প্রতিযোগিতা- ৬৮||আমার শীতকালীন সেরা ফুলের ফটোগ্রাফি
নমস্কার
ছবি তোলার পিছনের কিছু কথা:
শীতকাল আমার খুবই প্রিয়।আর এই শীতকালেই দেখা যায় প্রচুর পরিমাণে নানান রঙিন ফুলের সমাহার।দেখলে যেন চোখ জুড়িয়ে যায়।তো আমাদের বর্ধমান ইউনিভার্সিটি ও কৃষ্ণসায়র কমিটির উদ্যোগে একটি ফুলের মেলার আয়োজন করা হয়।যেটা এক সপ্তাহ ধরে চলছিলো বর্ধমানে।এই ফুলের মেলায় মানুষ তার নিজ নিজ সংগ্রহে থাকা প্রচুর পরিমাণে ফুল বিভিন্ন স্থান থেকে নিয়ে আসে।এটি যেহেতু ফুলের মেলা তাই এখানের কোনো ফুল বিক্রির জন্য থাকে না।বরং মানুষের দেখার জন্য এক অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয় হয়ে থাকে।তাছাড়া যারা এই গাছ কিংবা ফুল নিয়ে আসেন তারা সবাই-ই প্রায় ডাক্তার,উনারা উদ্ভিদ সম্পর্কে গবেষণা করেই নিজ নিজ ফুলের গাছগুলো এখানে উপস্থাপন করেছেন।আর এই ফুল নিয়ে প্রতিযোগিতা চলে,সেজন্য প্রত্যেকটি গাছ কিংবা ফুলের নীচে ওই ব্যক্তির নাম ও অবস্থান লেখা রয়েছে কাগজের পাতায়।ফুলের নীচে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান করে লেখা ছিল।প্রচুর ভিড় হয়েছিল এবং সবাই নিজেদের সেলফি ও ফুলের ছবি তুলেছিলো।তো আমি আমাদের ইউনিভার্সিটি থেকে দশ টাকা দিয়ে চলে গিয়েছিলাম টোটো করে এই মেলায়।তারপর আবার 10 টাকা দিয়ে টিকিট কেটে ভিতরে প্রবেশ করেছিলাম, যদিও পরবর্তীতে জানতে পারি আমাদের বর্ধমান ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টদের জন্য এটা ফ্রি।যাইহোক আর কি করার!ভিতরে ঢুকে বিরাট বড় ঝিলের পাড় ঘুরে তবেই ফুলের দেখা পেলাম।এতটাই আকর্ষণীয় সব ফুল যে, মনে হচ্ছিলো ফুলের উপর শুয়ে পড়ি।সবমিলিয়ে যেন প্রকৃতি এক নতুন রূপে সেজে ওঠেছিল সেখানের।
আমার শীতকালীন সেরা ফুলের ফটোগ্রাফি:
অ্যাডেনিয়াম ফুল:
এগুলো হচ্ছে অ্যাডেনিয়াম ফুল।এই ফুল মরুভূমির গোলাপ নামেও পরিচিত।কারন এটাতে তেমন মাটির প্রয়োজন হয় না বালি কিংবা পাথরের মধ্যে খুব ভালো করে জন্মাতে পারে।তাছাড়া এই ফুল গাছের গোড়ার দিকে কিছুটা মোটা প্রকৃতির হয়ে থাকে।ফুলগুলি নানা রঙের ও আকর্ষণীয় দেখতে হয়ে থাকে।এক পাপড়ি বা অনেক পাপড়ি বিশিষ্ট হয়ে থাকে ফুলগুলি।
বড় জাতের চন্দ্রমল্লিকা ফুল:
এগুলো বড় জাতের চন্দ্রমল্লিকা ফুল।যেগুলো আমি এই প্রথম দেখেছি ,এখানে অনেক রঙের ও জাতের চন্দ্রমল্লিকা ফুল ছিল।কিন্তু এই জাতের ফুলগুলির পাপড়ি সরু টাইপের ছিল ও মাথার দিকে বাঁকানো স্প্রিং এর মতো ছিল।আকাশে আতশ বাজি ফুটালে যেমন ঠিকরে পড়ে অনেকটাই যেন এই চন্দ্রমল্লিকা ফুলগুলি তেমনটাই দেখতে লাগছিলো।
পিটুনিয়া ফুল:
শীতকালের আরো একটি জনপ্রিয় ফুল পিটুনিয়া।যেটা নানা রঙের হয়ে থাকে।পাপড়িগুলো কেমন নেতানো প্রকৃতির হয়ে থাকে।আমি এখানে একটি সংকর প্রজাতির ও একটি গোলাপি রঙের পিটুনিয়া ফুল শেয়ার করেছি।গোলাপি রঙের পিটুনিয়া ফুলটি যখন ধীরে ধীরে ঝরে পড়ছে তখন রং পরিবর্তন করে গাড় বেগুনি আকার ধারণ করছে।
