কিছু পয়সার মালিক হলেই বড়লোক হওয়া যায় না। || Money can't make Big heart.
বড়লোক শব্দটার ইদানিং কালের অর্থ হচ্ছে যার পকেটে বা ব্যাংকে কিছু টাকা আছে, তাছাড়াও বাপ দাদার দেয়া কিছু সম্পত্তি থাকলেও বলা হয়ে থাকে। আবার বড়লোক কথাটা টেনেটুনে এতটাই বড় করা হয়েছে, কেউ যদি কক্সবাজার বেড়াতে যায় তখনও তাকে বেশ কিছু মানুষ বড়লোক বলতে শুরু করে দেয় 😀 আবার কেউ কেউ ছোটখাটো একটা বাইক কিনেও বড়লোকের তখমা জুটিয়ে নেয়। মানে বড়লোক ব্যাপারটা এখন কেমন যেন সস্তা বিষয়ে পরিণত হয়েছে। যাইহোক কিছুকাল আগেও শিক্ষীত, মার্জিত, উচ্চ বংশীয়, বড় মানসিকতা এবং বিশেষ বিচার করার ক্ষমতাধর মানুষকে বড়লোক হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো। যাদের শুধুমাত্র পয়সার অহমিকায় বিচার বিশ্লেষণ করা হতো না। সেই সময়টাতে সমাজে অপরাধ করার প্রবণতা কম ছিল এবং এই সমস্ত মানুষগুলোকে সবাই ভীষণ সম্মানের চোখে দেখতেন। সবথেকে বড় বিষয় বিভিন্ন বিচার কার্যক্রম এই সমস্ত বড়লোক এবং বড় মানসিকতার মানুষ পরিচালনা করতেন, যা সকল শ্রেণী পেশার মানুষ মেনে নিতেন। এর সবথেকে বড় কারন ছিল তাদের প্রতি সবার শ্রদ্ধা এবং ভক্তি আকাশচুম্বি ছিল। এই মানুষগুলো এতটাই সৎ এবং নিষ্ঠাবান ছিলেন যে, তাদের পরিবারের কেউ যদি অপরাধ করতো তাকেও ছাড় দিতেন না।
এই ধরনের বড়লোক কিংবা বড় মানসিকতার মানুষজন সমাজের অপরাধ এবং বিশৃঙ্খলার লাগাম টেনে ধরতে পারতেন একমাত্র তাদের সততা এবং বিচক্ষণতার মাধ্যমে। আজ সেই সমস্ত মানুষজন হারিয়ে যাচ্ছে, সময় তাদের সৃষ্টিকর্তার দুয়ারে নিয়ে গেছে। তবে তাদের অবদান এবং কীর্তি গাঁথা এখনো প্রবীণ মানুষদের মুখে শোনা যায়। নিশ্চয়ই সৃষ্টিকর্তা তাদের উচ্চতর সম্মান দেবেন একমাত্র তাদের ভালো কাজগুলোর মধ্যে। যাইহোক এখন কালের বিবর্তনে বড়লোক কথাটা কিছু পয়সার মালিককে বলা হয় কিংবা মানুষের চোখে চাকচিক্য পূর্ণ কাপড় পরলেও তাকে বলতে শোনা যায়।
সত্যিই হাস্যকর লাগে যখন কোন চোর বাটপার কিংবা মানুষের টাকা মেরে নিয়ে বিদেশে বাড়ি গাড়ি করা লোককে বড়লোক খেতাব দেয়া হয়। আসলে অর্থ সম্পদ আমাদের চোখে একটা অদ্ভুত পট্টি লাগিয়ে দিয়েছে যার কারণে আমরা মানুষ বিচার করার ইচ্ছা প্রকাশ করি না। তাছাড়াও লোভ এবং চাটুকারিতা এমন পর্যায়ে চলে এসেছে কাউকে বড়লোক বলে পা চেটে নিজে কিছু পয়সার মালিক হবার পাঁয়তারা করতে থাকে। আবার কিছু কিছু লোক রাতারাতি বিভিন্নভাবে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে বড়লোকের তখমা জুটিয়ে নিচ্ছে নিজ গরজে 😄 এদের লাফালাফি আর কথার ভাঁজ শুনলে মন মেজাজ রক্ত গরম পর্যায়ে পৌঁছায়।
