ফুটবল বিশ্বকাপের উন্মাদনা||পর্ব-২||@shy-fox 10% beneficiary

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছো আশাকরি সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে সবাই ভালো আছো। সবাইকে হেমন্তের শুভেচ্ছা, আজ আমি আপনাদের সামনে আমার নতুন লেখা ফুটবল বিশ্বকাপের উন্মাদনার দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। আমার জীবনে দেখা প্রতিটি বিশ্বকাপের মুহূর্তগুলো কেমন কেটেছে সে সম্পর্কে এবং ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে আমার ভালোলাগা মন্দলাগা গুলো আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আশা করছি আমার লেখা পড়ে আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
football-389405_960_720.jpg
Source
২০০২ বিশ্বকাপ আমি বেশ ভালো বুঝি, ফুটবল খেলা সম্পর্কে বেশ ভালো খোঁজ খবর রাখি। এ বিশ্বকাপের অনেকগুলো ম্যাচ আমি টিভির পর্দায় উপভোগ করেছি। ১৯৯৮ সালে বিশ্বকাপথেকে এই বিশ্বকাপটা আমার জন্য অন্যরকম, এখন বিশ্বকাপ সম্পর্কে আমার ধারণা বেশ ভালো হয়েছে এবং খেলা নিয়ে টুকটাক খোঁজ-খবর রাখা হয় পত্রিকা পড়ার মাধ্যমে। ২০০২ ফুটবল বিশ্বকাপে আমরা আর্জেন্টিনার সমর্থকরা একসাথে টাকা জমিয়ে অনেক বড় একটি পতাকা তৈরি করেছিলাম, যা আমাদের স্থানীয় বাজারে উত্তোলন করা হয়েছিল। অপরদিকে ব্রাজিলের সমর্থকরা চেষ্টা করেও এত বড় পতাকা তৈরি করতে পারেনি। ব্রাজিলের সমর্থক কম থাকার কারণে পতাকার জন্য তারা বেশি ফান্ড তৈরি করতে পারেনি,তারা তৈরি করেছিল আমাদের থেকেও ছোট পতাকা।

প্রথমবারের মতো ২০০২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আমাদের এশিয়া মহাদেশে কোরিয়া এবং জাপানে যৌথভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এটি ছিল বিশ্বকাপের ১৭ তম আসর, ৩০মে থেকে ৩০জুন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৩২ দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপজয়ী শক্তিশালী ফ্রান্স এই বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় হয়ে যায় যা ছিল ফ্রান্স দলের সমর্থকদের হৃদয় ভাঙার ঘটনা। সেবার গ্রুপ পর্ব থেকে অনেক শক্তিশালী দল বাদ পড়ে যায়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ান ফ্রান্স, ডেনমার্ক , আর্জেন্টিনার মতো দল গুলো।
football-stadium-227561_960_720.jpg
Source
গ্রুপ পর্বের খেলা শেষ হওয়ার পর শুরু হয় নক আউট পর্ব, যেখানে গ্রুপ পর্বের বিজয়ী ১৬ দল অংশগ্রহণ করে। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হয় জার্মানি বনাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন বনাম দক্ষিণ কোরিয়া, ইংল্যান্ড বনাম ব্রাজিল, সেনেগাল বনাম তুরস্ক। কোয়ার্টার ফাইনালে নিজ নিজ খেলায় জয়লাভের পর সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় জার্মানি বনাম দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রাজিল বনাম তুরস্ক। সেমিফাইনালে চরম প্রতিযোগিতা পূর্ণ দুটি খেলায় জার্মানি এবং ব্রাজিল জয় লাভ করে ফুটবল বিশ্বকাপের ১৭তম আসরে ফাইনালে জায়গা করে নেয়। সে বিশ্বকাপে আমার তুরস্কের খেলা অসাধারণ লেগেছিল, পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে চমৎকার নৈপুণ্য দেখিয়েছে তারা। সেমিফাইনালে তুরস্ক বনাম ব্রাজিলের খেলাটি আমার কাছে এখনো মনে পড়ে, যে খেলায় তুরস্ক দারুণভাবে ব্রাজিলকে মোকাবেলা করেছিল। খেলায় প্রথমার্ধে গোলশূন্য থাকে এবং দ্বিতীয়ার্ধে ৪ মিনিটের মাথায় রোনালদোর পা থেকে একটি গোল পেয়ে ব্রাজিল ১-০ গোলে জিতে যায়।
parade-64353_960_720.jpg
Source
মূলত ২০০২ সালের বিশ্বকাপে আমার মন বেশ খারাপ ছিল কারণ হল, আমার প্রিয় দল আর্জেন্টিনা গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ হয়ে যায় যা ছিল আমার জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। যদিও সে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার দলটি ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। নিজেদের প্রথম খেলায় নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ১-০ গোলে জয় পায়, দ্বিতীয় খেলায় সুইডেনের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করে এবং ইংল্যান্ডের সাথে ০-১ গোলে হেরে যায়। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে দাপট দেখিয়ে খেলতে আসা আর্জেন্টিনা দলটি মাত্র চার পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিতে হয়।
people-1284253_960_720.jpg
Source
এখন আসি ফাইনাল খেলায়, ২০০২ সালের ফাইনাল খেলাটি আমি দেখেছিলাম। এ খেলায় আমার ব্রাজিল দলকে অপ্রতিরোধ্য মনে হয়েছিল মনে হয়েছিল। যদিও আমি ব্রাজিল সাপোর্ট করি না তারপরেও ব্রাজিলের এই দলটি তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ফুটবল দল। যেখানে রোনালদো, রিভালদো, রবার্তো কার্লোস, কাফু, কাকা ও রোনালদিনহোদের মত শক্তিশালী ফুটবলার ছিল। বিশ্বকাপের দুই শক্তিশালী দল জার্মানি এবং ব্রাজিল মুখোমুখি ফাইনাল খেলায় দুই দলের খেলোয়াড়রা কেউ কারো থেকে কম শক্তিশালী নয়। আর দুই দলের মধ্যে এটিই ছিল বিশ্বকাপে প্রথম ফাইনালে মুখোমুখি। খেলা শুরু হওয়ার প্রথমার্ধে ব্রাজিল কিছু গোলের সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি। খেলার ৩৯ মিনিটের মাথায় জার্মানি একটি চমৎকার গোলের সুযোগ হাতছাড়া করে বার পোস্টের কারণে। খেলার ৬৭ মিনিটের মাথায় রোনালদোর পা থেকে প্রথম গোল পায় ব্রাজিল। গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে ওঠে জার্মানি সে সুযোগে ব্রাজিল কাউন্টার এটাকে দ্বিতীয় গোল দেয় ৭৯ মিনিটের মাথায়। এবারও নায়ক রোনালদো যিনি ওই বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলদাতা মনোনীত হন। ব্রাজিল ২-০ গোলে ফাইনালে জার্মানিকে পরাজিত করে পঞ্চম বারের মত বিশ্বকাপ ঘরে তুলে নেয়। খেলা শেষ হওয়ার পর ব্রাজিলের দর্শকরা প্রচুর পরিমাণের মাতামাতি করেছিল যা আমাদের কাছে অপমানজনক মনে হয়েছিল, আমরা যারা আর্জেন্টিনার সাপোর্টার।