ছোট জাতের চন্দ্রমল্লিকা ফুল:
এগুলো হচ্ছে ছোট জাতের চন্দ্রমল্লিকা ফুল।এই ফুলগুলি প্রচুর পরিমানে ধরে থাকে একটি গাছে।আর এতটাই হয়ে থাকে যে মনে হয় নরম বিছানার চাদর। ছোট ছোট অসংখ্য পাপড়ির সমন্বয়ে গঠিত হয়।এই ফুলগুলি যতই দিন বাড়তে থাকে ততটাই নানা রঙে পরিবর্তন হতে থাকে এবং দীর্ঘদিন ধরে সজীব থাকে।
অ্যাস্টার ফুল:
এগুলো হচ্ছে অ্যাস্টার ফুল।এই ফুল প্রজাপতি এবং মৌমাছিদের জন্য একটি পরম উপহার। তারা পরাগায়নকারীদের প্রিয়।এই ফুলগুলি সাধারণত গ্রীষ্মের শেষ থেকে শরতের শেষ পর্যন্ত ফুল ফোটে।এই ফুলগুলো কিছুটা চন্দ্রমল্লিকা ফুলের মতোই নানা রঙের দেখতে হয়ে থাকে।তবে দুটি কিংবা একটি পাপড়ির সমন্বয়ে গঠিত হয়।এগুলোও বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদের অংশ।
ভিন্ন জাতের ডালিয়া ফুল:
এগুলো হচ্ছে ভিন্ন জাতের ডালিয়া ফুল।ডালিয়া ফুল কন্দযুক্ত হয়ে থাকে।এই ফুলগুলি একবার লাগালে প্রতিবছর সেই বীজ থেকে গাছ জন্মায়।তাই এটি একটি ভেষজ বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ।ডালিয়া ফুলগুলি সূর্যের আলোর দিকেই মুখ করে ফুটে থাকে।এই জাতের ডালিয়া ফুলগুলি আমি প্রথম দেখেছি।এ জাতীয় ডালিয়া ফুলের পাপড়িগুলো নৌকার মতোই বাঁকানো আকৃতির হয়ে থাকে।
গোলাপ ফুল:
এটি সকলের প্রিয় গোলাপ ফুল।যাকে আমরা ফুলের রানিবলে থাকি।কারন বিভিন্ন অনুষ্ঠান কিংবা বিশেষ কিছুতে গোলাপ ফুল ছাড়া জমেই না।নানা রঙের গোলাপ ফুল রয়েছে।তবে আমি শেয়ার করেছি সংকর প্রজাতির দুটি গোলাপ ফুল।সাদা ও গোলাপি রঙের সমন্বয়ে ও লাল ও হলুদ রঙের সমন্বয়ে গঠিত ছিল গোলাপ ফুল দুটি।
ডালিয়া ফুল:
শীতকালের আরো একটি জনপ্রিয় ফুল হচ্ছে ডালিয়া।যেগুলো বিভিন্ন প্রজাতির ও রঙের হয়ে থাকে।এই ডালিয়া ফুলগুলি অনেক পাপড়ি বিশিষ্ট হয়ে থাকে ও সাইজে অনেক বড় হয়ে থাকে।ডালিয়া এক ধরনের গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ।এখানে আমি গোলাপি ও লাল-সাদা রঙের সমন্বয়ে গঠিত দুটি ডালিয়া ফুল শেয়ার করেছি।
বড় গাঁদা ফুল:
শীতকালের অতি পরিচিত ফুল বড় গাঁদা।যেটা গ্রাম বাংলায় সচরাচর সব বাড়িতেই দেখা যায়।এই গাঁদা ফুলগুলি বিভিন্ন জাতের ও বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে।একবার ফুটলে দীর্ঘদিন যাবত সজীব থাকে।হলুদ ও গেরুয়া রঙের গাঁদা ফুল-ই বেশি দেখা যায়।
পোষ্ট বিবরণ:
বিষয় | প্রতিযোগিতা- ৬৮ | আমার শীতকালীন সেরা ফুলের ফটোগ্রাফি | |
---|---|---|---|
শ্রেণী | ফটোগ্রাফি | ||
ডিভাইস | poco m2 | ||
অভিবাদন্তে | @green015 | ||
লোকেশন | (https://what3words.com///escapes.blogs.lousy) |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।।
টাস্ক প্রুফ:
0.00 SBD,
0.00 STEEM,
0.00 SP