যাইহোক আমাদের আশেপাশে কেউ যদি এরকম বড়লোক থেকে থাকেন তাহলে কষ্ট নিয়েন না, কারন আমি অন্তত আপনাকে বড়লোক বলতে পারলাম না। বাকিটা নিজেই বিচার বিশ্লেষণ করে নেবেন 😀
মন বড় করুন, মানসিকতা পরিষ্কার করুন আর নিজেকে সাধারণ মানুষের মতোই একজন মানুষ মনে করুন। এগুলো ছাড়া যদি বড়লোক তখমা চান তাহলে ঘৃনা ছাড়া কিছুই পাবেন না।
আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।
আমাদের চারপাশে এমন লোকের সংখ্যা অনেক বেশি। তাদের ভাব দেখলে সত্যিই অনেক মেজাজ গরম হয়ে যায়। আসলে তারা নিজেরাও বুঝতে পারে না তারা কি রকম আচরণ করছে। এই মানুষগুলো একেবারে মনুষ্যত্বহীন।
আসলে বড়লোক বিষয়টি খুবই আপেক্ষিক ভাই। মানুষ বিশেষে এর সংজ্ঞা পরিবর্তন হয়। মানুষ আরেকজন মানুষকে কিসের উপর ভিত্তি করে বিচার করছেন সেটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন স্তরের মানুষ আছে। তাই তাদের চিন্তা-ভাবনা বিভিন্ন। তবে আপনি সেই বিষয়টি খুব সুন্দর ব্যাখ্যা করে বোঝালেন।
আপনার এধরনের পোস্ট গুলো সব সময়ই ভালো লাগে। বাস্তবতা সম্পুর্ন একটি পোস্ট উপহার দিয়েছেন। আগের মতো সেই সব মানুষকে দেখা যায় না। যাদের কে বিচার শালিশ করতে দেখা যেতো। এখন সমাজে বেশ কিছু ছেচরা বড় লোক দেখা যাচ্ছে। এদের কে মানুষ সেভাবে সম্মান করে না। উপরের লেখা গুলোর সাথে আমি একমত পোষণ করছি। চমৎকার একটি পোস্ট উপহার দিয়েছেন ধন্যবাদ আপনাকে।
বড়লোক আবার কী। হ্যা একজন কক্সবাজার ঘুরতে যেতেই পারে একটা বাইক কিনতেই পারে। এটা যেকোন মানুষ করতে পারে। তার অর্থ এই না সে বড়লোক। বড়লোক শুধু টাকা থাকলেই হওয়া যায় না। এর জন্য প্রয়োজন হয় বড় মনের।
হা হা হা 😄
এটাই তো ব্যাপার।
কিছু মানুষের একটু পয়সা হলেই বড়লোকের খেতাব নিয়ে নেয়, আর ভাবখানা এমন যেন আসলেই কিছু একটা হয়ে গেছে।
বাধ্য হয়ে পোস্টটা লিখলাম। 😄
বাস্তব কিছু কথা তুলে ধরেছেন ভাইয়া। আমাদের আশেপাশে এমন অহরহ অনেক লোক রয়েছে যারা একটুতেই নিজেকে একদম কোটিপতি ভেবে নেয়। একটু দামি গাড়ি কিনলে মনে করে সে বড়লোক হয়ে গিয়েছে। দামি গাড়ি বাড়ি থাকলেই বড়লোক হওয়া যায় না। বড়লোক হতে হলে মনের দিক থেকে ও বড়লোক হওয়া জরুরি।অসম্ভব ভালো লেগেছে আপনার লেখা গুলো।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আপনি একদম গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন ভাই। আমাদের সমাজে এরকম লোকের আবির্ভাব ঘটেছে। তারা নিজেকে যে কি মনে করে তারাই জানে। তবে কিছু পয়সার মালিক হলেই বড়লোক হওয়া যায় না, সঙ্গে দরকার হয় ভালো মন মানসিকতা। বাস্তবমুখী চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।