শৈশবের স্মৃতিতে: "বনভোজন"
নমস্কার
শৈশবের স্মৃতিতে: "বনভোজন"
আমরা সবাই ফিরে পেতে চাই আমাদের শৈশবের কিছু সুন্দর মুহূর্তগুলিকে।কিন্তু কিছু মুহূর্ত এমন স্মৃতি হয়ে যায় যেটির সম্মুখীন আমরা দ্বিতীয়বার হতে চাই না।তেমনি একটি শৈশবের বাস্তবধর্মী গল্প বলবো আজ আপনাদের সঙ্গে।তবে আজকের বলা শৈশবের অনুভূতিগুলি খুবই স্মৃতিমধুর।যদিও সেই স্মৃতি মনে পড়লে আজো আমার ইচ্ছে করে ছুটে যেতে শৈশবে।তাই সেই শৈশবের সুন্দর স্মৃতিটি শেয়ার করবো আজ আপনাদের সঙ্গে। আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের লেখা শৈশবের ছোট অনুভূতিখানি।তো চলুন শুরু করা যাক--
শীত পড়তে শুরু করেছে, উত্তরের হাওয়া জমিয়ে বইতে শুরু করেছে শাঁ শাঁ করে।ফসলের মাঠে ধান কাটার মৌসুম তাই ধীরে ধীরে মাঠ ফাঁকা হতে শুরু করেছে।সারাদিনের মিষ্টি রোদ্দুর কখন যেন ফুরিয়ে যায়।তাই আমরা বাড়ির ছেলেমেয়েরা মিলে ঠিক করলাম বনভোজন করবো।
আমাদের ইয়া বড় বাড়ি,বাড়িতে সাতটি মেয়ে ও সাতটি ছেলে।কারো বিয়ে হয়ে গেছে তো কেউ পড়ার জন্য বাইরে থাকে।তাই সবমিলিয়ে আমরা সংখ্যায় আট থেকে নয়জন রয়েছি।সকলের বাড়িতেই এক,দুই আবার তিনখানা করে পুকুর রয়েছে।যেমন আমাদের নিজেদেরই তিনখানা পুকুর রয়েছে ,এমন বড় জেঠুর একটি বড় পুকুর রয়েছে।তাই পুকুরের রুই,কাতলা মাছের প্রতি কারো কোনো আগ্রহ নেই।সবারই আগ্রহ বাজার থেকে পাঙ্গাস মাছ কিনে বনভোজন করবে।আর এই মাছ খুবই প্রিয় সকলের কাছে।তো আমরা ছোট,একটু বড়দের মধ্যে বড় জেঠুর সেজো মেয়ে ও ছোটনা কাকার ছোট ছেলে।এখন আমাদের রাঁধুনি বড় জেঠুর সেজো মেয়ে আর ছোটনা কাকার ছোট ছেলে বাজার করার দায়িত্ব নিলো।তাই সকলেই বাড়ি থেকে চাউল,পেঁয়াজ ও আলু নিয়ে গেল।আমিও নিয়ে গেলাম, আমাদের বনভোজন করা হবে মেজো জেঠুর গাছের বাগানের ভিটার পাড়ে।
আমাদের সকলের আলাদা আলাদা দায়িত্ব দেওয়া হলো।আমরা সবাই দুইজন করে ভাগ করে নিলাম কাজগুলো।সবাই বাড়ি থেকে ইট নিয়ে গেলাম পাড়ে সঙ্গে বটি,কিছু থালাবাসন ,হাঁড়ি-কড়াই, জল,চাটা,দেশলাই এবং ঝাঁটা।যেমন কেউ সবজি কাটছে,কেউ ইট সাজিয়ে চুলা তৈরি করছে,দুইজন বাজারে চলে গেল,কেউ জেঠুর বাগান থেকে কাঠ কুড়ানোর কাজে ও আমি লেগে পড়লাম ঝাঁটা দিয়ে ঝাড়ু দেওয়ার কাজে।বাকি দুইজন খাবারের আইটেম বাড়ানোর জন্য আমাদের বাড়ির পাশেই নদীর চড়ে গেল।
