প্রাণ/জীবন, সৃষ্টিকর্তার এক অপার বিস্ময়। ১০% লাজুক শিয়ালের জন্য।
আসসালামু-আলাইকুম।
আশা করি সবাই ভাল আছেন। জন্মদিন প্রত্যেকের কাছেই খুব স্পেশাল একটা দিন। প্রত্যেকটা মানুষেরই সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত এই দিনটির জন্য। কেননা এই দিনেই সে জন্মগ্রহণ করেছে। পৃথিবীর আলো, বাতাস, সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ পেয়েছে। একবার ভেবে দেখুন তো কি হতো যদি আপনার জন্ম না হতো। আমি বা আপনি বলে যদি কেউ না থাকতো। আপনার অস্তিত্ব থাকতো না। হয়তো অনেকেই বলবেন সেটাই বরং ভালো হতো। ছিলাম না ভালো ছিলাম কিন্তু আমার কাছে মনে হয় এই মানব জীবন মানুষের পরম সৌভাগ্য। হয়তো আমরা কুকুর, বিড়াল বা গরু, ছাগল হিসেবেও সৃষ্টি হতে পারতাম। সে ক্ষেত্রে আমাদের কিছুই করার ছিল না। বুদ্ধি বিবেচনাহীন নির্বোধ পশু হিসেবেই জীবনটা পার করে দিতে হতো। তা না হয়ে আপনাকে সৃষ্টি করা হয়েছে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে। দেয়া হয়েছে চিন্তা করার সীমাহীন স্বাধীনতা। অপার বিস্ময়কর সৌন্দর্য মন্ডিত এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড উপভোগ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে আপনাকে। শুধুমাত্র এই কথা চিন্তা করেই সৃষ্টিকর্তার প্রতি আমাদের শির নত হওয়া উচিত।
কয়েকদিন আগে ছিল আমার একমাত্র ছেলের জন্মবার্ষিকী। দেখতে দেখতে চার বছরে পদার্পণ করলো সে। আমাদের পরিবার বেশ রক্ষণশীল। আমার বাবা ছিলেন ধর্ম ভীরু একজন মানুষ। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কখনোই মিস করতেন না। আমার মা ও তার ব্যতিক্রম নয়। তাই জন্মদিন, বিবাহ বার্ষিকী বা এই ধরনের বিশেষ বিশেষ দিনগুলো আমাদের বাসায় তেমন একটা উদযাপিত হয় না বললেই চলে। তারা মনে করেন এগুলো ওয়েস্টার্ন কালচার। আমাদের নিয়ম নীতির সঙ্গে এগুলো যায় না কিন্তু ছোটরাতো আর তা শোনে না। তারা অতসব যুক্তিতর্কের ধার ধারে না। যেটা ভালো লাগে সেটা করার জন্য কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। আমার ভাই এবং আমার ছেলে সহ আমাদের পরিবারের মোট পিচ্চিদের সংখ্যা ৩। ৩ জনই প্রায়ই একই বয়সী। তাই কারো জন্মদিন আসলেই সবাই একসাথে প্রস্তুত হয়ে যায় জন্মদিন উদযাপন করার জন্য। তবে আমাদের বাসায় জন্মদিন বলতে একটা কেক কাটা আর পরিবারের সবাই মিলে একটু ভালো-মন্দ খাওয়া এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ। যথারীতি ছেলের জন্য ২০০০ টাকা দিয়ে একটি কেকের অর্ডার দিলাম সঙ্গে টুকটাক অন্যান্য আয়োজন সময় মত আশেপাশের সমবয়সী আরো কিছু বাচ্চাকাচ্চা হাজির হয়ে গিয়েছিল বেলুন ফোলানো কেক কাটা মিষ্টি খাওয়া আর ছবি তোলার মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হলো ফারহানের চার বছর পূর্তি উৎসব
সত্যি বলতে কি আমিও কখনোই এসব আয়োজন এর পক্ষপাতী নয় কিন্তু কিছু করার থাকে না। সামান্য হলেও এই আয়োজনটুকু করতেই হয়। প্রতিবারই চিন্তা করি এভাবে টাকা নষ্ট না করে এ টাকাগুলো দিয়ে কিছু অসহায় গরিব ভিকিরি মানুষকে একবেলা খাইয়ে দেব কিন্তু ভালো কাজ করতে গেলে বোধহয় সব সময় শয়তান কুমন্ত্রণা দেয়া শুরু করে। এটাই হয়ে আসছে আমার সাথে সব সময়। তবে এবার আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আগামী বার যদি কিছু করতেই হয় তাহলে সেটা হবে গরিব মানুষের জন্য। আমার বাংলা ব্লগে মাঝে মাঝেই বিভিন্ন জনের জন্মদিন উদযাপনের পোস্ট দেখতে পাই। সেগুলো বেশ জমকালো ভাবেই উদযাপিত হয়। তবে আমাদের বাড়ির এই জন্মদিন নিতান্তই সাদামাটা। এই পোস্টের মূল উদ্দেশ্য জন্মদিন কিভাবে উদযাপিত করলাম তার বর্ণনা দেয়া নয় বরং আমার চিন্তাটুকু ছড়িয়ে দেয়া। যাতে আপনারাও এভাবে টাকা নষ্ট না করে টাকা দিয়ে সত্তিকারের দরিদ্র অসহায় মানুষদের জন্য একটু হলেও সহযোগিতা করতে পারেন। গরিব মানুষের এই দোয়া হতে পারে আপনার সন্তানের জীবন চলার পাথেয়। শেষ করবার আগে সবাইকে জানাচ্ছি বসন্তের শুভেচ্ছা। শুদ্ধ পবিত্র ভালবাসা ছড়িয়ে যাক প্রত্যেকটি মানুষের অন্তরে।
আজকের মত এ পর্যন্তই। আবার কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
Photographer | @ferdous3486 |
---|---|
Device | Samsung M21 |
Location | Faridpur |