সময় গেলে সাধন হবে না||
প্রিয় বন্ধুরা, কেমন আছো আমার বাংলা ব্লগের সাথে আশা করি খুব ভালো আছো। আমিও তোমাদের ভালোবাসাতে বেশ ভালো আছি, তোমাদের সামনে আবার চলে এলাম আমার নতুন লেখা নিয়ে। আজকে আমি শেয়ার করব সময় গেলে সাধন হবে না নিয়ে কিছু কিছু কথা। যেখানে সময়ের কাজ অসময় শুরু করলে তার ফল খুব বেশি ভালো হয় না আর সে সম্পর্কে বাস্তব উদাহরণ নিয়ে আমার লেখা। আশা করছি লেখাটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে, অনুরোধ রইল লেখাটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য।
Source
প্রতিটা মানুষ শৈশব থেকে বার্ধক্য পর্যন্ত স্বপ্ন নিয়ে বাঁচে, স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করে করে। কিন্তু বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক কারণে বেশিরভাগ মানুষ সে লক্ষ্য থেকে সরে যায়। লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে অনেকটা ব্যক্তির মনের অজান্তে, ফলে যে সময় অতিবাহিত হয়ে যায় সে সময় আর ফিরে পাওয়া যায় না যতই অনুশোচনা করা হোক না কেন। কিছু দিন আগে আমার সামনে ঘটে যাওয়া একটি বাস্তব উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি আলোচনা করি।
এয়ারপোর্ট এ যাওয়ার উদ্দেশ্যে সেদিন রামপুরা কাঁচাবাজার থেকে বাসে উঠলাম। বাস রামপুরা ব্রিজে পৌঁছানোর পর একটা ফ্যামিলির কিছু সদস্য তাড়াহুড়া করে বাসে উঠার চেষ্টা করল যাদের সাথে দুটো শিশু ছিল। শিশু দুটোর বয়স আনুমানিক ৫ এবং ৭, তাদের সাথে দুইজন মধ্য বয়স্ক মহিলা ছিল। বাস চলন্ত অবস্থায় থাকার জন্য তাদের বাসের মধ্যে বসতে অসুবিধা হচ্ছিল অর্থাৎ ব্যালেন্স হারিয়ে ফেলছে। এমত অবস্থায় আমার সিট থেকে উঠে গিয়ে একজন মহিলাকে বসার সুযোগ করে দিলাম। বাস কিছুটা সামনের দিকে যাওয়ার পরে হঠাৎ ওই মহিলা বাস থামাও, বাস থামাও বলে চেঁচামেচি করে উঠলো। আমি সহ বাসের অন্য যাত্রীরাও কিছু বুঝে উঠতে পারলাম না চেঁচামেচির কারণ কি।
Source
বাসের হেলপার তার কথা শোনার জন্য কাছে যেতেই সে বলে উঠলো তার মেয়ের একখানা জুতা বাসে উঠার সময় পড়ে গেছে,সেজন্য তিনি বাস থামাতে বলছে কিন্তু বাস সেসময় নতুন বাজার চলে এসেছে। হেলপার তাকে বলল এখন বাস থামালে আপনি জুতা পাবেন না আর এখান থেকে রামপুরা ব্রিজ অনেক দূরে, বাসের অন্য যাত্রীরাও তাকে বিষয়টি বুঝিয়ে বলে। ভদ্রমহিলা তার নিজের প্রতি এবং তার সাথে যারা এসেছে তাদের প্রতি ঘটনার জন্য অসন্তোষ প্রকাশ করল। যে বাচ্চার জুতা হারিয়েছে সে তখনো বুঝতে পারছে না তার জুতা হারিয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পর সে তার মায়ের কাছে বলছে , মা আমার আরেকটা জুতা কই, ভদ্রমহিলা রাগান্বিত ভাবে তার মেয়েকে থাপ্পড় দিয়ে বলছে জুতা নাই চুপ থাক।
Source
এইবার ঘটনা ঘটলো অন্যরকম, থাপ্পড় খেয়ে শিশুটি বেশ জোরে কান্না শুরু করল। কান্না করতে করতে বলছে, আমার জুতা এনে দাও তার মা সহ বাসের অন্য যাত্রীরা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করল কিন্তু সে কিছুতেই বুঝতে চাচ্ছে না। যখন জুতা হারিয়েছিল বা তার মা জুতার জন্য বাস থামানোর কথা বলছিল তখনও সে জুতা হারানোর ব্যাপারে কিছুই বোঝেনি। কিছুদূর যাওয়ার পরে দেখল তার পায়ে একটি জুতা নেই তখন সে জুতা হারানোর জন্য কান্না করলো। আমি যখন এয়ারপোর্ট পৌঁছলাম তখন পর্যন্ত সে জোরে জোরে কাঁদছিল জুতার জন্য, পরবর্তী ঘটনা আমার অজানা।
ঘটনাটি থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি, বাস্তব জীবনে আমরা দেখতে পাব ছোটবেলায় আমরা অনেক বড় বড় স্বপ্ন দেখি কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে সে স্বপ্নগুলো নষ্ট হতে শুরু করে। আবার অনেক মানুষ আছে যারা নির্দিষ্ট স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে হঠাৎ পারিপার্শ্বিক কিছু ঘটনার কারণে সে স্বপ্নগুলো থেকে আস্তে আস্তে দূরে সরে যায়। মজার ব্যাপার হল স্বপ্ন বাস্তবায়নের সময়গুলো যখন জীবন থেকে চলে যায় তার গুরুত্ব সে তখন বুঝতে পারে না, অর্থাৎ হারিয়ে যাওয়া জুতার মতো হঠাৎ মনে পড়ে তার স্বপ্নের কথা। কিন্তু ততক্ষণে তার পিছনে যাওয়ার মতো সুযোগ থাকে না এবং অনুশোচনা করেও কোন লাভ হয় না।