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বর্ধমান ইউনিভার্সিটি ও কৃষ্ণসায়র কমিটির উদ্যোগে চমৎকার একটি মেলা আয়োজন করেছে এই উদ্যোগটা দারুন হয়েছে। এটা শুনেও ভালো লাগলো যে এখানে বিভিন্ন ডক্টররা তাদের গবেষণা করা ফুলগুলো নিয়ে উপস্থাপন করেছিল। সেই সাথে আপনার পোস্ট এর মাধ্যমেই এরকম চমৎকার ফুলের ফটোগুলো দেখতে পারলাম। ডালিয়া, গাদা এবং দুই ধরনের চন্দ্রমল্লিকা ফুল এগুলোই আমার কাছে ভালো লেগেছে। বাকি ফুলের ফটোগুলিও দারুন ছিল আপু। পুরো পোস্টটাই আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে।
মেলাতে গিয়ে অনেক সুন্দর সুন্দর ফুলের ফটোগ্রাফি করেছেন। সত্যি আপু শীত কাল হলো ফুলের সমারোহ।শীতের ফুল গুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো।, ফুলের পাশাপাশি সুন্দর লিখেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আজ আপনি আমাদের মাঝে প্রতিযোগিতা উপলক্ষে দারুন দারুন কতগুলো ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। আসলে প্রত্যেকটা ফুল আমার কাছে ভীষণ প্রিয়। এছাড়াও বর্তমান সময়ে মেলায় আমরা এই ধরনের ফুলের সমাহার দেখতে পাই। যেগুলো আপনার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে।
আপনার প্রতিটি ফটোগ্ৰাফি দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম আপু। আজকে আপনার মাধ্যমে নতুন কিছু ফুলের ফটোগ্রাফি দেখতে পেলাম অ্যাস্টার ফুল,অ্যাডেনিয়াম ফুল এই ফুলের নাম আমি আজকে প্রথম শুনলাম। ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর সুন্দর ফুলের ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য।
সর্বশেষ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন আপনি। আপনার এমন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে দেখে বেশ ভালো লেগেছে। অসাধারণ ফুলের ফটোগ্রাফি করেছেন। প্রত্যেকটা ফুলের ফটোগ্রাফি চমৎকার ছিল।
আপু আপনি এত সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন দেখি আমার কাছে অসম্ভব ভালো লাগলো। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনার জন্য অনেক অনেক অভিনন্দন। আপনার ধারণ করা প্রতিটি ফুলের ফটোগ্রাফি দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। জড়ো জাতের চন্দ্রমল্লিকা ফুল আজকে আমি প্রথম দেখলাম। এছাড়াও ভিন্ন জাতের ডালিয়া ও অ্যাস্টার ফুল দুইটি একজন ইউনিক আর আমার কাছে নতুন। ধন্যবাদ আপু আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
মনে হচ্ছে ফুলের রাজ্যে হারিয়ে গেলাম। এত এত রঙের ফুলের ফটোগ্রাফি দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম সত্যি। অ্যাস্টার এবং ডালিয়া ফুলের ফটোগ্রাফি আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। সাদা রংয়ের এরকম চন্দ্রমল্লিকা ফুল আগে দেখা হয়নি। এগুলো আসলেই অন্য জাতের ছিল। মনোমুগ্ধকর ফুলের ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ দিদি।
শীতকালীন ফুলের অপরূপ সৌন্দর্যময় ফটোগ্রাফি করেছেন। প্রত্যেকটা ফুলের ফটোগ্রাফি দেখে মুগ্ধ হলাম, শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।