আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ স্কুল ]
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি এবং ভালো থাকার চেষ্টা করছি। যদিও সব কিছু আমাদের হাতে নেই হাতে মানে নিয়ন্ত্রণে নেই তবুও আমাদের চেষ্টা করতে হয় ভালো থাকার। সব কিছু অনুকূলে থাকবে এমনটা চিন্তা করাও ঠিক না বরং প্রতিকূলে থাকা অবস্থায় আমাদের নিজেদের অবস্থান ঠিক রাখতে পারলেই সেটা আমাদের জন্য সফলতা। অনুকূলে কিছু থাকলে সেখানে যে কেউ যে কোন ভাবেই হয়তো কিছু অর্জন করতে পারে বা পারবে কিন্তু প্রতিকূল অবস্থায় কয়জনই বা পারে নিজের অবস্থান ধরে রাখার?
আজকে অবশ্য আবোল তালোব জীবনের গল্পে কিছু কথা বলবো, এই সিরিজটি বরাবরের মতোই আমি আমার নিজের জীবনের নানা অভিজ্ঞতা নানাভাবে তুলে ধরি। আজকে বলবো শৈশব এর কিছু বিষয় নিয়ে। আমাদের শৈশবটা সত্যি ভিন্ন রকম ছিলো ভিন্ন রকম মানে বর্তমান প্রজন্ম যেমনটা শৈশব কাটাচ্ছেন তেমন ছিলো না বরং সম্পূর্ণ তার বিপরীতমুখী ছিলো। আমরা সময় পেতাম না, আমাদের কাছে মনো হতো ২৪ ঘন্টা অনেক কম সময়, কত দ্রুত দিন চলে যায় আবার রাত চলে আসে। আর বর্তমান প্রজন্ম তো সময়ই শেষ করতে পারে না, তাদের কাছ হতে মোবাইল নিয়ে নিলে তাদের দুনিয়াটা বিশাল বড় হয়ে যায়, কিভাবে সময় ব্যয় করবে সেটার কোন উপায় খুঁজে পায় না।
আমরা স্কুলে যেতাম প্রায় দুই তিন মাইল দূরে তাও আবার হেঁটে হেঁটে যেতাম, আমরা কখনো রিক্সা কিংবা গাড়ির কথা চিন্তা করতাম না, তখন অবশ্য স্কুল বাসও ছিলো না। বরং আমরা আশে পাশে যারা থাকতো তাদের জন্য অপেক্ষা করতাম তারপর একত্রে নানা বিষয়ে গল্প করতে করতে স্কুলে চলে যেতাম, কত দূরে স্কুল সেটা ভুলেও আমাদের মনে আসতো না। একটা অন্য রকম আনন্দ কাজ করতো আমাদের মনে। আবার স্কুলেও গিয়ে আমরা সেই মজা করতাম, স্কুলের মাঝে দল তৈরী করে নানা ধরনের খেলা খেলতাম। ক্লাস শুরু হওয়ার ঘন্টা পড়ার আগ পর্যন্ত চলতো আনলিমিটেড খেলা, আর এই খেলার বিষয়টি ছিলো আমাদের কাছে স্কুলে যাওয়ার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ।
এখনকার মতো দলে গার্ডিয়ানরা তখন স্কুলে যেতো না, স্কুলে সামনে কিংবা ভেতরে আড্ডার আসর জমাতো না। আমরা স্কুলে যেতাম স্বাধীনভাবে আনন্দের সাথে, অতো বই সাথে নেয়ার তাড়াও ছিলো না আমাদের। শুধু খাতা সাথে থাকলেই হতো। কারন ক্লাস চিটার ক্লাস রুমে প্রবেশ করেই ক্যাপ্টেন থেকে সেই বিষয়ের বই নিতেন এবং যাবতীয় পড়া ক্লাস রুমেরই ক্লিয়ার করে দিতেন। কিছু বিষয়ে বা কিছু নোট রাখলেই তখন হতো। অনেক সময় বাড়িতে এসে না পড়লেও হতো, শুধুমাত্র ক্লাসে একটু মনোযোগি থাকলেই হয়ে যেতো। এই কারনে ক্লাস করার প্রতি আমাদের যেমন আগ্রহ কাজ করতো ঠিক তেমনি মজাও পেতাম। আমাদের সময় শিক্ষকরা মারতেন কিন্তু সেটা কাংখিত হলে, বিনা কারনে কিংবা অন্যায়ভাবে না। বেশিরভাগ সময় বেঞ্চে দাঁড় করিয়ে রাখতেন অথবা সামনে নিয়ে মুরগি হি হি হি।
সবচেয়ে বড় কথা হলো আমাদের সময় স্কুলগুলো ছিলো আনন্দের তার সাথে খেলাধূলা করার প্রিয় স্থান। প্রতি বছর আবার নানা বিষয়ে দারুণ আয়োজন থাকতো খেলাধূলার প্রতিযোগিতা নিয়ে, তখন অবশ্য এতো কঠিন নিয়ম ছিলো না যে একজন একটা বেশী খেলায় নাম দিতে পারবে না বরং তখন ইচ্ছে মতো ছিলো, যে যত বেশী খেলায় পারদর্শী ছিলো সবগুলোতে নাম দিতে পারতো। আমি অবশ্য দৌড়ে সর্বসেরা ছিলাম, এছাড়া মোরগ লড়াই, ব্যাঙ দৌড়, বিস্কুট দৌড়ের প্রতিও বেশ লোভ ছিলো। আমি মারামারিতে যেমন পারদর্শী ছিলাম ঠিক তেমনি দৌড় প্রতিযোগিতায়ও সেরা ছিলাম। আরো একটা খেলা আমরা বেশ খেলতাম স্কুলে সেটা ছিলো দাঁয়রাকোর্ট, চারকোর্ট অথবা পাঁচকোর্ট নিয়ে খেলাতাম, এটা আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগতো।