মজার বিষয় হচ্ছে নদীর চড়ে ভাটার সময় অসংখ্য ছোট ছিদ্র দেখা যায়, ওই ছিদ্রের পাশে পায়ের পাতা দিয়ে চাপ দিলেই বের হয়ে আসে জলের সঙ্গে ছোট ছোট গুলে মাছ।তো গুলে মাছের চচ্চড়ি তৈরির জন্য দুইজন ওই মাছ ধরতে গেল।সবকিছু রেডি করে আমাদের রান্না করা শুরু হয়ে গেল সঙ্গে নানা গল্প।ভাত রান্না সম্পন্ন করা হলো কিন্তু মুশকিল বাঁধলো তরকারি রান্নার সময়।বাতাসের তীব্রতা এতটাই যে শুধুই ধোঁয়া আর ধোঁয়া ,চুলা জ্বলতেই চাইছে না।কোনোরকম রান্না সম্পন্ন করা হলো এবারে বাড়ি থেকে সবাই থালা নিয়ে আসলো ভাত খাওয়ার জন্য।ভাত,আলুভাজা,আলু দিয়ে পাঙ্গাস মাছ,গুলে মাছের চচ্চরি ইত্যাদি রান্না হয়েছিল।মাঝে মাঝেই বড় জেঠিমা এসে খোঁজ নিচ্ছিলো ,কারন যেহেতু অনেক গাছপালার বাগানের মধ্যে আমাদের বনভোজন করা হচ্ছিলো তাই।ছেলেগুলি খাওয়ার সময় ভাত ও তরকারি বেশি বেশি খেয়ে নিলো মানে তারা যে পরিমাণ চাউল দিয়েছে তার থেকে বেশি উসুল করে নিয়েছে আরকি!☺️☺️ প্রকৃতির মাঝে এভাবে বসে ভাত খাওয়ার মজাই আলাদা।আমরা দুপুর থেকে সন্ধ্যা অবধি ওই ভিটার পাড়ে বসেই বনভোজন করেছিলাম বেশ মজা হয়েছিল সেইদিন।
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং:শৈশব স্মৃতি |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।।
টাস্ক প্রুফ:
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Thanks.
ছোটবেলার এরকম অনেক স্মৃতি আছে ভাই বোন সবাই মিলে একসাথে পিকনিক করেছি। আমাদেরও মাঝেমধ্যে এরকম হত তরকারি রান্নার ক্ষেত্রে প্রচন্ড বাতাসের কারণে বিলম্ব তৈরি হতো সবশেষে খেতে গিয়ে দেখা যেত তরকারিতে কিছুটা ধোয়া ধোয়া গন্ধ হা হা হা।
হি হি,তারপর খেতে না পেরে কেমন রাগ হতো বলুন☺️☺️।ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য।
শৈশবের প্রতিটি স্মৃতি অনেক বেশি মধুর। আর শৈশবের বনভোজনের স্মৃতিগুলো সত্যি অনেক মধুর ছিল। আপু আপনি অনেক সুন্দর করে নিজের স্মৃতিগুলো তুলে ধরেছেন। অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্ট দেখে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু,সময় নিয়ে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য।
শৈশবের বনভোজনের আনন্দটা অন্যরকম হয়ে থাকে। আপনার পোস্ট পড়ে শৈশবে ফিরে যেতে খুব ইচ্ছে করতেছে। শৈশবের বনভোজনের অনেক স্মৃতি মনে পড়ছে। ছোটবেলার এরকম অনেক স্মৃতি বনভোজনের সবাই মিলে বেশ আনন্দ করতাম। ধন্যবাদ আপনাকে আপু পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
আসলেই স্মৃতিগুলি আনন্দের ছিল,ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।