দূর্ঘটনায় পতিত হলাম। ||I fell into an accident.
শুভ রাত্রি আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে শুরু করছি আজকের পোস্ট।
আজ যখন পোস্ট লিখছি তখন হাত এবং শরীরে তীব্র ব্যাথা। একটি হাতে কোনমতে লিখার চেষ্টা করছি, আসলে ভয়েস টাইপিং করতে ভালো লাগে না কারন দশবার ঠিক করলেও ভুল হতে থাকে। যাইহোক মূল ঘটনায় ফিরে আসি।
প্রতিদিনের মতো আজ সকালে কাজ ছিল, যথারীতি কাজ করছিলাম শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের মেশিনে। ব্যাংক পার্সন আদনান ভাই ভীষণ হাসি খুশি মানুষ, কাজ শেষ করে চা খেলাম দুজনে। এরপর দু'জন একসাথে ভালুকার দিকে এগিয়ে যেতে থাকলাম খোলা অটোরিকশায়। আসলে আমাদের এদিকটায় এই বাহনটি বেশি চলে।
আদনান ভাই আর আমি গল্প করতে করতে এগিয়ে যাচ্ছিলাম, আসলে ঘুনাক্ষরেও বুঝতে পারিনি সামনে কত বড় বিপদ অপেক্ষা করছে। আমার মোবাইলটা হাতেই ছিল।
আমাদের এদিকে কিছুদিন আগে রাস্তার কাজ করেছে, একপাশে পিচের মোটা স্তর দিয়েছে আবার কিছু অংশে এখনো দেয়নি। আমাদের ড্রাইভার হঠাৎ সামনে উল্টোদিক থেকে একটি অটোরিকশা আসতে দেখে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়ি উল্টিয়ে দেয়। আমি আর আদনান ভাই পিছনে ছিলাম তাই আমরা ছিটকে পড়লাম পিচ রাস্তায়। যখন পড়ছিলাম তখন মনে হচ্ছিল হয়তো আর বাঁচবো না।
একটা হাত সরাসরি মাটিতে পড়ে ছিলে রক্তাক্ত হতে থাকে আর অপর হাতে মোবাইল ছিল এবং আছাড় খায়। মোবাইলটার জন্য অপর হাতটা রক্ষা পায়। আর শরীরে মোটা জেকেট এবং টুপি থাকায় শরীরের অন্যান্য অংশ ছিলে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়। আমার জেকেটের অনেকটা অংশ ছিঁড়ে গেছে ঘষা খেয়ে আর কোমর এবং হাটুতে ব্যাথা পাই। মোবাইলটার গ্লাস ভেঙ্গে গেছে আর নৌকার মতো বাঁকা হয়ে গেছে। কপালটা সত্যিই ভালো হাত ভাঙ্গেনি আর মাথাটা কোন মতো রক্ষা পেয়েছে।
আমি যখন নিচে পরে রয়েছি তখন দেখলাম আদনান ভাই দুরে পরে আছে। আমি উঠার চেষ্টা করলাম আর একটা লোক দৌড়ে এসে হাত ধরে উঠালো। সামনে দেখলাম আমাদের অটোতে থাকা এক মুরুব্বি অটোর নিচে পরে আছে, তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন। আমি করবো বুঝতে পারছিলাম না, আমার হাত দিয়ে রক্ত পরছে আর মোবাইলটা দূরে পরে আছে। তাড়াতাড়ি ফোনটা হাতে নিলাম কারন আমি জানি এক সেকেন্ড দেরি হলে আর ওটা পাবো না।
আদনান ভাই উঠে দাড়িয়েছে কিন্তু তার মাথার একটা অংশ কেটে গেছে আর হাত ছিলে গেছে 😞। একটা লোক এসে আমাকে হাত ধরে বসিয়ে হাতে পানি ঢেলেছে এবং পুরো শরীর ঝেড়ে দেয় কারন বেশ ধুলাবালি ছিল শরীরে। এরপর আদনান ভাইকে নিয়ে আবারো একটি অটোরিকশা নিয়ে চলে গেলাম হাসপাতালের দিকে।
আমার হাতে রক্ত পরছিল, তাড়াতাড়ি হাসপাতালের একজন স্টাফ ব্যান্ডেজ করে দেয়। আমি তো ব্যাথায় রিতিমত কুপোকাত অবস্থা। এরপর একজন বড় ডাক্তার দেখলেন এবং তাকে সব বললাম। তিনি তাড়াতাড়ি প্রেসক্রিপশন করে দিলেন।
এদিকে আদনান ভাই বুকে বেশ ব্যাথা পেয়েছেন, ডাক্তার তাকে তাড়াতাড়ি উন্নত চিকিৎসা নিতে বললেন। শুনে খারাপ লাগলো ব্যাপারটা উনার চোখ মুখ বেশ বিষন্নতায় ছেয়ে গেছে। যাইহোক ইলমা স্কুলে ছিল তাই আমার স্ত্রী আর ইয়ান হাসপাতালে ছুটে এসেছে ততক্ষণে।
যাইহোক হাতে প্রচন্ড ব্যথা নিয়ে আজকের পোস্ট লিখলাম বিস্তারিত কারন অনেকেই জানতে চেয়েছেন পুরো বিষয়টি। আমার সুস্থ হতে কিছুদিন সময় লাগবে, অলরেডি অফিসে জানিয়েছি এবং সবাই বিশ্রাম নিতে বলেছেন। সবাই দোয়া করবেন যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠতে পারি। সবাই সাবধানে থাকুন আর সুস্থ থাকুন এই কামনা করছি।
আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।