বন্ধুরা আজ এখানেই থামতে হচ্ছে, ফুটবল বিশ্বকাপের উন্মাদনাতৃতীয় পর্ব নিয়ে আবার সময় করে আপনাদের সামনে হাজির হব। সে পর্যন্ত সবার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি, অসংখ্য ধন্যবাদ সবাইকে।

amarbanglablog.gif


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

Sort:  
 2 years ago 

2002 সালে আমার জন্ম। ঐ সালে তো আমার কোনো জ্ঞান ছিল না। তবে একজন ব্রাজিল ফ‍্যান হিসেবে আমি শুনেছি ঐটা ছিল ব্রাজিলময় বিশ্বকাপ। পুরো আসরে রোনালদো ছিল ফর্মে। ফলে সবচেয়ে বেশি গোলদাতা হয় সে। এবং ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে দুইটা গোলই করে রোনালদো। আপনার পোস্ট টা পড় ঐ দশকের ফুটবল উদ্মাদনা সম্পর্কে জানা গেল।।

 2 years ago 

আমার পোস্টে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আমি ফুটবল বিশ্বকাপ দেখছি ২০১৪ সাল থেকে। আসলে ২০১৪ সালের আগে আমি অনেক ছোট ছিলাম ফুটবল খেলা কি তাই বলতাম না। ফুটবল খেলা দেখার পরে আমি আর্জেন্টিনা টিমকে সাপোর্ট করি লিওয়ো মেসিকে আমার অনেক পছন্দ। কিন্তু আমার সব দেখে বেশি পছন্দের ফুটবলার হলো রোলান্ড। এবার বিশ্বকাপে আমি আর্জেন্টিনা টিমকে সাপোর্ট করছি। আশা করি লিওয়ো মেসির হাত ধরে এবার বিশ্বকাপ জিতবে আর্জেন্টিনা।

 2 years ago 

আমিও একজন আর্জেন্টিনার সমর্থক, আপনার মত আমিও চাইবো এবারের বিশ্বকাপ মেসির হাতে উঠুক।

 2 years ago 

ভাই কি আর বলবো।
খেলা মানেই তো উত্তেজনা।
আর এই বিশ্বকাপ তো সব সময় আসে না চার বছর পর পর হয়ে থাকে। তাই এই বিশ্বকাপে খেলা দেখার মত আর কোন মজায় আসে না।
আর আপনি বিশ্বকাপের বিষয় গুলো অনেক সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

 2 years ago 

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ, আমার পোস্টে আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 58478.70
ETH 3158.37
USDT 1.00
SBD 2.43