আমাদের সময় পড়াশুনায়ও একটা আনন্দ ছিলো, আমরা স্বাধীনভাবে সব কিছু করতে পারতাম শুধুমাত্র পড়াশুনাটা ঠিক রেখে, কোন বিষয়ে আমাদের কেউ আটকাতো না, তবে হ্যা পড়াশুনার সময় কিংবা স্কুল টাইমে আমাদের আশেপাশের কেউ বাহিরে দেখলে ভীষণ বকা দিতো। তখন সামাজিক অবস্থাও অনেক বেশী ভালো ছিলো । আর এখন কারো ছেলে মেয়েকে কোন বিষয়ে কিছু বললে বা উপদেশ দিলেও বিশাল ঝগড়া লেগে যায়, সামাজিক অবস্থান এখন নষ্ট হয়ে গেছে একদম।
Image taken from Pixabay 1 and 2
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আমাদের শৈশবের মত এখনকার বাচ্চাদের শৈশব একেবারে আলাদা। আমি মনে করি আমাদের শৈশবটা ছিল একেবারে বেস্ট। আর শৈশবের স্কুলের আনন্দটা ছিল সবথেকে বেশি আলাদা। খেলাধুলার কথা যতই বলবো ততই কম হবে। কত রকমের যে খেলা খেলতাম তখন, এটা সত্যি বলতে বলতে শেষ হবে না। স্কুলে গিয়ে সব বন্ধু বান্ধবরা অনেক রকমের খেলা খেলতাম আমরাও। শৈশবের সেই স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা মনে পড়লে সত্যি অনেক ভালো লাগে। ইচ্ছে করে সেই শৈশবে আবারো চলে যাই। আমাদের শৈশবকালের সাথে, এখনকার বাচ্চাদের শৈশবকালের মধ্যে অনেক বেশি পার্থক্য রয়েছে। বাচ্চারা তো এখন মোবাইল পেলেই হয়। আর এই ধরনের খেলা গুলো সম্পর্কে তাদের কোনো আইডিয়া নেই। দিন দিন এই বিষয়গুলাই এবারেই বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। অনেক সুন্দর করে লিখেছেন ভাইয়া। আমার কাছে খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্টটা পড়ে।
আমাদের শৈশবগুলো সত্যি বেশ আনন্দময় ছিলো, যেই কারনে আমরা বার বার শৈশবে ফিরে যেতে চাই, বর্তমান প্রজন্ম যদি সেটা বুঝতে পারতো! অনেক ধন্যবাদ
স্কুল জীবন সত্যিই একটি জীবনের সুন্দরভাবে কেটে যাওয়া অংশ, নানা স্মৃতি ও ছোট ছোট ঘটনায় পার হয়ে যায়। তবে আপনি যেটা বললেন যে, এখনকার স্কুল জীবনে ছেলেমেয়েরা যেমনভাবে বেড়ে ওঠে আর কয়েক দশক আগের সময়টার মধ্যে অনেক তফাত রয়ে গেছে।
সাথে করে স্কুলিং প্রক্রিয়ায়ও অনেক পরিবর্তন এসেছে, যেমনটি আমরা বিভিন্ন পাঠদান প্রক্রিয়া, লেসন প্ল্যানিং আর ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার ধরণ দেখে বুঝতে পারি।
এসবই মূলত যুগের সাথে তাল মেলানোর কারণে হয়ে থাকে, প্রযুক্তি এসেছে সাথে ব্যস্ততার শহর কিংবা নগর। কিছুই আর আগের মতো নেই।
আজকের পোস্টের বিষয়টি অনেকটাই চিত্তাকর্ষক ছিল, স্কুল জীবনের দারুণ কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাই
আমাদের শৈশবের সময়গুলোতে আমরা যেমন খেলাধুলা, হাসি আনন্দে মেতে থাকতাম এখনকার বাচ্চারা সেগুলো উপভোগ করতেই পারে না। তারা তো মোবাইল ফোনে কিংবা ইলেকট্রিক ডিভাইজে আসক্ত থাকে। আর তাদেরকে যদি এসব থেকে দূরে রাখা হয় তারা বিরক্ত হয়ে যায়। আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। আপনি অনেক সুন্দর করে কথাগুলো উপস্থাপন করেছেন।
এখনকার স্কুল পড়ুয়া ছেলে মেয়েদের হাতে হাতে মোবাইল ফোন থাকে। আর আমরা তো কলেজে উঠার পরেও, সহজে মোবাইল ফোন হাতে পেতাম না। আর সেজন্যই আমাদের শৈশবটা দারুণ কেটেছে। আমরা পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন ধরনের খেলা খেলতাম, এতে করে সময় যে কিভাবে কেটে যেতো, সেটা টেরই পেতাম না। আমাদের স্কুল জীবনটা আসলেই খুব ভালো কেটেছিল। কিন্তু এখনকার স্কুল পড়ুয়া ছেলে মেয়েদের জন্য আফসোস হয়। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।