে ছোট বেলার স্মৃতি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আপনি আজ ছেলেবেলার স্মৃতি তুলে ধরে সেই ছেলেবেলার স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন। আপনার এমন সুন্দর সুন্দর কথা গুলো পড়ে বেশ ভালো লাগলো ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে।

 20 days ago 

আমাদের সময় পরিবেশ অনেক বেশী ভালো ছিলো এবং আমরা সেটা দারুনভাবে উপভোগ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। ধন্যবাদ

 20 days ago 

আসলেই প্রত্যাশা বেশি থাকলে অনেক সময় চাপে পড়ে যেতে হয়। আপনার ভেতরের ক্ষতটা তাড়াতাড়ি শুঁকিয়ে যাক সেই কামনা করছি। যাইহোক পোড়া আলু খেতে কিন্তু আসলেই দারুণ লাগে। যদিও এভাবে সবার সাথে পোড়া আলু খাওয়া হয়নি আমার। তবে বাসায় পোড়া আলু অনেকবার খেয়েছি। কিন্তু আমরা সবাই মিলে শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে ক্রিকেট খেলার সময় মাঝেমধ্যে আলুর দম রান্না করে খেতাম। খেলাধুলা করার পাশাপাশি পিকনিক করাও হয়ে যেতো। যাইহোক পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 20 days ago 

শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে বেশ আলু চাষ করা হতো, তখন অবশ্য কোন ফ্যাক্টরি ছিলো না। আমরা সেখান হতেও অনেক আলু আনতাম, যারা আলু তুলতো তারাই আমাদের দিতেন।

 20 days ago (edited)

প্রথমই প্রার্থনা করছি আপনি যেন খুব তাড়াতাড়ি আপনার সমস্ত সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারেন।শুধু আপনি না ভাইয়া এটা অনেকের ক্ষেত্রেই হয় যারা অন্যকে অনেক পরামর্শ দেয় কিন্তু নিজের ক্ষেত্রে সেটা করতে পারে না। এটার উত্তর আসলে আমারও কাছে নেই।কেনো এরকম হয়। এখন আর সেভাবে আলু পোড়া খাওয়া হয় না। আবার সেই ইস্কুলের স্মৃতি কথা কোন শিক্ষক কাউকে কোন কটুক্তি করলে তাকে ক্ষেপানোর জন্য বাকি স্টুডেন্টদের কাছে সেটাই যেন গলার মালা হয়ে যেত হা হা হা। আসলেই শৈশবের সময়টা ছিল এক স্বপ্নের মত। যেটা আসলেই এখন স্বপ্ন হয়ে গেছে। কিন্তু একটা সময় সোনালী দিন ছিল। যা বর্তমান সময়ের ছোগড়ারা বোঝেই না সেগুলো। যাইহোক গল্পের ছলে অতীতের চমৎকার কিছু স্মৃতিচারণ করেছেন ,ধন্যবাদ আপনাকে।

 20 days ago 

অনেক ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।

 20 days ago 

নিজের দুর্বলতা গুলোকে কখনো প্রকাশ করতে নেই, আপনার ক্ষত কিন্তু এক প্রকার দুর্বল জায়গাযই। সেটা বেশি করে প্রকাশ করে ফেললে অনেকেই আছে আঘাত দেবে। কারণ দুর্বল জায়গা দেখলে মানুষ আঘাত করতে বেশি ভালোবাসে৷ হয়তো মানুষের ধর্ম।
তবে সবাই যে করে তা নয় কিন্তু অনেকেই করে।

আপনার আলু পড়া স্মৃতি বেশ ভালোই লাগলো। আমি আবার আলু পোড়া খেতে শিখেছিলাম গোপাল ভাঁড় কার্টুন দেখে। ওই একই ভাবে আমাদের অবশ্য কয়লার আগুন ছিল না ঘুঁটের উনুন ছিল সেখানে কাঠের জ্বালানি ও দেয়া হতো। রান্নাবান্না মিটে গেলে ঝুলি থেকে নিয়ে টুক করে রেখে চলে আসতাম। তারপর পুকুর পাড়ে বসে সেই দিন।

শৈশব সবারই যেন সোনার দিন।

 20 days ago 

ঠিক, দুর্বলতা প্রকাশ মানেই অন্যদের আঘাত করার সুযোগ করে দেয়া। আমি আবার বেশ খেতাম, তখন চারপাশের সবাই লাড়কি চুলায় রান্না করতো। সত্যি সেই দিনগুলো অনেক বেশী আনন্দের ছিলো। ধন্যবাদ

 20 days ago 

মানুষের জীবনে চাপ থাকবেই,কিন্তু এখন সেটা মানুষকে বললেই যেন দুর্বলতার সুযোগ নেয় সবাই।যাইহোক ছোটবেলার স্মৃতি মানেই সুন্দর।আপনার আলু পোড়া নিয়ে স্মৃতিটি সুন্দর ভাইয়া, তবে আমাদের বাড়িতে কিন্তু এখনো মাটির চুলায় রান্না করা হয় কাঠ-পাতা দিয়ে।ধন্যবাদ আপনাকে।

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Hi @hafizullah,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.26
JST 0.042
BTC 95548.90
ETH 3565.05
SBD 3.52