প্রথমেই আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি আল্লাহ পাক আপনাকে যেনো খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দেন। ঘটনা পরে অনেক বেশি খারাপ লাগলো এবং চোখ দিয়ে পানি চলে আসলো। আল্লাহর অশেষ রহমতে এবার বেঁচে গেলেন। নাহলে অনেক বড় বিপদ হতে পারতো। আপনার পোস্ট পরে বুঝতে পারলাম আপনার চেয়ে বাকি দুজন লোকের ভীষণ ক্ষতি হয়েছে। অফিস এ বিষয়টি জানিয়ে খুব ভালো করেছেন। এ অবস্থায় কোন কাজ করা যাবে না। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিতভাবে ঔষধ খান। আশাকরি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন ইনশাআল্লাহ 🤲❣️
ভাইয়া আপনি অনেক বড় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন জেনে অনেক খারাপ লাগলো। আপনার লেখা গুলো যখন পড়ছিলাম তখন ভীষণ কষ্ট লাগছিল। যিনি অজ্ঞান হয়েছেন উনার জন্যও খারাপ লাগছে। যাই হোক বিপদের মধ্যে পরেও মোবাইল ফোন দ্রুতই তুলে নিয়ে ভালো করেছেন ভাইয়া। না হলে আরো ঝামেলা হয়ে যেত। ভাইয়া আপনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।
ধন্যবাদ আপু।
দোয়া করবেন।
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1746580879454191771?t=bR7KY7GMKJBfUV0t-bEmVg&s=19
খুব দুঃখ জনক ঘটনা আল্লাহ আপনাকে বাঁচালো মা সন্তানদের উচিলায়। কার জীবনে কখন যে কি ঘটে বলা বেশ মুশকিল। বিপদ বলে আসেনা তাই মানুষ টেরও পাইনা। বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পেলেন ভাইয়া। দোয়া করি খুব তাড়াতাড়ি যেন সুস্থ হয়ে ওঠেন।
সত্যিই আমি বড় বাঁচা বেঁচে গেছি। গাড়িটা যদি অপরদিকে কাত হতো তাহলে হয়তো বাঁচতাম না, কারন হাইওয়ে রোড।
অনেক বড়ো বিপদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ভাইয়া আপনি।ভীষণ খারাপ লাগছে আপনার পোস্টে দূর্ঘটনায় পতিত হওয়ার বিস্তারিত জেনে।সৃষ্টিকর্তার কৃপায় বেঁচে ফিরেছেন আপনি।আসলে বাইরে বের হওয়া মানে মরনকে সঙ্গী করে নেয়া।কখন কার কোন মূহুর্তে ভয়ানক বিপদ ঘটে যাবে তা কেউ বলতে পারে না।ধন্যবাদ ভাইয়া হাতে ব্যাথা নিয়ে আমাদের সাথে দূর্ঘটনার বিষয় টি জানিয়ে দেয়ার জন্য।নিয়মিত মেডিসিন ও নিয়ম মেনে চলুন খুব তারাতারি আপনি সুস্থতা লাভ করবেন।
ধন্যবাদ আপু মন্তব্যের জন্য।
দোয়া করবেন যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে পারি।
খুবই খারাপ লাগছে ঘটনাটা শুনে, এই শীতের মধ্যে আপনি এবং আদনান ভাই এরকম একটা এক্সিডেন্ট করলেন এটা বেশ অনেকদিন কষ্ট করতে হবে, রিক্সার নিচে যে বৃদ্ধ লোকটি পড়েছিল তার শেষ পর্যন্ত কি হয়েছিল?
পরে ঐ বৃদ্ধ লোকটির আর কোন খবর পাইনি ভাই।
আমি এখন আগের থেকে কিছুটা ভালো আছি।
প্রথমেই আপনার সুস্থতা কামনা করছি এই শীতের সময়ে এরকম কেটে গেলে সেটা সারতে অনেক সময় লাগে আর কষ্ট তো আছেই। আসলে দুর্ঘটনা তো বলে কয়ে আসে না হঠাৎ করেই হয়ে যায়। শীতের কাপড় মাথায় টুপি ছিল বলে তুলনামূলক অনেকটাই বেঁচে গিয়েছেন সবই আল্লাহ তায়ালার রহমত।
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
মহান সৃষ্টিকর্তা যেন অতি দ্রুতই আপনাকে সুস্থতা দান করেন। আপনার দুর্ঘটনার কথা শুনে সত্যি খুব খারাপ লাগছে। শীতের সময় আঘাতগুলো আরো কষ্টদায়ক বেদনাদায়ক হয়। এরকম দুর্ঘটনায় অনেক সুবিধাবাদী মানুষ থাকে যারা মানুষকে সাহায্য করার পরিবর্তে তার জিনিসপত্র নিয়ে চলে যায়। অতি দ্রুত আপনার মোবাইলটি নিয়ে আপনি বিপদের সময় বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন। যাইহোক সর্বশেষ আরো দোয়া করি যেন অতি দ্রুত আপনি এবং আদনান ভাই সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে আবার ফিরে আসেন।