Source
তাই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য শুধু বুকের মধ্যে লুকিয়ে রাখলে হবে না সেটা যাতে হারিয়ে না যায় সে জন্য চোখের সামনেও নিয়ে আসতে হবে। জীবনে যতই খারাপ অবস্থা আসুক অর্থাৎ প্রতিটি পারিপার্শ্বিক প্রতিকূলতার মাঝেও স্বপ্নকে নষ্ট হতে দেয়া যাবে না।
Source
বন্ধুরা আজ এখানেই শেষ করছি, দেখা হবে পরবর্তী লেখা নিয়ে সে পর্যন্ত সবার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। অসংখ্য ধন্যবাদ ধৈর্য নিয়ে আমার লেখা পড়ার জন্য।
ভাইয়া আপনি খুব সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ঠিক বলেছেন আমাদের জীবন কয়জনে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে কিন্তু হাজারো মানুষের মনে পড়ে ফেলে আসা স্বপ্নের কথা, সেই ছোট্ট মেয়েটির ফেলে আসা জুতুর কাহিনীর মত।
জি আপু, আমাদের আশেপাশে ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনার মধ্যে লুকিয়ে থাকে আমাদের জীবনের শিক্ষানীয় অনুসর্গ। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ধৈর্য নিয়ে আমার লেখা পড়ার জন্য।
সময় কখনো কারো জন্য থেমে থাকেনা,সময় তার নিজস্ব গতিতে চলে, তাই সময়ের সাথে নিজেকে ব্যালেন্স করে চলতে হয় আর তা না হলে পিছিয়ে পড়তে হবে।বাচ্চাটির মায়ের একটু অসচেতনতার কারনে এমনটি হলো উনি বাসে ওঠার সাথে সাথে যদি দেখতে পেতো যে তার মেয়ের এক পায়ে জুতো নেই তাহলে হয়তোবা বাস থামাতে বললে কাজ হতো এবং জুতোটা পেয়ে যেতো। অনেক দূর চলে যাওয়ার পর বলে কি লাভ, ওনার জন্য তো অন্য যাত্রীদের সমস্যা করতে পারেন বাসের চালক। বাচ্চাকে না মেরে ওনার বোঝানো উচিৎ ছিল যে মামনি তোমাকে এরকমই আরেকটি জুতো কিনে দেওয়া হবে তাহলে হয়তো বাচ্চাটি শান্ত থাকতো। শিক্ষনীয় একটি ঘটনা শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই ভাইয়া।
সত্যি বলেছেন আপু, সময় কারো জন্য থেমে থাকে না। স্বপ্ন সবাই দেখতে পারে, স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য কাজ সবাই করে না। যে করে সেই সফল হয়, অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্ট পড়ে আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
সময় গেলে সাধন হবে না কথাটি একেবারে বাস্তব। কারন সময়েই সব কিছু করতে হয়। ছোট বাচ্চার জুতা যেখানে পরেছে সেখান থেকে বাস অনেক দুরের চলে এসেছে। এখন তো আর বাস থামালেও জুতা পাবে না। বাচ্চার কান্না মনে হচ্ছে খুব বেশি ছিলো খারাপ লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।
পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। সত্যিই বাস্তবসম্মত কিছু তথ্য আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। খুব সুন্দর টাইটেল ব্যবহার করেছেন। আসলে সময় এবং সুযোগ মানুষের জীবনে বার বার ফিরে আসে না। বলা হয়ে থাকে স্রোত এবং সময় সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না। সময় নিয়ে এত চমৎকার অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
ভাই অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, আমার পোস্টটি ধৈর্য্য নিয়ে পড়ে মন্তব্যের জন্য।
আসলেই ভাই ফেলে আসা সময় কখনো ফিরে পাওয়া যায় না , যতই অনুশোচনা করা হোক না কেন ৷ তবে সময় গেলে সাধন হবে না কথাটাও অনেক বাস্তব ৷ আপনার লেখা বাস্তব ঘটনাটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো ৷ জুতা ফেলে এসেছে এক জায়গায় অনেক দূরে এসে বাস থামানো অনেকটা বোকাবি হবে ৷ তবে এটা ঠিক ছোট বেলায় অনেক স্বপ্ন দেখি যা বড় হতেই ভেঙ্গে যায় ৷ ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ৷
ফেলে আসা সময় কখনো ফিরে পাওয়া যায় না তাই প্রতিটি সময় কে কাজে লাগিয়ে উপভোগ করা উচিত। অসংখ্য ধন্যবাদ আমার লেখা পড়ে আপনার মন্তব্যের জন্য।