দুশ্চিন্তা কমিয়ে দিন। || Reduce anxiety, keep smile on face.

in আমার বাংলা ব্লগ3 days ago
দুশ্চিন্তা কমিয়ে দিন

ছবিটি কেনভা দিয়ে তৈরি

আমরা সারাদিন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিন্তা করি এবং সেই চিন্তাকে কাজে লাগিয়ে দৈনন্দিন সমস্ত কাজগুলো সুন্দরভাবে গুছিয়ে করার চেষ্টা করি। তবে এই চিন্তাগুলোর সাথে সাথে কিছু দুশ্চিন্তার আবির্ভাব ঘটে। অনেক সময় আমরা এগুলো মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারি আবার অনেক সময় এই দুশ্চিন্তা মাথা ব্যাথার কারন হয়, এমনকি দীর্ঘ মেয়াদি অসুস্থতার দিকে ঠেলে দেয়।

দুশ্চিন্তা আমরা কেন করি?

দুশ্চিন্তা আমরা তখনই বেশি করি যখন নিজের ভেতরে আত্মবিশ্বাস এবং পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে না‌। দেখা যায় ধীরে ধীরে দুশ্চিন্তার সাগরে হাবুডুবু খেতে থাকি, পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ মেয়াদি জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে পরি। আমাদের বর্তমান সময়ে আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট এমন পরিস্থিতি তৈরি করে তুলছে, যা প্রতিদিন আমাদের দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করে তুলছে। কিছু কিছু মানুষ তো এই অদৃশ্য শত্রুর সাথে মোকাবেলা করতে না পেরে স্ট্রোকের মতো মারাত্মক বিপদে পতিত হয়ে মারা যাচ্ছে। তাছাড়া পরিবারের মাঝে এমন সব অপ্রিতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে ফেলছে, যারফলে পরিবারগুলো ভেঙ্গে যাচ্ছে।

কেন আপনি দুশ্চিন্তা করবেন?

দেখুন পৃথিবীতে আমরা এসেছি খুব সংক্ষিপ্ত সময় নিয়ে। কত বছর বাঁচবো আমরা? কেউ পঞ্চাশ আবার কেউবা ষাট, যাইহোক এই সংক্ষিপ্ত সময় আমরা যদি শুধুমাত্র দুশ্চিন্তা করে কাটিয়ে দেই তাহলে জীবন থেকে প্রাপ্তিটা কি আমাদের। ছোট্ট জীবন, হাসি খুশি আর সততার সাথে কাটিয়ে দিতে পারলেই জীবনের আসল মহত্ত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে। আসলে সবাই এই একটা জীবনে বাড়ি, গাড়ি, প্রভাব, প্রতিপত্তি সবকিছু পেতে চায়। আর এগুলোর জন্য সীমাহীন পরিশ্রম করে, প্রেসার নেয় এবং দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পরে। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন দিকে বিপদের মুখে পতিত হয়। আমরা প্রশ্ন হলো সৃষ্টিকর্তা কি আপনাকে শুধুমাত্র পয়সা উপার্জন আর সম্পদ তৈরি করার জন্য দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন? আমি জানি এর কোন উত্তর নেই। যদি আপনার কাছে উত্তর না থাকে তাহলে আজকে আবারো একটু ভাবুন। না আবার এমনভাবে ভাবতে বসবেন না যাতে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পরেন 😄

দুশ্চিন্তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব:

দুশ্চিন্তা অনেকটা ধীরগতির বিষক্রিয়ার মতো। এটা ধীরে ধীরে আপনাকে শেষ করে দেবে। এর ক্ষতির পরিসীমা নিজের শরীর, পরিবার কিংবা সমাজ পর্যন্ত বিস্তৃত। ধীরে ধীরে সবকিছু শেষ করে দেয়। অনেক সময় দেখবেন হাসিখুশি একটা মানুষ হুট করে কেমন গোমরা মুখো হয়ে যায়, সবার কাছ থেকে নিজেকে আড়াল করে নেয়, একটা সময় আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নিয়ে নিজেকে এবং পরিবারকে শেষ করে দেয়। আর কিছু মানুষ তো হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ করে সবাইকে ছেড়ে পরপারের চলে যায়। এখন কথা হচ্ছে এই যে পরিস্থিতি গুলো তৈরি হলো একমাত্র দুশ্চিন্তার মধ্য দিয়ে এবং সমাপ্ত হলো খুব অপৃতিকর অবস্থায়, এতে লাভটা কি হলো? আসলে বাস্তবিক অর্থে এর কোন লাভ নেই।

আসুন সুস্থ আর সুন্দরভাবে বাঁচি:

দেখুন আমরা সবাই জানি জীবন ছোট্ট, তাই নিজেকে যেভাবেই হোক শেষ দিন পর্যন্ত ভালোভাবে টিকিয়ে রাখতে হবে। আর এজন্য চাই সুস্থ জীবন চর্চা। আমি জানি আপনি কি ভাবছেন, নুন আনতে পান্তা ফুরায়, সমস্যার শেষ নেই, আবার সুস্থ জীবন চর্চা 😄
আরে ভাই আপনি তো মানুষ কোন সুপার ম্যান না। আপনার তো সমস্যা থাকবেই আর এই সমস্যা নিয়েই তো এগিয়ে যেতে হবে। আপনি দশটা সমস্যা তো আর একদিনে সমাধান করতে পারবেন না। পরিকল্পনা করুন, সময় নিন আর ধীরে ধীরে সমাধানের পথ বের করুন। আর অন্যের কি আছে আর আপনার কি নেই সেটা কখনো চিন্তা করতে যাবেন না। দেখুন উপর ওয়ালা সবাইকে যদি একরকম সবকিছু দিয়ে দিতো তাহলে পৃথিবীটা এতো বৈচিত্র্যময় আর সুন্দর হতো না। তাই নিজের সবকিছু নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন এবং হতাশা থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। মনে মনে প্রতিদিন স্রষ্টার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন, দেখবেন আপনার মন আনন্দে ভরে যাবে।

যা হবার হয়ে যাক, জীবন চলুক জীবনের গতিতে‌।
যা হবার হয়ে যাক, হাসি থাকুক ঠোঁটের কোনে।
যা হবার হবে যাক, সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস বিশুদ্ধ শপথে।
যা হবার হয়ে যাক, আমি ভালোবাসি নিজেকে।

"প্রান খুলে হাসুন আর আনন্দে বাঁচুন"

শুভ রাত্রি



Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 2 days ago 

যা হবার হয়ে যাক, জীবন চলুক জীবনের গতিতে‌।
যা হবার হয়ে যাক, হাসি থাকুক ঠোঁটের কোনে।
যা হবার হবে যাক, সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস বিশুদ্ধ শপথে।
যা হবার হয়ে যাক, আমি ভালোবাসি নিজেকে।

আপনার লেখা গুলো সব সময়ই ভালো লাগে। সৃষ্টিকর্তা আমাদের কে যেভাবে রেখেছেন এতেই শুকরিয়া আদায় করা উচিত। বর্তমান বাজার মূল্যের কারনে সবার ভিতরে একটু দুশ্চিন্তা ঢুকে গেছে। ছোট জীবন সুন্দর করে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে। শরীর এবং মন ভালো থাকা জরুরি। উপরের লেখা গুলো আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। প্রতি সপ্তাহে একটি করে জেনারেল রাইটিং উপহার দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার পরিবারের জন্য শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।

 2 days ago 

দুশ্চিন্তা অনেক বেশি খারাপ একটা জিনিস। দুশ্চিন্তা একটা মানুষের সম্পূর্ণ জীবনকেই ধ্বংস করে দিতে পারে। বেশি দুশ্চিন্তা করা আমাদের জন্য একেবারেই ভালো না। কারণ এটা আমাদের জীবনে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। বেশি দুশ্চিন্তা করলে মানুষ অনেক সময় অনেক ডিসিশন নিয়ে থাকে। তবে এগুলো করা একেবারেই ভালো না। দুশ্চিন্ত আমাদেরকে কম করতে হবে। দুশ্চিন্তা কমিয়ে ফেলা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপনার লেখাগুলো আমার কাছে কিন্তু অনেক বেশি ভালো লেগেছে। অনেক সুন্দর করে লিখেছেন।

 2 days ago 

আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো, আমি আপনার পোস্ট গুলো পড়ে বাস্তব জীবন সম্পর্কে অনেক ধারণা পেয়ে থাকি। যাইহোক আমরা হয়তো পঞ্চাশ ষাট বছর দুনিয়াতে থাকবো, এই সংক্ষিপ্ত সময় আমরা যদি শুধুমাত্র দুশ্চিন্তা করি তাহলে পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ মেয়াদি জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে যাব। তাই আমাদের দুশ্চিন্তা ভুলে জীবনকে রঙিন ভাবে সাজাতে হবে। আমি বেশিরভাগ সময়ই দুশ্চিন্তা করি,তবে আপনার পোস্ট পড়ে অনেকটাই মানসিক শান্তি পেলাম, ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

 2 days ago 

ভাই আপনার পোস্টটি পড়ে অসম্ভব ভালো লাগলো। আসলে মানুষ পৃথিবীতে এসে অল্প সময়ের জন্য। আর অল্প সময়ে সবাই চাই পুরা পৃথিবীতে নিজের করে নিতে। আর মানুষে সব সময় চিন্তা করে ভালো চলার ভালো খাওয়া এবং ভালো থাকার। একটু এদিক ওদিক হলে তাহলে চিন্তা বেড়ে যায়। আমার মতে চিন্তা যত কম করবে ততই ভালো হবে। সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 56519.24
ETH 2991.31
USDT 1.00
SBD 2.16